মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্বামী ও আড়াই বছরের শিশু কন্যার সামনেই মহিলাকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হল। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় রিয়া কুমারী নামে ওই মহিলাকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবার ভোর ৬টা নাগাদ বাগনানের রাজাপুর থানার মহিষরেখা ব্রিজের কাছে ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার গতিপ্রকৃতি
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে আড়াই বছরের মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে রাঁচি থেকে গাড়িতে করে কলকাতা আসছিলেন প্রকাশ কুমার নামের এক ব্যক্তি। প্রকাশ নিজেই রাঁচি থেকে গাড়ি চালিয়ে আসছিলেন। প্রকৃতির ডাকে মহিষরেখা ব্রিজের কাছে গাড়ি দাঁড় করিয়েছিলেন প্রকাশ। সেই সময় তাঁদের ঘিরে ধরে তিন জন দুষ্কৃতী। তিন জনেই সশস্ত্র ছিল। প্রকাশ এবং তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। ছিনতাইয়ে বাধা দেন প্রকাশ। গাড়ি থেকে নেমে আসেন প্রকাশের স্ত্রী রিয়াও। সেই সময় রিয়াকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। কানের তলায় গুলি লাগে রিয়ার। ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন রিয়া। গুলি চালিয়ে দুষ্কৃতীরা ছিনতাই করে পালিয়ে যায় বলে দাবি প্রকাশের। গাড়ির পিছনের সিটে শিশু কন্যাকে রেখে, রক্তাক্ত স্ত্রীকে তিনি গাড়ির ডিকিতে ঢোকান।
আরও পড়ুন: পুলিশি তদন্তের মুখে খোদ পুলিশ-ই! উত্তরবঙ্গে তিন অফিসারের বাড়িতে তল্লাশি
প্রকাশের বয়ান অনুযায়ী, তাঁকে সে সময়ে সাহায্য করার কেউ ছিল না। রক্তাক্ত অবস্থায় পিছনের সিটেও স্ত্রীকে রাখতে পারেননি। কারণ তাঁর শিশু ছিল। গাড়ির ডিকিতে স্ত্রীকে ঢুকিয়ে কোনওমতে গাড়ি চালিয়ে কিছুদূরে যান প্রকাশ। পীরতলার কাছে রাস্তার ওপর থাকা একটি চায়ের দোকানে সাহায্য চাইতেই স্থানীয়রা তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে। স্থানীয় তরফে রাজাপুর থানার পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়। আহত মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়ে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য় ছড়ায়। যেভাবে ভোর বেলা জাতীয় সড়কের উপরে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশও। নিহত মহিলার স্বামীর বয়ান খতিয়ে দেখতে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন হাওড়া জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনও সিসিটিভি ফুটেজ আছে কি না, তাও খোঁজ করে দেখা হচ্ছে। রিয়াকে খুনের নেপথ্যে শুধুমাত্র ছিনতাইয়ে উদ্দেশ্য ছিল, এই তত্ত্বে খটকা লাগছে পুলিশের। যেখানে গাড়ি থামানো হয়, যে ভাবে প্রকাশ নেমে যান গাড়ি থেকে, তাও প্রশ্ন তুলছে। সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনায় একমাত্র সাক্ষী প্রকাশ। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি বলে মত পুলিশের।
+ There are no comments
Add yours