Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Kali Puja 2024: কেউ মায়ের হাজারটি হাত গুনতে পারেননি! জানুন শিবপুরের হাজার হাত কালীর মাহাত্ম্য

    Kali Puja 2024: কেউ মায়ের হাজারটি হাত গুনতে পারেননি! জানুন শিবপুরের হাজার হাত কালীর মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ ভারতে বিশেষ জনপ্রিয় হাজার হাত কালী। হাওড়ার শিবপুরে হাজার হাত কালীতলায় (Kali Puja 2024) প্রায় ২৫ ফুট উঁচু মায়ের এই মূর্তি রয়েছে। শিবপুর ওলাবিবিতলায় হাজার-হাত কালীর মন্দির রয়েছে। শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরে প্রতি বছর ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয়। দেবীর নাম থেকেই এলাকার নাম হয়েছে হাজারহাত কালীতলা। শোনা যায়, এখনও পর্যন্ত কেউ মায়ের হাজারটি হাত গুনতে পারেননি। গোনা বারণও রয়েছে।

    মন্দির তৈরির ইতিহাস

    কলকাতার চোরবাগানের আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই মন্দির গড়ে ওঠে। শিবপুরে হাজার হাত কালী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা নিয়েও অনেক ইতিহাস রয়েছে। প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, স্থানীয় মুখোপাধ্যায় বাড়ির ছেলে তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে মা চণ্ডী স্বপ্নাদেশ দিয়ে কালীর এই রূপ দেখান এবং মন্দির তৈরির আদেশ দেন। লোকে তাঁকে তান্ত্রিক আশুতোষ তর্করত্ন নামেও চেনেন। আশুতোষ দেশের বিভিন্ন তীর্থস্থান ঘুরে বেড়াতেন। পুজোপাঠ, ধ্যান, সাধনা নিয়ে থাকতেন তিনি। এক বার স্বপ্নে কালীর এই হাজার-হাতের রূপ দেখতে পান আশুতোষ। ওলাবিবিতলায় যেখানে আজ এই মন্দির গড়ে উঠেছে, সেই জায়গাটিরও স্বপ্ন দেখেন। সেই স্বপ্নাদেশ মতো মন্দির গড়ার জন্য ১২৫ টাকায় হালদার পরিবারের কাছ থেকে ৩ কাঠা জায়গা কিনে মাটির মন্দির তৈরি করেন আশুতোষ। ১৮৭০ সালে সেই মন্দির গড়ে ওঠে। কুমোরটুলির প্রিয়নাথ পাল বিগ্রহ বানান। চণ্ডীপুরাণ অনুযায়ী, অসুর বধের সময়ে দেবী দুর্গা অনেক রূপ ধারণ করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম তাঁর হাজার-হাতের রূপ। চণ্ডীপুরাণের সেই বর্ণনা মতো হাজার-হাতের কালী মূর্তি তৈরি করা হয়।

    আরও পড়ুন: মা তাঁর ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়েছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপাকে! জানুন তারাপীঠের মাহাত্ম্যকথা

    মা কাউকে ফেরান না

    প্রাচীন প্রথা মেনে আজও মুখোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা এখানে পুজো (Kali Puja 2024) করে আসছেন। মায়ের পুজো ও মঙ্গলারতিতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয় সেজন্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মায়ের মন্দিরের নামে বেশ কিছু সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন। সেই সম্পত্তি থেকেই আয় যা আসে, তা থেকে মায়ের পুজো করা হয় ও মন্দিরের সংস্কার করা হয়। কালীপুজোর দিনে পুণ্যার্থীদের ভিড় এতটাই হয় যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করতে হয়। বিশ্বাস, মায়ের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সেটি পূর্ণ হয়। শোনা যায়, প্রায় ৬০ বছর আগে শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের এক শুক্রবার দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা কৃষ্ণা সুব্রহ্মণ্যম এই মন্দিরে এসেছিলেন। তখন তিনি দৃষ্টিহীন। হাজার-হাত কালীর কাছে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রার্থনা করেন। এক বছরের মধ্যে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পান। তার পর থেকে তিনি মায়ের মাহাত্ম্য প্রচার শুরু করেন দক্ষিণ ভারত জুড়ে। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: ‘শ্যামা মা কি আমার কালো রে’! কখনও তিনি শ্যামবর্ণা, কোথাও তাঁর গায়ের রং নীল!

    Kali Puja 2024: ‘শ্যামা মা কি আমার কালো রে’! কখনও তিনি শ্যামবর্ণা, কোথাও তাঁর গায়ের রং নীল!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রামপ্রসাদের কন্যা, রামকৃষ্ণের মা ভবতারিণী, সাধক কমলাকান্তের সাধনার ধন। তিনি দশমহাবিদ্যার প্রথম দেবী। দেবী কালিকা। বাংলা জুড়ে কালীপুজোর মাহাত্ম্য অনেক। শ্মশানবাসিনী থেকে ঘরে ঘরে পূজিত হওয়ার রয়েছে নানা আখ্যান। কড়া নিয়ম মেনে আরাধনা করা হয় দেবী কালিকার। কোথাও তিনি পূজিত হন চামুণ্ডা মতে, তো কোথাও আবার তন্ত্র মতে। কোথাও কোথাও দেবীকে কেন্দ্র করেই চলে তন্ত্র সাধনা। কোথাও তিনি শ্যামবর্ণা, কোথাও তাঁর গায়ের রং নীল। মাকে ১১ রূপে বিনাশকারী শক্তি হিসেবে আরাধনা করে থাকেন ভক্তরা।

    মায়ের নানা রূপের কথা

    দক্ষিণা কালী: বাংলায় সবচেয়ে বেশি আরাধনা হয় দক্ষিণা কালীর। কালীর এই রূপ জায়গা ভেদে শ্যামাকালী নামেও পরিচিত। সারা শরীর নীল বর্ণের, তাঁর মূর্তি ক্রুদ্ধ, ত্রিনয়নী, মুক্তকেশ, চারটি হাত এবং গলায় মুণ্ডমালা। বাম দিকের দুই হাতে নরমুণ্ড এবং খড়গ। ডান হাতে থাকে আশীর্বাদ এবং অভয় মুদ্রা। দেবী মহাদেবের উপরে দণ্ডায়মানা।

