মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমরা জানি, অষ্টমীর (Asthami) শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমীর (Nabami) প্রথম ২৪ মিনিট এই মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হয় সন্ধিপুজো (Sandhi Pujo)। প্রশ্ন হল, কেন হয় সন্ধিপুজো?
দেবী দুর্গা (Goddess Durga) মহিষাসুরমর্দিনী। তিনি মহা শক্তিধর মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন বলে তাঁর এই নাম। তবে তিনি যে কেবল মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন তা নয়, চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই ভয়ঙ্কর অসুরকেও হত্যা করেছিলেন দেবী। তবে মায়ের সচরাচর যে রূপ আমরা দর্শন করি, সেই রূপে তিনি চণ্ড ও মুণ্ডকে বধ করেননি। চণ্ড ও মুণ্ডকে তিনি দশ হাতে নন, এই দুই দানবকে দেবী বধ করেছিলেন চার হাতে। তাই দেবীর এক নাম চামুণ্ডা। এই চামুণ্ডা হলেন আদ্যাশক্তি। তিনি সপ্ত মাতৃকার প্রধান। শশ্মানই তাঁর আবাসস্থল। খড়্গ দিয়ে চণ্ড ও মুণ্ডকে বধ করেছিলেন তিনি। হিন্দু শাস্ত্রবিদদের একাংশের মতে, চামুণ্ডা হলেন দেবী কালিকার এক রূপ।
তবে কারও কারও মতে, শ্রীক্ষেত্র পুরীর নীলমাধব যেমন প্রথমে আদিবাসীদের দেবতা ছিলেন, পরে উচ্চ বর্ণের পুজো পেতে শুরু করেন, তেমনি চামুণ্ডাও ছিলেন আদিবাসীদের দেবতা। পরবর্তীকালে হিন্দু ধর্মের অঙ্গীভূত হন তিনি। দেবীকে আমিষ ভোগ দিতে হয়। কোথাও কোথাও চামুণ্ডার পুজোয় পশুবলিও হয়। জৈন ধর্মাবলম্বীরাও চামুণ্ডা পুজো করেন। তবে মদ ও মাংসের পরিবর্তে তাঁরা দেবীকে নিবেদন করেন নিরামিষ ভোগ।
সে যাই হোক, দেবীকে আমিষ ভোগই নিবেদন করেন হিন্দুরা। যাঁদের পরিবারে পশু বলি দেওয়া হয় না, তাঁদের অনেকে চালের পিটুলকে কচুপাতায় মুড়ে পশুর আকার দিয়ে বলি করে। আখ, কলা, চালকুমড়াও বলি দেন কেউ কেউ। কোনও কোনও পরিবারে আবার সন্দেশের পশু তৈরি করে বলি দেওয়া হয়।
এসব আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট, যে দেবীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে আমিষ খাবার। তাই যাঁদের পরিবারে পশুবলি দেওয়ার চল নেই, তাঁরাও সন্ধিপুজোয় দেবীকে নিবেদন করেন আমিষ ভোগ। মা সারদার নির্দেশে বেলুড় মঠে পশু বলি হয় না। তবে কালীঘাটে পাঁঠা বলি দিয়ে সেই মাংস এনে সন্ধিপুজোয় দেবীকে উৎসর্গ করা হয় আমিষ ভোগ। বলির মাংস ছাড়াও বেলুড় মঠে দেবীকে অন্তত পাঁচ রকমের মাছ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয় আজও।
+ There are no comments
Add yours