Ayan Shil: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আরও এক ‘রহস্যময়ী’! ইডির নজরে অয়নের ‘বান্ধবী’ শ্বেতা চক্রবর্তী, কে তিনি?

ayan-shil_(1)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিয়োগ-দুর্নীতি মামলার শিকড় কতটা গভীরে ও কতটা দূরে ছড়িয়ে পড়েছে, তা ভালই টের পাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআই। প্রায় প্রতিদিন নিত্য নতুন নাম উঠে আসছে তদন্তের আওতায়। সেই তালিকার নবতম সংযোজন অয়ন শীল (Ayan Shil)। সদ্য বহিষ্কৃত হুগলি তৃণমূলের যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলেই পরিচিত পেশায় প্রোমোটার অয়ন। ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূল নেতা শান্তনুর লিঙ্কম্যান হল এই অয়ন শীল। এবার সেই অয়নের এক ঘনিষ্ঠ-র সন্ধান পেলেন তদন্তকারীরা।

প্রোমোটার অয়নের অফিসে ‘গুপ্তধন’

বলাগড়ে অয়নের (Ayan Shil) গেস্ট হাউস ও সল্টলেকে তার দফতরে হানা দিয়ে বিপুল বেআইনি লেনদেনের নথি ও তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ওএমআর শিট থেকে অ্যাডমিট কার্ড— যা কি না পুরসভা নিয়োগ থেকে শুরু করে একাধিক সরকারি নিয়োগ-বিষয়ক বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও একাধিক কম্পিউটার থেকে ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। ৩৭-ঘণ্টা সল্টলেকের অফিসে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযানের পর অয়নকে গ্রেফতার করে ইডি। গতকাল অর্থাৎ, সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে ১ এপ্রিল পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

আরও পড়ুন: পুরসভাতেও টাকার বিনিময়ে চাকরি! রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে নয়া তথ্য

ফের এক রহস্যময়ীর খোঁজ

ইডি সূত্রে খবর, অয়নের (Ayan Shil) ব্যাঙ্কের নথি খতিয়ে দেখে এক রহস্যময়ী নারীর খোঁজ মিলেছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই রহস্যময় নারী অয়ন শীলের বান্ধবী। ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে এখনও অবধি। যার মধ্যে অয়ন শীলের নামে ৮টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। দুটো রয়েছে অয়নের স্ত্রীর সঙ্গে যৌথ নামে। স্ত্রীর নামে পৃথকভাবে রয়েছে দুটো অ্যাকাউন্ট। দুটো অ্যাকাউন্ট অয়নের সংস্থা ও বাকি তাঁর ঘনিষ্টদের নামে। এছাড়াও, ওই বান্ধবীর নামেও একটি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। 

রহস্যময়ীর পরিচয় কী?

ইডির তদন্তে উঠে এসেছে, অয়ন শীলের (Ayan Shil) অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। ইডি সূত্রের খবর, অয়নের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ঘেঁটে যে রহস্যময়ীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, তাঁর নাম শ্বেতা চক্রবর্তী। শুধু তাই নয়। ইডির আরও দাবি, ওই মহিলা অয়নকে হোয়াটস্যাপে মেজেস করে বলেন, ‘পালিয়ে যাও, জিনিসপত্র সরিয়ে দাও। ইডি আসতে পারে।’  ইডি সূত্রে দাবি, শ্বেতা চক্রবর্তীর অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে। তিনি অয়নের থেকে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন বলে দাবি ইডির। জানা যাচ্ছে, শ্বেতা টালিগঞ্জের মডেল। কাজ করেছেন সিনেমা এবং টেলিফিল্মে। কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের সহকারি হিসেবে তিনি চাকরি করেন। নৈহাটির জেলাপাড়ার বাসিন্দা শ্বেতা চক্রবর্তী। অয়নের বান্ধবী হন্ডা সিটি গাড়ি কিনেছিলেন। 

কী বলছেন তদন্তকারীরা?

এখানেই শেষ নয়। ইডি সূত্রে খবর, ওই বান্ধবী ছাড়াও আরও দুই মহিলার অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে। তিনজন মহিলার নামে মোট ৫টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, নিয়োগকাণ্ডে যে টাকার কমিশন, তার প্রায় ৪-৫ কোটি টাকা শুধু আত্মীয় পরিজন নয়, এই মহিলাদের অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে। কী কারণে ওই টাকা ওই মহিলাদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল? তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলকে আদালতে তুলে ইডি-র মুখে কৃষ্ণনাম কেন?

নিয়োগ-কাণ্ডে নারী-যোগ

অর্থাৎ, নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে আবারও এক রহস্যময়ীর সন্ধান মিলল। নিয়োগ কাণ্ডের তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই প্রকাশ্যে এসেছে একের পর এক মহিলার নাম। প্রথমেই উঠে আসে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম, যার জোড়া ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। সেই ঘটনা এই দুর্নীতিকাণ্ডের ওপর থেকে পর্দা সরিয়ে দেয়। এরপর তদন্ত যত এগিয়েছে, এক এক করে নাম এসেছে কখনও মোনালিসা, তো কখনও হৈমন্তী, তো কখনও আবার সোমা। এর আগে, পার্থ-অর্পিতা, গোপাল-হৈমন্তী ও কুন্তল-সোমাকে দেখেছে রাজ্যবাসী। এবার অয়ন-শ্বেতা।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share