    শ্মশান কালী: মূলত প্রাচীন কালে ডাকাতেরা দেবীর এই রূপের আরাধনা করত। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দেবী চৌধুরানী’ উপন্যাসে এই দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। গৃহস্থের বাড়িতে কালীর এই রূপের পুজো হয় না একেবারেই। মূলত শ্মশানেই তাঁর আরাধনা।

    সিদ্ধ কালী: কালীপুজোর দিনে বহু জায়গায় সিদ্ধ কালীর আরাধনা করা হয়। কালীর এই রূপ ভুবনেশ্বরী নামেও পরিচিত। গৃহস্থের বাড়িতে কালীর এই রূপ পুজো হয় না। কালী মায়ের সাধকেরা এই পুজো করে থাকেন। সিদ্ধকালীর দু’টি হাত, শরীর গয়নায় আবৃত। দেবীর ডান পা শিবের বুকে এবং বাঁ পা থাকে তাঁর দু’পায়ের মাঝখানে। এই দেবী রক্ত নয়, বরং অমৃত পানে সন্তুষ্ট থাকেন।

    ফলহারিণী কালী: এটি বাৎসরিক পুজো। মূলত, গৃহস্থ বাড়িতে শান্তি বজায় রাখতে কালীর এই রূপকে আরাধনা করা হয়।

    মহা কালী: এই দেবীর দশটি মাথার মতো দশটি হাত এবং দশটি পা থাকে। প্রতিমার সঙ্গে শিবের কোনও অস্তিত্ব নেই। দশ হাতেই রয়েছে অস্ত্র। দেবীর পায়ের তলায় অসুরের কাটা মুণ্ড থাকে। ভূত চতুর্দশীর দুপুরে এমনই দশমাথা মহা কালীর সাধনা করা হয়। তবে, গৃহস্থ বাড়িতে এই পুজো করা হয় না।

    কাম্যা কালী: বিশেষ প্রার্থনায় কালীর এই রূপ আরাধনা করা হয়। পুজোর নিয়মবিধি দক্ষিণা কালীর মতোই। সাধারণত, অষ্টমী, চতুর্দশী অমাবস্যা পূর্ণিমা ও সংক্রান্তির মতো তিথিতেই কাম্যা কালীর আরাধনা করা হয়।

    আরও পড়ুন: দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর সামনে নরেন্দ্রনাথ চাইলেন বিবেক, বৈরাগ্য, জ্ঞান এবং ভক্তি!

    গুহ্যকালী: এই দেবীর গায়ের রং গাঢ় কালো। গলায় ৫০টি নরমুন্ডের হার এবং কানে শবদেহের আকারের অলঙ্কার থাকে। শাস্ত্রে কালীর এই রূপকে ভয়ঙ্করী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

    ভদ্রকালী: কালীর এই রূপ সাধারণত বারোয়ারি বিভিন্ন মন্দিরে পুজো করা হয়। ভদ্রকালী নামে ভদ্র শব্দটি ব্যবহার হয়েছে কল্যাণ অর্থে এবং কালী শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে জীবনের শেষ সময় বোঝাতে।

    চামুণ্ডা কালী: চামুণ্ডা হলেন আদিশক্তি। আবার তিনিই ভগবতী দুর্গা। চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে হত্যা করে তিনি ‘চামুণ্ডা’ নামে পরিচিত হন। পার্বতী, চণ্ডী, দুর্গা, চামুণ্ডা ও কালী এক ও অভিন্ন রূপ।

    শ্রী কালী: দেবী দুর্গা বা পার্বতীর একটি রূপ শ্রী কালী। অনেকে মনে করেন এই রূপে দেবী দারুক নামে অসুরকে বধ করেছিলেন। পুরাণ অনুয়ায়ী, কালীর এই রূপ মহাদেবের কণ্ঠে প্রবেশ করে তাঁর কণ্ঠের বিষে কৃষ্ণবর্ণা হন এবং পরবর্তীকালে মহাদেব শিশু রূপে স্তন্যপান করে দেবীর শরীর থেকে বিষ গ্রহণ করেন।

    রক্ষাকালী: দক্ষিণা কালীর একটি রূপ হল রক্ষাকালী। কথিত, প্রাচীন কালে লোকালয়ের রক্ষার জন্য এই দেবীর পুজো করা হত। এই দেবীর বাহন সিংহ।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: ঠনঠনিয়া কালীমন্দিরে ‘জাগ্রত’ দেবীমূর্তির সামনে বসে গান গাইতেন কিশোর গদাধর!

    Kali Puja 2024: ঠনঠনিয়া কালীমন্দিরে ‘জাগ্রত’ দেবীমূর্তির সামনে বসে গান গাইতেন কিশোর গদাধর!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বৃহৎ বঙ্গ হল শক্তি সাধনার প্রধান কেন্দ্র। দেবী পার্বতীর ৫১ পীঠের মধ্যে অধিকাংশ বঙ্গের ভূ-মণ্ডলে পড়েছে। শাক্তির আরাধনার সঙ্গে তন্ত্র সাধনা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। দেবী দুর্গার আরেক রুদ্র রূপ হল মা কালী। মায়ের শাক্ত গীতিকা বাংলার ঘরে ঘরে পড়া হয় এবং গান গাওয়া হয়। দেবী কালীকথার মধ্যে নানা লৌকিক এবং অলৌকিক আধ্যাত্মিক বিশ্বাস-আস্থার প্রসঙ্গ জড়িয়ে রয়েছে এক এক জায়গায়। সাধারণত কালীপুজো সারা বছর ধরেই বিভিন্ন অমাবস্যায় অনুষ্ঠিত হয়। তবে কার্তিক মাসের অমাবস্যায় কালীপুজো (Kali Puja 2024) সবচেয়ে প্রসিদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম হল ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি (Thanthaniya Kalibari)। ভক্তদের বিশ্বাস, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ হয় বলেও বিশ্বাস। এই কালীমন্দিরের অবস্থান উত্তর কলকাতার কলেজ স্ট্রিট থেকে একটু দূরেই বিধান সরণিতে।

    কীভাবে নাম হল ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি (Kali Puja 2024)? 

