মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের 'ধূসর' তালিকা থেকে বেরোতে মরিয়া পাকিস্তান (Pakistan)। বিশ্বের সুনজরে আসতে 'মৃত' ঘোষণা করা জঙ্গিকেও 'গ্রেফতার' করে আরও বিতর্কে জড়াল ভারতের এই প্রতিবেশি দেশ। সম্প্রতি ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মাস্টার মাইন্ড লস্কর-ই-তইবার (LeT) জঙ্গি (Terrorist) সাজিদ মীরকে (Sajid Mir) গ্রেফতার করার দাবি করেছে পাকিস্তান। গোটা বিশ্বই এই কুখ্যাত জঙ্গিকে ধরতে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এই জঙ্গির মাথার দাম ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার ঘোষণা করেছিল। পাকিস্তান এতদিন দাবি করে এসেছে এই জঙ্গি বেঁচেই নেই। কিন্তু হঠাতই সেই দাবি থেকে সরে এসে মুম্বাই হামলার ১৪ বছর পরে সাজিদ মীরকে গ্রেফতারের পাকিস্তানের এই ঘোষণাকে কেউই ভালো চোখে দেখছেন না। অনেকেই মনে করছেন দেশের নামের আগে ধূসর তকমা মুছতে মীরের গ্রেফতারি পাকিস্তানের নয়া নাটক।
আরও পড়ুন: এখনই ধূসর তালিকামুক্ত হচ্ছে না পাকিস্তান, জানাল এফএটিএফ
লস্কর-ই-তইবা একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন। পাকিস্তান বছরের পর বছর ধরে মীরের উপস্থিতি অস্বীকার করে গিয়েছে। এমনকি একবার এও দাবি করেছে যে সে মারা গিয়েছে। সাজিদ মীর এফবিআই (FBI)-র মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় রয়েছে। বহু বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই মীরকে খুঁজছে।
জঙ্গিগোষ্ঠী লস্করের সামাজিক সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার সক্রিয় সদস্য ছিল সাজিদ। ২৬/১১ হামলার আর এক চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে সেই যোগাযোগ রাখত। প্রসঙ্গত, লস্করের হয়ে ২৬/১১ হামলার জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে একাধিক বার ভারতে এসেছিল হেডলি। পরে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাকে গ্রেফতার করে।
আরও পড়ুন: শীর্ষ লস্কর নেতা মাক্কিকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণায় বাধা চিনের
সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানোর (Terror Funding) অভিযোগ উঠেছে বারংবার। তার পরেও পাকিস্তানের (Pakistan) মাথা থেকে সরেনি ‘সন্ত্রাসবাদের আঁতুড় ঘরে’র তকমা। নিজেকে শুধরে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের ওপর একাধিক শর্ত আরোপ করেছিল ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ (FATF)। পাকিস্তানকে তারা রেখে দিয়েছিল ধূসর তালিকায়।
জন্মলগ্ন থেকেই নানা কারণে সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা বিভিন্ন দেশের তালিকায় ঢুকে গিয়েছে পাকিস্তানের নাম। বিশ্বের একাধিক কুখ্যাত জঙ্গির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়েছে শেহবাজের দেশ। ভিন দেশেও যে সব জঙ্গির ঠাঁই হয়েছে, পাকিস্তান তাদেরও নিয়মিত অর্থ জুগিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ। ইসলামাবাদ জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে বলে বিশ্ব দরবারে একাধিকবার সরব হয়েছে ভারত (India)। তার পরেও ইসলামাবাদ সন্ত্রাসবাদে অর্থ সাহায্য বন্ধ করেনি বলে অভিযোগ।
এফএটিএফ কোনও দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করার আগে দুটি পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যায়। একটি হল ‘ধূসর তালিকা’, অন্যটি ‘আরও বেশি ধূসর’। এই দুই তালিকাভুক্ত করে কোনও দেশকে দুবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তার পরেও কাজ না হলে ওই দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অনেক আগেই এফএটিএফের তরফে ইসলামবাদকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, শর্ত ঠিক মতো পালন না করলে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। গত চার বছর ধরে এফটিএফের ধূসর তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান।
+ There are no comments
Add yours