Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Kali Puja 2024: মা কালী কোথাও পূজিতা হন শ্মশানবাসিনী রূপে, কোথাও চামুণ্ডারূপে! জানুন সেই ৭টি রূপ

    Kali Puja 2024: মা কালী কোথাও পূজিতা হন শ্মশানবাসিনী রূপে, কোথাও চামুণ্ডারূপে! জানুন সেই ৭টি রূপ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজো-লক্ষ্মীপুজোর পর বাঙালি এবার মেতে উঠবে কালী আরাধনায় (Kali Puja 2024)। সারা বছর ধরেই কালীপুজো বাংলা জুড়ে দেখা যায়। তবে দুর্গাপুজোর পরে অনুষ্ঠিত হওয়া কালীপুজো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। হাতে গোনা আর মাত্র ক’টা দিন। তার পরেই কালীপুজো (Kali Puja)। আচার-উপাচার মেনে দেবী কোথাও পূজিতা হবেন শ্মশানবাসিনী রূপে, কোথাও আবার চামুণ্ডারূপে। কোথাও দেবী শ্যামবর্ণা, কোথাও তাঁর গায়ের রং নীল। আজকে আমাদের প্রতিবেদনে রইল দেবীর ৭ রূপের বর্ণনা।

    দেবী কালীর (Kali Puja 2024) ৭ রূপের বর্ণনা

    শ্মশান কালী-ডাকাতদের কালী (Kali Puja 2024) পুজোর গল্প তো আমরা সকলেই জানি। রঘু ডাকাত থেকে কালু ডাকাত-সকলেই নাকি কালীপুজো করে ডাকাতি করতে যেতেন। দেবীর গায়ের রং হয় একেবারে কালো কুচকুচে। ভয়ঙ্কর হয় চোখ। তবে গৃহস্থের বাড়িতে কালীর এই রূপের পুজো হয় না একেবারেই। দেবীকে অনেকে ডাকাত কালীও বলে থাকেন। মূলত শ্মশানেই দেবীর এই রূপের পুজো করা হয়।

    সিদ্ধকালী-শাস্ত্রবিদরা জানাচ্ছেন, দেবীর (Kali Puja) এই রূপ ভুবনেশ্বরী নামেও পরিচিত। তবে গৃহস্থ বাড়িতে কালীর এই রূপের পুজোর চল একেবারেই নেই। সাধারণত সাধকেরা দেবী কালীর এই রূপের পুজো করে থাকেন। সিদ্ধকালীর দু’টি হাত থাকে, গোটা শরীর গয়নার অলঙ্কারে সাজানো থাকে। দেবীর ডান পা থাকে শিবের বুকে এবং বাঁ পা থাকে তাঁর দু’পায়ের মাঝখানে।

    মহাকালী-দেবীর এই রূপ প্রচলিত কালী মূর্তির থেকে অনেকটাই আলাদা। এই রূপে দশটি মাথা, দশটি হাত এবং দশটি পা থাকে। মহাকালীর প্রতিমার সঙ্গে শিবকে দেখা যায় না। দশভূজা দেবীর প্রতিটি হাতেই থাকে অস্ত্র। দেবীর পায়ের তলায় অসুরের কাটা মুণ্ড দেখা যায়। মহাকালীর পুজো গৃহস্থ বাড়িতে করা হয় না।

    শ্রী কালী-দেবী দুর্গা বা পার্বতীর অন্য একটি রূপ হল শ্রী কালী। অনেকে বলেন, দেবী দারুক নামে অসুরকে বধ করেছিলেন বলেই এমন নামকরণ। পুরাণ অনুয়ায়ী জানা যায়, কালীর এই রূপ মহাদেবের কণ্ঠে প্রবেশ করে ও শিবের কণ্ঠের বিষে কৃষ্ণবর্ণা হয়ে যান। 

    চামুণ্ডা কালী-দেবী চামুণ্ডাকে আদিশক্তি রূপে আরাধনা করা হয়। ভগবতী দুর্গা রূপেও তিনি আরাধিত হন। চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে হত্যা করে তিনি ‘চামুণ্ডা’ নামে পরিচিত হন।

    ভদ্রকালী-কালীর এই রূপ সাধারণত বারোয়ারি বিভিন্ন মন্দিরে পুজো করা হয়। ভদ্রকালী নামে ভদ্র শব্দটি ব্যবহার হয়েছে কল্যাণ অর্থে এবং কালী শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে জীবনের শেষ সময় বোঝাতে।

    দক্ষিণা কালী-এই রূপেই সবচেয়ে বেশি পূজিতা হন দেবী কালিকা (Kali Puja 2024)। এই রূপে দেবীর সঙ্গে থাকেন মহাদেব স্বয়ং। দেবীর গায়ের রং একেবারে কালচে নীল। গলায় ঝোলানো থাকে মুণ্ডমালা। দেবীর চার হাত। দুই হাতে থাকে খড়্গ আর মুণ্ড। অন্য দুই হাতে দেখা যায় অভয় মুদ্রা ও বরদা মুদ্রায়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 174: “দুর্গানাম, কৃষ্ণনাম, শিবনাম, যে নাম বলে ঈশ্বরকে ডাক না কেন?… বিকার কাটবেই কাটবে”

    Ramakrishna 174: “দুর্গানাম, কৃষ্ণনাম, শিবনাম, যে নাম বলে ঈশ্বরকে ডাক না কেন?… বিকার কাটবেই কাটবে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ—প্রেমতত্ত্ব

    নাম-মাহাত্ম্য—উপায়—মায়ের নাম 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর নাম কল্লে সব পাপ কেটে যায়! কাম, ক্রোধ, শরীরে সুখ-ইচ্ছা—এ-সব পালিয়ে যায়।

    একজন ভক্ত—তাঁর নাম করতে ভাল কই লাগে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ব্যাকুল হয়ে তাঁকে প্রার্থনা কর, যাতে তাঁর নামে রুচি হয়। তিনিই মনোবাঞ্ছা (Kathamrita) পূর্ণ করবেন—

