Tag: bjp

bjp

  • Post Poll Violence: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    Post Poll Violence: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের পঞ্চম পর্ব।

     

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গণতন্ত্র, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারের চূড়ান্ত কালা অধ্যায় ছিল ভোট-পরবর্তী মাসগুলি। এমনটাই মনে করেন বিরোধীরা। তা না হলে কৃষ্ণনগরের অত্যন্ত সাধারণ এবং সামান্য দিনমজুর পলাশ মণ্ডলকে কেবলমাত্র বিজেপিকে সমর্থন করা এবং নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য দুষ্কৃতীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন (Post Poll Violence) হতে হয়!

    কে এই পলাশ মণ্ডল? কীভাবে খুন করা হয়েছিল তাঁকে?

    পলাশ মণ্ডলের জন্ম ১৯৭৬ সালের ২ জুন এবং মৃত্যু হয় ২০২১ সালের ১৪ জুন। বাড়ি কৃষ্ণনগরের মনীন্দ্রপল্লি, বারইহুদায়। বিজেপির একজন সাধারণ কর্মী ছিলেন। ঘটনার একদিন আগে রাত এগারোটা নাগাদ আচমকা হামলা করে খুনের হুমকি দিয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের গুন্ডারা, এমনটাই পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার দিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় গুন্ডারা বাড়িতে ঢুকে দরজায় প্রথমে আঘাত করে। তারপর খুলতে না পেরে উপরের টিন কেটে রড, দা, কাঁচি, চাকু, তলোয়ার ইত্যাদি নিয়ে হামলা (Post Poll Violence) চালায়। দলে তারা ছিল প্রায় ২০০ জন। বাড়িতে টিভি, বাসনপত্র, শাড়ি, গয়না আসবাবপত্র লুট করে গুন্ডারা। সেই সঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাড়ির দেওয়ালে কোপ দেয়। ভয়ে পলাশ নিজের জীবন বাঁচাতে ঘরের খাটের নীচে আশ্রয় নেন। কিন্তু হিংস্র গুন্ডারা ঘরে ঢুকে রড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারতে মারতে খাটের নিচ থেকে বের করে তাকে। এরপর ঘর থেকে বের করে বাঁশ দিয়ে আঘাত করে এবং পরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে রাস্তায় ফেলে কানের কাছে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করে ডাক্তার। উল্লেখ্য, সবটাই পলাশবাবুর দুই মেয়ে এবং স্ত্রীর সামনে ঘটে। স্ত্রী শেফালি মণ্ডল কৃষ্ণনগর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
    এত নির্মমভাবে হত্যা (Post Poll Violence) করা হয় যে আশপাশের মানুষ বাঁচানোর সাহস করেনি। পরিবারের অভিযোগ ছিল, পলাশবাবুর দোষ একটাই ছিল, উনি বিজেপির পতাকা-পোস্টার লাগাতেন এবং বিজেপির মিটিং-মিছিলে যেতেন। বাড়ির দেওয়ালে তারপরেও ছিল রক্তের দাগ। দরজায় ছিল দা দিয়ে বড় বড় কোপের দাগ। পলাশবাবু গেঞ্জির রিপ কাটার কাজ করতেন। ঘটনার দিন খুন করে আততায়ীরা রিপকাটার মেশিনটিও তুলে নিয়ে চলে যায়।

    পরিবার ঘরছাড়া, দিন কেটেছে অসহায় অবস্থায়

    পরিবারে উপার্জনের একটা বড় দায়িত্ব ছিল পলাশের উপর। পলাশবাবুর মেয়ে পম্পা মণ্ডল তখন দশম ক্লাসের ছাত্রী। শক্তিনগর গার্লস স্কুলে পড়াশুনা করত। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী কলকাতায় গিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালাতেন। পলাশবাবুর মায়ের কথা সূত্রে জানা গিয়েছিল, তাঁরা পূর্ববঙ্গের ফরিদপুরের বাসিন্দা ছিলেন। দেশ ছেড়ে এসে ছেলেকে এইভাবে মরতে হবে, কেউ ভাবতে পারেননি। শুধু খুন (Post Poll Violence) করেই আততায়ীরা ক্ষান্ত হয়নি। এলাকায় বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হলে অপরাধীদের আত্মীয়রা প্রভাতী দেবনাথ, মাম্পী দেবনাথ, মান্তু দেবনাথ রোজ হুমকি দিয়ে যেত বলে অভিযোগ। গালিগালাজ এবং লোক লাগিয়ে মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করবে বলেও হুমকি চলেছিল প্রতিনিয়ত।

