Asthma: দ্বিগুণ হারে বাড়ছে হাঁপানি! ভারতীয়দের ভোগান্তি কোথায়? কীভাবে সাবধান হবেন? 

asthma is increasing at a double rate! how Indians suffering? How to be careful?

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বায়ুদূষণ। একাধিক স্বাস্থ্য সঙ্কটের কারণ হিসেবে বায়ুদূষণকেই দায়ী করছেন চিকিৎসক মহল। ভারতেও বায়ুদূষণের জেরে নানান স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আর সেই তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে হাঁপানি (Asthma)। দেশ জুড়ে হাঁপানির দাপট বাড়ছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষার তথ্যে উদ্বিগ্ন দেশের স্বাস্থ্য মহল।

কী বলছে সাম্প্রতিক রিপোর্ট?

সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশজুড়ে হাঁপানিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের প্রায় ২৮ শতাংশ মানুষ হাঁপানির জেরে স্বাভাবিক সুস্থ জীবন যাপন করতে পারেন না। এই সংখ্যা বিশ্বের মোট হাঁপানি আক্রান্তের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তার পাশপাশি মৃত্যুর পরিসংখ্যানও বেশ উদ্বেগজনক। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ দেশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা গত কয়েক বছরে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

কেন ভারতে হাঁপানির দাপট বাড়ছে? (Asthma)

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাঁপানির ভোগান্তি বাড়ার অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। তাঁরা জানাচ্ছেন, কলকাতা, দিল্লি সহ দেশের একাধিক বড় শহরে বছরের বেশিরভাগ সময় বায়ুদূষণ মারাত্মক আকারে থাকে। কার্বন মনোক্সাইড সহ একাধিক বিষাক্ত উপাদানের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি থাকে। এর ফলেই ফুসফুসের রোগ দেখা দিচ্ছে। জনসচেতনতার অভাবকেই সবচেয়ে বেশি দায়ী করছেন‌ বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, দীপাবলি কিংবা বিবাহ অনুষ্ঠান, যে কোনও আনন্দ উৎসবেই নানান ধরনের আতসবাজি পোড়ানোর অভ্যাস বাড়ছে‌। এর ফলে বায়ুদূষণের মাত্রা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
বায়ুদূষণের পাশাপাশি প্রতিদিনের নানান অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস হাঁপানির দাপট বাড়িয়ে তুলেছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, কম বয়সি ভারতীয়দের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বাড়ছে। এর ফলে ফুসফুসের রোগের ঝুঁকিও বাড়ছে‌। ধুমপানের পাশপাশি মদ‌পানের আসক্তি হাঁপানির (Asthma) সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই মনে করছেন মদ্যপান যে কোনও উদযাপনের অংশ।‌ নিয়মিত মদ্যপান অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। এতে লিভারের পাশপাশি ফুসফুস এবং শ্বাসনালীরও ক্ষতি করে। তাই হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ে।
এর পাশাপাশি, তরুণ প্রজন্মের একাংশ নানান অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসেও অভ্যস্থ হয়ে পড়ছেন। নানা রকমের রাসায়নিক দেওয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার নিয়মিত খাওয়ার জেরে ফুসফুসের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ফলে হাঁপানির ঝুঁকিও বাড়ছে।
শিশুদের হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ভিটামিনের অভাব। এমনটাই জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশুদের একাংশ নিয়মিত সবুজ সবজি খাচ্ছে না।‌ আবার রোদে বেরনোর অভ্যাসও তেমন তৈরি হচ্ছে না। এর ফলে শরীরে ভিটামিন ডি সহ একাধিক ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে হাঁপানির ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে।

হাঁপানির ঝুঁকি কমাতে কোন ঘরোয়া উপাদানে ভরসা বিশেষজ্ঞ মহলের?

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাঁপানির ভোগান্তি এড়াতে সচেতনতা জরুরি। ধূমপান কিংবা মদ্যপানের মতো অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সে সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এর পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের সময়ে কিংবা দীপাবলির মতো উৎসবের সময়ে, যখন বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন বাইরে থাকলে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস তৈরি করতে হবে। এতে যে কোনও বায়ুঘটিত সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে।
তবে এর পাশপাশি নিয়মিত কিছু খাবার খেলে হাঁপানির মতো অসুখের ভোগান্তি কমতে পারে বলেই মনে করছেন‌ চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া জরুরি। যে কোনও ধরনের লেবু, কিউই জাতীয় ফল নিয়মিত খেলে শরীরে ভিটামিন সি-র জোগান‌ বজায় থাকে। এতে ফুসফুস ও শ্বাসনালী সুস্থ থাকে। ফলে হাঁপানির (Asthma) ঝুঁকিও কমে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে তোলে। তাই এই নিয়মিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেলে হাঁপানির ঝুঁকি কমে। চিকিৎসকদের একাংশের পরামর্শ, আপেল, পেয়ারা, পালং শাকের মতো খাবার প্রতিদিনের মেনুতে রাখলে হাঁপানি মোকাবিলা সহজ হবে।
মাছে থাকে ফসফরাস, পটাশিয়াম, আয়রন। এই উপাদানগুলো ফুসফুস সুস্থ রাখতে বিশেষ সাহায্য করে। তাই নিয়মিত মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
এছাড়া, রুটি, নাশপাতি, বাদাম জাতীয় খাবার নিয়মিত খেলে দেহে ফাইবারের জোগান‌ ভালোভাবে হয়। এর ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। হাঁপানির ঝুঁকি কমে।
হাঁপানির অসুখ মোকাবিলায় একাধিক ভারতীয় মশলা বিশেষ সাহায্য করে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, হলুদ, রসুন, দারুচিনি, এলাচ এবং লবঙ্গের মতো মশলা নিয়মিত রান্নায় ব্যবহার করলে যে কোনও ফুসফুসের অসুখের ঝুঁকি কমে। এই ধরনের মশলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর। পাশাপাশি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। এর ফলে যে কোনও সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে পারে। ফুসফুস সুস্থ থাকে।

 

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share