মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈত্র নবরাত্রির প্রথম দিন, শুক্লা প্রতিপদের পুণ্য তিথিতে জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়াড়া জেলার টিটওয়াল গ্রামে দেবী সারদার একটি মন্দির (Sharada Temple) উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।
পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত সারদা পীঠের ইতিহাস
পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে মুজফফ্রাবাদ থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে নীলম উপত্যকায় রয়েছে ১৮টি মহাশক্তি পীঠের একটি সারদা পীঠ (Sharada Temple) এবং সারদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ। ষষ্ঠ থেকে বারোশো শতকের মাঝে ভারতীয় উপমহাদেশে এটি ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্দির বিশ্ববিদ্যালয়। সুলতানি এবং মোগল আমলে এশিয়ার অন্যতম সেরা সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র ছিল এই সারদা পীঠ এবং বিশ্ববিদ্যালয়। নালন্দা-তক্ষশীলার থেকেও প্রাচীন ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি পরবর্তী সময়ে বিদেশি হানাদারদের হামলায় ধ্বংস হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: একদা কাশ্মীর ছিল শারদা দেশ! জানেন কি এই শক্তি পীঠের মাহাত্ম্য?
নিয়ন্ত্রণরেখার এত কাছে মন্দির!
এক সময়ে সারদা পীঠের উদ্দেশে তীর্থযাত্রা শুরু হত আজকের টিটওয়াল গ্রাম থেকে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার ঠিক পরেই পাক হামলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় টিটওয়ালের সারদা মন্দির এবং গুরুদ্বার। প্রায় তখন থেকেই ওই এলাকায় ওই মন্দির পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল উপত্যকার পণ্ডিত সমাজ। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ওই মন্দিরের ধাঁচেই কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার টিটওয়াল গ্রামে নিয়ন্ত্রণরেখা ঘেঁষে তৈরি হয়েছে সারদা মন্দির (Sharada Temple)। স্বাধীনতার পর প্রথমবার নিয়ন্ত্রণরেখার এতো কাছে তৈরি করা হয়েছে হিন্দু মন্দির।
ভার্চুয়ালি মন্দির উদ্বোধন করলেন অমিত শাহ
সম্প্রতি, এই মন্দিরের পুনর্নির্মানের কাজ শেষ হয়। বিগ্রহ তৈরি হয় কর্নাটকে। সারদা হল দেবী সরস্বতীর অপর নাম। দেবী মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চৈত্র শুক্লা প্রতিপদ তিথিকেই বেছে নিয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। কারণ, এদিন থেকেই শুরু হয়েছে হিন্দু নববর্ষ। বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত ওই মন্দিরটির (Sharada Temple) উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শাহ বলেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পরে কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে শান্ত হয়েছে, তা সীমান্ত এলাকায় ওই মন্দির নির্মাণ থেকেই স্পষ্ট। এই মন্দিরের উদ্বোধন একটি নতুন ভোরের সূচনা করল। এটা পুরাতন সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার সূচনা। নতুন বছর থেকে মাতা সারদার মন্দির ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হল।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘শাহি’-প্রতিশ্রুতি
শাহ আরও জানান, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে যে সারদা মন্দির (Sharada Temple) রয়েছে, কর্তারপুর করিডরের ধাঁচে সেই মন্দিরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যায় না কি সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। অমিত শাহ চাইছেন, হিন্দুধর্মের অন্যতম এই তীর্থস্থান হিন্দুদের জন্য খুলে দিতে।
+ There are no comments
Add yours