    এই বলিয়া ঠাকুর দেবদুর্লভ কণ্ঠে গাহিতেছেন। জীবের দুঃখে কাতর হইয়া মার কাছে হৃদয়ের বেদনা জানাইতেছেন। প্রাকৃত জীবের অবস্থা নিজে আরোপ করিয়া মার কাছে জীবের দুঃখ জানাইতেছেন:

    দোষ কারু নয় গো মা, আমি স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা ৷
    ষড়রিপু হল কোদণ্ডস্বরূপ, পুণ্যক্ষেত্র মাঝে কাটিলাম কূপ,
    সে কূপে বেড়িল কালরূপ জল, কাল-মনোরমা ॥
    আমার কি হবে তারিণী, ত্রিগুণধারিণী—বিগুণ করেছে স্বগুণে,
    কিসে এ-বারি নিবারি, ভেবে দাশরথির অনিবার বারি নয়নে ৷
    ছিল বারি কক্ষে, ক্রমে এল বক্ষে, জীবনে জীবন কেমনে হয় মা রক্ষে,
    আছি তোর অপিক্ষে, দে মা মুক্তিভিক্ষে, কটাক্ষেতে করে পার ॥

    আবার গান গাহিতেছেন। জীবের বিকাররোগ! তাঁর নামে রুচি হলে বিকার কাটবে:

    এ কি বিকার শঙ্করী, কৃপা-চরণতরী পেলে ধন্বন্তরি!
    অনিত্য গৌরব হল অঙ্গদাহ, আমার আমার একি হল পাপ মোহ;
    (তায়) ধনজনতৃষ্ণা না হয় বিরহ, কিসে জীবন ধরি ॥
    অনিত্য আলাপ, কি পাপ প্রলাপ, সতত সর্বমঙ্গলে;
    মায়া-কাকনিদ্রা তাহে দাশরথির নয়নযুগলে;
    হিংসারূপ তাহে সে উদরে কৃমি, মিছে কাজে ভ্রমি, সেই হয় ভ্রমি,
    রোগে বাঁচি কি না বাঁচি ত্বন্নামে অরুচি দিবা শর্বরী ॥

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ত্বন্নামে অরুচি! বিকারে যদি অরুচি হল, তাহলে আর বাঁচবার পথ থাকে না। যদি একটু রুচি থাকে, তবে বাঁচবার খুব আশা। তাই নামে রুচি। ঈশ্বরের নাম করতে হয়; দুর্গানাম, কৃষ্ণনাম, শিবনাম, যে নাম বলে ঈশ্বরকে ডাক না কেন? যদি নাম করতে অনুরাগ দিন দিন বাড়ে, যদি আনন্দ হয় তাহলে আর কোন ভয় নাই, বিকার কাটবেই কাটবে। তাঁর কৃপা (Kathamrita) হবেই হবে।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: গাছপালা না থাকলেও সন্ধ্যার পর ভেসে আসত ফুলের সুগন্ধি, শোনা যেত নূপুরের আওয়াজ!

    Kali Puja 2024: গাছপালা না থাকলেও সন্ধ্যার পর ভেসে আসত ফুলের সুগন্ধি, শোনা যেত নূপুরের আওয়াজ!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ দিনাজপুরের শতাব্দীপ্রাচীন কালীপুজোর (Kali Puja 2024) মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাট তহবাজার এলাকার বুড়া কালীর পুজো। এখনও সেই পুরনো রীতি-রেওয়াজ মেনেই হয় এই পুজো। তবে কালের স্রোতে ও সময়ের সঙ্গে বর্তমানে পুজোর কিছু নিময় পরিবর্তিত হয়েছে। শতাব্দীপ্রাচীন হলেও এই পুজোকে কেন্দ্র করে জেলাবাসীর মনে অসীম বিশ্বাস রয়েছে। কালীপুজোর দিন এই পুজোকে ঘিরে দর্শনার্থীদের ঢল চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল ও শনিবার বুড়া কালীবাড়িতে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পড়ে ভক্তদের।

    পুজোতে এখনও পাঁঠা, শোল মাছ বলি হয় (Kali Puja 2024)

    লোকমুখে শোনা যায়, কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়া কালীমাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে নাকি আত্রেয়ী নদী বইত। মন্দির ও বাজারের জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল। শতাব্দীপ্রাচীন পুজো হলেও এর সঠিক বয়স কত, তা কেউ বলতে পারে না। এক সময় আত্রেয়ী নদীর ধারে নিজে থেকেই নাকি ভেসে ওঠে বুড়া কালীমাতার বিগ্রহ বা শিলাখণ্ড। এক তান্ত্রিক সেই সময় ওই বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজো দেন। তারপর থেকেই শুরু পুজো। টিনের ঘেরা দিয়ে বুড়া কালীমাতার পুজো শুরু হয়। বর্তমানে বিশাল আকার মন্দিরের পুজিত হন বুড়া কালী। পুজোর দিন মায়ের মূর্তিতে সারা গা সোনা থেকে রুপোর অলঙ্কারে সুসজ্জিত থাকে। পুজোর দিন কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম হয় পুজোপ্রাঙ্গনে। পুজোতে এখনও পাঁঠা বলি, শোল মাছ বলি হয়। তবে জনশ্রুতি আছে আগে নাকি ২০ কিলো ওজনের শোল মাছ বলি দেওয়া হত। এই পুজোকে ঘিরে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর (Balurghat) নয়, পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুর ও মালদা, শিলিগুড়ি থেকেও প্রচুর ভক্ত বা দর্শনার্থী আসেন। বর্তমানে বুড়া কালীমন্দির থেকে অনেকটা পশ্চিমে সরে গিয়েছে আত্রেয়ী নদী।

    রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন?

