মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১লা নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবির (Duare Sarkar Camp)। তার আগেই এই প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারকে এক হাত নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এক প্রেস বিবৃতিতে এই প্রকল্পের বিভিন্ন খামতি তুলে ধরেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "দুয়ারে সরকার নামকরণ হল প্রহসন মাত্র। সরকার দুয়ারে আসছে না, মানুষকে ক্যাম্পের বাইরে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। প্রোলভন দেখিয়ে মানুষকে বিড়ম্বনায় ফেলা হচ্ছে।" তাঁর মতে, স্থানীয় প্রশাসনের দফতরগুলি থেকেই এই সুবিধা প্রদান করা যেত। তাহলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি সুবিধা পাওয়ার জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে হত না। শুভেন্দু রাজ্য সরকারের দুর্নীতির দিকে আঙুল তুলে বলেন, "স্থানীয় প্রশাসনের দফতরগুলি দুর্নীতির আখড়া বলেই সেখান থেকে নাগরিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।"
দুয়ারে সরকার শিবিরে যেসব প্রকল্পগুলির সুবিধা পাওয়া যায়, সেই প্রকল্পগুলির নাম আলাদা আলাদা করে উল্লেখ করে তার খুঁত তুলে ধরেন বিরোধী দলনেতা। তিনি এদিন প্রশ্ন তোলেন, "সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী- ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন ২৫ বছর বয়সী মহিলারা। তারপর বহু মহিলার বয়স ২৫ পেরিয়েছে। কিন্তু, এখনও নাম নথিভুক্তকরণের জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারিই রয়ে গিয়েছে কেন?" এর উত্তর নিজেই দিয়ে বলেন, "কোষাগারের অর্থে টান পড়েছে, তাই এই অবস্থা।"
এছাড়াও তিনি প্রেস বিবৃতিতে দাবি করেন, "মৎসজীবী ক্রেডিট কার্ডও আসলে কেন্দ্রীয় প্রকল্প কিষান ক্রেডিট কার্ডের নামকরণ। ব্যাংকের মাধ্যমে লোনের জন্য কোনও কৃষক বা মৎসজীবী আবেদন করতে পারেন। ব্যাংকই অনুমোদনের জন্য সঠিক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, রাজ্য সরকার নিজের কতৃত্ব বজায় রাখার জন্য ক্ষমতার বহির্ভুতভাবে হস্তক্ষেপ করছে। ফলে, দুয়ারে সরকার প্রকল্পের ঋণের জন্য নাম নথিভুক্তের সংখ্যা ও ব্যাংকের ঋণ অনুমোদনের সংখ্যায় বিপুল ফারাক ধরা পড়েছে। আসলে রাজ্য সরকার প্রেরিত ঋণের আবেদনের আলাদা করে কোনও গুরুত্ব নেই।"
তিনি আরও দাবি করেন, আর্টিসান ক্রেডিট কার্ড প্রদানের রাজ্য সরকারের উদ্যোগও কেন্দ্রীয় সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করার মমতা প্রশাসনের সুপরিকল্পিত চাল। এছাড়া, এগ্রি ইনফ্রা ফান্ড স্কিম, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ক্রেডিট লিঙ্কেজ, বিদ্যুতের নয়া সংযোজক ও বিল পরিশোধের আবেদনেও বড় দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন: "বাঁচতে দিন", পার্থর করুণ আর্তি শুনল না আদালত, বাড়ল জেল হেফাজতের মেয়াদ
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে নন্দিগ্রামের বিজেপি বিধায়ক বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ দেউলিয়া, ইতিমধ্যে সবাই জানেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মনে হয়েছিল দুয়ারে সরকারের নামে সরাসরি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে রাজ্য সরকার এই সমস্ত কর্মসূচিগুলো করছে। পরে কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ভোটও দিয়েছেন। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাজনা যখন বাজতে চলেছে আবার পশ্চিমবঙ্গে একটি ধাপ্পাবাজি হতে চলেছে। চোরেদের রানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আবার কাল থেকে প্রচার শুরু হবে। এই দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে, যে যে স্কিমগুলি রয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটা দুটো বাদ দিয়ে সবকটি স্কিম কেন্দ্রীয় সরকারের। নাম বদল করে দেখানো হবে। যাতে আবার 'তোলামূলের' চোররা পঞ্চায়েতে জেতার লাইসেন্স রিনিউ করতে পারে।"
+ There are no comments
Add yours