    নিশ্চয়ই পাঠকের প্রশ্ন রয়েছে, কীভাবে এই মন্দিরের নাম হল ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি? জনশ্রুতি রয়েছে, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যখন কেউ যেতেন, তখন দূর থেকেও শোনা যেত এই কালী মন্দিরের (Kali Puja 2023) ঘণ্টাধ্বনি। ঠনঠন আওয়াজ থেকেই এলাকার নাম হয় ঠনঠনিয়া। উত্তর কলকাতার এই কালীপুজোতে (Thanthaniya Kalibari) দেবী পূজিতা হন সিদ্ধেশ্বরী রূপে। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ইতিহাসও। কথিত আছে, কামারপুকুর থেকে যখন কিশোর গদাধর চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় আসেন, তখন মন্দিরের কাছেই ঝামাপুকুরে থাকতেন তিনি। ঠনঠনিয়া কালীমন্দিরে দেবী মূর্তির সামনে বসে গানও গাইতেন গদাধর। দক্ষিণেশ্বেরে গিয়ে রামকৃষ্ণ পরমহংস হওয়ার পরেও বেশ কয়েকবার এখানে এসেছেন তিনি। আবার গবেষকদের মতে, সাধক রামপ্রসাদও জড়িত ছিলেন এই সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের সঙ্গে।

    কালীমন্দিরের ইতিহাস

    কথিত আছে, কলকাতার সুতানুটি গ্রাম একেবারে জঙ্গল অধ্যুষিত ছিল। নদীর পাশেই অরণ্যবেষ্টিত এক শ্মশানে তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী তৈরি করেন সিদ্ধেশ্বরী কালী মূর্তি, যা বর্তমানে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির (Kali Puja 2024) অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সেটা ছিল আনুমানিক ১৭০৩ সাল অর্থাৎ আজ থেকে ৩২০ বছর আগে। তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারীর কালীপুজোর প্রায় ১০০ বছর পরে জনৈক শঙ্কর ঘোষ নামের এক ব্যবসায়ী সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তির মন্দিরটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে শঙ্কর ঘোষের বংশধররাই এখন এই মন্দিরের সেবায়েত রয়েছেন।

    ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে মূর্তি নির্মাণ হয়

    জনশ্রুতি অনুসারে আরও জানা গিয়েছে, ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে জনৈক তান্ত্রিক মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি গড়েন। ১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দে শঙ্কর ঘোষ নামে জনৈক ধনাঢ্য ব্যক্তি বর্তমান কালীমন্দির (Kali Puja 2024) ও পুষ্পেশ্বর শিবের আটচালা মন্দির নির্মাণ করেন। নিত্যপূজার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন। এখানে মায়ের মূর্তি মাটির, প্রতি বছর মূর্তি সংস্কার করা হয়। ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে (Thanthaniya Kalibari) জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণীর পুজো, কার্তিক অমবস্যায় আদিকালীর পুজো ও মাঘ মাসে রটন্তী কালীর পুজো হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 178: “সংসারী জীব, এরা যেমন গুটিপোকা, মনে করলে কেটে বেরিয়ে আসতে পারে”

    Ramakrishna 178: “সংসারী জীব, এরা যেমন গুটিপোকা, মনে করলে কেটে বেরিয়ে আসতে পারে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামলাল প্রভৃতির গান ও শ্রীরামকৃষ্ণের সমাধি

    “বদ্ধজীব—সংসারী জীব, এরা যেমন গুটিপোকা। মনে করলে কেটে বেরিয়ে আসতে পারে; কিন্তু নিজে ঘর বানিয়েছে, ছেড়ে আসতে মায়া হয়। শেষে মৃত্যু (Kathamrita)।

    “যারা মুক্তজীব (Ramakrishna), তারা কামিনী-কাঞ্চনের বশ নয়। কোন কোন গুটিপোকা অত যত্নের গুটি কেটে বেরিয়ে আসে। সে কিন্তু দু-একটা।

    “মায়াতে ভুলিয়ে রাখে। দু-একজনের জ্ঞান হয়; তারা মায়ার ভেলকিতে ভোলে না; কামিনী-কাঞ্চনের বশ হয় না। আঁতুড়ঘরের ধূলহাঁড়ির খোলা যে পায়ে পরে, তার বাজিকরের ড্যাম্‌ ড্যাম্‌ শব্দের ভেলকি লাগে না। বাজিকর কি করছে সে ঠিক দেখতে (Kathamrita) পায়।

    “সাধনসিদ্ধ আর কৃপাসিদ্ধ। কেউ কেউ অনেক কষ্টে ক্ষেত্রে জল ছেঁচে আনে; আনতে পারলে ফসল হয়। কারু জল ছেঁচতে হল না, বৃষ্টির জলে ভেসে গেল। কষ্ট করে জল আনতে হল না। এই মায়ার হাত থেকে এড়াতে গেলে কষ্ট করে সাধন করতে হয়। কৃপাসিদ্ধের কষ্ট করতে হয় না। সে কিন্তু দু-এক জনা।

    “আর নিত্যসিদ্ধ, এদের জন্মে জন্মে জ্ঞানচৈতন্য হয়ে আছে। যেমন ফোয়ারা বুজে আছে। মিস্ত্রী এটা খুলতে ফোয়ারাটাও খুলে দিলে, আর ফরফর করে জল বেরুতে লাগল! নিত্যসিদ্ধের প্রথম অনুরাগ যখন লোকে দেখে, তখন অবাক্‌ হয়। বলে এত ভক্তি-বৈরাগ্য-প্রেম কোথায় ছিল?”

    ঠাকুর (Ramakrishna) অনুরাগের কথা বলিতেছেন। গোপীদের অনুরাগের কথা। আবার গান হইতে লাগিল। রামলাল গাহিতেছেন:

    নাথ! তিমি সর্বস্ব আমার। প্রাণাধার সারাৎসার;
    নাহি তোমা বিনে কেহ ত্রিভুবনে, বলিবার আপনার ॥
    তুমি সুখ শান্তি, সহায় সম্বল, সম্পদ ঐশ্বর্য, জ্ঞান বুদ্ধি বল,
    তুমি বাসগৃহ, আরামের স্থল, আত্মীয় বন্ধু পরিবার ॥
    তুমি ইহকাল, তুমি পরিত্রাণ, তুমি পরকাল, তুমি স্বর্গধাম,
    তুমি শাস্ত্রবিধি গুরুকল্পতরু, অনন্ত সুখের আধার ॥
    তুমি হে উপায়, তুমি হে উদ্দেশ্য, তুমি স্রষ্টা পাতা তুমি হে উপাস্য,
    দণ্ডদাতা পিতা, স্নেহময়ী মাতা, ভবার্ণবে কর্ণধার (তুমি) ॥

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: সম্প্রীতির মেলবন্ধন! কাঁটাতারের বিভাজন কাটিয়ে কালীপুজোয় হিন্দু-মুসলিম একাকার

    Kali Puja 2024: সম্প্রীতির মেলবন্ধন! কাঁটাতারের বিভাজন কাটিয়ে কালীপুজোয় হিন্দু-মুসলিম একাকার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া হাড়িপুকুর গ্রাম। একেবারে বাংলাদেশের শূন্যরেখা লাগোয়া মন্দিরে কালীপুজো করেন হিলির মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এই কালীপুজো (Kali Puja 2024) ঘিরে সাজো সাজো রব গ্রামে। শুধু গ্রামবাসীরাই নয়, এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সামিল হন সীমান্তে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানরাও। শুধুমাত্র ভারতীয় বা বিএসএফ’রা নয়, সীমান্ত লাগোয়া এই পুজোয় মাতেন বাংলাদেশের মানুষও। এমনকী মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণও করেন তাঁরাই। তবে প্রথম থেকেই রীতি মেনে এই পুজো করেন হিন্দু পুরোহিত। কালীপুজোকে ঘিরে সেজে উঠেছে কাঁটাতারের পাশের গ্রাম হাড়িপুকুর। উৎসবের রেশ হাড়িপুকুর সংলগ্ন বাংলাদেশের গ্রামগুলিতেও। দীপাবলির আলোর এই উৎসবে কার্যত মনের আঁধার দূরে সরিয়ে মিলন উৎসবে মেতে ওঠেন দুই বাংলার মানুষ। দেশভাগের পর থেকেই হাড়িপুকুরের সীমান্তের শূন্যরেখার পিলারের পাশেই দেবী দীর্ঘদিন থেকে পূজিত হয়ে আসছেন। তবে এখানে কালীর থানে ঘটপুজোর প্রচলন আজও অব্যাহত।

    পুজো সারা বছরই করেন হিন্দু পুরোহিত (Kali Puja 2024)

    মূর্তি তুলে পুজো হলেও গ্রামবাসীরা এই কালীর থানকে জাগ্রত বলে মানেন। হাড়িপুকুর গ্রামটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম বলে পরিচিত এবং ওপারে বাংলাদেশের গ্রামগুলিও মুসলিম অধ্যুষিত। হিন্দুদের প্রচলিত রীতি মেনে হাড়িপুকুর গ্রামের এই কালীমাতার থানে পুজো সারা বছরই করেন হিন্দু পুরোহিত। কিন্তু কালীর থান এবং যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ করেন ওই গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ (Hindu-Muslim)। সারা বছরই কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দি এই গ্রামবাসীরা। বাইরের পুজোয় আনন্দ না করতে পারলেও গ্রামের মধ্যে আলোর এই উৎসবে মেতে ওঠেন। কালীপুজোকে ঘিরে আলোর ঝর্ণাধারায় সেজে ওঠে এপারের হাড়িপুকুর গ্রাম এবং ওপারের বাংলাদেশের বাঘমারা গ্রাম। কালীপুজোর পরদিন পুরনো রীতি অনুযায়ী খিচুড়ি ভোগেরও আয়োজন করা হয়। যে ভোগে অংশগ্রহণ করে সবাই।

    খিচুড়ি বিতরণ অনুষ্ঠান

    হাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার পর থেকেই হয়ে আসা এই কালীপুজোর (Kali Puja 2024) কয়েকটি দিন এলাকায় জমজমাট পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিদ্যুতের অভাবে প্রথমে মোমবাতি ও প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর প্রচলন ছিল। কিন্তু বর্তমানে গ্রামে বিদ্যুৎ এসে যাওয়ায় পুজোর কয়েকটি দিনে ছোট ছোট টুনি বাল্বের আলোতে সেজে ওঠে দুই দেশের শূন্যরেখা এলাকা। পুরানো রীতি মেনেই হিন্দুদের দ্বারা এই পুজো চললেও সেখানে অংশ নেন হাড়িপুকুর গ্রামের সমস্ত মুসলিম মানুষ। জাত ভেদাভেদ ও দেশ ভাগাভাগি ভুলে পুজোর দিন ও পুজোর পরের দিন খিচুড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে সামিল হন বাংলাদেশের গ্রামের প্রচুর হিন্দু ও মুসলিম মানুষ।

    সাজো সাজো রব হিলির হাড়িপুকুর গ্রামে (Kali Puja 2024)

    দেশজুড়ে যেখানে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, এরই মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ছে হাড়িপুকুর গ্রাম। এ যেন দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার পরিবেশেও অক্ষুন্ন সেখানকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন। গ্রামের হিন্দু কালীমন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। এখানে এসেই মনে হয় বিদ্রোহী কবি নজরুলের লাইন ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’। আর মাত্র কয়েকদিন তাই এই কালীপুজো ঘিরে সাজো সাজো রব হিলির হাড়িপুকুর গ্রামে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: ভিনদেশি ভক্ত কবিয়ালের নামেই কি পরিচিতি পেয়েছে কলকাতার ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি?

    Kali Puja 2024: ভিনদেশি ভক্ত কবিয়ালের নামেই কি পরিচিতি পেয়েছে কলকাতার ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লোককথা থেকে রূপোলি পর্দায় বার বার উঠে এসেছে এই মন্দিরের কথা। কথিত আছে, এই মন্দিরে বসে গান গাইতেন অ্যান্টনি কবিয়াল। ভিনদেশি ভক্ত কবিয়ালের নামেই পরিচিত পেয়েছে মন্দির। যদিও অনেকে একথা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, ফিরিঙ্গি পাড়ার কাছাকাছি হওয়াতেই নাম হয়েছে ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি (Kali Puja 2024)। নতুবা এই কালীবাড়ি বহু প্রাচীন।

    কোথায়, কবে তৈরি হয় এই মন্দির (Firingi Kalibari)?