    সিবিআই তদন্ত চলছে, বিচার সময়ের অপেক্ষা

    বর্তমানে ওই হত্যার (Post Poll Violence) তদন্ত সিবিআই করছে। প্রধান অভিযুক্ত হল আজাহার শেখ, কুষাই দাস, পাপ্পু মুখার্জি, বলরাম দাস, অপু দেব, বাবু সোনা মুখার্জি, আনন্দ সরকার, হারান চাকি, হুদা চাকি, অখিল ভৌমিক, সুরেষ পারসি, তাপস দেবনাথ। অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। তৎকালীন তৃণমূলের কাউন্সিলর নিত্য প্রামাণিকের পরোক্ষ ইন্ধন আছে বলে পরিবারের অভিযোগ। তদন্ত এখনও চলছে। হত্যার বিচার এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    পর্ব ২: ৩–৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • BJP: ‘তৃণমূল হার্মাদরা তালিবানের থেকে কোনও অংশে কম নয়’! বিস্ফোরক সুকান্ত

    BJP: ‘তৃণমূল হার্মাদরা তালিবানের থেকে কোনও অংশে কম নয়’! বিস্ফোরক সুকান্ত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তৃণমূল কংগ্রেসের যে হার্মাদরা বিজেপির কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করেছে, তারা তালিবানের থেকে কোনও অংশে কম নয়। অভিমত রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) প্রতিবাদে মঙ্গলবার ধর্মতলায় ‘শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস’ পালন করল বিজেপি (BJP)। আর সেই সভামঞ্চ থেকেই বিজেপির কর্মী ও সমর্থকদের উপর শাসক শিবিরের অত্যাচারের অভিযোগের কথা তুলে ধরলেন সুকান্ত। এদিন ট্যুইটেও ঝড় তোলেন তিনি। ২০২১ ভোট পরবর্তী হিংসার কথা স্মরণ করে তৃণমূল ও তার সঙ্গীদের রাজ্য থেকে বহিষ্কারের আর্জি জানান সুকান্ত।

    সুকান্তর ট্যুইট

    ট্যুইটে সুকান্ত দাবি করেন, ‘প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যেভাবে বাংলার বিজেপি কর্মীরা দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছে, তাঁদের কাজকে কুর্নিশ।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে রাজ্য থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করার কথাও বলেন তিনি।

    শুভেন্দুর দাবি

    তৃণমূলের অত্যাচার নিয়ে এদিন সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এদিন তিনি বলেন, ‘বাংলায় তৃণমূল যা অত্যাচার করেছে, ব্রিটিশরাও করেনি।’ এদিন ‘সন্ত্রাস নিয়ে’ ফের বিরোধী দলনেতার নিশানায় শাসকদল এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    শুভেন্দু এদিন বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ভাবেন, আপনার চার-পাঁচ প্রজন্ম রাজ্য শাসন করবে, তাহলে ভুল ভাবছেন। অত্যাচারীদের যেতেই হবে। আবার খুনের রাজনীতি শুরু করেছেন। গত ১০-১২ দিনে ৩ জন বিজেপি নেতা-কর্মী খুন।’ শুভেন্দু এদিন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গকে চম্বলের রাজত্বে পরিণত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ময়নার (Moyna) বাকচায় বিজেপি নেতা খুন প্রসঙ্গে এই কথা বলেন তিনি। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আগামীকাল ১২ ঘণ্টার ময়নায় বনধের ডাক দেন বিরোধী দলনেতা।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    Post Poll Violence: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব।

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করাটাই কি ছিল এই রাজ্যের মানুষের সবচেয়ে বড় অপরাধ? বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর মে মাস জুড়ে রাজ্যজুড়ে যে হত্যালীলা চলেছে, তাতে এমনটাই মনে করছেন বিরোধীরা। তাদের আরও অভিযোগ, একদিকে যখন একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন পুলিশ-প্রশাসন ছিল সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। ফলে নিরুপায় এবং অসহায় সাধারণের একমাত্র আশ্রয় ছিল সাংবিধানিক বিচার বিভাগ।

    মে মাসে ভোট-পরবর্তী হত্যালীলার খতিয়ান

    ২ মে ভোট গণনার সময় বীরভূমের ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা। সোনারপুরের প্রতাপনগরে হারান অধিকারীকে বোমা মেরে হত্যা (Post Poll Violence) করা হয়। জামদার বস গ্রামে গুলিতে খুন হন হারাধন রায়। সব ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার আনন্দে মত্ত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। চাকদায় বিজেপি দাবি করে, তাদের কর্মী উত্তম ঘোষকে গুলি করে হত্যা করেছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। ফলাফল প্রকাশের পর আক্রমণ এবং হিংসা যে হয়েছে, একথা বার বার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও বিবৃতি এবং এলাকা পরিদর্শন করে সেই সময় জানিয়েছিলেন।

