মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এ যেন উলট পুরাণ! বিয়ের পর মেয়েরা বাড়িতেই থেকে যায়। আর ছেলেদের যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি। এমন রাজ্যও আছে আমাদের দেশে। উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়ে (Meghalaya) ঘটে এমনই বিচিত্র ঘটনা। পাহাড় ঘেরা উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটি নানা দিক থেকে আশ্চর্যজনক। আর তার অন্যতম কারণ এখানে খাসি ও গারো (Khasi, Garo) নামে দুটি মাতৃতান্ত্রিক উপজাতির উপস্থিতি। সারা পৃথিবীতে যখন কন্যাভ্রূণ হত্যা এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে, তখনও এই দুই উপজাতিতে কন্যা সন্তান জন্মালে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনেক সন্তান থাকলে মেয়েটির অধিকার থাকে সবার আগে। এমনকী এখানে বিয়ের পর ছেলেদেরই শ্বশুরবাড়িতে আসতে হয়।
সারা দেশে পুত্রসন্তানের চাহিদা বেশি থাকলেও মেঘালয়ের মায়েরা কিন্তু চায় মেয়ে হোক, এই তথ্যই উঠে এসেছে সর্বশেষ জাতীয় পরিবার ও স্বাস্থ্য সমীক্ষায় (National Family and Health Survey)। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মিজোরাম, লক্ষদ্বীপ, মণিপুর, বিহার-সহ উত্তর ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে কন্যাসন্তানের তুলনায় পুত্রসন্তান কাম্য। কিন্তু মেঘালয়ের ছবিটা পুরোপুরি অন্যরকম।
মেঘালয়ের মাতৃপ্রধান সমাজে মেয়ের ভূমিকা প্রধান। পরিবারের সব সম্পত্তির অধিকারও পান বাড়ির ছোট মেয়ে। সন্তানেরাও মায়ের উপাধি নেয়। কোনও পরিবারে কন্যা সন্তান না হলে তাঁরা একজন মহিলাকে দত্তক নেয় এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার তাকে হস্তান্তর করেন। কন্যা সন্তানের জন্ম হলে উৎসবও পালন করা হয়। ছোট-বড় সব ব্যবসায়ের দায়িত্বই নেন মহিলারা।
এনএফএইচএস-এর পঞ্চম নমুনা সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্য়ায় এখন ‘পুরুষ-নারী অনুপাত’ (লিঙ্গ অনুপাত বা ‘সেক্স রেশিও’) ১০০০ : ১০২০। অর্থাৎ প্রতি হাজার পুরুষ পিছু মহিলার সংখ্যা ১,০২০ জন। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৭০৭ টি জেলার ৬,৫০,০০০টি বাড়িতে চালানো হয়েছিল ওই নমুনা সমীক্ষা। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ভারতে সংখ্যার হিসেবে পুরুষদের ছাপিয়ে গিয়েছেন মহিলারা। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বার। তবে দেশের নির্দিষ্ট কিছু রাজ্য বেছে নিয়ে করা ওই নমুনা সমীক্ষার ফল সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে প্রযোজ্য কি না তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
Leave a Reply