মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা বিশ্ব তাঁকে চেনে অথচ নিজের জন্মভূমিতে ফেরার অধিকার নেই তাঁর। তিনি হলেন তেনজিং গিয়াস্তো, চতুর্দশ দলাই লামা। ১৯৩৫ সালের ৬ জুলাই উত্তর পূর্বের তাতসের গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জন্মসূত্রে নাম ছিল লামো ধন্ডুপ। আজ তাঁর ৮৭-তম জন্মদিন। তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা-র ৮৭তম জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দলাই লামার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন তিনি। ট্যুইটবার্তায় মোদি লেখেন, 'ধর্মগুরু দলাই লামাকে আগেই ফোন করে তাঁর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তাঁর সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি।'
[tw]
Conveyed 87th birthday greetings to His Holiness the @DalaiLama over phone earlier today. We pray for his long life and good health.
— Narendra Modi (@narendramodi) July 6, 2022
[/tw]
তিব্বত আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামার সঙ্গে চিনের বিরোধ বাধে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের শীর্ষগুরু দলাই লামা ভারতের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। ভারত দলাই লামাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে ধর্মশালায় তাঁকে সংঘ স্থাপনের জায়গা দেয়। সেই থেকে ধর্মশালাতেই স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন দলাই লামা। তাঁর জন্মদিনে এদিন দেশ ও বিদেশের বহু রাজনৈতিক নেতা ও রাষ্ট্রনেতারা অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন।
দলাই লামা কথাটির অর্থ হল জ্ঞানসাগর। তেনজিংয়ের মধ্যে ত্রয়োদশ দলাই লামার পুনর্জন্ম ঘটেছে বলে মাত্র দু’বছর বয়সে তিনি চিহ্নিত হন লামো হিসেবে। করুণার বোধিসত্ত্ব হিসেবে পুনর্জন্ম নেবেন বলে মৃত্যুর আগেই জানিয়ে গিয়েছিলেন ত্রয়োদশ দলাই লামা। ১৯৫০ সালে ছ’বছর বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন দলাই লামা। তিব্বত সরকারের প্রধান হিসেবে তাঁকে অভিষিক্ত করার প্রস্তুতি শুরু হয়। ৬১ বছর আগে, ১৯৫৯-এর মার্চের এক রাতে চিনের লাল ফৌজের লালচক্ষু উপেক্ষা করে পথে নেমে পড়েছিলেন দলাই লামা। সঙ্গী ছিলেন তাঁর বৃদ্ধা মা, বোন, ছোট ভাই আর তাঁর কয়েক জন আধিকারিক। জানতেন না, তাঁর সামনে কী ভবিষ্যত্ অপেক্ষা করছে। ১৯৫৯ সালের ৩ এপ্রিল ভারত দলাই লামাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। তাঁর নির্বাসিত সরকারকে জায়গা দেওয়া হয় হিমাচল প্রদেশের ধরমশালায়। তার পর, সেখান থেকেই তিব্বত মুক্ত করার দাবিতে চিনবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করেছেন দলাই লামা। যার স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৮৯ সালে তিনি পান নোবেল শান্তি পুরস্কার।
আরও পড়ুন: 'স্মোকিং কালী' বিতর্ক, হাত ছাড়ল দল, তৃণমূলকে আনফলো মহুয়ার
ভারত সরকারের সঙ্গে দলাই লামার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। করোনা মোকাবিলায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে চিঠি লেখেন দলাই লামা। এমনকি করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অনুদানও দেন তিনি। অসমে বন্যা দুর্গতদের সাহায্যেও এগিয়ে এসেছেন তিব্বতি ধর্মগুরু। তিনি মনে করেন ভারতই একমাত্র দেশ, যেখানে ইতিহাস ও আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটেছে। নিজেদের অতীত-ঐতিহ্যকে ধরে রেখে নতুনকে বরণ করেছে ভারত।
+ There are no comments
Add yours