    ৩ মে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের উলাগ্রামে খুন হন বিজেপি সদস্য মহম্মদ আলি। শীতলকুচিতে হত্যা করা হয় মানিক মৈত্রকে। মগরাহাটে খুন হন সৌরভ বর, বর্ধমানের রায়নায় খুন হন দুর্গাবালা বাগ, জগদ্দলে মৃত্যু হয় শোভারানী মণ্ডলের। ভাঙড়ে হাসানুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিকে দুষ্কৃতীরা একমাত্র বিরোধী দল করায় বল্লম, চাকু, তলোয়ার দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। সেই সঙ্গে হাসানুজ্জামানের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে পেটে লাথি মেরে গুরুতর জখম করে।

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    ৪ মে বাঁকুড়ার ইন্দাসে খুন হন অরূপ রুইদাস। বুথে বিজেপির এজেন্ট হওয়াটাই তাঁর একমাত্র অন্যায় ছিল। একই দিনে দিনহাটায় খুন হন বিজেপি সমর্থক হারাধন রায়।  

    ৫ মে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় বিজেপি কর্মী রসিদুল হকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের শ্রীপুরে বলরাম মাঝিকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। মেদিনীপুরের সবংয়ের বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত মার্কণ্ডচক গ্রামের বিশ্বজিৎ মহেশ নির্মমভাবে খুন হন। ঝাড়গ্রাম কিষাণ মোর্চার জাম্বনির ভাডুয়া গ্রামের কিশোর মাণ্ডিকে খাটসুরা এলাকার মহুয়াচকের কাছে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। 

    এই মাসেই ৬ মে কোতুলপুরে কুশ ক্ষেত্রপাল, ৭ মে নলহাটিতে মনোজ জসওয়াল, ১০ মে সন্দেশখালিতে আস্তিক দাস, ১১ মে আমডাঙায় রঞ্জিত দাস, ১২ মে বারাসতে জ্যোৎস্না মল্লিক, ১৩ মে নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি, ১৬ মে নদিয়ার চাপড়ায় ধর্ম মণ্ডল, ২০ মে নির্মল মণ্ডল, ২৩ মে রাজারহাটে প্রসেনজিৎ দাস, ৩০ মে কোচবিহারের সিতাইয়ে অনিল বর্মনকে হত্যা করা হয়। এই নিরীহ মানুষগুলিকে হত্যা করার দায় কার, মানবাধিকার কর্মীরা সেই প্রশ্ন তুলছেন। বিরোধীরা এই হত্যার পিছনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদেরই দায়ী করছেন। প্রত্যেকটি কেস এখন সিবিআই তদন্তের অধীনে।  

    ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন! 

    বিভিন্ন সূত্রের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, ভোট-পরবর্তী তিন-চার মাসে প্রায় ৬২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছিল সাধারণ নাগরিক সমাজ। জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বে গড়া বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ ভোট পরবর্তী হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। খুনের মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনেক কেসে সিবিআই লুক আউট নোটিস জারি করেছে। বর্তমানে ন্যায় বিচারের আশায় নিহতদের পরিবারগুলি দিন গুনছে। সেই বিচার এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। (চলবে)

     

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    Post Poll Violence: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুর্থ পর্ব।

     

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে এই ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস শুধু রাজনৈতিক সংঘর্ষ (Post Poll Violence) ছিল না, সামজিক, আর্থিক ও ধর্মীয় সন্ত্রাসেরও শিকার হতে হয়েছে অসহায় মানুষকে। ৩৮.২ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি, তাই চরম হিসাব দিতে হয়েছে তাদের কর্মী-সমর্থকদের। নির্যাতন থেকে বাদ যায়নি বাংলার নারীসমাজ। এমনটাই অভিযোগ বিরোধী দলের। অভিজ্ঞ মানুষের মুখেও বারবার শোনা গিয়েছে একটাই কথা, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বামপন্থী লাল সন্ত্রাসকেও বহুগুণ ছাপিয়ে গেছে এই রাজনৈতিক সবুজ সন্ত্রাস। 

    কেমন ছিল নারী নির্যাতনের ছবি?

    নির্বাচন সময়পর্বে কোচবিহারে রাজবংশী সমাজের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছিল। নিখোঁজ তরুণীর বাবা পুলিশ সুপারের কাছে তা জানান। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন ছিল নিষ্ক্রিয়। বিজেপির অভিযোগ, হুগলির বদনগঞ্জের মাধবী আদককে খুন করা হয়েছে কেবলমাত্র তাঁর ছেলে তাদের দল করে বলে। নন্দীগ্রামে বিবস্ত্র করে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে খুন (Post Poll Violence) করা হয়। সেই নির্যাতিতা নারীর সামজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল। কোচবিহারের মাথাভাঙার শিকারপুরে নাবালিকাকে ধর্ষণ করতে দুবার ভাবেনি দুষ্কৃতীরা। থানায় অভিযোগ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি বলে নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছিল। বর্ধমানের আউশগ্রামেও দুই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে বিজেপি সমর্থক দেবনাথ প্রামাণিকের স্ত্রী আর মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ভোটদানের আগের দিন। ফলে তাঁদের পক্ষে আর ভোট দেওয়াই সম্ভব হয়নি।

    শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে এক গৃহবধূ ভোট দিতে গেলে মায়ের গলায় দা ঠেকিয়ে কোলের সন্তানকে অপহরণ করেছিল স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় গুন্ডারাই এই অপকর্ম করেছে বলে সন্তানের মা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। মেদিনীপুরের পটাশপুরে শাশ্বতী জানাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় নির্বাচন পরবর্তী সময়ে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় ভাস্বতী বর্মনকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে পায়ে গুলি চালায় শাসকদলের দুষ্কৃতীরা, এমনটাই অভিযোগ। এই খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বর্ধমানের জামালপুরে আশিষ ক্ষেত্রপালের মা কাকলি ক্ষেত্রপালকে টাঙ্গি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা (Post Poll Violence) করা হয়। খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের বারাতলা পঞ্চায়েত এলাকায় এক পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাকে বাড়িতে ঢুকে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা। 

    বর্ধমানের বৈকুন্ঠপুরের হ্যাচারি রোড ক্যানালপাড়ের বাজারে শুধুমাত্র বিজেপিতে ভোট দেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে মেয়ের সামনে মাকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়েছে। ২৬ সেকেন্ডের এই ভিডিও প্রকাশিত হওয়ায় হইচই পড়ে যায়। সভ্য সমাজের আক্ষেপ, পশ্চিমবঙ্গ এইভাবে মা ও মেয়ের উপর অত্যাচার দেখবে বলে কোনওদিনই প্রস্তুত ছিল না। ১০ মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক প্রতিনিধিদল গোবিন্দ মোহনের নেতৃত্বে ধনিয়াখালির চকহিরণ্যবাটীতে গেলে অর্চনা মাঝি নামে এক সাধারণ মহিলা জানিয়েছিলেন, তাঁরা ঘরছাড়া ছিলেন ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই। তৃণমূলের লোকেরা রোজ শাসাচ্ছে। অর্চনাদেবীর কাতর আবেদন ছিল, শান্তিতে যাতে থাকতে পারি, সেই ব্যবস্থা করুন। লোকাবাটি গ্রামের গৃহবধূ আসমা তারা জানিয়েছিলেন, ফল প্রকাশের পরের দিন দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে লাঠি, বাঁশ নিয়ে বাড়িতে হামলা (Post Poll Violence) চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে সমাজবিরোধীরা। ৩১ মে ভাটপাড়া পৌরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুষ্কৃতীরা মা সুজাতা নাথ এবং ছেলে সঞ্জীব নাথকে মারধর করে। সঞ্জীব নিজে বিজেপি করত, এটাই ছিল তার অপরাধ। 

    সক্রিয় জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা এবং মহিলা কমিশন

    হিংসার কারণে ১ জুন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশ করে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। জাতীয় মহিলা কমিশন রাজ্য পুলিশের ডিজিকে ধর্ষণ, খুন নিয়ে (Post Poll Violence) বিশেষ চিঠি পাঠিয়েছিলেন। রামনগরে সন্ত্রাস চালায় তৃণমূল সন্ত্রাসীরা, এমনটাই অভিযোগ। যার প্রভাব পড়ে শিশুদের উপর। প্রায় ৬০০ পরিবার ঘরছাড়া এবং প্রায় ২০০ শিশু অনাহারে দিন কাটাচ্ছে বলে কমিশন জানিয়েছিল। এই ঘটনার পিছনে প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির খান। আবার বর্ধমানের আউসগ্রামের ৬০টি পরিবার ঘরছাড়া হয়। তাঁবুতে দিন কাটে তাদের। পরিবারগুলি অনাহারে দিনপাত করে। শিশুরা অভুক্ত, খাদ্য নেই, বস্ত্র নেই, চিকিৎসা নেই, এমনই ছিল করুণ অবস্থা। বারাসতের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৫০ টি পরিবার, কল্যাণীতে ৩৫ টি পরিবার এবং নানুরে ১০০ পরিবার ঘরছাড়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। (চলবে)

     

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    পর্ব ২: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    Post Poll Violence: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের তৃতীয় পর্ব।

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যজুড়ে নির্যাতনের চিত্রটা ছিল ভয়ঙ্কর। শুধুমাত্র ২ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত রাজ্যে রাজনৈতিক হত্যার সংখ্যা প্রায় ৪০। প্রায় ৩৫০০ গ্রাম প্রত্যক্ষভাবে হিংসার শিকার হয়, ৪০ হাজার ঘরবাড়ি প্রত্যক্ষভাবে লুটপাট হয় এবং ১ লাখ মানুষকে নিজের প্রার্থী নিজে নির্বাচন করে ভোট দেওয়ার জন্য ঘরছাড়া হতে হয়। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন, তফশিলি জাতি-উপজাতি কমিশন, নারী সুরক্ষা কমিশন এবং শিশু সুরক্ষা কমিশন এই বিষয়ে বিস্তৃত তথ্য দিয়েছে। এই রাজনৈতিক হিংসার (Postpoll Violence) দায়ভার কার? বিরোধীরা বারবার এই প্রশ্ন তুললেও এখনও তার উত্তর মেলেনি।

    পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদানের জন্য আক্রমণ!

    ২ মে রবিবার থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, নয়ানান, শেরখানচক, বয়ালে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চলে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইসলামপুর, বীরভূমের দুবরাজপুর, নানুরে শাসক-বিরোধীদের চিহ্নিত করে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং বাড়ির মা-বোনের সম্ভ্রমহরণ করার চেষ্টা হয়। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সেইসময় জোরালো অভিযোগ উঠেছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমডাঙা বিধানসভার সন্দেশখালি, ছোট শেয়ারা, বসিরহাট এবং হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার পারঘুমটি, রূপমারি, মাধবকাটি, হাটগাছায় দোকানপাট ভাঙচুর হয়, লুটপাট ও বোমাবাজি চলে। উল্লেখ্য, বসিরহাটে মহকুমা শাসকের বাড়ির সামনেই একটি বাড়িতে লুটপাট (Postpoll Violence) হয়। বসিরহাটে প্রায় পাঁচশো বাড়িঘর, দোকানপাট লুটপাট করে দুষ্কৃতীরা। এছাড়াও মালঞ্চ, বামনপুকুর, কালীনগর এলাকায় প্রায় ত্রিশটির বেশি দোকান লুট করে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করে দুষ্কৃতীরা। হাড়োয়ার উচিলদহ গ্রাম এবং মিনাখাঁতে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ব্যাপক বোমাবাজি করে ঘরছাড়া করে তৃণমূলের গুন্ডারা, এমনটাই অভিযোগ রয়েছে। আবার ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকায় ভাঙচুর, লুটপাট এবং বুলডোজার চালিয়ে বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়। প্রধান অভিযোগের তির ছিল শওকত মোল্লার দিকে।

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!  

    উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থানার সামনে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় এক তরুণের। দেগঙ্গাতে প্রচুর মানুষ ঘরছাড়া হয় অত্যাচারে। বাড়িতে বাড়িতে ভয় দেখিয়ে রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ছিনতাই করে তৃণমূলের স্থানীয় মাতব্বররা, অভিযোগ এমনটাই। এলাকার মানুষের আরও অভিযোগ, শাসকদলের নেতারা এই অপকর্মে পূর্ণ মদত দিয়েছেন। লক্ষ্যণীয় হল, পশ্চিমবঙ্গে গণতান্ত্রিক উৎসব নির্বাচনের পর এই সন্ত্রাস (Postpoll Violence) নিয়ে শাসকদল একটাও বিবৃতি দেয়নি। 

    পর্ব ২: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    হুগলির আরামবাগে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা একটি কাপড়ের দোকান ভাঙচুর করে কাপড় লুট করে আগুন লাগিয়ে দেয়। গোঘাটে এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর দোকান দুষ্কৃতীরা জোর করে ভোট পরবর্তী সময়কালে বন্ধ করে রাখে। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে হাজার মানুষ ঘরছাড়া (Postpoll Violence) হয়ে পড়েছিল। দুর্গাপুরে প্রায় ১০০ পরিবার অত্যাচারে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। 

    ১৬ মে হাওড়ার জগাছায় ১ নম্বর মৌখালিতে চাঁদখান পাড়াতে সাধারণ ভোটারের উপর দুষ্কৃতী বাহিনী ব্যাপক হামলা (Postpoll Violence) চালায়। বেছে বেছে বিরোধীদের বাড়িতে ব্যাপক বোমাবাজি করে। এমনকী তরোয়ালের আঘাতে আঙুল কাটা গেছে এক ব্যক্তির, এমন অভিযোগও দায়ের হয়েছে। বাড়ির সম্পত্তি লুটপাট হয়। 

    এলাকা পরিদর্শনে এলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ে হামলা

    ৫ মে শপথ গ্রহণের আগে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন ‘এখন আইনশৃঙ্খলা তাদের (নির্বাচন কমিশন) সামলানো দরকার, এই দুটো দিন আমার হাতে কিছু নেই। যতক্ষণ না পর্যন্ত শপথ নিচ্ছি, ততক্ষুণ পর্যন্ত…’। ৬ মে মেদিনীপুর সদর পাঁচখুরিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন আক্রান্ত (Postpoll Violence) হন। এলাকায় পরিদর্শনে এলে তাঁর কনভয়ে হামলা চলে। হিংসার জেরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা সেই সময় বলেছিলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর সারা পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপী তৃণমূল কংগ্রেস দ্বারা সংঘটিত হিংসা চরম সীমায় পৌঁছেছে… যেখানে ভারত সরকারের মন্ত্রীর উপর হামলা হয়ে চলেছে, সেখানে সাধারণ মানুষ কতটা সুরক্ষিত?” রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সরকার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসবলে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বলেছিলেন, ‘কোচবিহার থেকে সুন্দরবন সর্বত্র আতঙ্ক আর ত্রাস ছড়িয়ে পড়ছে। সাম্প্রদায়িক অশান্তি যারা ছড়াচ্ছে, তারা কারও পরোয়া করছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কোনও চেষ্টা করছে না রাজ্য পুলিশ। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আইনের পরিস্থিতি খুব খারাপ।’ অন্যদিকে, পরিস্থিতির যারা প্রত্যক্ষ শিকার হয়েছিল, তারা ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও পায়নি বলে দুই বছর পরেও অভিযোগ উঠছে। (চলবে)

     

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    Post Poll Violence: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা  অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব।

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সপ্তদশ বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু তার ঠিক পরই কোভিডবিধি অমান্য করে বিজয়োল্লাসের নামে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে যে সন্ত্রাস (Post Poll Violence) চলেছিল, তাতে অভিযোগের তির ছিল তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই। ২ মে দুপুর ১২ টা থেকে কলকাতা শহরে তৃণমূল কংগ্রেসের এগিয়ে থাকা আসনগুলিকে ঘিরে শুরু হয়ে যায় উল্লাস। কালীঘাটে প্রচুর সমর্থক শত শত বাইক নিয়ে শুরু করে দেয় মিছিল। অভিযোগ, এরপর তারা নির্বাচনী গণনাকেন্দ্রেরও দখল নিয়ে নেয়। বিরোধীরা সেই সময়ই অভিযোগ করেছিল, তাদের এজেন্টদের পুলিশি সহযোগিতায় ভয় দেখিয়ে, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কার্যত এলাকাছাড়া করে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। বেলা ১ টা থেকে খবর আসতে শুরু করে, কলকাতার বাইরে বারাকপুরের চাকুলিয়া মোড়, পুরুলিয়ার পলিটেকনিক কলেজ, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, মালদা, বালুরঘাট, বর্ধমান শহর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়ার জি টি রোড, মুর্শিদাবাদের মতো জায়গায় গণনাকেন্দ্র দখল করে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। নির্বাচন কমিশনকে কোনও সদর্থক ভুমিকা পালন করতে দেখা যায়নি বলেও অনেকে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন।

    রাজ্যজুড়েই শুরু হয়ে গেল হামলা, ইটবৃষ্টি, বোমাবাজি

    ঠিক বেলা দেড়টা। কলকাতায় গণনা চলছে। তার মধ্যেই শুরু হয়ে গেল হিংসাত্মক হামলা। খাস কলকাতার উল্টোডাঙার মুরারীপুকুর লেনে তৃণমূল পরিচালিত একটি ক্লাবে ডিজে চালিয়ে চলছে উল্লাস। কসবায় তৃণমূল সমর্থকরা বিজয় উল্লাসের নামে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করে শিষ্টাচারের মাত্রা ছাপিয়ে গেল। চটুল গানের নাচের সঙ্গে নেতাদের মুখে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ, বিরোধীদের মারধর, এবং বাড়িতে হামলা। দুপুর আড়াইটে নাগাদ বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে বোমা মারল দুষ্কৃতীরা। গড়িয়ার রবীন্দ্রপল্লির ব্রহ্মপুরে বেলা ৩ টে থেকে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে হামলা শুরু হল। ধীরে ধীরে এসব ছড়িয়ে পড়ল হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট, গড়িয়া, নাকতলা, টালিগঞ্জ, বাঘাযতীন, যাদবপুর, বেলেঘাটা, এন্টালি, কাশীপুর, জোড়াবাগান, বড়বাজার, মানিকতলা, জোড়াসাঁকো অঞ্চলে। শুরু হল দিকে দিকে বিজেপি কর্মীদের উপর  হামলা। চলল বাড়ি লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি, বোমাবাজি। হাওড়ার জি টি রোড ৬ নম্বর মোড়ে এক কাপড়ের দোকানে চলে লুঠপাট। বোটানিক্যাল গার্ডেনে চলে বোমাবাজি (Post Poll Violence)। 

    ভোট-পরবর্তী প্রথম হত্যাকাণ্ড

    দুপুর আড়াইটে নাগাদ কাঁকুড়গাছি রেল কলোনির পাশে পিটিয়ে খুন (Post Poll Violence) করা হয় অভিজিৎ সরকারকে। চলে বোমাবাজিও। প্রায় ৪০-৫০ জনের একটি দল বাঁশ, বাটাম, রড নিয়ে আক্রমণ চালায়। বাড়িতে চারটে পোষা কুকুর ছিল। বাড়ির লোক বিজেপিতে ভোট দিয়েছে, কেবলমাত্র এই অপরাধে পোষা কুকুরকেও পিটিয়ে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা। দোষ একটাই ছিল, অভিজিৎ কেন রাজনৈতিক আক্রমণ ও হামলার চিত্র ফেসবুকে লাইভ করলেন। সিসিটিভির তার গলায় পেঁচিয়ে বাড়িতে পাথর দিয়ে থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাঁকে। অভিজিতের মা এবং দাদা বিশ্বজিৎ সরকার কিছুই করতে পারেননি। কারণ তাঁদের হাত-পা বেঁধে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দাদা বিশ্বজিৎ বার বার বলেছেন, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই তাঁর ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বিচার বিভাগের কাছে ন্যায্য বিচার চেয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
     
    আইনের শাসন কি আদৌ ছিল? 

    বিরোধীদের অভিযোগ, ঘটনার দিন সারা কলকাতা জুড়ে কোনও আইনের শাসন ছিল না। পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয়। সর্বত্র সন্ত্রাস, আক্রমণের (Post Poll Violence) ছবি এবং ভিডিও দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হাইকোর্টের নির্দেশে সমস্ত হত্যা এবং সম্পত্তিহানির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত করছে এবং বিশেষ বিচার বিভাগীয় সিট গঠিত হয়েছে। দুই বছর হয়ে গেল, কিন্তু সেই তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। (চলবে)

     

    পর্ব ২: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • BJP: বিজেপিকে ভোট দেওয়ার অপরাধে মিলছে না পানীয় জল! রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ

    BJP: বিজেপিকে ভোট দেওয়ার অপরাধে মিলছে না পানীয় জল! রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিজেপিকে (BJP) ভোট দেওয়ার অপরাধে মিলছে না পানীয় জল। বিস্ফোরক অভিযোগ এলাকাবাসীর। তীব্র দাবদাহের মধ্যে জলের জন্য হাহাকার। জলের দাবিতে রাস্তায় নেমে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। বালতি, কলসি নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার মহিলারা। এলাকাবাসীর সঙ্গে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের  তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়োল বাজারের ঘটনা।

    কেন বিক্ষোভ?

    এই এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা বিজেপির (BJP) । যদিও গ্রাম পঞ্চায়েতটি শাসকদল তৃণমূলের দখলে রয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে এই এলাকায় পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। এমনকি বসানো হয়নি কোন সাবমার্সিবল পাম্প। ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। বিজেপি (BJP) নেতা কৌশিকচন্দ্র দাস বলেন, তৃণমূল ইচ্ছাকৃতভাবে এই এলাকায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করছে না। কিছু দিন আগে একটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হলেও সেটি বসানো হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা তৃণমূল নেত্রী সুজাতা সাহার বাড়ির সামনে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাবমার্সিবল পাম্প না বসিয়ে তৃণমূলের ওই নেত্রীর বাড়ির সামনে পাম্প বসানো হয়েছে। আমার স্ত্রী বিজেপির (BJP) পঞ্চায়েত সদস্যা। এলাকার মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে বলে তৃণমূল এই শাস্তি দিচ্ছে। এদিন আমরা পানীয় জলের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছি। দাবিপূরণ না হলে আগামীদিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। এলাকাবাসীর বক্তব্য, গরম পড়তেই জলস্তর অনেকটাই নেমে গিয়েছে। ফলে, পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিজেপিকে সমর্থন করার জন্যই পরিষেবা থেকে আমরা বঞ্চিত। এই অবস্থায় বিক্ষোভ থেকে এলাকাবাসীর একটাই দাবি দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে।

    কী বললেন তৃণমূল বিধায়ক?

