মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহা সপ্তমী। ষষ্ঠ্যাদি কল্পে যাঁদের পুজো শুরু তাঁদের সপ্তমীতে হয় নবপত্রিকা (Nabapatrika) স্নান। তার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ ষষ্ঠীর (Sasthi) রাতে হয় নবপত্রিকার অধিবাস। সপ্তমীর (Saptami) সকালে হয় নবপত্রিকার মহাস্নান। এদিন অষ্ট কলসের জলে স্নান করানো হয় দেবী দুর্গার (Goddess Durga) প্রতীক নবপত্রিকাকে।
শাস্ত্রবিদদের একাংশের মতে, এক সময় যখন দেবী প্রতিমার রূপকল্পনা হয়নি, তখন মানুষ দুর্গাপুজো করতেন নবপত্রিকা বসিয়ে। পরে মূর্তি কল্পনা হওয়ার পর তৈরি হয় মূর্তির। তার পর থেকে মহামায়ার সঙ্গে পুজো পেয়ে আসছেন নবপত্রিকাও। এই নবপত্রিকা হল নবদুর্গার প্রতীক। কলা গাছের সঙ্গে আরও আটটি গাছ, লতাপাতা থাকে। এই নটি গাছ হল, কলা, দেবী রম্ভার প্রতীক, কচু, দেবী কালিকার প্রতীক, হলুদ, দেবী দুর্গার প্রতীক, জয়ন্তী, দেবী কার্তিকীর প্রতীক, বেল, শিবার প্রতীক, বেদানা, রক্তদন্তিকার প্রতীক, অশোক, শোকরহিতার প্রতীক, অপরাজিতা, চামুণ্ডার প্রতীক এবং ধান, লক্ষ্মীর প্রতীক। এই নটি গাছ এবং লতাপাতাকে কলাগাছের খোল দিয়ে এক সঙ্গে বাঁধা হয়। পরে জোড়া বেল দিয়ে তৈরি করা হয় দেবীর স্তন। তার পরে পরানো হয় শাড়ি-সিঁদুর।
অষ্ট কলসে থাকে বিভিন্ন তীর্থের জল। সপ্ত সিন্ধুর জলে হয় দেবীর মহাস্নান। এই সপ্ত সিন্ধু হল গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী, সরস্বতী, নর্মদা, সিন্ধু এবং কাবেরীর জল। এছাড়াও প্রয়োজন হয় আত্রেয়ী, সরযূ, ভারতী, কৌশিকা, ভোগবতী, মন্দাকিনী, গণ্ডকী এবং শ্বেত গঙ্গা নদীর জল। দেবীকে গরম জল এবং সুগন্ধী জলে স্নান করানোর রীতিও রয়েছে। এই স্নান শাস্ত্র মতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই যে আটটি কলসে করে দেবীকে স্নান করানো হবে, তার প্রতিটি কলসের জল দেবীর গায়ে ঢালার সময় আলাদা আলাদা বাজানা বাজানোর রীতি রয়েছে। ধর্ম বিশ্বাসীদের একাংশের মতে, যেহেতু নবপত্রিকা মহামায়ারই একটি অংশ, তাই তাঁর স্নানের জল খুবই পবিত্র। অনেকে এই জল পান করেন দীর্ঘায়ু লাভের আশায়। নবপত্রিকা যেহেতু নানা দেবীর প্রতীক, তাই তাঁর এই স্নান জল অনেকে মাথায় ছড়ান। কারণ, লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, দেবীর স্নানজল তাঁকে প্রাকৃতিক এবং দৈবিক নানা বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
Leave a Reply