Adenovirus: ‘অ্যাডিনো ৭’ এবং ‘অ্যাডিনো ৩’-এর মিলিত রূপ ‘রিকম্বিন্যান্ট ভাইরাস’! এর ফলেই কী ভয়াবহ পরিস্থিতি?

Adenovirus: পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ।
Adenovirus
Adenovirus

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: করোনার পর এবারে নতুন করে ভয় ধরাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। বিশেষত শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। কলকাতা সহ একাধিক জেলাতেও অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ অতিরিক্ত মাত্রায় ছড়াচ্ছে। এই ভাইরাস মূলত সর্দি-কাশির জন্য দায়ী, কিন্তু এখন করোনার মতই রূপ বদলে আরও বেশি সংক্রামক ও ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে। এখনও অবধি রাজ্যে তিনশোর বেশি আক্রান্ত, হাসপাতালে ভর্তি বহু। তবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কী কারণ তা নিয়েই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘রিকম্বিন্যান্ট ভাইরাস’

জানা যাচ্ছে, মিউটেশন হয়ে অ্যাডিনো ভাইরাসের নতুন কোনও প্রজাতি তৈরি হয়নি ঠিকই, কিন্তু দু’টি স্ট্রেন বা সেরোটাইপের মিশ্রণের ফলে তৈরি হয়েছে ‘রিকম্বিন্যান্ট ভাইরাস’। এ বারের ভয়াবহ পরিস্থিতির নেপথ্যে এই ভাইরাস কতটা দায়ী, তা জানার চেষ্টা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, পরিচিত অ্যাডিনো ভাইরাস কেন এতটা ভোগাচ্ছে, তা জানতে ৪০টির মত নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছিল নাইসেড। সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে ভাইরাসের দু’টি স্ট্রেন ‘অ্যাডিনো ৭’ এবং ‘অ্যাডিনো ৩’-এর মিশে থাকার বিষয়টি। নাইসেডের অধিকর্তা শান্তা দত্ত বলেন, “আগেও রিকম্বিন্যান্ট ভাইরাস মিলেছে। কিন্তু তখন সংখ্যায় কম থাকলেও এ বার অধিকাংশই তাতে আক্রান্ত। এই রিকম্বিন্যান্ট ভাইরাসের মধ্যে অ্যাডিনো-৭ সেরোটাইপ আগেও ছিল। এর সঙ্গে মিশেছে অন্য সেরোটাইপ।” তিনি জানান, দু’টি সেরোটাইপ মিশ্রিত ভাইরাস কতটা ভয়াবহ, পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

এক ভাইরোলজিস্টের মতে, মানুষের অ্যাডিনো ভাইরাসের সাতটি প্রজাতি রয়েছে। যার মধ্যে ৬৮ প্রকার (সেরোটাইপ বা স্ট্রেন) অ্যাডিনো ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে। আরও জানা গিয়েছে, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ মূলত ঘটায় অ্যাডিনো ১, ২, ৩, ৫, ৬ ও ৭ সেরোটাইপ। এছাড়াও অ্যাডিনোভাইরাস শ্বাসনালি তথা ফুসফুসের সংক্রমণ, প্রদাহ ছাড়াও পরিপাকতন্ত্র, মূত্রনালি তথা রেচনতন্ত্র এবং চোখের কনজাংটিভা-র সংক্রমণ ও প্রদাহেও পটু।

আরও পড়ুন: খুদেদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে অ্যাডিনো-সংক্রমণ! হাসপাতাল পরিদর্শনে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন

বিশেষ নির্দেশিকা জারি পুরসভার

এই নতুন ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হলে গতকাল কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের নেতৃত্বে বিশেষ বৈঠক করা হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। কলকাতা পুরসভার ১৪৪ টি ওয়ার্ডে যে সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে এবং সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সব-কটিতেই অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে বিশেষ নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে।

কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, কলকাতায় বাড়িতে বাড়িতে বাচ্চাদের জ্বর কেমন রয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করবেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা। জ্বর-সর্দিকাশি হলেই শিশুদের হাসপাতালে বা  নার্সিং হোমে ভর্তি করতে বলা হয়েছে। শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যায় না, তাই কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে কোনও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। যাদের সমস্যা বেশি রয়েছে, তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের কাছে যাতে বড়রা দূরে থাকেন বা মাস্ক পরেন, তাদের সংস্পর্শে থাকেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পরিষদ স্বাস্থ্য অতীন ঘোষ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles