মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ষষ্ঠীর (Sasti) দিন বোধনের পরে দেবী উঠলেন জেগে। গ্রহণ করলেন আমন্ত্রণ। সপ্তমীর (Saptami) সকালে হবে তাঁর গৃহপ্রবেশ। সনাতন হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ এভাবেই যুগে যুগে বরণ করে নিয়েছেন দেবী দুর্গাকে (Goddess Durga)। এই সপ্তমীর সকালে জলাশয় থেকে ঘটে করে নিয়ে আসা হয় জল। সেই জলেই হয় দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা। এই ঘটের সঙ্গেই নিয়ে আসা হয় নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে। নবপত্রিকা স্নান লোকমুখে কলাবউ স্নান হিসেবে পরিচিত।
দেবী দুর্গার পরে যিনি সচরাচর লোকের চোখে পড়ে, তিনি কলাবউ। সাধারণ মানুষ ভাবেন, তিনি গণেশের স্ত্রী। আসলে তা নন। কারণ, নবপত্রিকা থাকেন গণেশের ডান দিকে। হিন্দু মতে, স্ত্রী থাকবেন পুরুষের বাম পাশে। অর্থাৎ নবপত্রিকার সঙ্গে গণেশের কোনও সম্পর্কই নেই। আসলে নবপত্রিকা হল নবদুর্গার প্রতীক। কলা গাছের সঙ্গে আরও আটটি গাছ, লতাপাতা থাকে। এই নটি গাছ হল, কলা, দেবী রম্ভার প্রতীক, কচু, দেবী কালিকার প্রতীক, হলুদ, দেবী দুর্গার প্রতীক, জয়ন্তী, দেবী কার্তিকীর প্রতীক, বেল, শিবার প্রতীক, বেদানা, রক্তদন্তিকার প্রতীক, অশোক, শোকরহিতার প্রতীক, অপরাজিতা, চামুণ্ডার প্রতীক এবং ধান, লক্ষ্মীর প্রতীক। এই নটি গাছ এবং লতাপাতাকে কলাগাছের খোল দিয়ে এক সঙ্গে বাঁধা হয়। পরে জোড়া বেল দিয়ে তৈরি করা হয় দেবীর স্তন। তার পরে পরানো হয় শাড়ি-সিঁদুর।
আসলে দেবী দুর্গা এক অর্থে প্রকৃতির পুজো। যেসব প্রাকৃতিক গাছগাছড়া যুগে যুগে মানুষের উপকারে লেগে আসছে, বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক হিসেবে তাদের পুজো করা হয়। কারণ হিন্দুদের বিশ্বাস, প্রকৃতিই স্বয়ং শক্তি। মানবীর মতো তিনিও হন রজঃস্বলা। জন্ম দেন সন্তানের। সেই কারণেই দেবী দুর্গার সঙ্গে সঙ্গে পুজো হয় নবপত্রিকার। অনেক পরিবারে কেবল নবপত্রিকায়ই আরাধনা করা হয় দেবী দুর্গার। সেখানে প্রতিমা হয় না।
কোনও কোনও শাস্ত্রবিদের মতে, এক সময় যখন দেবী প্রতিমা রূপকল্পনা হয়নি, তখন মানুষ দুর্গাপুজো করতেন নবপত্রিকা বসিয়ে। পরে মূর্তি কল্পনা হওয়ার পর তৈরি হয় মূর্তির। তার পর থেকে মহামায়ার সঙ্গে পুজো পেয়ে আসছেন নবপত্রিকাও। যেহেতু তিনি মহামায়ারই অংশ, তাই তিনি গণেশের স্ত্রী নন, বরং মা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours