মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শ্রদ্ধা ওয়ালকার হত্যা (Shraddha Walker Murder) মামলায় ক্রমাগত নতুন নতুন তথ্য উদ্ধার করছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। এবার সামনে এল হাড় হিম করা এক তথ্য। আফতাবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, খুনের পর ১০ ঘণ্টা ধরে শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে আফতাব। সেইসবের মাঝে ক্লান্ত হয়ে গেলে কিছুক্ষণ বিশ্রামও নেয় সে। বিয়ার খায়, সিগারেট খায়। দেহের টুকরোগুলি কয়েক ঘণ্টা ঘরে জলে ধোয়। এছাড়া দেহ টুকরো টুকরো করা হয়ে গেলে, অনলাইনে খাবার আনিয়েও খায় আফতাব। তারপর নেটফ্লিক্সে সিনেমাও দেখে সে।
জেরায় আফতাব আরও জানায়, যাতে শ্রদ্ধাকে চেনা না যায়, তাই দেহ টুকরো করার পর তাঁর মুখ পুড়িয়ে দেয় সে। এমনকী কীভাবে দেহ লোপাট করবে তা জানতে ইন্টারনেটের সাহায্যও নেয় সে। খুনের পর কেমিক্যাল এবং ব্লিচিং পাউডার দিয়ে মেঝের রক্তের দাগ মোছে আফতাব। মূলত প্রমাণ লোপাটের জন্যই এইসব করেছিল বলে জেরায় জানায় আফতাব।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে হিন্দু লিভ-ইন পার্টনারকে খুন করে দেহ ৩৫ টুকরো করল মুসলিম যুবক
খুনের পরেও ওই ফ্ল্যাটেই থাকতো আফতাব। অনলাইনে আনাতো খাবার। পাশাপাশি শ্রদ্ধার স্যোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও চালু রেখে দিয়েছিল সে। শ্রদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকাও ট্রান্সফার করে। অন্যদিকে আবার অন্য মহিলাদের সঙ্গেও সম্পর্ক রাখছিল আফতাব। তাদের কখনও কখনও সে ফ্ল্যাটে আনত বলেও জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে আফতাবের অপরাধের জাল আরও কতটা ছড়িয়ে, তাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
কী ঘটেছিল?
বাবা-মা কে ছেড়ে ভালবেসে ঘর ছেড়েছিলেন মহারাষ্ট্রের হিন্দু পরিবারের মেয়ে শ্রদ্ধা ওয়েলকার। সম্পর্ক গড়েছিলেন এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে। আফতাব আমিন পুনাওয়ালার সঙ্গে লিভ-ইন করছিলেন। বিয়ের জন্য প্রেমিককে চাপ দেওয়াতেই তাঁকে খুন (Delhi-Mehrauli Murder) করে আফতাব। পুলিশকে তাই জানিয়েছে সে। কিন্তু শ্রদ্ধার বন্ধুর দাবি, লিভ-ইন ছেড়ে বিয়ের কথা বলতেই শ্রদ্ধাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে জোর করে আফতাব। তাতে মত দেয়নি শ্রদ্ধা। পরিবার ত্যাগ করলেও ধর্ম ছাড়তে হয়ত রাজি ছিলেন না তিনি। তাই এই পরিণতি। ধর্মান্তরণের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশও।
মুম্বইয়ের একটি কল সেন্টারে কাজ করার সময় পরিচয় হয় দুই যুবক-যুবতীর। সেখান থেকে প্রেম। ধর্মীয় ব্যবধানের কারণে শ্রদ্ধার বাড়ির লোক তাদের সম্পর্ককে মেনে না নিলে তাঁরা দিল্লিতে চলে আসেন ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকা শুরু করেন। শ্রদ্ধা আফতাবকে বিয়ে করতে চাইলেও আফতাব তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকত। সূত্রের খবর, গত ১৮ মে অভিযুক্ত আফতাব ও শ্রদ্ধার ঝগড়া চরমে পৌঁছয়। এই ঝগড়ার সময় শ্রদ্ধা চেঁচামেচি শুরু করেন। প্রতিবেশীরা যাতে তাঁদের ঝগড়া না শুনে ফেলে, সেই ভয়ে শ্রদ্ধাকে চুপ করাতে যায় আফতাব। শ্রদ্ধার মুখ চেপে ধরে। আর এতেই মৃত্যু হয় তরুণীর। কিন্তু এরপর এই কাণ্ড লুকোতে যা করল আফতাব তা আরও হাড় হিম করে দেওয়ার মত ঘটনা। এরপরেই একটি ফ্রিজ কিনে আনে ও শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরোয় কেটে ফ্রিজারে রেখে দেয়। শুধু তাই নয়, গন্ধ যাতে না বের হয় তার জন্য ব্যবহার করা হত আগরবাতি, ধূপ এবং রুম ফ্রেশনার (Delhi-Mehrauli Murder)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তার পুরো একদিন লেগেছে শ্রদ্ধার দেহকে টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যাগে ভরতে। আর এসব তার বাথরুমে করে। আবার তার ঘরের মেঝেও অনেকবার মুছেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুন করার ২-৩ মাস পর্যন্ত তার কেটে রাখা মাথা রেখে দেয় ও তারপর ফেলে দেয়। রাত দুটো নাগাদ জঙ্গলে যেত। ঘণ্টাদুয়েক পরে ফিরে আসত। প্রায় ২০ দিন ধরে সেই কাজ করেছিল সে (Delhi-Mehrauli Murder)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours