Category: পরম্পরা

Get updated History and Heritage and Culture and Religion related news from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Holi: দোল পূর্ণিমার ঐতিহাসিক এবং পৌরাণিক কাহিনীগুলি জানেন?

    Holi: দোল পূর্ণিমার ঐতিহাসিক এবং পৌরাণিক কাহিনীগুলি জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দরজায় কড়া নাড়ছে দোল (Holi)। হলুদ শাড়ি এবং পাঞ্জাবিতে সাজবে মেয়ে এবং ছেলেরা। বসন্ত এসে গেছে গানের তালে তালে পালিত হবে দোল। শান্তিনিকেতনের দোল (Holi) আবার বিশেষ জনপ্রিয়। সারা রাজ্য থেকেই মানুষের ভিড় দেখা যাবে ওইদিন শান্তিনিকেতনে। রবি ঠাকুরের গানে, বসন্তের আগমনে এক আলাদা মাত্রা পায় শান্তিনিকেতনের দোল। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ রং এবং আবির দিয়ে রাধা ও অন্যান্য গোপিনীদের সঙ্গে রং খেলায় মেতে উঠেছিলেন। বিশ্বাস মতে দোল খেলার উৎপত্তি সেখান থেকেই শুরু। যা আজও সমানভাবে এগিয়ে চলেছে।

    বাংলায় শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু দোলযাত্রার (Holi) শুভ সূচনা করেন

    হিন্দু শাস্ত্রবিদরা বলছেন এই দোল (Holi) পূর্ণিমার দিনটিকে গৌড় পূর্ণিমাও বলা হয়। তার কারণ ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার দোল পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম হয়েছিল। পাশাপাশি এই বাংলাতে দোল উৎসবের সূচনাও শ্রীচৈতন্যদেবের হাত ধরে হয়েছিল। ১৫১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি গৃহত্যাগ করে অর্থাৎ নবদ্বীপ ত্যাগ করে বৃন্দাবনে গিয়ে সেখানে রং খেলা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন তখন থেকেই নাকি বাংলাতে দোল (Holi) উৎসবের সূচনা হয় ভক্তদের বিশ্বাস এই দোল খেলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণও হাজির হতেন মহাপ্রভুর সঙ্গে দোল খেলতে।

    আবার কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, প্রায় ২০০০ বছর আগে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন প্রচলন করেছিলেন দোল উৎসব। সপ্তম শতাব্দীতে সম্রাট হর্ষবর্ধনের লেখা রত্নাবলী নাটকেও হোলি (Holi) খেলার উল্লেখ রয়েছে। শুধু উত্তর ভারত নয় দক্ষিণ ভারতের বিজয়নগরের একটি মন্দিরের গায়ে এক রাজকুমার রাজকুমারীর রং খেলার চিত্রকলা রয়েছে। এখান থেকে বলা হয় যে দোল সারা ভারতবর্ষ ব্যাপী প্রচলিত ছিল।

    পৌরাণিক কাহিনীগুলি জানা যাক

    ভক্ত প্রহ্লাদের আখ্যান এবং হোলিকা দহন

    অন্যদিকে পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণুর পরমভক্ত ছিলেন অসুর রাজ হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ।  নিজেকে ঈশ্বর ঘোষণা করেছিলেন রাক্ষসরাজা। অহংকারী রাজার ওপর ব্রহ্মার বরদান ছিল দিন বা রাত, গৃহের ভিতর বা বাইরে, মানুষ বা পশু কেউই হিরণ্যকশিপুকে বধ করতে পারবেনা। এরপর নিজের পুত্র প্রহ্লাদকে হত্যার পরিকল্পনা নেন রাক্ষসরাজা। নিজের বোন হোলিকার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

    হোলিকার ওপর আবার ব্রহ্মার বরদান স্বরুপ একটি চাদর ছিল, যেটি ছিল একধরনের রক্ষা কবচ। এই চাদর গায়ে জড়িয়ে প্রহ্লাদকে নিয়ে অগ্নিকুণ্ডে বসেন হোলিকা। ঠিক তখনই ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় চাদর উড়ে গিয়ে পড়ে প্রহ্লাদের গায়ে। অগ্নিকুণ্ডে দগ্ধ হয়ে যান হোলিকা। এই কারণে দোল উৎসবের আগের দিন হয় হোলিকা দহন। বাংলাতে এটাই প্রচলিত ন্যাড়াপোড়া নামে। ভক্তদের বিশ্বাস, এইদিনে সকল অশুভ শক্তির নাশ হয়। ভগবান বিষ্ণু তথা কৃষ্ণের পূজা করলে জীবনে সমৃদ্ধি নেমে আসে ভক্তদের।

    পুতনা রাক্ষসী বধ

    পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, দোল (Holi) পূর্ণিমার দিনে শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করার কথা কোথাও কোথাও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে হোলিকাকে পুতনার ভূমিকায় রাখা হয় এবং পুতানার বিষ দুধে শ্রীকৃষ্ণ পান করেনি বরং তার রক্ত পান করেন, এইভাবেই ভগবান বধ করেন পুতনাকে। এরফলে শ্রীকৃষ্ণের গায়ের রং নীল হয়ে যায়। বিশ্বাসমতে দোল পূর্ণিমা হল পুতনা বধের পর উৎসব।

     

    বিবাহিত নারীরা তাদের পরিবারের কল্যাণ এবং মঙ্গল কামনায় দোল উৎসবে মাতেন এদিন। ভারতের বাইরেও দোল উৎসব ব্যাপকভাবে পালিত হয়।  বৈষ্ণব ধর্ম ছাড়াও শাক্ত-শৈবরাও এই উৎসব পালন করেন। পরিবারিক, বৃহত্তর সমাজ জীবনের ক্ষেত্রে দোল পূর্ণিমার গুরুত্ব অনেক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ

     

     

     

     

  • Holi: জানেন দোলের আগের দিন ন্যাড়াপোড়া কেন হয়?

    Holi: জানেন দোলের আগের দিন ন্যাড়াপোড়া কেন হয়?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি বছরে দোল ৮ মার্চ। ঠিক তার আগের দিন ন্যাড়াপোড়া, সেটাই আবার বাংলার বাইরে হোলিকা দহন। হোলি (Holi) ও দোল নিয়ে নানা মতভেদ থাকলেও দোলের আগের দিন রাতে সব জায়গায় এই হোলিকা দহন পালিত হয়। শুধু কোথাও বলে চাঁচড় পোড়া, কোথাও ন্যাড়া পোড়া, আবার কোথাও হোলিকা দহন। তবে, এই উৎসবের পিছনে আধ্যাত্মিক গুরুত্বও রয়েছে। 

    হোলিকা দহনের পৌরাণিক আখ্যান

    পুরাণ কাহিনি অনুযায়ী, রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপু তাঁর প্রজাদের পুজোপাঠ এবং যেকোনও প্রকারের ধর্মাচরণ বন্ধ করে দেন। হিরণ্যকশিপু নিজেকেই ঈশ্বর মনে করতেন। প্রজারা তাই অন্য কোনও দেবতার পুজো করতে পারত না। অমরত্ব লাভের জন্য রাক্ষস রাজা ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন। তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা তাঁকে পাঁচটি বর দেন। এক, কোনও মানুষ বা কোনও প্রাণী তাঁকে বধ করতে পারবে না। ঘরের ভিতর বা ঘরের বাইরে তাঁর মৃত্যু হবে না। দিনে বা রাতে তাঁর মৃত্যু হবে না। কোনও অস্ত্র বা শস্ত্রের দ্বারাও মৃত্যু হবে না। এবং জল, ভূমি ও শূন্যেও তাঁর মৃত্যু হবে না।

    হিরণ্যকশিপুর অত্যাচার বাড়ার পর তিনি প্রহ্লাদকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তাঁর পুত্র হয়ে ভক্ত প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর পুজো করতেন। এটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না রাক্ষসরাজা। এক্ষেত্রে তিনি নিজের বোন হোলিকার সাহায্য নেন। হোলিকা ব্রহ্মার কাছ থেকে একটি শাল পেয়েছিলেন, এই শাল ছিল একধরনের রক্ষাকবচ। যেটা তাঁকে সবসময় রক্ষা করবে। তাই ঠিক হয় যে হোলিকা প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসবেন। শাল থাকায় তাঁর কিছু হবে না কিন্তু প্রহ্লাদ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। কিন্তু আগুনের মধ্যে প্রবেশ করা মাত্র হোলিকার শাল প্রহ্লাদের গায়ে গিয়ে পড়ে আর হোলিকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিন্তু প্রহ্লাদ সুরক্ষিত থাকে। এখান থেকেই শুরু হয় হোলিকা দহন।

    দোল উৎসব মানে এক পবিত্র তিথি, ভক্তদের বিশ্বাস এই দিন সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ হয় এবং শুভ শক্তির বিকাশ ঘটে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ

     

  • Aamlaki Ekadashi: আজ আমলকী একাদশী, জানেন এর মাহাত্ম্য? জেনে নিন ব্রতপালনের নিয়ম

    Aamlaki Ekadashi: আজ আমলকী একাদশী, জানেন এর মাহাত্ম্য? জেনে নিন ব্রতপালনের নিয়ম

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  শাস্ত্রকাররা বলছেন একাদশীর অর্থ হল আমাদের ১০ ইন্দ্রিয় এবং এক মন নিয়ন্ত্রণ। হিন্দু শাস্ত্রমতে, একাদশীতে দুটি শব্দ আছে, এক এবং দশ । দশ ইন্দ্রিয় এবং মনের ক্রিয়াকলাপকে জাগতিক জিনিস থেকে ঈশ্বরে রূপান্তরিত করাই আসল একাদশী। ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথি আমলকী একাদশী (Aamlaki Ekadashi) নামে পরিচিত। এই দিনটিকে অনেকে রঙভরনী একাদশীও বলে থাকেন। আমলকী একাদশীতে আমলকী গাছের পুজো করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। ভগবান বিষ্ণুর পুজোও এদিন করা হয়। চলতি বছর আমলকী একাদশীর ব্রত পালন হবে ৩ মার্চ।

    কেন এই একাদশীর নাম আমলকী একাদশী (Aamlaki Ekadashi)

    আমলকী গাছের উত্‍পত্তি নিয়ে পুরাণে একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে আমলকী গাছের উৎপত্তি ভগবান বিষ্ণুর মুখ থেকে। বিশ্বাস মতে, তাঁর মুখ থেকে একবার চাঁদের সমান একটি বিন্দু প্রকট হয়ে পৃথিবীতে গিয়ে পড়ে। সেই বিন্দু থেকেই আমলকী গাছের উৎপত্তি হয়। বিষ্ণুর মুখ থেকে উৎপন্ন আমলকী গাছকে তাই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, আমলকী ফল ভগবান বিষ্ণুর অত্যন্ত প্রিয়। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী এই ফলের প্রচুর উপকারিতা আছে। ভক্তদের আরও বিশ্বাস, আমলকী খেলে তিন গুণ শুভ ফল লাভ করা যেতে পারে। অনেকে মনে করে আমলকী একাদশী তিথি এই গাছে অবস্থান করেন স্বয়ং লক্ষ্মী। সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির দেবীর লক্ষ্মীর কৃপা পাওয়ার জন্যও এদিন আমলকী গাছের পুজো করার রীতি প্রচলিত আছে। দেশের অনেক জায়গায় আমলকী একাদশী থেকেই দোল উৎসবের সূচনা হয়। আবার অন্য একটি পৌরাণিক গল্প অনুসারে, ভগবান বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মার জন্ম হয়েছিল। পরমব্রহ্মকে জানার জন্য তখন তপস্যা শুরু করেছিলেন ব্রহ্মা। সেই তপস্যায় খুশি হয়ে বিষ্ণু আর্বিভূত হন। চোখের সামনে নারায়ণকে দেখে ব্রহ্মা তাঁর চোখের জল সামলে রাখতে পারেননি। নারায়ণের পায়ে তাঁর চোখের জল পড়েছিল। আর সেখান থেকেই তৈরি হয় এই গোল সবুজ ফল। নারায়ণ তখন বলেছিলেন, ‘আজ থেকে এই ফল আর এই গাছ আমার খুব প্রিয় হবে। এই দিনে ভক্তিভরে আমলকী গাছকে পুজোর মধ্যে দিয়েই আমার আরাধনা করা হবে। আমলকী একাদশীতে পুজো করলে সমস্ত পাপ বিনষ্ট হবে এবং জীবনে আসবে শুভ যোগ’।

    আমলকী একাদশীর (Aamlaki Ekadashi) ব্রত কথা

    কথিত আছে প্রাচীনকালে চিত্রসেন নামে এক রাজার রাজত্ব ছিল। তাঁর রাজ্যে একাদশী ব্রত অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করা হত। তাঁর রাজ্যের সমস্ত প্রজা একাদশী ব্রত পালন করতেন। অন্যদিকে রাজার মনে আমলকী একাদশীর প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ছিল। একদিন শিকার করতে গিয়ে জঙ্গলে অনেক দূর এগিয়ে যান রাজা। সেখানে এক দল ডাকাতের কবলে পড়েন তিনি। অস্ত্র হাতে রাজাকে আক্রমণ করে ডাকাতরা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে রাজার ওপর যে অস্ত্রই প্রয়োগ করা হোক না কেন, সে সবই ফুলে পরিণত হয়ে যায়।

    বিপুল সংখ্যক ডাকাতদের মোকাবিলা করতে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান রাজা। সে সময় রাজার শরীর থেকে একটি দৈব শক্তি প্রকট হয় ও ডাকাতদের বিনাশ করে পুনরায় অদৃশ্য হয়ে যায়। জ্ঞান ফিরলে রাজা দেখেন সমস্ত ডাকাত মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। হতবাক হয়ে যান রাজা চিত্রসেন। তখন আকাশবাণী হয়, ‘হে রাজা! এই সমস্ত রাক্ষস তোমার আমলকী একাদশীর ব্রতর প্রভাবে মারা গিয়েছে। তোমার শরীর থেকে উৎপন্ন আমলকী একাদশীর বৈষ্ণবী শক্তি এদের সংহার করেছে। এদের বধ করে সেই শক্তি পুনরায় তোমার শরীরে প্রবেশ করেছে। এই কথা শুনে রাজা প্রসন্ন হন এবং নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে একাদশীর মাহাত্ম্য প্রচার করেন।’

    কীভাবে আমলকী একাদশীর (Aamlaki Ekadashi) ব্রতপালন করবেন

    পণ্ডিতরা বলছেন, এদিন খুব সকালে অর্থাৎ ব্রাহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে বিষ্ণুর পুজো করুন। এরপর বাড়ির পাশে যেখানে আমলকী গাছ রয়েছে সেখানেও বিষ্ণুর একটি ছবি বসিয়ে পুজো করতে হবে। আমলকী গাছের তলায় হলুদ কাপড় বিছিয়ে নারায়ণের ছবি রাখুন। এবার ধূপ, ফুল, চন্দন আর নৈবেদ্য সাজিয়ে পুজো করুন। পুজো শেষ হলে গাছতলায় ঘি-এর প্রদীপ জ্বালিয়ে আসুন। তবে প্রসাদে একটি গোটা আমলকী যেন অবশ্যই থাকে। এদিন নিরামিষ আহারের রীতি রয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

     

     

  • Maha Shivratri: আজ মহাশিবরাত্রি, পবিত্র ব্রত পালনের নেপথ্য লৌকিক কাহিনী জানুন

    Maha Shivratri: আজ মহাশিবরাত্রি, পবিত্র ব্রত পালনের নেপথ্য লৌকিক কাহিনী জানুন

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: ভক্তদের কাছে শিবরাত্রির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এইদিন দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনায় মেতে ওঠেন দেশবিদেশের ভক্তরা। তাঁদের বিশ্বাস এই বিশেষ তিথিতে মহাদেব সন্তুষ্ট হলে সকল মনস্কামনা পূরণ করেন। এই বিশেষ তিথিতে ভক্তরা একটি সারাদিনব্যাপী উপবাস পালন করে এবং বিশ্বজুড়ে শিব মন্দিরগুলিতে পূজা করা হয়। ভক্তরা সাধারণত শিবলিঙ্গে দুধ, বেলপাতা নিবেদন করেন এবং মোক্ষ প্রার্থনা করেন।
     বেশ কয়েকটি পুরাণে মহা শিবরাত্রির (Maha Shivratri) উল্লেখ পাওয়া যায়। মধ্যযুগীয় শৈব গ্রন্থগুলিতে শিবরাত্রির দিন উপবাস ও লিঙ্গরূপের শিবের পূজার কথা উল্লেখ রয়েছে।

    শিবরাত্রির ব্রত পালনের লৌকিক কাহিনী

    হিন্দু মহাপুরাণ তথা শিবমহাপুরাণ (Maha Shivratri) অনুসারে এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার অন্য একটি পৌরাণিক আখ্যান মতে, এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল।  এই মহাশিবরাত্রিতে শিব তাঁর প্রতীক লিঙ্গ তথা শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। 

    কিন্তু শিবরাত্রির ব্রত পালনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি প্রচলিত কাহিনী।  এই কাহিনী তিনজনকে কেন্দ্র করে শিব, যমরাজ এবং এক ব্যাধ।
    লৌকিক কথা অনুসারে, কাশীতে বাস করতেন এক ব্যাধ। এমনই একদিন শিকারে বেরিয়ে দিনভর অভুক্ত ছিলেন সেই ব্যাধ। ক্ষুধার্থ অবস্থায় তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এক গাছের নিচে। এদিকে যখন তাঁর ঘুম ভাঙল তখন সন্ধ্যা। হিংস্র জন্তুতে ভর্তি সেই জঙ্গল। প্রাণ বাঁচাতে উঠে পড়লেন একটি বেল গাছে। সেখানেই রাত্রিযাপন করেছিলেন ওই শিকারী।

