Kali Puja 2022: রাত বাড়তেই বাজির দাপট! শহরের রাস্তায় দেখা মিলল না পুলিশের

cracker

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  নিম্নচাপ ভ্রূকুটি দেখালেও কালীপুজোর রাত বাড়তে বৃষ্টির আশঙ্কা কিছুটা কমে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে শব্দ বাজির দাপট। একাংশের অভিযোগ, দীপাবলির রাতে শব্দ দূষণের মাত্রা জানান দেয়,  এই রাতে পুলিশ প্রশাসন ‘ঘুমিয়ে’ ছিল।  রাত বাড়তেই কলকাতার বাগবাজার, শোভাবাজার, গিরিশ পার্কের মতো বসতি এলাকায় শব্দ বাজির দাপট শুরু হয়। রাত বারোটার পরে বেহালার একাধিক জায়গায় রীতিমত ‘বাজি প্রতিযোগিতায়’ নামে ক্লাবগুলো। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সন্ধ্যা থেকে আতস বাজি পোড়ানো শুরু হয়। যার ধোঁয়ার তীব্রতায় বাইরে তাকানো কঠিন হয়ে যায়। আর রাতে একের পর এক তীব্র আওয়াজ। যা জানান দেয়, শব্দ বাজির দাপট।

তবে, শুধু কলকাতা নয়। উত্তর চব্বিশ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া সহ একাধিক জেলাতেও কালীপুজোর রাতে বাজির দাপটে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো, কালীপুজোতে সন্ধ্যা ৮টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত পরিবেশ বান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে। পরিবেশের দূষণ করে এমন ধোঁয়া ও শব্দ বাজি ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আদালতের নির্দেশকে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের। কিন্তু কলকাতাবাসীদের একাংশ মনে করছেন, এই দায়িত্ব পালনে কার্যত ব্যর্থ প্রশাসন।

পরিবেশ বান্ধব নয়, এমন বাজি বিক্রি রুখতেই পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। দীপাবলির কয়েক দিন আগে থেকেই প্রকাশ্য রাস্তায় আতস বাজি, শব্দ বাজি দেদার বিক্রি হয়েছে। টালা থেকে টালিগঞ্জ, উত্তর থেকে দক্ষিণ, কলকাতার একাধিক ফুটপাত দখল করেছিলেন বাজি বিক্রেতারা। আর সেই সব অস্থায়ী দোকানে অধিকাংশ বাজি পরিবেশ বান্ধব ছিল না। কিন্তু সেই বাজি বিক্রিতে পুলিশের নজরদারি ও ছিল না। 
একাংশের মত, পরিবেশ বান্ধব বাজি বিক্রি নিশ্চিত করতে না পারলে, বারবার এই রকম পরিস্থিতিই তৈরি হবে।

আরও পড়ুন: ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ রাজা-রানির থেকেও বেশি!

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ফুসফুস ও হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য এই পরিবেশ একেবারেই অস্বাস্থ্যকর। যেভাবে কালীপুজোর রাতে আকাশে সাদা ধোঁয়া দেখা গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট অধিকাংশ আতস বাজি পরিবেশ বান্ধব ছিলো না। ফলে, এতে বায়ু দূষণ মারাত্মক ভাবে বেড়েছে। এর জেরে ক্রনিক পালমোনারি অবস্ট্রাক্টিভ ডিজিজ কিংবা হাপানি রোগীদের আরও সমস্যা বাড়তে পারে। পাশপাশি শব্দ বাজির জন্য শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। বিশেষত শিশুদের শ্রবণ ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা ও থাকছে বলে মনে করছেন ইএনটি চিকিৎসকেরা। হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য ও এই পরিবেশ বেশ বিপজ্জনক বলে মত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের। হঠাৎ তীব্র আওয়াজে হৃদরোগীদের সমস্যা বাড়ে। তাই বড় বিপদ ঘটার ঝুঁকি ও থাকে। বিশেষত যাদের পেসমেকার রয়েছে, এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এই তীব্র আওয়াজ, সমস্যার সৃষ্টি করে।

তবে, শুধু মানুষ নয়। অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ও এই পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। বিশেষত, যাদের বাড়িতে পোষ্য রয়েছে, তাদের অধিকাংশ জানাচ্ছেন, কালীপুজোর রাতে বাজির দাপটে, পোষ্যদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ভুক্তভোগীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বছরের পর বছর এমন পরিস্থিতি চললেও এর সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। দীপাবলির রাতে পরিস্থিতি খারাপ হলেও অভিযোগ করে বিশেষ লাভ হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই বাজির অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না বলেও ভুক্তভোগীদের একাংশের অভিযোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব প্রশাসনের। বেআইনি বাজি বিক্রি রুখবে পুলিশ। কিন্তু সেই ভূমিকা ঠিকমতো পালন না হলে সুস্থ পরিবেশ পাওয়া কার্যত অসম্ভব। কিন্তু এই সব ক্ষেত্রে পুলিশের সক্রিয়তা চোখে পড়ে না।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share