    ইতিহাস বলে, একটা সময় নাকি কলকাতার রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো (Kali Puja 2024) দিতে আসতেন। বজরায় করে এসে তিনি আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এসে মায়ের পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন কলকাতায়। তবে এর সত্যতা এখনও প্রমাণিত হয়নি। এই মন্দিরকে ঘিরে আরও জনশ্রুতি আছে সন্ধ্যার পর নাকি অপরূপ ফুলের সুগন্ধি পাওয়া যেত এই এলাকা থেকে। কিন্তু কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও জঙ্গল বা গাছপালা ছিল না। শোনা যেত নূপুরের আওয়াজ। সেই সব নাকি এখন গল্প মনে হয় অনেকের। তা সত্ত্বেও জেলাবাসীর অগাধ বিশ্বাস বুড়া কালীর উপর।

    দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মায়ের কাছে পুজো দিতে (Kali Puja 2024)

    পুজোর দিন দর্শনার্থীদের দেওয়া হয় অন্ন ভোগ। করোনার জন্য গত দুবছর বুড়া কালী মন্দিরে ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তবে এই বার কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভিড় অনেক বেশি হবে বলে দাবি পুজো কমিটির। এ বিষয়ে পুজো কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘আত্রেয়ী নদীর পাশে মায়ের শিলাখণ্ড ভেসে উঠেছিল৷ তা থেকেই মায়ের পুজো শুরু হয়৷ এখনও পুরনো রীতি মেনেই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর দিন মায়ের গোটা মূর্তিতে সোনার গহনা পরিয়ে দেওয়া হয়৷  বুড়া কালী মায়ের পুজো বছরে দুবার অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্র সংক্রান্তি ও দীপান্বিতা অমবস্যায়। তবে বড় পুজো হয় দীপান্বিতা অমবস্যায়। এবিষয়ে বুড়া কালি মন্দিরের (Balurghat) পুরোহিত রতন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আগে যেভাবে মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হত, ঠিক একই ভাবে এখনও মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হয়। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা মায়ের কাছে পুজো দিতে আসেন৷’

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 173: “অনুরাগের ঐশ্বর্য কি কি? বিবেক, বৈরাগ্য, জীবে দয়া সাধুসেবা, ঈশ্বরের নামগুণকীর্তন”

    Ramakrishna 173: “অনুরাগের ঐশ্বর্য কি কি? বিবেক, বৈরাগ্য, জীবে দয়া সাধুসেবা, ঈশ্বরের নামগুণকীর্তন”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
    দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ—প্রেমতত্ত্ব

    কিয়ৎক্ষণ পরে কলিকাতা হইতে কয়েকটি পুরাতন ব্রাহ্মভক্ত আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তন্মধ্যে একজন—শ্রীযুক্ত ঠাকুরদাস (Ramakrishna) সেন। ঘরে অনেকগুলি ভক্তের সমাগম হইয়াছে। ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন। সহাস্যবদন, বালকমূর্তি। উত্তরাস্য হইয়া বসিয়াছেন। ব্রাহ্মভক্তদের সঙ্গে আনন্দে আলাপ করিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ব্রাহ্ম ও অন্যান্য ভক্তদের প্রতি)—তোমরা ‘প্যাম’ ‘প্যাম’ কর; কিন্তু প্রেম কি সামান্য জিনিস গা? চৈতন্যদেবের ‘প্রেম’ হয়েছিল। প্রেমের দুটি লক্ষণ। প্রথম—জগৎ ভুল হয়ে যাবে (Kathamrita)। এত ঈশ্বরেতে ভালবাসা যে বাহ্যশূন্য! চৈতন্যদেব “বন দেখে বৃন্দাবন ভাবে, সমুদ্র দেখে শ্রীযমুনা ভাবে।”

    দ্বিতীয় লক্ষণ—নিজের দেহ যে এত প্রিয় জিনিস, এর উপরও মমতা থাকবে না, দেহাত্মবোধ একেবারে চলে যাবে।

    ঈশ্বরলাভের (Ramakrishna) কতকগুলি লক্ষণ আছে। যার ভিতর অনুরাগের ঐশ্বর্য প্রকাশ হচ্ছে তার ঈশ্বরলাভের আর দেরি নাই।

    অনুরাগের ঐশ্বর্য কি কি? বিবেক, বৈরাগ্য, জীবে দয়া সাধুসেবা, সাধুসঙ্গ, ঈশ্বরের নামগুণকীর্তন, সত্যকথা—এই সব।

    এই সকল অনুরাগের লক্ষণ দেখলে ঠিক বলতে পারা যায়, ঈশ্বর দর্শনের আর দেরি নাই। বাবু কোন খানসামার বাড়ি যাবেন, এরূপ যদি ঠিক হয়ে থাকে, খানসামার বাড়ির অবস্থা দেখে ঠিক বুঝতে পারা যায়! প্রথমে বন-জঙ্গল কাটা হয়, ঝুলঝাড়া হয়; ঝাঁটপাট দেওয়া হয়। বাবু নিজেই সতরঞ্চি, গুড়গুড়ি এই সব পাঁচরকম জিনিস পাঠিয়ে দেন। এই সব আসতে দেখলেই লোকের বুঝতে বাকি থাকে না, বাবু এসে পড়লেন বলে।”

    একজন ভক্ত—আজ্ঞে, আগে বিচার করে কি ইন্দ্রিয়নিগ্রহ করতে হয়?

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—ও এক পথ আছে। বিচারপথ। ভক্তিপথেও অন্তরিন্দ্রিয় নিগ্রহ আপনি হয়। আর সহজে হয়। ঈশ্বরের উপর যত ভালবাসা আসবে, ততই ইন্দ্রিয়সুখ আলুনী লাগবে।

    যেদিন সন্তান মারা গেছে, সেই শোকের উপর স্ত্রী-পুরুষের দেহ-সুখের দিকে কি মন থাকতে পারে?

    একজন ভক্ত—তাঁকে ভালবাসতে (Kathamrita) পারছি কি?

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 172: “ওদের দেশে বড় জলকষ্ট। তুমি সেখানে একটা পুষ্করিণী কাটাও না কেন”

    Ramakrishna 172: “ওদের দেশে বড় জলকষ্ট। তুমি সেখানে একটা পুষ্করিণী কাটাও না কেন”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    গৃহস্থ ও কর্মযোগ

    ঠাকুরবাড়িতে (Ramakrishna) শ্রীশ্রীভবতারিণী, শ্রীশ্রীরাধাকান্ত ও দ্বাদশ শিবের পূজা শেষ হইল। ক্রমে ভোগারতির বাজনা বাজিতেছে। চৈত্রমাস দ্বিপ্রহর বেলা। ভারী রৌদ্র। এই মাত্র জোয়ার আরম্ভ হইয়াছে। দক্ষিণদিক হইতে হাওয়া উঠিয়াছে। পূতসলিলা ভাগীরথী এইমাত্র উত্তরবাহিনী হইয়াছেন। ঠাকুর আহারান্তে কক্ষমধ্যে একটু বিশ্রাম করিতেছেন। রাখালের দেশ বসিরহাটের কাছে। দেশে গ্রীষ্মকালে বড় জলকষ্ট।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মণি মল্লিকের প্রতি)—দেখ রাখাল বলছিল, ওদের দেশে বড় জলকষ্ট (Kathamrita)। তুমি সেখানে একটা পুষ্করিণী কাটাও না কেন। তাহলে কত লোকের উপকার হয়। (সহাস্যে) তোমার তো অনেক টাকা আছে, অত টাকা নিয়ে কি করবে? তা শুনেছি, তেলিরা নাকি বড় হিসাবী। (ঠাকুরের ও ভক্তগণের হাস্য)

    মণিলাল মল্লিকের বাড়ি কলিকাতা সিন্দুরিয়াপটি। সিন্দুরিয়াপটির ব্রাহ্মসমাজের সাংবাৎসরিক উৎসব উপলক্ষে তিনি অনেককে নিমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। উৎসবে শ্রীরামকৃষ্ণকে নিমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। মণিলালের বরাহনগরে একখানি বাগান আছে। সেখানে তিনি প্রায় একাকী আসিয়া থাকেন ও সেই সঙ্গে ঠাকুরকে দর্শন করিয়া যান। মণিলাল যথার্থ হিসাবী লোক বটে! সমস্ত গাড়িভাড়া করিয়া বরাহনগরে প্রায় আসেন না; ট্রামে চাপিয়া প্রথমে শোভাবাজারে আসেন, সেখানে শেয়ারের গাড়িতে চাপিয়া বরাহনগরে আসেন। অর্থের অভাব নাই; কয়েক বৎসর পরে গরিব ছাত্রদের ভরণপোষণের জন্য এককালে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা বন্দোবস্ত করিয়া দিয়াছিলেন।

    মণিলাল চুপ (Kathamrita) করিয়া রহিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে এ-কথা ও-কথার পর, কথার পিঠে বলিলেন, “মহাশয় পুষ্করিণীর কথা বলছিলেন। তা বললেই হয়, তা আবার তেলি-ফেলি বলা কেন?”

    ভক্তেরা (Ramakrishna) কেহ কেহ মুখ টিপিয়া হাসিতেছেন। ঠাকুরও হাসিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Akash Pradip: আকাশ প্রদীপ জ্বালালে সন্তুষ্ট হন ভগবান বিষ্ণু, পূরণ করেন ভক্তের মনস্কামনা

    Akash Pradip: আকাশ প্রদীপ জ্বালালে সন্তুষ্ট হন ভগবান বিষ্ণু, পূরণ করেন ভক্তের মনস্কামনা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে দূরের তারার পানে চেয়ে’-গানটি বাঙালির কাছে আজও নস্টালজিয়া হয়ে রয়েছে। এই ‘আকাশ প্রদীপ’ (Akash Pradip) কয়েক বছর আগেও কার্তিক মাসে, বাংলার ঘরে ঘরে জ্বলে উঠত। এখন অবশ্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় লোকাচার যেন হারিয়ে যাচ্ছে। তবুও গ্রাম বাংলায় কার্তিক মাসে, হালকা শীতের চাদর মোড়ানো সন্ধ্যায়, সন্ধান মেলে ‘আকাশ প্রদীপ’-এর।

    পৌরাণিক আখ্যান

    পুরাণ মতে, দীর্ঘ চার মাসের যোগনিদ্রা শেষে কার্তিক (Kartik) মাসে জেগে ওঠেন ভগবান বিষ্ণু (Lord Vishnu)। তাঁকে প্রসন্ন রাখতে ভক্তরা কার্তিক মাসের প্রথম দিন থেকে সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত সন্ধ্যাবেলায় মাটির প্রদীপ ঘি বা তেল দিয়ে জ্বালিয়ে রাখেন। বাড়ির সব থেকে উঁচু স্থানে উত্তর অথবা পূর্ব দিকে মুখ করে রেখে এই প্রদীপ জ্বালানো হয়। লাঠির ডগায় ছাদের ওপরেও এই প্রদীপ দিতে দেখা যায়। বর্তমান সময়ে প্রদীপের বদলে বৈদ্যুতিক বাতিও দেন অনেকে। বিশ্বাস, ভক্তদের আকাশ প্রদীপ অর্পণে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণু তাঁদের মনস্কামনা পূরণ করেন। সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে ভক্তের জীবন। আরোগ্য ও আশীর্বাদ প্রদান করেন ভগবান বিষ্ণু।

    অন্য প্রচলিত বিশ্বাস কী রয়েছে?

    অন্য একটি কিংবদন্তি মতে, আশ্বিন মাসের মহালয়ার দিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা হয়। তার পরের একটি মাস তাঁরা আনন্দ উৎসবে সামিল হন এবং পরলোকের উদ্দেশে গমন করেন কালীপুজোর অমাবস্যায়। এই প্রদীপ (Akash Pradip) জ্বেলে আবাহন করা হয় পিতৃলোকে, প্রেতলোকে অবস্থান করা পূর্বপুরুষদেরও। যাতে তাঁরা আকাশ প্রদীপের আলোয় পথ চিনে আশীর্বাদ দিতে আসতে পারেন উত্তরসূরীদের।