    ২৪৪, বিপিন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রিট, ৭০০০১২। বউবাজার থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দিকে যে রাস্তা গিয়েছে, সেই রাস্তার ডান দিকে ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি। এক সময় এই অঞ্চলটি ছিল শ্মশান। হোগলাপাতার একটি ঘরে ছিল শিবের অবস্থান। সামনে ছিল গঙ্গা থেকে আসা একটা খাল। কালীবাড়ির ইতিহাস অনুযায়ী, ১৪৩৭ সনে ভাগীরথী নদীর তীরে জঙ্গলের মধ্যে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল শিব ও কালী বিগ্রহের। মূলত মন্দিরটি প্রথমে ছিল একটি শিবমন্দির। ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির (Firingi Kalibari) সঠিক প্রতিষ্ঠাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। জনশ্রুতি অনুযায়ী, মন্দিরটি ৫০০ বছরের পুরনো।

    কেন নাম ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি (Kali Puja 2024)

    জানা যায়, ১৮২০ থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত এই মন্দিরের পূজারি ছিলেন নিঃসন্তান শ্রীমন্ত পণ্ডিত। কালীমন্দির ও দেবীমূর্তি সর্বপ্রথম কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কেউই তা জানেন না। কথিত আছে, এই শিবমন্দিরে কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি আসতেন। একদিন এখানেই প্রতিষ্ঠিত হল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির সিদ্ধেশ্বরী কালী। পর্তুগিজ অ্যান্টনি মায়ের পুজোর দায়িত্ব দিলেন শ্রীমন্ত পণ্ডিতকে। ১৮৮০ সালে শশীভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৬০ টাকার বিনিময় এই দেবোত্তর সম্পত্তি হাতে পান। সেই থেকে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এখনও এই ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির সেবায়েত। 

    সিদ্ধেশ্বরী মাতৃমূর্তি

    ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি একটি চাঁদনি স্থাপত্যের মন্দির। এই মন্দিরের কালী মূর্তিটি মাটির তৈরি। বিগ্রহটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট। বিগ্রহটি সবসনা। ত্রিনয়নী সুদর্শনা। মন্দির সংলগ্ন শিবের মন্দিরটি আটচালা। কালীমূর্তি ছাড়াও মন্দিরে আছে শীতলা, মনসা, দুর্গা, শিব ও নারায়ণের মূর্তি। সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মূর্তিটি দেখার মতো। চোখে পড়ে দেবীর রুপোর মুকুটটি। ত্রিনয়নে কোনও উগ্রতা নেই। নানা অলংকারে দেবী সজ্জিতা। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন-সব ধর্মের মানুষ দেবীকে প্রণাম করেন, জানান তাঁদের অন্তরের কথা।

    মন্দিরে বিশেষ পুজো (Kali Puja 2024)

    মন্দিরে প্রতি অমাবস্যায় কালীপুজো ও প্রতি পূর্ণিমায় সত্যনারায়ণ পুজো হয়। প্রতিদিন মন্দির রাত ন’টায় বন্ধ হলেও দীপান্বিতা কালীপুজোর (Kali Puja 2024) দিন যতক্ষণ অমাবস্যা থাকবে মন্দির খোলা থাকবে। প্রতি বছর কালীপুজোর আগে মায়ের অঙ্গরাগ হয়। কালীপুজোর দিন মায়ের ভোগে থাকে গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা, দু’রকমের তরকারি, পোলাও, চাটনি, পায়েস। এছাড়া থাকে দই, মিষ্টি। দেবীকে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ। এখনও এখানে পুজো হয় সম্পূর্ণ বৈদিক মতে। একদা পশুবলি হলেও এখন আর তা হয় না। এখন মন্দিরের ছয় শরিক। সেই অনুযায়ী পালা পড়ে। এ বছর যাবতীয় আচার মেনেই কালীপুজো সম্পন্ন হবে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: “কেউ নূপুর পরে দরজা পর্যন্ত এসে চলে যাচ্ছে”, কালীবাড়ি ঘিরে গা ছমছম করা কাহিনি!

    Kali Puja 2024: “কেউ নূপুর পরে দরজা পর্যন্ত এসে চলে যাচ্ছে”, কালীবাড়ি ঘিরে গা ছমছম করা কাহিনি!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৭৬৬ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণেন্দু হোতা মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাচীন সয়দাবাদে শিবমন্দির সহ একটি কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত এই মন্দিরের গর্ভগৃহে কোনও রকম বৈদ্যুতিক আলো জ্বালানো হয় না। এখানে প্রদীপের আলো এবং মোমবাতি জ্বালিয়েই সারা বছর মায়ের পুজো (Kali Puja 2024) হয়। মুর্শিদাবাদ জেলায় চারচালা বৃহত্তম মন্দির বলে এই দয়াময়ী কালীবাড়িকেই মানুষ জানে। কিন্তু এই কৃষ্ণেন্দু হোতা কে? জানা যায়, তিনি কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির নায়েক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন সাধকও। এই মন্দির এবং মায়ের মূর্তি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। দয়াময়ী মন্দিরের (Dayamayee kalibari) সামনের দালানমন্দিরে গ্রহরাজের পুজো হয়। দয়াময়ী মা জাগ্রতা বলে সবাই বিশ্বাস করেন। কৃষ্ণেন্দু হোতার বাড়ি ছিল মায়ের মন্দিরের পিছনে। তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে মায়ের দর্শন পান। শোনা যায়, সে সময় সেখানে মায়ের ছাল রেখে গিয়েছিলেন। তিনি তার পর মাকে এখানে প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে কোনও রকম ঘটে পুজো হয় না। কারণ মা এখানে তাঁর দেহের অংশ ছেড়ে রেখে গিয়েছেন। সে কারণে এখানে মায়ের পুজো হয় দেহে। অমাবস্যার দিন ১২ মাসেই তাঁর পুজো এখানে হয়। বিশেষ আমাবস্যার পুজো হয় কার্তিক মাসে। এই সময় বহু মানুষের সমাগম হয় এই দয়াময়ী কালীবাড়িতে এবং হাজার চার-পাঁচেক লোকের ভোগ রান্না করা হয়।

    জহুরা মায়ের ইচ্ছা (Kali Puja 2024) 