    এদিকে ওই বেলগাছের নিচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ। গাছে ব্যাধের নড়াচড়ার ফলে ওই গাছ থেকে বেশ কয়েকটি বেলপাতা পড়েছিল শিবলিঙ্গে। আর ব্যাধ ছিলেন উপবাসী। দিনটি ছিল শিবরাত্রির দিন। পরের দিনে ব্যাধ বাড়ি ফিরে খেতে বসলে তাঁর বাড়িতে আসেন এক অতিথি। এদিকে ঘরে খাবার কম। তাই অতিথি সেবা করতে নিজের খাবারই সেই অতিথিকে নিবেদন করেছিলেন শিকারী। ফলে নিজের অজান্তেই পালন করে ফেলেছিলেন ব্রত।

    তারপর কেটে গিয়েছিল বহু বহু বছর। ব্যাধের মৃত্যুর সময় তাঁকে নিতে আসেন যমদূতেরা। এদিকে ব্যাধকে নিতে আসেন শিবদূতেরাও। দুই পক্ষের দূতদের মধ্যে বাধে লড়াই। অবশেষে যমদূতরা কৈলাসে যান দেবাদিদেবকে নালিশ করতে। তখন শিবপ্রহরী নন্দী যমদূতদের বলেন, যেহেতু ব্যাধ শিবচতুর্দশীর দিনে ব্রত পালন করেছিলেন তাই পুণ্যলাভ করেছেন। এই কারণেই যমদূতরা তাঁকে নিয়ে যেতে পারেন না। সমস্ত ঘটনা যমদূতরা জানিয়েছিলেন যমরাজকে। সব শুনে যমরাজ বলেছিলেন, শিব চতুর্দশীতে এই ব্রত যিনি পালন করবেন তিনি সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পাবেন। আরও বলেছিলেন, সেই ব্রতপালনকারীর ওপরে থাকবে না যমের অধিকার।

    আবার হিন্দু পুরাণ অনুসারে, এই দিনে ভগবান শিব দেবী পার্বতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ভগবান শিব পুরুষকে (মননশীলতা) মূর্ত করেছেন, যেখানে মা পার্বতীর প্রকৃতির (প্রকৃতি) ব্যক্তিত্ব রয়েছে। চেতনা এবং শক্তি উভয়ের মিলনের সাথে এটি সৃষ্টিকে সহজ করে তোলে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

     

     

  • Shivaratri: শিবরাত্রির ব্রততে কোন বিধি অবশ্যই মানতে হবে, কী কী করবেন না, জানেন?

    Shivaratri: শিবরাত্রির ব্রততে কোন বিধি অবশ্যই মানতে হবে, কী কী করবেন না, জানেন?

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: পুরাণ অনুযায়ী ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শিব পার্বতী। ভক্তদের কাছে এই বিশেষ তিথির আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে। বিশ্বাস মতে, এইদিনে ভক্তিভরে শিব আরাধনা করলে জীবনে সুখ শান্তি সমৃদ্ধি আসে। 

    শিবরাত্রির (Shivaratri) দিন কীভাবে শিব আরাধনা করবেন এবং কী কী বিধিনিষেধ মেনে চলবেন তা জেনে নিন

    হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, ইংরেজির ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ও বাংলার ৫ ফাল্গুন ১৪২৯ শনিবার রাত্রি ৮:০৩ ঘটিকায় শিবচতুর্দশী শুভারম্ভ এবং আগামীদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বিকাল ৪:১৮-তে মহা সমাপ্তি।

    অমৃতযোগঃ

    শাস্ত্র অনুযায়ী, অমৃতযোগ চলাকালীন লিঙ্গাভিষেক অত্যন্ত শুভ ফলপ্রদ! এ সময় লিঙ্গাভিষেক করলে পুত্র সন্তান প্রাপ্তি হয়, শুভ কাজে আসা সমস্ত বিঘ্ন কেটে যায়। জীবনে সাফল্য আসে। ছাত্ররা পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হয়।

    এবছরে অমৃতযোগের শুভক্ষণগুলি হল

    রাত্রি  ০৮:৪৬-১১:১৮ (১৮ ফেব্রুয়ারি)
    রাত্রি  ০১:০০-০২:৪২ (১৯ ফেব্রুয়ারি)
    ভোর  ০৩:৩৩-০৫:১৫ (১৯ ফেব্রুয়ারি)
    সকাল  ০৭:৪২-১০:৪২ (১৯ ফেব্রুয়ারি)

    কী কী বিধি মেনে চলবেন

    পণ্ডিতরা বলছেন, শিবরাত্রির (Shivaratri) আগের দিন “সংযম” ব্রত পালন করা উচিত। সাত্ত্বিক আহার অর্থাৎ নিরামিষ ও হালকা খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। পবিত্র চিন্তা করা উচিত।

     শিবরাত্রির (Shivaratri) দিন কালো তিল ভেজানো জলে সূর্যোদয়ের পূর্বে স্নান করতে হবে, এই মন্ত্রটি পাঠ করে- “ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টি বর্দ্ধনম্। উর্বারুকমিব বন্ধনান্মৃত্যোমুক্ষীয় মামৃতাৎ।।” স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে।

     স্নানের পর সারাদিন উপোস করে থাকতে হবে, তবে ব্রাহ্মণের বিধান অনুযায়ী তরল জাতীয় কিছু পান করা যেতে পারে ভোলানাথের মাথায় জল ঢালার আগে! তবে অনেকে নির্জলা উপোষ করে থাকেন। সারাদিন এই মন্ত্রটি পাঠ করে যেতে হবে “ওঁ নমঃ শিবায়”।

    শিবরাত্রির (Shivaratri) পূজা চারটি প্রহরে হয়, এবছরের প্রহরের সময়গুলি হল –

    প্রথম প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪২ মিনিট। এই সময় দুধ দিয়ে অভিষেক করানোর বিধি দিচ্ছেন শাস্ত্রকাররা।

    দ্বিতীয় প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ৮টা ৪২ মিনিট থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিট। এই প্রহরের পুজোতে দই দিয়ে অভিষেক করতে বলছেন পণ্ডিতরা। 

    তৃতীয় প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১টা ৫০ মিনিট থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা ৫৮ মিনিট। ঘি দিয়ে অভিষেকের বিধান রয়েছে এই প্রহরের পুজোতে।

    চতুর্থ প্রহরের পূজা – ১৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা ৫৮ মিনিট থেকে সকাল ৬টা ০৬ মিনিট। এই প্রহরের পুজোতে মধু দিয়ে অভিষেক করতে বলছেন পণ্ডিতরা।