    আকাশ প্রদীপের ধরন

    প্রদীপ হিন্দু ধর্মের যে কোনও অনুষ্ঠানের সব থেকে অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ধর্মীয় আচার, রীতি সবকিছুই সম্পন্ন হয় প্রদীপের দ্বারা। ভগবান বিষ্ণুর বন্দনা (Lord Vishnu) করতে তাই বেছে নেওয়া হয়েছে ‘আকাশ প্রদীপ’ (Akash Pradip)। ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশে সমর্পিত এই প্রদীপের ধরন আলাদা আলাদা হয় এবং তা ভক্তদের নানা মনবাসনা পূরণের লক্ষ্যে জ্বালানো হয়। একনজরে আমরা দেখে নিই আকাশ প্রদীপের ধরনগুলি।

    ১. দ্বিমুখী প্রদীপ: ভগবানের অসীম কৃপা লাভ, আশীর্বাদ লাভ এবং দীর্ঘজীবনের অধিকারী হওয়া যায় দ্বিমুখী প্রদীপ জ্বালালে। এটাই ভক্তদের বিশ্বাস।

    ২. ত্রিমুখী প্রদীপ: লোকবিশ্বাস, এই প্রদীপ জ্বালালে শত্রুর কু-নজর থেকে ভগবান বিষ্ণু ভক্তদের রক্ষা করেন।

    ৩. চতুর্মুখী প্রদীপ: সন্তানের দীর্ঘজীবন কামনা করে মা-বাবারা এই প্রদীপ জ্বালেন।

    আকাশ প্রদীপ দেওয়ার মন্ত্র

    কার্তিক মাসব্যাপী সন্ধ্যার সময় অনেক গৃহে তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালানোর রীতি রয়েছে‌। পুকুরে বা নদীতেও অনেক সময় প্রদীপ ভাসানো হয়, ভগবানের আশীর্বাদ এবং কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে। আকাশপ্রদীপ দেওয়ার মন্ত্রটি হল-“আকাশে সলক্ষ্মীক বিষ্ণোস্তোষার্থং দীয়মানে প্রদীপঃ শাকব তৎ। “আকাশে লক্ষ্মীর সঙ্গে অবস্থান করছেন যে বিষ্ণু, তাঁর উদ্দেশে দেওয়া হল এই প্রদীপ। ঘটের মতো প্রদীপকেও অনেক পণ্ডিতরা দেহেরই প্রতীক বলে মনে করেন। আকাশ-প্রদীপও (Akash Pradip) নশ্বর শরীরের মতো ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম-এই পঞ্চভূতে তৈরি। ক্ষিতি অর্থাৎ মাটি, কায়া তৈরি করে। অপ অর্থাৎ জলে আকার পায়। তেজ অর্থাৎ আগুন, আত্মার মতোই স্থিত হয় তার অন্তরে। মরুৎ অর্থাৎ হাওয়া আগুনকে জ্বলতে সাহায্য করে। আর ব্যোম অর্থাৎ অনন্ত শূন্য জেগে থাকে প্রদীপের গর্ভে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Fatakesto: ফাটাকেষ্টর কালীপুজোয় মায়ের জন্য হিরের নাকছাবি গড়িয়ে দিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন!

    Fatakesto: ফাটাকেষ্টর কালীপুজোয় মায়ের জন্য হিরের নাকছাবি গড়িয়ে দিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তাঁকে ঘিরেই তৈরি হয়েছিল ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’ সিনেমা। এই ফিল্মে মিঠুন চক্রবর্তীর সংলাপ-‘‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’’—আজও সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। জানেন, কে ছিলেন এই ফাটাকেষ্ট (Fatakesto)? এর উত্তর জানতে আমাদের যেতে হবে সাতের দশকে নকশাল আন্দোলনে উত্তাল কলকাতায়। প্রতিদিনই তখন হত্যালীলা চলছে, সারা রাজ্যের অলিগলি থেকে কলকাতার রাজপথে তখন রক্তের দাগ। কোথাও বৃষ্টির ফোঁটার মতো গুলিবর্ষণ হয়, তো কোথাও মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজি চলে। কলেজ স্ট্রিটের দেওয়ালে তখন নকশালদের দেওয়াল লিখন-‘ফাটাকেষ্টর (Fatakesto) মুণ্ড চাই’। তৎকালীন সময় থেকেই জনশ্রুতি রয়েছে, ‘নকশালদের ছোড়া বোমা নাকি তাঁর পায়ের কাছে পড়েও ফাটেনি, ওই বোমা তিনি উল্টোদিকে শট মারেন ঠিক ফুটবলের ধাঁচে’। তিনি যে ফাটাকেষ্ট। বোমা নিয়ে ফুটবল খেলা তো তাঁরই সাজে। এখন তিনি নেই, তবে তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালীপুজো আজও সমান জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। ফি বছর প্রচুর মানুষ ভিড় করেন ফাটাকেষ্টর কালীপুজো দেখতে।

    এলাকার মসিহা ফাটাকেষ্ট (Fatakesto)

    এলাকার মসিহা বলুন অথবা রবিনহুড। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘শাহেনশা’ চরিত্র তাঁর সঙ্গে অনেকাংশে মেলে, এমনটাই বিশ্বাস তাঁর ফ্যানদের। কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা ধরে এলাকার মেয়েরা ‘নাইট শো’ দেখে নিশ্চিন্তে রাত্রিতে একাকী ফিরতে পারতেন, যখন দেখতেন, তাঁদের পাহারার জন্য ‘ফাটাকেষ্ট’ (Fatakesto) বারোয়ারি মন্দিরের মেঝেতে তোয়ালে বিছিয়ে রাত্রিযাপন করছেন। কলেজ স্ট্রিটের এই ‘মসিহা’-র এমন অদ্ভূত নামকরণের কারণ তাঁর মুখমণ্ডল জুড়ে থাকা বসন্তের দাগ বলেও মনে করেন অনেকে।

    আসল নাম কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত

    আসল নাম কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত। ‘নব যুবক সঙ্ঘ’-এর কালী পুজোর (Kali Puja) উদ্যোক্তা। নকশাল আমলে কলেজ স্ট্রিটে দুই মস্তানের সঙ্গে ব্যাপক ছুরির লড়াই হয় ‘কালীভক্ত’ কৃষ্ণচন্দ্র দত্তের। লড়াই জিতলেও শরীরে ব্যাপক ছুরিকাঘাতের কারণে ক্ষত সৃষ্টি হয় তাঁর। ভর্তি হন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সুস্থ হয়ে পাড়ায় ফিরলে তাঁর নাম হয় ‘ফাটাকেষ্ট’। ছোটোখাট চেহারা, সুঠাম দেহের অধিকারী ফাটাকেষ্টর কলেজ স্ট্রিটের কালীপুজো প্রসিদ্ধ হয়ে রয়েছে সেই ছয়ের দশক থেকেই। কালীমায়ের ভক্ত কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্ট (Kali Puja) ‘তন-মন-ধন’ দিয়ে মায়ের আরাধনা করতেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় পুজোর উদ্বোধন করতেন। সারা এলাকা জুড়ে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা থাকত, বিভিন্ন থিম দ্বারা সাজানো হত মায়ের মণ্ডপ। বিশালকায় মায়ের মূর্তির দর্শন করতে কাতারে কাতারে মানুষজন আসতেন।

    প্রচলিত বিশ্বাস কী রয়েছে এই কালীপুজো সম্পর্কে

    প্রচলিত বিশ্বাস মতে, নব যুবক সঙ্ঘের কালীপুজোয় একবার এক মহিলার ভর হয় কালী মূর্তির সামনে। ওই মহিলা তখন বলতে থাকেন ‘ছোট গ্লাসের জলে আমার চেষ্টা মেটে না, আমাকে বড় গ্লাসে জল দিতে পারিস না তোরা’? তখন দেখা গেল মাতৃ প্রতিমার নৈবেদ্যতে রাখা জলের পাত্রটি সত্যিই ছোট। এই ঘটনার পরে বড় গ্লাসে দেবী কালীকে জলদানের রীতি রয়েছে ফাটাকেষ্টর (Fatakesto) কালীপুজোতে।

    পুজো উদ্বোধন করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন 

    কালীপুজোর প্রাক মুহূর্তে একবার পরিচালক দুলাল গুহর ছবির কাজে কলকাতায় এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, সদ্য মুক্তি পেয়েছিল “নমক হালাল” সিনেমা। বাচ্চা থেকে বুড়ো অবধি তখন মোহাচ্ছন্ন নমক হালালের সংলাপে। ফাটাকেষ্টর ঘনিষ্ঠ ছিলেন পরিচালক দুলাল গুহ। মূলত তাঁরই অনুরোধে সেবার নব যুবক সঙ্ঘের কালীপুজো উদ্বোধন করেন অমিতাভ বচ্চন। মঞ্চ বাঁধা হয় তাঁর জন্য। কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে তখন অমিতাভ বচ্চন বলছেন সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নমক হালাল’ সিনেমার একের পর এক বিখ্যাত সংলাপ। শুধু তাই নয়, ফাটাকেষ্টর কালীপুজোতে তিনি মায়ের জন্য গড়িয়ে দিয়েছিলেন হীরের নাকছাবি।

    উত্তম কুমারও একবার উদ্বোধন করেন ফাটাকেষ্টর পুজো 

    দেশ-বিদেশ খ্যাত অসংখ্য সেলেব্রিটি যুক্ত থেকেছেন ফাটাকেষ্টর কালীপুজোর উদ্বোধনে। এই তালিকায় যে যে নামগুলো ছিল একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। সিনেমা জগতের তারকা বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা থেকে সঙ্গীত জগতের হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, রাহুল দেব বর্মন, আশা ভোঁসলে, ক্রীড়া জগতের বিশ্ববিখ্যাত গোলকিপার লেভ ইয়াসিন-প্রতি বছর কালীপুজো উদ্বোধনে চাঁদের হাট বসত নব যুবক সঙ্ঘে। প্রয়াণের আগের বছর অবধি ওই পুজোতে এসেছেন স্বয়ং উত্তম কুমার অবধি।

    ১৯৯২ সালে প্রয়াত হন কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্ট

    ১৯৯২ সালে প্রয়াত হন কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্ট। কয়েক বছর আগেও তাঁর কালীপুজোর উদ্বোধন করে গিয়েছেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের এই কালীপুজো আজ একটা ‘মিথ’। নবযুবক সঙ্ঘের কালীপুজোর জগৎজোড়া খ্যাতির নেপথ্যে ছিল কালী মায়ের ভক্ত, ছোটখাট চেহারার ওই দাপুটে মানুষটি। যাঁর কথায় নাকি এলাকার বাঘে-গরুতে একসঙ্গে জল খেত!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 171: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই, মন সর্বদা অন্তর্মুখ, ঈশ্বর সত্য আর সমস্ত অনিত্য”

    Ramakrishna 171: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই, মন সর্বদা অন্তর্মুখ, ঈশ্বর সত্য আর সমস্ত অনিত্য”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে—মণিলাল ও কাশীদর্শন

     

    সিদ্ধের পক্ষে “ঈশ্বর কর্তা”—অন্যের পক্ষে পাপপূণ্য—ফ্রি উইল 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ভাস্করানন্দের সঙ্গে তোমার কথা হল?

    মণিলাল—আজ্ঞে হাঁ, অনেক কথা হল। তার মধ্যে পাপপুণ্যের কথা হল! তিনি বললেন, পাপ পথে যেও না, পাপচিন্তা ত্যাগ করবে, ঈশ্বর এই সব চান। যে-সব কাজ কল্লে পুণ্য হয়, এমন সব কর্ম কর।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হাঁ ও একরকম আছে, ঐহিকদের জন্য। যাদের চৈতন্য হয়েছে, যাদের ঈশ্বর সৎ আর-সব অসৎ অনিত্য বলে বোধ হয়ে গেছে, তাদের আর-একরকম ভাব। তারা জানে যে, ঈশ্বরই একমাত্র কর্তা, আর সব অকর্তা। যাদের চৈতন্য হয়েছে তাদের বেতালে পা পড়ে না, হিসাব করে পাপ ত্যাগ করতে হয় না, ঈশ্বরের উপর এত ভালবাসা যে, যে-কর্ম তারা করে সেই কর্মই সৎকর্ম! কিন্তু তারা জানে, এ-কর্মের কর্তা আমি নই, আমি ঈশ্বরের দাস। আমি যন্ত্র, তিনি যন্ত্রী। তিনি যেমন করান, তেমনি করি, যেমন বলান তেমনি বলি, তিনি যেমন চালান, তেমনি চলি।

    “যাদের চৈতন্য হয়েছে, তারা পাপপুণ্যের পার। তারা দেখে ঈশ্বরই সব করছেন। এক জায়গায় একটি মঠ ছিল। মঠের সাধুরা রোজ মাধুকরী (ভিক্ষা) করতে যায়। একদিন একটি সাধু ভিক্ষা করতে করতে দেখে যে, একটি জমিদার একটি লোককে ভারী মারছে, সাধুটি বড় দয়ালু; সে মাঝে পড়ে জমিদারকে মারতে বারণ করলে। জমিদার তখন ভারী রেগে রয়েছে, সে সমস্ত কোপটি সাধুটির গায়ে ঝাড়লে। এমন প্রহার করলে যে, সাধুটি অচৈতন্য হয়ে পড়ে রইল। কেউ গিয়ে মঠে খপর দিলে, তোমাদের একজন সাধুকে জমিদার ভারী মেরেছে। মঠের সাধুরা দৌড়ে এসে দেখে, সাধুটি অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছে! তখন তারা পাঁচজনে ধরাধরি করে তাকে মঠের ভিতর নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে শোয়ালে। সাধু অজ্ঞান, চারিদিকে মঠের লোকে ঘিরে বিমর্ষ হয়ে বসে আছে, কেউ কেউ বাতাস কচ্ছে। একজন বললে, মুখে একটু দুধ দিয়ে দেখা যাক। মুখে দুধ দিতে দিতে সাধুর চৈতন্য হল। চোখ মেলে দেখতে লাগল। একজন বললে, ‘ওহে দেখি, জ্ঞান হয়েছে কি না? লোক চিনতে পারছে কিনা?’ তখন সে সাধুকে খুব চেঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করলে, ‘মহারাজ! তোমাকে কে দুধ খাওয়াচ্ছে?’ সাধু আস্তে আস্তে বলছে, ‘ভাই! যিনি আমাকে মেরেছিলেন, তিনিই দুধ খাওয়াচ্ছেন।’

    “ঈশ্বরকে জানতে না পারলে এরূপ অবস্থা হয় না।”

    মণিলাল—আজ্ঞে আপনি যে-কথা বললেন, সে বড় উচ্চ অবস্থা! ভাস্করানন্দের সঙ্গে এই সব পাঁচরকম কথা হয়েছিল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—কোনও বাড়িতে থাকেন?

    মণিলাল—একজনের বাড়িতে থাকেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কত বয়স?

    মণিলাল—পঞ্চান্ন হবে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আর কিছু কথা হল?

    মণিলাল—আমি জিজ্ঞাসা করলুম, ভক্তি কিসে হয়? তিনি বললেন, “নাম কর, রাম রাম বোলো!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ — এ বেশ কথা।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পঞ্চবার আঠার ষোল, যুগে যুগে এলাম ভাল…শেষে কচে বারো পড়ে মাগো, পঞ্জা-ছক্কায় বন্দী হলাম”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: আতঙ্ক কাটাতে হাসপাতালের লাশকাটা ঘরেই শুরু হয়েছিল মা কালীর আরাধনা!

    Kali Puja 2024: আতঙ্ক কাটাতে হাসপাতালের লাশকাটা ঘরেই শুরু হয়েছিল মা কালীর আরাধনা!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক সময় শবদেহ রাখা হত। হাসপাতাল অন্যত্র সরে গেলেও ঘরটি রয়ে যায় পুরনো জায়গাতেই। তাই শবঘর বা লাশকাটা ঘর নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের বেশ ভালোরকম আতঙ্ক ছিল। সেই ভয়ের জন্য বালুরঘাটের প্রাইভেট বাসস্ট্যান্ড এলাকা এড়িয়ে চলতেন বাসিন্দারা। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাটাতেই শুরু হয় কালীপুজো। সেই থেকে কালিকাই ভয়-ভীতি কাটিয়েছেন সাধারণের। বালুরঘাট শহরের এই দেবী জাগ্রত (Kali Puja 2024) হিসেবে পরিচিত। চৈত্র সংক্রান্তিতে বাৎসরিক পুজো হলেও, কার্তিক মাসের প্রথম অমাবস্যায় মায়ের পুজো ঘিরে বাড়তি উন্মাদনা তৈরি হয়।

    বছর ৫০ আগে এই পুজোর সূচনা (Kali Puja 2024)

    বালুরঘাট শহরের প্রাইভেট বাসস্ট্যান্ড এলাকার এই পুজো মোটরকালী পুজো নামে পরিচিত। এটি তেমন প্রাচীন না হলেও এর অতীত বেশ সমৃদ্ধ। প্রায় বছর ৫০ আগে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন গাড়ি অর্থাৎ মোটর মালিকরা। স্থানীয়ভাবে আগে গাড়ির প্রচলিত শব্দ ছিল মোটর। বর্তমানে যেখানে মোটরকালী পুজো হয়, সেখানে আগে ছিল ফুটানিগঞ্জের হাট। এর কিছুটা দূরে ছিল পশ্চিম দিনাজপুরের জেলা হাসপাতালটি। আর হাসপাতালের লাশকাটা ঘরটি ছিল ফুটানিগঞ্জের হাটের মধ্যে। পরবর্তীতে জেলা হাসপাতালটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রঘুনাথপুর এলাকায়। কিন্তু ফুটানিগঞ্জের হাটের মধ্যে থাকা লাশকাটা ঘর এবং লাশ বহনকারী গাড়ি থেকে যায় পরিত্যক্ত অবস্থায়। এই লাশকাটা ঘরের অদূরে ছিল একটি প্রাইভেট গাড়ির স্ট্যান্ড। দিনের বেলা কিছু গাড়ি চলাচল করত। সপ্তাহে হাটের দিন বাদ দিয়ে সাধারণ মানুষ ওই চত্বরে যাওয়ার সাহস পেত না। ভূতের ভয় সাংঘাতিকভাবে কাজ করত সাধারণ মানুষের মধ্যে।