    এ বিষয়ে দয়াময়ী কালীবাড়ির পুরোহিত বলেন, যতক্ষণ মা শিবের উপর দণ্ডায়মান আছেন, ততক্ষণ শক্তি। যেই মা নেমে যাবেন, আর আমাদের শক্তি থাকবে না। এই দয়াময়ী কালীবাড়ির মূর্তি নিয়ে নানান ধরনের ঘটনা উল্লেখিত আছে। কথিত আছে, একবার জহুরা মা এসে সাধনার জন্য জবরদস্তি করেছিলেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল, মায়ের আসনে বসে সাধনা করবেন। কিন্তু আমার দাদু বলেছিলেন, “আপনি অবশ্যই সাধনা করতে পারবেন। কিন্তু তার আগে আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।” কী সেই পরীক্ষা? “আমি একটা মালা ওখানে রেখে দিয়ে আসব। সেই মালাটি কোনও রকম স্পর্শ না করে কারও সহযোগিতা না নিয়ে মায়ের গলায় পরাতে হবে।” এই কথা শোনার পর জহুরা মা বলেন, এটা কখনও সম্ভব? তার উত্তরে তিনি বলেন, সম্ভব এবং তিনি তা করেও দেখিয়েছেন। তাঁর দাবি, দাদু বেশ কয়েকবার মায়ের দর্শন পেয়েছেন।

    নূপুরের শব্দ (Dayamayee kalibari)

    তাঁর মুখ থেকে শোনা যাক তেমনই কিছু ঘটনা। তিনি বলে চলেন, “দুপুরবেলায় বাচ্চারা এখানে খেলতে আসত। সে সময় বন্যা হওয়ার কারণে মন্দিরের নীচের চত্বর থেকে জলে পরিপূর্ণ ছিল।। তারা খেলতে এসে দেখে, মন্দিরের সামনে একজন মাথা নিচু করে পড়ে আছে। তার চুলগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বাচ্চারা ওই দেখে ভয় পেয়ে ছুটে গিয়ে দাদুকে সমস্ত কথা জানায়। তখন দাদু ছুটে এসে দেখে মায়ের সেই রূপ।” এই দয়াময়ী কালীবাড়ির (Kali Puja 2024) মাকে নিয়ে নানান ধরনের ঘটনা আছে। শোনা যাক আরও একটি ঘটনা। তিনি বুলেন, “দাদুর বন্ধু ঠাকুর-দেবতায় বিশ্বাসী ছিলেন না। দাদু ওই বন্ধুকে বলেছিলেন, মন্দিরের এই ঘরে তুই যদি থাকতে পারিস এক রাত, তোকে ৫ টাকা দেওয়া হবে এবং পেট ভর্তি রসগোল্লা খাওয়ানো হবে। এই কথা শুনে সেই বন্ধু ওই ঘরে রাতে থাকার জন্য ঢোকেন। দু-দিন পর সেই বন্ধু বাড়িতে আসেন এবং দাদুকে বলেন, আমি আর জীবনে কোনও দিন মন্দিরে রাতের বেলায় প্রবেশ করব না। কী হয়েছে জানতে চাইলে ওই বন্ধু বলেন, আমি যখনই শুতে যাচ্ছি, তখনই দেখা যাচ্ছে কেউ নূপুর পরে আমার দরজা পর্যন্ত এসে চলে যাচ্ছে। কিন্তু দরজা খুলে দেখা যাচ্ছে, কেউ নাই। এই রকম ঘটনা তিন-চার বার হওয়ার পর ওই বন্ধু নিজেকে সামলাতে না পেরে পাশে কাঠের দরজা টপকে পালিয়ে যান। জানিয়ে দিয়ে যান, তিনি আর জীবনে কোনও দিন এই মন্দিরে থাকবেন না। এই কারণে রাত নটা-দশটার পর এই মন্দিরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।

    আমিষ ভোগ (Kali Puja 2024) 

    তিনি জানান, এখানে আগাগোড়া আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। এখানে মায়ের ভোগে মাছ প্রত্যেক দিন লাগবে। মাছবিহীন কখনও ভোগ হবে না। এখানে আমাবস্যার দিন মায়ের বিশেষ দুটি পছন্দের মাছ বোয়াল এবং শোল ভোগে দেওয়া হয়। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা মন্দির! দেবী চৌধুরানী-ভবানী পাঠকের কালীপুজোর রোমাঞ্চই আলাদা

    Kali Puja 2024: ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা মন্দির! দেবী চৌধুরানী-ভবানী পাঠকের কালীপুজোর রোমাঞ্চই আলাদা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় উপন্যাস থেকেই দেবী চৌধুরানী, ভবানী পাঠকের সঙ্গে বাঙালির পরিচয়। প্রচলিত গল্প অনুযায়ী, এক সময় বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল ভবানী পাঠকের কালীমন্দির (Kali Puja 2024)। সেখানে মাতৃ-আরাধনা করেই তাঁরা যেতেন লক্ষ্যপূরণে। কথিত আছে, ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী যৌথভাবে ডাকাতি করে বিপ্লবীদের দেশসেবায় সাহায্য করতেন। সেই সময়কার অনেক নিদর্শন আজও বর্তমান বাংলার নানা প্রান্তে, লোকাচারে। 

    দুর্গাপুরে ভবানী পাঠকের মন্দির

    দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের অম্বুজা আবাসন এলাকায় এখনও গা-ছমছম জঙ্গলের পরিবেশে অনেক ভক্ত আসেন ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মন্দির দর্শন করতে। তারাপীঠ মন্দিরে মায়ের পুজোর রীতি ও নিয়ম মেনে শ্যামাকালী পুজোর (Kali Puja 2024) আগের নিশিরাতে ভবানী পাঠকের মা কালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয় এখানে। ভূত চতুর্দশীতেই শুরু হয় দেবী আরাধনা। ভবানী পাঠকের মা কালী আজও বন্দে মাতরম্ মন্ত্রে পূজিত হন। অম্বুজা আবাসন কংক্রিটে মোড়া অভিজাত এলাকায় অবস্থিত হলেও সেই সময়কার গা-ছমছমে পরিবেশ আজও বিদ্যমান। দুর্গাপুরের মানুষ আজও এই মন্দিরটিকে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মন্দির নামেই চেনেন। মন্দিরের পুরোহিত সূত্রে জানা যায়, প্রবেশ পথে ও মন্দিরের ভিতরে মায়ের বেদিতে খোদাই করা রয়েছে দেশাত্মবোধক মন্ত্র, ‘ওঁ বন্দে মাতরম্ জয় জয় ভারতবর্ষম’। এছাড়াও এই মন্ত্রের সঙ্গে আরও উচ্চারিত হয় ‘ঐক্যম শরণম্‌ গচ্ছামি’, ‘সত্যম শরণম্‌ গচ্ছামি’, স্বরাজ শরণম্‌ গচ্ছামি’।