    শিবপুজোর উপকরণ

    দুধ, দই, ঘি, মধু, সাদা-চন্দন, বেলপাতা, আকন্দ, ধুতুরা, অখণ্ড চাল, ভাঙ, সাদা ফুল, অপরাজিতা ফুল, মরশুমি ফল এবং বেল, প্রদীপ, কর্পূর, মিষ্টান্ন ইত্যাদি। পিতলের পাত্র ব্যবহার করবেন, অভিষেক করতে।

    কোন কোন উপকরণ ব্যবহার করা যাবেনা

    ১)অভিষেকের জন্য স্টিল, তামা, লোহার পাত্র ব্যবহার করা যাবে না।
    ২)হলুদ, সিঁদুর, কুমকুম ব্যবহার করা যাবে না।
    ৩)তুলসী পাতা ব্যবহার করা যাবে না।
    ৪)ভাঙা চাল ব্যবহার করা যাবে না।
    ৫)শঙ্খ থেকে জল অর্পণ করা যাবে না।
    ৬)শঙ্খ বাজানো যাবে না।
    ৭)করতাল বাজানো যাবে না।
    ৮)উগ্র সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না।
    ৯)ডাব বা নারকেলের জল ব্যবহার করা যাবে না।

    উপবাস ভঙ্গঃ পূজা কার্যাদি পরিপূর্ণ করার পর ব্রাহ্মণের বিধান অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে উপোস ভঙ্গ করা যাবে।

    সমগ্র নিয়ম সঠিকভাবে পালন করে পূজার কাজ করতে পারলে আপনার সমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ হবে এবং আপনি মহাদেবের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

  • Non Bramhin Priest: তামিলনাড়ুর এই মন্দিরে পুজো করেন দুজন অব্রাহ্মণ পুরোহিত! জানেন কীভাবে?

    Non Bramhin Priest: তামিলনাড়ুর এই মন্দিরে পুজো করেন দুজন অব্রাহ্মণ পুরোহিত! জানেন কীভাবে?

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: মন্দিরে বিগ্রহের পুজো কী শুধু ব্রাহ্মণরাই করতে পারবে? এনিয়ে জোর চর্চা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। পুজো, যজ্ঞ, শাস্ত্র আলোচনা এসবই ব্রাহ্মণরা করতেন প্রাচীন ভারতে। তবে তা জন্মগত ছিল কি? বৈদিক সভ্যতায় সমাজের শ্রেণি বিভাগ ছিল গুণ, কাজ এবং আগ্রহের ভিত্তিতে। বলা ভাল পেশার ভিত্তিতে। পরবর্তী বৈদিক যুগ থেকে গুণ এবং কাজের ভিত্তিতে শ্রেণি বিভাগ আর থাকল না। পরিবর্তে তা হয়ে গেল জন্মগত।  অর্থাৎ ব্রাহ্মণের পরবর্তী প্রজন্ম হল ব্রাহ্মণ। ক্ষত্রিয়ের পুত্র ক্ষত্রিয়। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র গীতা, বৈদিক সাহিত্যের অন্যতম প্রধান গ্রন্থ। ভক্তদের বিশ্বাস গীতা হল ভগবান শ্রী কৃষ্ণের মুখের বাণী। গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের ত্রয়োদশ শ্লোকে বলা হচ্ছে, চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ অর্থাৎ সমাজে চারটি বর্ণ তৈরি করা হয়েছে গুণ এবং কর্মের ভিত্তিতে।

    তামিলনাড়ুর ঐতিহাসিক মন্দিরে পূজা-অর্চনা করেন অব্রাহ্মণ পুরোহিতরা (Non Bramhin Priest)

    ভারতবর্ষের অন্যতম বিখ্যাত মন্দির হল তামিলনাড়ুর ভায়লুর মুরুগান মন্দির। এখানে ভগবান শিবের আরাধনা করা হয়। নবম শতাব্দীতে এই মন্দির চোলরাজারা স্থাপন করেন বলে জানা যায়। বর্তমানে মন্দিরের অন্যতম পুরোহিত হলেন, এস প্রভু এবং এস জয়বালান। দুজনেই অব্রাহ্মণ (Non Bramhin Priest)। দেশের অন্যতম বিখ্যাত এবং প্রাচীন এই মন্দিরের পুরোহিত অব্রাহ্মণ (Non Bramhin Priest)! বলা ভাল তাঁরা ব্রাহ্মণের কাজ করে চলেছেন। যেমনটা ঠিক বৈদিক সভ্যতায় হত। জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৪ অগাস্ট ২৪ জন প্রশিক্ষিত পুরোহিতকে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন মন্দিরে পুজোর কাজে নিয়োগ করা হয়, যাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন অব্রাহ্মণ(Non Bramhin Priest)। সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ, পুজোর রীতি সবকিছুর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এঁরা। এঁদের প্রত্যেকের উপনয়নেরও ব্যবস্থা করা হয় মন্দিরের পক্ষ থেকে।

    কী বলছেন ভায়লুর মুরুগান মন্দিরের দুই অব্রাহ্মণ পুরোহিত (Non Bramhin Priest)

     ভায়লুর মুরুগান মন্দিরের অন্যতম পুরোহিত ৩১ বছর বয়সী এস জয়বালন বলেন,  আমার পরিবারে পুজো পাঠের রীতি ছোট থেকেই দেখে আসছি। তখন থেকেই আমি লক্ষ্য বানিয়েছিলাম যে পুরোহিত হব। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর অবশেষে তা হতে পেরেছি। অন্যদিকে এই মন্দিরের অন্যতম অব্রাহ্মণ (Non Bramhin Priest) পুরোহিত ৩০ বছর বয়সী এস প্রভু একজন দর্জির পুত্র। তিনি বলেন,আমার কাছে এটা স্বপ্নের থেকে কম কিছু নয় যে ইতিহাস বিখ্যাত এই মন্দিরে আমি পুরোহিত হতে পেরেছি। ১৭ বছর বয়স থেকে আমি প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি এই কাজে। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে আমি শিখেছি পুজোপাঠ, সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ। শুধুমাত্র ভারতেই নয় সিঙ্গাপুরেরও অনেক মন্দিরে আমি পুজো করেছি। উপনয়ন, বিবাহ, অন্নপ্রাশনেরও কাজ করে থাকি আমি।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

