Recruitment Scam: আদালতে তোলা হল তৃণমূল যুব নেতা শাহিদ ইমামকে, গোপন জবানবন্দি দেবেন ‘মহারাজ’?

shahid_imam

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গত শুক্রবার গ্রেফতার হয়েছেন আরামবাগের যুব তৃণমূল নেতা শাহিদ ইমাম ও তাঁর ভাই শেখ আলি। আজ, সোমবার হেফাজতের মেয়াদ শেষে সেই শাহিদ ইমামকে আদালতে পেশ করল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথমবার কেউ গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন। ফলে এখন প্রশ্ন উঠছে, সিবিআইয়ের কাছে কি তিনি ফাঁস করে দেবেন প্রভাবশালীদের নাম? এবারে কি তবে দুর্নীতিচক্রের মূল পাণ্ডাদের হদিশ পাবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা?

গোপন জবানবন্দি দেবেন শাহিদ ইমাম!

শুক্রবার শাহিদ-সহ অন্য অভিযুক্তদের সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। কিন্তু, শনিবারই ফের শাহিদ ইমামকে আদালতে তোলে সিবিআই। সিবিআই  জানায়, তাঁকে আর হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠছে যে, তবে কি সাক্ষী হিসেবে শাহিদের গোপন জবানবন্দি নিতে চাইছে সিবিআই? কারণ, নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সাক্ষীর গোপন জবানবন্দি নিতে গেলে তাঁকে অন্য অভিযুক্তদের থেকে আলাদা রাখতে হয়। তাই কি শাহিদকে আর হেফাজতে রাখতে চায়নি সিবিআই? এর পর আজ ইমামকে আদালতে তোলা হয়েছে।

অন্যদিকে আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, চাকরি বিক্রির নামে ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা তুলেছেন এই তৃণমূল নেতা। সেই টাকা গেল কোথায় তা জানতে তদন্ত শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। এরপরেই সিবিআই আদালতে জানিয়েছে শাহিদ ইমাম গোপন জবানবন্দি দিতে চান।

ইমামের প্রাসাদ ঘিরে শুরু তুমুল চর্চা

আরামবাগ মহকুমা সহ হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় তিনি পরিচিত ‘মহারাজ’ নামেই। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মহারাজ যখন সিবিআই হেফাজতে, তখন তাঁর নির্মীয়মাণ প্রাসাদ ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা। আরামবাগ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হয়েছে একটি প্রাসাদের মত বাড়ি। সেটির মালিক শাহিদ ইমামই। এই  ‘মহারাজ’-এর অট্টালিকার ছাদে বিশেষ কিছু তৈরি করার পরিকল্পনা হচ্ছিল। তাই ছাদের উপরে ছিল বিশেষ নকশা। জানা গিয়েছে, শাহিদ ইমামের নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদে হেলিকপ্টার তৈরির পরিকল্পনা ছিল। এমনকী বাড়ির ভিতরে রয়েছে ঘোরানো সিঁড়িও। ফলে তাঁর এই বিশাল অট্টালিকা দেখে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, মহারাজ আরামবাগ মহকুমায় দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা। টিএমসিপি থেকে যুব তৃণমূলের নেতা হয়ে ক্রমশ তাঁর প্রতিপত্তি বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। অভিনয়, দানধ্যান, সিনেমায় টাকা ঢালা থেকে নানান দিকে নিজের বিস্তার ঘটিয়েছেন কয়েক বছরে। এরপরেই তিনি যে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত রয়েছেন, এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসায় সিবিআই হেফাজতে তিনি।

উদ্বেগে শাহিদ-ঘনিষ্ঠ নেতাদের একাংশ

নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ার পর থেকেই চিন্তায় রয়েছেন অন্যান্য তৃণমূল নেতারাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্লক স্তরের এক তৃণমূল নেতা বলেন, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য শাহিদের কাছ থেকে কয়েকবার টাকা নিয়েছিলাম। সেই টাকার উৎস নিয়ে কখনও প্রশ্ন করিনি। সিবিআইয়ের তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে কোনও ধারণা নেই। সত্যি বলতে, বেশ ভয়েই আছি।” একই রকম উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন আরও কয়েকজন নেতা। বিভিন্ন সময়ে যাঁরা শাহিদের থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়েছেন। আজ আদালতে পেশ করার পর কী তথ্য সামনে প্রকাশ্যে আসে তারই অপেক্ষায় রাজ্যবাসী। এছাড়াও ইমামের জবানবন্দিতে কোনও প্রভাবশালীদের নাম উঠে আসে নাকি সেটাও এখন দেখার।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share