    মালদহে দেবী চৌধুরানীর কালী-সাধনা

    প্রাচীন কালীপুজো ঘিরে ভক্তদের ঢল নামে মালদার গোবরজনা কালীবাড়িতে। মনস্কামনা নাকি বিফলে যায় না। তাইতো এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কালীপুজোর দিন শুধুমাত্র বাংলা নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে বহু ভক্ত আসেন মালদহের প্রাচীন গোবরজনা কালীমন্দিরে। লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে এই পুজো নাকি শুরু করেছিলেন ভবানী পাঠক। এক সময় এই অঞ্চল ঘন জঙ্গলে ঘেরা ছিল। মন্দিরের পাশ দিয়েই বয়ছে কালিন্দ্রী নদী। নৌকায় যাওয়ার পথে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠক এখানে নোঙর করেন নৌকা। সেই সময় জঙ্গলে ভবানী পাঠক কালীর পুজো দিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা প্রতি বছর পুজো দিতেন এই জঙ্গলে বিশাল এক বট গাছের নীচে। কয়েক পুরুষ ধরে এই পুজোর দায়িত্ব পালন করে আসছে স্থানীয় চৌধুরী পরিবার।

    আরও পড়ুন: ধনতেরাসে বিধি মেনে পুজোয় অকাল মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তি, লাভ হয় অপার ঐশ্বর্য

    শিলিগুড়িতে ভবানী পাঠকের আরাধ্যা কালী

    বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসে ভবানী পাঠক চরিত্রের বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তবে উপন্যাসেই ইঙ্গিত ছিল, অষ্টাদশ শতাব্দীতে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময়ে ভবানী পাঠক নাকি তিস্তা লাগোয়া বোদাগঞ্জে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই সময়েই তিনি এখনকার শিকারপুর চা বাগানের জমিতে অস্থায়ী কালী মন্দির (Kali Puja 2024) গড়ে পুজো করতেন বলে মানুষের বিশ্বাস। উপন্যাসের সেই চরিত্রের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ নিয়ে যত বিতর্কই থাক না কেন, স্থানীয় বাসিন্দারা ভবানী পাঠকের অস্তিত্বে কেবল বিশ্বাসীই নন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দিরের মূর্তি গড়ে আজও পুজো করেন তাঁরা। মূলত, দেবী চৌধুরানীর মন্দিরের খ্যাতিতেই বিভিন্ন প্রান্তের কালী-গবেষকরা এখানে আসেন। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে এটি বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার কালীমন্দির জাগ্রত ও প্রসিদ্ধ বলেই স্থানীয় ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। এই মন্দিরে রীতিমতো নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বছরে দুবার কালীপুজো হয়। একবার আষাঢ় মাসে, আরেকবার কার্তিক মাসে। ঝোপ-জঙ্গলে ভরা, অরণ্যের মাঝে এই কালীপুজোর আলাদা রোমাঞ্চ রয়েছে ভক্তদের কাছে। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: “শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা…”, কেওড়াতলা মহাশ্মশানে মা পূজিত হন করুণাময়ী রূপে

    Kali Puja 2024: “শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা…”, কেওড়াতলা মহাশ্মশানে মা পূজিত হন করুণাময়ী রূপে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বৈদ্যুতিক চুল্লিতে পুড়ছে শবদেহ। পাশেই তন্ত্রমতে পুজো হচ্ছে মা শ্মশানকালীর (Kali Puja 2024)। প্রত্যেক বছর কালীপুজোর রাতে এ ছবি দেখা যায় কালীঘাটের কেওড়াতলা (Keoratala Goddess Kali) মহাশ্মশানে। এক সময় এখানে দেহ দাহ হত কাঠের চুল্লিতে। পরে হয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লি। চুল্লি জ্বলে প্রায় সারাদিনই। কালীপুজোর রাতেও এর বিরাম থাকে না। এই আবহেই এখানে হয় মাতৃ আরাধনা। জাগ্রত মায়ের আরাধনায় প্রচুর ভক্তসমাগম হয়।

    মাতৃমূর্তি করুণাময়ী (Kali Puja 2024)

    কেওড়াতলায় মাতৃমূর্তি করুণাময়ী। ১৬ ফুট উচ্চতার মাতৃমূর্তি লোলজিহ্বা নয়, হাস্যময়ী। অসুর মুণ্ডমালিনী নয়। দেবীর থাকে দুই হাত। ডান হাতে নৈবেদ্যরূপী মাংস, অন্য হাতে মদ। অনেকেই এখানে দেবীকে মদ মানত করেন। সেই পানপাত্র থেকে মদের একটা অংশ নিয়ে পুরোহিত দেবীর হাতে থাকা পাত্রে রাখেন। বাকিটা প্রসাদ করে তুলে দেওয়া হয় মানতকারীর হাতে। কালীপুজোয় বলিদান সিদ্ধ। তাই বলিদানের রীতি শুরু থেকেই রয়েছে এখানে। ভক্তদের (Kali Puja 2024) মানত করা পাঁঠা বলি হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, কেওড়াতলার মা কালী কাউকে শূন্য হাতে ফেরান না। যে যা বাসনা করেন তাই ফলপ্রসূ হয়।