  • Shivaratri: এবছর মহা শিবরাত্রি তিথিতে একাধিক শুভযোগ, ব্রতপালনে কী কী ফল মিলবে জানুন

    Shivaratri: এবছর মহা শিবরাত্রি তিথিতে একাধিক শুভযোগ, ব্রতপালনে কী কী ফল মিলবে জানুন

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: সারা বছর ধরেই শিবলিঙ্গের পুজো চলে। দেবাদিদেব মহাদেব অল্পতেই সন্তুষ্ট। পুজোর উপকরণ বলতে দুধ, বেলপাতা, গঙ্গাজল সঙ্গে ধুতুরা ফুল বা যে কোনও সাদা ফুল হলে ভাল হয়। শিব আরাধনার সবচেয়ে বড় উৎসব হল মহাশিবরাত্রি (Shivaratri)। সারা বিশ্বজুড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই বিশেষ তিথিতে মেতে ওঠেন শিব পুজোয়।

     সাধারণভাবে প্রতিমাসে একটি করে শিবরাত্রি (Shivaratri) থাকে তবে হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী প্রতি বছর কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হওয়া মহাশিবরাত্রি সবচেয়ে পবিত্র মানা হয়। এই দিন উপোস করে ব্রত পালন করেন ভক্তরা। সন্ধ্যায় শিবলিঙ্গের পুজো হয়। হিন্দুপুরাণ মতে এই তিথিতে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শিব ও পার্বতী। পণ্ডিতদের মতে, ২০২৩ সালে মহাশিবরাত্রি তিথিতে একাধিক শুভ যোগের বিশেষ সংযোগ তৈরি হচ্ছে।

    এবছরের মহাশিবরাত্রি (Shivaratri) তিথি এবং চার প্রহরের পুজোর নির্ঘণ্ট

     চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি, শনিবার মহাশিবরাত্রি পালিত হবে। পঞ্জিকা অনুযায়ী, চতুর্দশী তিথির সূচনা হচ্ছে – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ৮টা ০২ মিনিটে এবং সমাপ্ত হচ্ছে – ১৯ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে।

    মহাশিবরাত্রিতে (Shivaratri) চার প্রহরের পুজো হয়

    এবছর প্রথম প্রহরের পূজার সময় – ১৮ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪২ মিনিট। 
    দ্বিতীয় প্রহরের পূজার সময় – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ৮টা ৪২ মিনিট থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিট। 
    তৃতীয় প্রহরের পূজার সময় – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১টা ৫০ মিনিট থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা ৫৮ মিনিট।
    চতুর্থ প্রহরের পূজার সময় – ১৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা ৫৮ মিনিট থেকে সকাল ৬টা ০৬ মিনিট। 
    ব্রতভঙ্গের সময় – ১৯ ফেব্রুয়ারি, সকাল ৬টা ০৬ মিনিট থেকে দুপুর ২টা ৪৩ মিনিট। শিবরাত্রিতে (Shivaratri) নিশীথ কালে পুজোর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১টা ২৫ মিনিট থেকে মধ্যরাত ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত নিশীথ কাল থাকবে।

    চলতি বছরের মহাশিবরাত্রিতে (Shivaratri) তৈরি হচ্ছে অনেকগুলি শুভযোগ

    জ্যোতিষীরা বলছেন, এবছরের মহাশিবরাত্রিতে (Shivaratri) বিশেষ সংযোগ থাকছে। এই দিনেই শনি প্রদোষ ব্রত পড়েছে। এই ধরনের সংযোগ শনি দোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। শুধু তাই নয়, যাঁরা পুত্র লাভ করতে চান তাঁদের জন্যও এই সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সন্তান লাভের পথে বাধা এলে তাঁরা এই যোগে পূজার্চনা করে নিজের মনস্কামনা পূর্ণ করতে পারেন। সর্বার্থ সিদ্ধি যোগও এই দিনে গঠিত হচ্ছে।

    শিবরাত্রিতে গ্রহের অবস্থান এ সময় স্বরাশি কুম্ভে বিরাজ করবেন শনি। সূর্য ১৩ ফেব্রুয়ারি কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ করবে। যে কারণে আবার শনি-সূর্যের যুতি তৈরি হবে। শনি অস্ত অবস্থায় থাকবেন। যার ফলে সূর্যের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। এই সংযোগ কেরিয়ার ও আর্থিক দিক দিয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়। এই শুভ যোগে শিবের পুজো করলে শনির দোষও দূর হবে। এই সময় বৃহস্পতি মীন রাশিতে বিরাজ করবে। যার ফলে হংস রাজযোগ তৈরি হবে, যা কেরিয়ারের জন্য অত্যন্ত লাভদায়ক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

  • Vijaya Ekadashi: শ্রীরামচন্দ্র এই ব্রত পালন করেছিলেন! এবছর বিজয়া একাদশী ১৬ ফেব্রুয়ারি

    Vijaya Ekadashi: শ্রীরামচন্দ্র এই ব্রত পালন করেছিলেন! এবছর বিজয়া একাদশী ১৬ ফেব্রুয়ারি

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় একাদশী হল বিজয়া একাদশী (Vijaya Ekadashi)। অর্থাৎ কৃষ্ণ পক্ষের একাদশী তিথি। নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এবছর ১৬ ফেব্রুয়ারি পড়েছে এই তিথি। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, এই একাদশী তিথিতে ভগবান বিষ্ণুর বিশেষ পূজার্চনা করা হয়ে থাকে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই একাদশীতে (Vijaya Ekadashi) ভক্তি সহকারে পুজো করলে জয় লাভের পথ প্রশস্ত হয়। পাশাপাশি সমস্ত বাধা বিপত্তি থেকে মুক্তিও পাওয়া যায়। 

    চলতি বছরে বিজয়া একাদশী (Vijaya Ekadashi) তিথি কখন শুরু হচ্ছে

    পঞ্জিকা অনুযায়ী  ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা ৩২ মিনিটে একাদশী তিথি শুরু হবে এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ২টো ৪৯ মিনিট অবধি তা চলবে। 

    বিজয়া একাদশীর (Vijaya Ekadashi) দিন কী করবেন এবং কী করবেন না

    হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, এদিন জুয়া খেলা অনুচিত। বিশ্বাস মতে, এমন করলে ব্যক্তির বংশ নষ্ট হয়।
        
    একাদশীর (Vijaya Ekadashi) রাতে ঘুমোতে নিষেধ করা হয়েছে শাস্ত্রে। সারা রাত জেগে ভগবান বিষ্ণুর মন্ত্র জপ করা উচিত।
        
    শাস্ত্র অনুযায়ী, এদিন চুরি করলে পরবর্তী ৭টি প্রজন্ম সেই পাপের অংশীদার হয়ে পড়ে।
         
    একাদশী (Vijaya Ekadashi) তিথিতে ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভের জন্য খাওয়া-দাওয়া ও ব্যবহারে সাত্ত্বিকতা রাখা উচিত। কর্কশ শব্দ ব্যবহার করে কারও সঙ্গে কথা বলা উচিত নয়। ক্রোধ ও মিথ্যাকথা এড়িয়ে চলা উচিত।
        
    বিজয়া একাদশীর (Vijaya Ekadashi) দিন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে যাওয়া উচিত।

    বিজয়া একাদশীর (Vijaya Ekadashi) পৌরাণিক আখ্যান

    পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী, দ্বাপর যুগে কোনও একসময়ে ভগবান কৃষ্ণের কাছে ফাল্গুন একাদশী সম্পর্কে জানার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির। ফাল্গুন একাদশীর মাহাত্ম্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ বলেন যে, ‘হে কৌন্তেয়, নারদ মুনি সবার প্রথমে এই একাদশী সম্পর্কে জেনেছিলেন ব্রহ্মার কাছ থেকে। এরপর তোমাকে আমি এ সম্পর্কে  অবগত করছি। এর সূত্রপাত ত্রেতা যুগে। সীতা হরণের পর রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সুগ্রীবের সেনার সঙ্গে লঙ্কার দিকে যাত্রা করেন রামচন্দ্র। কিন্তু লঙ্কা পৌঁছনোর আগেই বিশাল সমুদ্র তাঁদের পথ আটকে দেয়। রামচন্দ্র লক্ষ্মণের কাছ থেকে সমুদ্র পার করার উপায় জানতে চাইলে, লক্ষ্মণ বলেন, প্রভু আপনি সর্বজ্ঞ, তবে তা সত্ত্বেও জানতে চাইলেন, কিন্তু আমিও কোনও উপায় দেখছিনা। কিন্তু এখান থেকে কিছু দূরেই বকদালভ্য মুনির আশ্রম রয়েছে। তাঁর কাছে এর কোনও না-কোনও উপায় নিশ্চয়ই পাওয়া যেতে পারে। এরপরই বকদালভ্য মুনির কাছে পৌঁছন রামচন্দ্র। সমস্যা শোনার পর ঋষি তাঁকে ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে সমস্ত সেনা-সহ উপবাস পালনের কথা বলেন। বলেন, ‘এই ব্রতর প্রভাবে সমুদ্র পার করতে সফল হবেন তাঁরা এবং লঙ্কা বিজয়ও সম্ভব হবে। পৌরাণিক কাহিনী মতে, একাদশী ব্রত পালন করার পরই রামসেতুর নির্মাণ করে লঙ্কাবিজয় করেন রামচন্দ্র। তারপর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে এই তিথির মাহাত্ম্য। ভক্তদের বিশ্বাস বিজয়া একাদশী (Vijaya Ekadashi) পালন করলে শত্রু বিজয় করা যায়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

     

     

  • Kartik Puja: শিব-পার্বতীর পুত্র কীভাবে হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক, জেনে নিন সেই গল্প

    Kartik Puja: শিব-পার্বতীর পুত্র কীভাবে হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক, জেনে নিন সেই গল্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নবদম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক (Kartik Puja) রেখে এসেছে, এমন বন্ধু আমাদের পরিচিত মহলে নিশ্চয়ই রয়েছে। স্বয়ং মহাদেব-পুত্র তাঁদের বাড়িতে এসেছেন বলে কথা! গৃহকর্তা বা কর্ত্রীকে তাই পরপর চার বছর এই পুজো করতে হয়। কিন্তু বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুরই বা কেন রাখা হয়? নিছক মজার উদ্দেশ্যেই নবদম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুর রাখা হয় না। এরমধ্যে লোকাচার রয়েছে। কী সেই লোকাচার? নবদম্পতির কোলে যেন কার্তিকের মতো পুত্র আসে। হঠাৎ কার্তিকের মতো পুত্রের আকাঙ্খা কেন? এর জন্য আমাদের জানতে হবে একটি পৌরাণিক আখ্যান।

    কার্তিকের পৌরাণিক কাহিনী

    পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক (Kartik Puja)। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা মানে হল কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পুজো করা হয় নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে, বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিল। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে মুক্ত করেন। 

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্ম পথে চলতে পারেন সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানস কন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্ম কর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহ কর্ম সম্পাদন করতেন।

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, “আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।”‌ ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনোমত বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারক নামের অসুরের‌।

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে- “একমাত্র শিবের বালক পুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।” ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুরকে বধ করতে পারবেন।

    আয়োজন শুরু হল শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হল। সেই সময় মাতা চন্দ্রঘন্টার রূপ ধারণ করে পার্বতী দেবী অসুরদের বিতাড়িত করেন। এরপর সুসম্পন্ন হয় শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হয় কার্তিকের (Kartik Puja)। মাতা পার্বতী তখন হন স্কন্দমাতা অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে “স্কন্দপুরাণে”। শিব-পার্বতীর পুত্রের জন্মই হয়েছিল তারকাসুরের বধ এবং স্বর্গ রাজ্যে দেবতাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য। তাই প্রতিটি সন্তান যেন ‘কার্তিক’ এর মতো হয় এই কামনায় বাড়ি বাড়ি পুজো হয় কার্তিকের। 