    লাশকাটা ঘরে মা কালীর মুর্তি

    আতঙ্ক কাটাতে এগিয়ে আসেন এলাকার প্রবীণরা। জুজু সরাতে স্ট্যান্ডের বাস মালিকরা পরিত্যক্ত লাশকাটা ঘরে মা কালীর মুর্তি (Kali Puja 2024) স্থাপন করেন। নাম দেওয়া হয় মোটরকালী। এরপর থেকে পাঁঠাবলি ও অনান্য নিয়ম মেনে নিষ্ঠা সহকারে পূজিতা হয়ে আসছেন মোটরকালী। তবে মন্দিরে মায়ের পুজোর আগে ঘাটপু্জো দিতে হয় পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রেয়ী খাঁড়িতে। সেখানেই নাকি ঈশ্বরীয় কিছু ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন বহু মানুষ। কথিত আছে যেখানে ঘাটকালীর পুজো দেওয়া হয়, সেখানকার জল নাকি শুকোয় না কখনও। পরীক্ষামূলক ভাবে সেচ লাগিয়েও তা সম্ভব হয়নি বলে প্রমাণ হয়েছে। খরার সময় আশেপাশে জল শুকিয়ে গেলেও জল থেকে যায় আত্রেয়ী খাঁড়িতে।

    বছরে দু’বার মায়ের পুজো (Kali Puja 2024)

    এই বিষয়ে মন্দিরের পুরোহিত বলেন, এই মন্দির বহু পুরনো। মানুষের মধ্যে ভুতের ভয় কাটাতে এইখানে (Balurghat) এই মায়ের পুজো শুরু হয়েছিল। মায়ের পুজো দেবার পর মানুষের মধ্যে ভুতের ভয় কাটে। তারপর থেকে বছরে দুবার মায়ের পুজো হয়। চৈত্র সংক্রান্তিতে মায়ের বাৎসরিক পুজো হয় ও কার্তিক মাসের প্রথম অমাবস্যায় মায়ের পুজো হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 170: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই; মন সর্বদা অন্তর্মুখ… ঈশ্বর সত্য, আর সমস্ত অনিত্য”

    Ramakrishna 170: “শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই; মন সর্বদা অন্তর্মুখ… ঈশ্বর সত্য, আর সমস্ত অনিত্য”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

     চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে — মণিলাল ও কাশীদর্শন

    আইস ভাই, আজ আবার ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে দর্শন করিতে যাই। তিনি ভক্তসঙ্গে কিরূপ বিলাস করিতেছেন, ঈশ্বরের ভাবে সর্বদা কিরূপ সমাধিস্থ আছেন দেখিব। কখন সমাধিস্থ, কখন কীর্তনানন্দে মাতোয়ারা আবার কখন বা প্রাকৃত লোকের ন্যায় ভক্তের সহিত কথা কহিতেছেন, দেখিব। শ্রীমুখে ঈশ্বরকথা বই আর কিছুই নাই; মন সর্বদা অন্তর্মুখ, ব্যবহার পঞ্চমবর্ষীয় বালকের ন্যায়। প্রতি নিঃশ্বাসের সহিত মায়ের নাম করিতেছেন। একেবারে অভিমানশূন্য পঞ্চমবর্ষীয় বালকের ন্যায় ব্যবহার। পঞ্চমবর্ষীয় বালক বিষয়ে আসক্তিশূন্য, সদানন্দ, সরল ও উদার প্রকৃতি। এক কথা (Kathamrita)—“ঈশ্বর সত্য, আর সমস্ত অনিত্য”, দুইদিনের জন্য। চল, সেই প্রেমোন্মত্ত বালককে দিখিতে যাই। মহাযোগী! অনন্ত সাগরের তীরে একাকী বিচরণ করিতেছেন। সেই অনন্ত সচ্চিদানন্দ-সাগরমধ্যে কি যেন দেখিতেছেন! দেখিয়া প্রেমে উন্মত্ত হইয়া বেড়াইতেছেন।

    আজ রবিবার, ৮ই এপ্রিল, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ, ২৬শে চৈত্র, প্রাতঃকাল। এই যে ঠাকুর বালকের ন্যায় বসিয়া আছেন। কাছে বসিয়া একটি ছোকরা ভক্ত—রাখাল।

    মাস্টার আসিয়া ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন। ঠাকুরের (Ramakrishna) ভ্রাতুষ্পুত্র রামলাল আছেন, কিশোরী ও আরও কয়েকটি ভক্ত আসিয়া জুটিলেন। পুরাতন ব্রাহ্মভক্ত শ্রীযুক্ত মণিলাল মল্লিক আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রণাম করিলেন।

    মণি মল্লিক কাশীধামে গিয়াছিলেন। তিনি ব্যবসায়ী লোক, কাশিতে তাঁহাদের কুঠি আছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—হ্যাঁগা, কাশীতে গেলে, কিছু সাধু-টাধু দেখলে?

    মণিলাল—আজ্ঞে হাঁ, ত্রৈলঙ্গ স্বামী, ভাস্করানন্দ—এঁদের সব দেখতে গিছলাম।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—কিরকম সব দেখলে বল?

    মণিলাল—ত্রৈলঙ্গ স্বামী সেই ঠাকুরবাড়িতেই আছেন, মণিকর্ণিকার ঘাটে বেণীমাধবের কাছে। লোকে বলে, আগে তাঁর উচ্চ অবস্থা ছিল। কত আশ্চর্য আশ্চর্য কার্য করতে পারতেন। এখন অনেকটা কমে গেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ও-সব বিষয়ী লোকের নিন্দা।

    মণিলাল—ভাস্করানন্দ সকলের সঙ্গে মেশেন, ত্রৈলঙ্গ স্বামীর মতো নয়—একেবারে কথা বন্ধ (Kathamrita)।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “পঞ্চবার আঠার ষোল, যুগে যুগে এলাম ভাল…শেষে কচে বারো পড়ে মাগো, পঞ্জা-ছক্কায় বন্দী হলাম”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share