Covid 19: কেন্দ্রের বরাদ্দের বছর পার, এখনও শেষ হল না রাজ্যের করোনা প্রস্তুতি

রাজ্যের পরিকাঠামো নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, বড়দিনের উৎসবে কতটা বিপদ বাড়ল...?
Covid_Vaccine
Covid_Vaccine

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: করোনার (Covid 19) চোখরাঙানি আবার শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রী রাজ্যগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বড়দিনের উৎসব আর আলোর রোশনাইয়ে ফিকে হয়ে যাচ্ছে মানুষের মহামারির গুরুত্ব! বড়দিনের উৎসবে সেজে উঠেছে কলকাতা। কিন্তু কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলো কি করোনা মোকাবিলায় সবরকমভাবে সেজে উঠতে পেরেছে?

করোনার (Covid 19) দ্বিতীয় ঢেউ দেখিয়েছিল, হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট কতখানি জরুরি। কৃত্রিম অক্সিজেন ছিল একমাত্র হাতিয়ার। রোগীকে সুস্থ করতে কৃত্রিম অক্সিজেনের ব্যাপক চাহিদা দেখা দিয়েছিল। তাই কেন্দ্রের তরফে হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেন্দ্র সরকার সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির জন্য আলাদা আর্থিক বরাদ্দ ও করে।

কাজ কতখানি এগিয়েছে?

রাজ্যের সব হাসপাতাল তো দূর অস্ত। কলকাতার (Covid 19) সব সরকারি হাসপাতালেও পর্যাপ্ত কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহ থাকে না। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃত্রিম অক্সিজেনের জন্য এখনও সরকারি হাসপাতালের ভরসা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। সেখানেই রয়েছে অক্সিজেন প্লান্ট। কিন্তু বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল হলো সংক্রামক রোগের চিকিৎসার হাসপাতাল। তাই ডেঙ্গি হোক কিংবা করোনা, সবচেয়ে বেশি রোগীর চাপ থাকে এই বেলেঘাটা আইডি-তেই। তাই নিজের হাসপাতালের রোগীদের চাহিদা মিটিয়ে, আরেক হাসপাতালে কৃত্রিম অক্সিজেন পাঠানো বেশ কঠিন হয়ে যায়।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, কাজ অনেকটাই বাস্তবায়িত হলেও চাহিদা পূরণের জন্য এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়নি। এনআরএস, এসএসকেএম কিংবা আরজিকরের মতো প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলো এখনও কৃত্রিম অক্সিজেন তৈরিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি। 
বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, যদি ফের করোনা (Covid 19) পরিস্থিতি ২০২০-২১ সালের মতো হয়, তাহলে রাজ্যে আরও ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে। 

চিকিৎসকদের আশঙ্কা, রাজ্যে সচেতনতা একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। চিনে করোনার (Covid 19) প্রকোপ বাড়তেই কেন্দ্র সতর্ক করেছে। মাস্ক ব্যবহার অপরিহার্য ঘোষণা করেছে। কিন্তু কলকাতায় মাস্ক উধাও। অতিরিক্ত জনসমাগমেও রাশ টানার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের পরামর্শকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য। বড়দিনের উৎসব হচ্ছে স্বাভাবিক ছন্দেই। পার্ক স্ট্রিট থেকে ব্যান্ডেল চার্চ, গত দুদিন শহর থেকে জেলা, সর্বত্র উপচে পড়া ভিড়। কোথাও মাস্ক পরার রেওয়াজ নেই। প্রশাসনের তরফেও কোথাও নজরদারি নেই। তাই করোনা সংক্রমণ বাড়বে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের। 

সংক্রমণ বাড়লে রাজ্য সামাল দিতে পারবে তো?

স্বাস্থ্য কর্তারা অবশ্য বলছেন, ইতিমধ্যেই সরকারি হাসপাতালগুলোতে বেড বাড়ানো হয়েছে। আলাদা করে করোনার জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশ ও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের টিকা ঘাটতি অন্যতম সমস্যা বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। তারা জানাচ্ছেন, করোনার চতুর্থ ডোজ নেওয়ার প্রবণতা অধিকাংশ মানুষের নেই। তবে, চাহিদা তৈরি হলেও জোগান দেওয়ার ক্ষমতা আপাতত রাজ্যের নেই। বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কোভ্যাকসিন ছাড়া আর কোনও করোনার (Covid 19) টিকা তাদের কাছে মজুত নেই। ফলে, টিকা না পেলে করোনা প্রতিরোধ আরও কঠিন হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: "মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠকিয়েছে", শীজানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তুনিশার মা

আপাতত উৎসবে মজে থাকা বাঙালির আগামী বছর কেমন কাটবে সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে করোনা (Covid 19) প্রস্তুতি ছিটেফোঁটাও নেই। সময় মতো কেন্দ্রকে টিকার প্রয়োজনীয়তাও জানাতে পারেনি রাজ্য। তাই সবরকম টিকা ও ভাণ্ডারে নেই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জনসচেতনতাই রেহাই দিতে পারে। মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবহার আর অকারণ ভিড় এড়িয়ে চলাই করোনার ঢেউ আটকাতে পারে। কিন্তু বড়দিনের জনপ্লাবন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles