মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে দ্রুত উজাড় হচ্ছে বন। দূষিত হচ্ছে সমুদ্রের জল। আর তার জেরে কমে যাচ্ছে বন্যপ্রাণীর জনসংখ্যা। বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিলের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, ১৯৭০ সালের পর থেকে পৃথিবীতে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে গেছে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি।
বন্যপ্রানীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিল (World Wide Fund for Nature) ও জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন (জেডএসএল) যৌথভাবে করা সমীক্ষায় প্রাণীর সার্বিক বিশ্নেষণে এ চিত্র উঠে এসেছে।
জেডএসএলের সংরক্ষণ এবং নীতিবিষয়ক পরিচালক অ্যান্ড্রু টেরি বলেন, ভয়াবহভাবে বন্যপ্রাণী কমে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে- প্রকৃতির সুরক্ষাবলয় ভেঙে যাচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে সবকিছু উজাড় হয়ে যাচ্ছে।
[tw]
Wild populations of monitored animal species have plummeted nearly 70 percent in the last 50 years, according to a landmark assessment released Thursday that highlights "devastating" losses to nature due to human activityhttps://t.co/lf2VcDsMbM
— AFP News Agency (@AFP) October 12, 2022
[/tw]
পাঁচ হাজারের বেশি প্রজাতির প্রায় ৩২ হাজার বন্যপ্রাণীর অবস্থার বিষয়ে জেডএসএলের ২০১৮ সালের তথ্য ব্যবহার করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডব্লিউডব্লিউএফ। এতে দেখা গেছে, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা গড়ে ৬৯ শতাংশ কমে গেছে। এর জন্য বন উজাড়, মানুষের হস্তক্ষেপ, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়েছে।
লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমে গেছে। ওই অঞ্চলগুলো মাত্র পাঁচ দশকে ৯৪ শতাংশ বন্যপ্রাণী হারিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের আমাজনে পিংক রিভার ডলফিনের সংখ্যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৬৫ শতাংশ কমেছে। টেরি বলেন, এই ফলাফলের সঙ্গে ডব্লিউডব্লিউএফের ২০২০ সালের মূল্যায়নের ব্যাপক মিল রয়েছে। এতে দেখা যায়, বন্যপ্রাণীর সংখ্যা প্রতি বছর প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমে যাচ্ছে।
ডব্লিউডব্লিউএফ-ইউকে’র বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক মার্ক রাইট বলেন, প্রকৃতি তখনো ভয়ংকর দশায় ছিল, এখনো আছে। যুদ্ধে অবশ্যই হার হচ্ছে।
তবে প্রতিবেদনে কিছুটা আশার আলোও দেখা গেছে। কঙ্গোর কাহুজি-বিয়েগা জাতীয় উদ্যানে গরিলার সংখ্যা ১৯৯৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ কমে গেলেও ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের নিকটবর্তী পর্বতে এই প্রাণীর সংখ্যা ২০১০ সালে প্রায় ৪০০টি থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ৬০০’র বেশি হয়েছে।
এরপরও দ্রুতগতিতে বন্যপ্রাণী কমে যাওয়া ঠেকাতে বাড়তি সহযোগিতার আহ্বান জোরালো হচ্ছে। বিশ্বের উদ্ভিদ ও প্রাণীদের রক্ষায় নতুন কৌশল তৈরির জন্য সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা আগামী ডিসেম্বরে মন্ট্রিলে সমবেত হবেন। বিশ্বব্যাপী প্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধির বিষয়েই বেশি আহ্বান জানানো হচ্ছে। ডব্লিউডব্লিউএফ-এর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যালাইস রুহওয়েজা বলেন, প্রকৃতিকে রক্ষার জন্য আমরা ধনী দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
+ There are no comments
Add yours