    রাতভর চলে পুজো-হোম-বলিদান

    কেওড়াতলার শ্মশানকালী (Kali Puja 2024) পুজোর একটি ইতিহাস রয়েছে। গভীর জঙ্গলে আকীর্ণ এই এলাকায় এক সময় ছিল শুধুই শ্মশান। কেওড়া গাছ প্রচুর পরিমাণে ছিল বলে এই নামকরণ হয়। মূলত দেহ দাহ করতেই লোকজন আসতেন এখানে। এই জায়গাটিকেই সাধনস্থল হিসেবে বেছে নিলেন জনৈক চন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য ও মতিলাল ভট্টাচার্য। ১৯৭০ সালে এক অমাবস্যার রাতে এখানে এসে হাজির হন ভিনদেশি এক তান্ত্রিক। হাতে লৌহনির্মিত একটি ছোট্ট কালীমূর্তি। সাধনারত দুই ব্রাহ্মণকে তিনি বললেন, “আজকের এই রাত্রির লগ্ন মাতৃপূজার শুভক্ষণ। আমি এখানে দেবীর আরাধনা করতে চাই। আপনারা আমায় সহযোগিতা করুন।” তখনই ব্রাহ্মণরা আয়োজন করলেন মাতৃ আরাধনার। স্থানীয় জনবসতি থেকে জোগাড় হল পুজোর উপকরণ। রাতভর চলল পুজো-হোম-বলিদান। তন্ত্রমতে সাঙ্গ হল দেবী আরাধনা।  

    আরও পড়ুুন: পুরীর জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদের মূল্য একলাফে বেড়ে ৩ গুণ! ভক্তমহলে অসন্তোষ

    আকাশে ভোরের আলো ফোটার আগেই দেবীমূর্তি নিয়ে কোথায় যেন চলে গেলেন তান্ত্রিক। তবে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজও হচ্ছে পুজো। যেহেতু তান্ত্রিক তাঁর দেবীমূর্তি নিয়ে চলে গিয়েছেন, তাই এখন মৃণ্ময়ী প্রতিমা গড়ে হয় পুজো। তবে পুজোর নিয়ম অনুসরণ করা হয় সেই তান্ত্রিকের মতোই। জনশ্রুতি এই (Kali Puja 2024) যে, দ্বীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে যখন মায়ের আরাধনা হয়, তখনও জ্বলতে থাকে চিতা। কালীপুজোর (Keoratala Goddess Kali) রাতে এখানে এলে মনে পড়ে কাজী নজরুল ইসলামের সেই কথা কটি, “শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা…।”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 177: “বাঘ যেমন জানোয়ার খেয়ে ফেলে, তেমনি ‘অনুরাগ বাঘ’ কাম ক্রোধ খেয়ে ফেলে”

    Ramakrishna 177: “বাঘ যেমন জানোয়ার খেয়ে ফেলে, তেমনি ‘অনুরাগ বাঘ’ কাম ক্রোধ খেয়ে ফেলে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামলাল প্রভৃতির গান ও শ্রীরামকৃষ্ণের সমাধি

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গান গাহিতে বলিলেন। রামলাল ও কালীবাড়ির একটি ব্রাহ্মণ কর্মচারী গাহিতেছেন। সঙ্গতের মধ্যে একটি বাঁয়ার ঠেকা—

    (১)—হৃদি-বৃন্দাবনে বাস যদি কর কমলাপতি ৷
    ওহে ভক্তিপ্রিয়, আমার ভক্তি হবে রাধাসতী ॥
    মুক্তি কামনা আমারি, হবে বৃন্দে গোপনারী,
    দেহ হবে নন্দের পুরী, স্নেহ হবে মা যশোমতী ॥
    আমার ধর ধর জনার্দন, পাপভার গোবর্ধন,
    কামাদি ছয় কংসচরে ধ্বংস কর সম্প্রতি ॥
    বাজায়ে কৃপা বাঁশরি, মনধেনুকে বশ করি,
    তিষ্ঠ হৃদিগোষ্ঠে পুরাও ইষ্ট এই মিনতি ॥
    আমার প্রেমরূপ যমুনাকুলে, আশাবংশীবটমূলে,
    স্বদাস ভেবে সদয়ভাবে, সতত কর বসতি ॥
    যদি বল রাখাল-প্রেমে, বন্দী থাকি ব্রজধামে,
    জ্ঞানহীন রাখাল তোমার, দাস হবে হে দাশরথি ॥

    (২)—নবনীরদবরণ কিসে গণ্য শ্যামচাঁদ রূপ হেরে,
    করেতে বাঁশি অধরে হাসি, রূপে ভুবন আলো রে ॥
    জড়িত পীতবসন, তড়িত জিনি ঝলমল,
    আন্দোলিত চরণাবধি হৃদিসরোজে বনমাল,
    নিতে যুবতী-জাতিকুল, আলো করে যমুনাকুল,
    নন্দকুল চন্দ্র যত চন্দ্র জিনি বিহরে ॥
    শ্যামগুণধাম পশি, হাম হদিমন্দিরে,
    প্রাণ মন জ্ঞান সখি হরে নিল বাঁশির স্বরে,
    গঙ্গানারায়ণের যে দুঃখ সে-কথা বলিব কারে,
    জানতে যদি যেতে গো সখী যমুনায় জল আনিবারে ॥

    (৩)—শ্যামাপদ-আকাশেতে মন ঘুড়িখান উড়তেছিল;
    কলুষের কুবাতাস পেয়ে গোপ্তা খেয়ে পড়ে গেল।

    ঈশ্বরলাভের উপায় অনুরাগ—গোপীপ্রেম—অনুরাগ বাঘ 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—বাঘ যেমন কপকপ করে জানোয়ার খেয়ে ফেলে, তেমনি “অনুরাগ বাঘ” কাম ক্রোধ এই সব রিপুদের খেয়ে ফেলে। ঈশ্বরে একবার অনুরাগ হলে কামক্রোধাদি থাকে না। গোপীদের ওই অবস্থা হয়েছিল। কৃষ্ণে অনুরাগ (Ramakrishna)।

    “আবার আছে ‘অনুরাগ অঞ্জন’। শ্রীমতী বলছেন, ‘সখি, চতুর্দিক কৃষ্ণময় দেখছি!’ তারা বললে (Kathamrita), ‘সখি, অনুরাগ-অঞ্জন চোখে দিয়েছ তাই ওইরূপ দেখছ।’ এরূপ আছে যে, ব্যাঙের মুণ্ডু পুড়িয়ে কাজল তৈয়ার করে, সেই কাজল চোখে দিলে চারিদিক সর্পময় দেখে!

    “যারা কেবল কামিনী-কাঞ্চন নিয়ে আছে—ঈশ্বরকে (Kathamrita) একবারও ভাবে না, তারা বদ্ধজীব। তাদের নিয়ে কি মহৎ কাজ হবে? যেমন কাকে ঠোকরানো আম, ঠাকুর সেবায় লাগে না, নিজের খেতেও সন্দেহ।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share