    আরও পড়ুন: মহা পঞ্চমীর মাহাত্ম্য: জানুন তারকাসুর বধ ও স্কন্দমাতার আখ্যান

    কার্তিকের প্রণাম মন্ত্র 

    দেব সেনাপতি কার্তিকের প্রণাম মন্ত্রটি হল –
     
    ওঁ কার্ত্তিকের মহাভাগ দৈত্যদর্পনিসূদন।
    প্রণোতোহং মহাবাহো নমস্তে শিখিবাহন।
    রুদ্রপুত্র নমস্ত্তভ্যং শক্তিহস্ত বরপ্রদ।
    ষান্মাতুর মহাভাগ তারকান্তকর প্রভো।
    মহাতপস্বী ভগবান্ পিতুর্মাতুঃ প্রিয় সদা।
    দেবানাং যজ্ঞরক্ষার্থং জাতস্ত্বং গিরিশিখরে।
    শৈলাত্মজায়াং ভবতে তুভ্যং নিত্যং নমো নমঃ।
     
    অনুবাদ: হে মহাভাগ, দৈত্যদলনকারী কার্তিক দেব তোমায় প্রণাম করি। হে মহাবাহু, ময়ূর বাহন, তোমাকে নমস্কার। হে রুদ্রের (শিব) পুত্র, শক্তি নামক অস্ত্র তোমার হাতে। তুমি বর প্রদান কর। কৃত্তিকা তোমার ধাত্রীমাতা। জনক-জননী প্রিয় হে মহাভাগ, হে ভগবান, তারকাসুর বিনাশক, হে মহাতপস্বী প্রভু তোমাকে প্রণাম। দেবতাদের যজ্ঞ রক্ষার জন্য পর্বতের চূড়ায় তুমি জন্মগ্রহণ করেছ। হে পার্বতী দেবীর পুত্র তোমাকে সতত প্রণাম করি।

    বাংলায় কার্তিক পুজো বেশ জনপ্রিয়

    বাংলায় কার্তিক পুজো (Kartik Puja) প্রায় সর্বত্রই হয়, এর মধ্যে হুগলির বাঁশবেড়িয়া এবং পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কার্তিক পুজো  ব্যাপক জনপ্রিয়। এই দুই জায়গায় কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মাতেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সুসজ্জিত আলোর মালা, মণ্ডপসজ্জার কারুকার্য, বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবীদের বিশালাকার প্রতিমার সঙ্গে থাকে নানা রকমের বাজনা।

  • Bolla Kalipuja: রাসপূর্ণিমার পরেই হয় এই পুজো! জানেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ‘বোল্লা কালীপুজোর’ ইতিহাস? 

    Bolla Kalipuja: রাসপূর্ণিমার পরেই হয় এই পুজো! জানেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ‘বোল্লা কালীপুজোর’ ইতিহাস? 

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণ মতে, দেবী কালীর একাধিক রূপের উল্লেখ পাওয়া যায়। দশম মহাবিদ্যার প্রথম নামটিই হলো ভীষণ দর্শনা দেবী কালী। এছাড়াও রয়েছে, দক্ষিণাকালী, কৃষ্ণকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, শ্রীকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালী, শ্মশানকালী ও মহাকালী। পৌরাণিক নাম ছাড়াও মাতা কালী স্থানীয় নামগুলিতেও সমানভাবে জনপ্রিয়। কোথাও ডাকাতকালী তো কোথাও বড়মা। সারাবছরই বিভিন্ন সময়ে দেবী কালীর আরাধনা করা হয়।

    বোল্লা কালীর ইতিহাস

    কালীপুজোর পরেই হয় রাসপূর্ণিমা। এই রাসপূর্ণিমার পরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে বোল্লা কালী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। বোল্লা একটি গ্রামের নাম। অবস্থান, বালুরঘাট শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে। লোককথা অনুযায়ী, আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগের ঘটনা। এই এলাকার জমিদার ছিলেন বল্লভ চৌধুরি। তার নাম অনুসারেই এলাকার নাম হয়েছে বোল্লা। সেসময় স্থানীয় এক মহিলা একটি কালো পাথরখণ্ড কুড়িয়ে পেয়ে সেটিকেই দেবী কালীরূপে পুজো শুরু করেছিলেন। এরপর স্থানীয় জমিদার, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে মামলায় জড়িয়ে যান। এমন সংকটের সময়, স্থানীয় জমিদার বোল্লা মায়ের কাছে মানত করে মামলায় জয় লাভ করেন বলেই কথিত রয়েছে। লোককথা অনুযায়ী, দেবী কালী জমিদারকে উদ্ধারের জন্য স্বয়ং আবির্ভূত হয়েছিলেন। কৃতজ্ঞতার প্রতীক হিসাবে তিনি দেবী কালীর একটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। সেই বছর, রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবারে  পুজোর আয়োজন শুরু হয়, এই ধারা আজও চলছে।

    আরও পড়ুন: জানুন রঘু ডাকাতের কালী পুজোর গল্প

    অন্য একটি মতে, একসময় এই গ্রামে ডাকাতদের অত্যাচার শুরু হয়েছিল। তখন দেবী কালী ভয়ঙ্করী রূপ ধারণ করেন। মাতা কালীর ভীষণ রূপ দেখা মাত্র ডাকাতরা পালিয়ে যায়। তখন থেকেই বোল্লা কালী পুজোর সূচনা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস মতে, বোল্লা কালী অত্যন্ত জাগ্রত। ভক্তদের সমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ করেন তিনি। তাঁর আশীর্বাদে ভক্তদের জীবনে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধ বর্ষিত হয়। তিনদিন ধরে মেলা চলে এই পুজোকে কেন্দ্র করে। শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নয়, রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসেন এই উৎসবে সামিল হতে। বিশালাকার বোল্লা কালী মাতার পুজোয় লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়। ভক্তরা ,পুজোর জন্য ছোটো ছোটো কালী প্রতিমা এবং বিভিন্ন অলঙ্কার সঙ্গে আনেন। তিনদিন ধরে পুজো চলার পর বোল্লা কালী মাতার প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয় মন্দির সংলগ্ন পুকুরে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

LinkedIn
Share