    ওই এলাকায় জল কষ্টের কথা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক নীহার রঞ্জন ঘোষ। কিন্তু বিজেপি (BJP) করার জন্য কাজ হয়নি এ কথা মানতে নারাজ তিনি। তিনি বলেন, এটা বিজেপির মনগড়া অভিযোগ। ওই এলাকার সমস্যা নিয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর নিয়ে কথা বলেছি। সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • BJP: শিল্পাঞ্চলে ফের শুটআউট! গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বিজেপি নেতার

    BJP: শিল্পাঞ্চলে ফের শুটআউট! গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বিজেপি নেতার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ফের শুটআউটের ঘটনা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বিজেপি (BJP) নেতার। শনিবার দুপুরে আসানসোলের জামুড়িয়া থানার বোগড়া কালী মন্দিরের কাছে ২ নং জাতীয় সড়কে একটি স্করপিও গাড়ির ভিতর থেকে ওই বিজেপি (BJP) নেতার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। মৃত বিজেপি নেতার নাম রাজেন্দ্র সাউ (৪০)। তাঁর বাড়ি আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার রানিসায়ের এলাকায়। তিনি আসানসোল পুরনিগমের ৩৩ নং ওয়ার্ডের বিজেপির কনভেনার ছিলেন। গাড়ির পাশে রাস্তায় পড়েছিল একটি খালি কার্তুজ।

    কী বললেন মৃতের পরিবারের লোকজন?

    এই ঘটনায় রানিসায়ের অঞ্চলে রাজেন্দ্রর বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত বিজেপি নেতার আত্মীয় জীতেন্দ্র সাউ বলেন, শনিবার দুপুরে রাজেন্দ্রর কাছে একটি ফোন আসে। ফোনে খুব গালিগালাজ হয়। তবে, কে ফোন করেছিল আমরা জানতে পারিনি। ফোন রেখে বেলা দুটো নাগাদ বেশ কিছু টাকা নিয়ে সে বেরিয়ে যায়। তারপরই এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। মনোজ সাউ নামে এক আত্মীয় বলেন, রাজেন্দ্র আমার ভাইপো ছিল। খুব ভালো ছেলে। সকলের বিপদে সে ঝাঁপিয়ে পড়ত। তাকে এরকম হবে খুন করা হবে তা ভাবতে পারিনি। আমরা দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

    দলীয় নেতা খুন হওয়ার প্রতিবাদে বিজেপি-র (BJP) রাস্তা অবরোধ

    শনিবার বিজেপি (BJP) নেতা রাজেন্দ্র সাউয়ের খুন হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্ৰেফতার হয়নি। পাশাপাশি এই খুনের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার আসানসোলের রানিসায়ের মোড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখান। অবরোধকারীদের দাবি, খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী যায়। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ অবরোধ চলার পর অবশেষে অবরোধ ওঠে। অন্যদিকে, এই ঘটনার পিছনে ব্যবসায়িক শত্রুতা আছে বলেই মনে করছে পুলিশ।

    কী বললেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক?

    দলের নেতার মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকায় যান বিজেপির (BJP) রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। দলের নেতার মৃত্যুতে শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপির (BJP) আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। শনিবারও রাস্তা অবরোধ করা হয়। বিজেপি বিধায়ক বলেন, আমাদের কর্মীকে খুন করা হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

     

     

     

  • Manipur: প্রতিবাদ পরিণত হিংসায়, মণিপুরে বন দফতরের অফিসে আগুন, নৈশ কারফিউ

    Manipur: প্রতিবাদ পরিণত হিংসায়, মণিপুরে বন দফতরের অফিসে আগুন, নৈশ কারফিউ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবারের পর ফের শনিবার। উত্তপ্ত মণিপুর (Manipur)। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে শনিবার বিকেল ৫টা থেকে ভোর ৫টা অবধি জারি করা হয়েছে নৈশ কারফিউ (Night Curfew)। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারাও। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটও। এদিকে, শুক্রবার গভীর রাতে চূড়াচাঁদপুর জেলায় বন দফতরের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসে দমকল। আগুনও নেভানো হয়। যদিও তার আগেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে অফিসের বহু নথিপত্র। নষ্ট হয়েছে প্রচুর সরকারি সম্পত্তিও। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষও হয়। প্রসঙ্গত, স্থানীয় আদিবাসী সংগঠন ট্রাইবাল লিডার্স ফোরামের তরফে আন্দোলন চলছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে।

    উত্তপ্ত মণিপুর (Manipur)…

    মণিপুরের তখতে রয়েছে বিজেপি (BJP) সরকার। সম্প্রতি সংরক্ষিত ও সংরক্ষিত বন ও হ্রদগুলির ওপর সমীক্ষা শুরু করেছে সরকার। মূলত তা নিয়েই আপত্তি আন্দোলনকারীদের। কেবল তাই নয়, বিজেপি সরকার ধর্মস্থলগুলিকে সম্মান দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের। চার্চে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করছে তারা। যদিও রাজ্য সরকারের দাবি, রাজনৈতিক উসকানির জেরেই অশান্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের পরিস্থিতি।

    আদিবাসী (Manipur) সংগঠন ট্রাইবাল লিডার্স ফোরামের সম্পাদক মন টোমবিং বলেন, সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা জারি থাকবে। এন বীরেন সিংহ সরকারের সঙ্গে আপোসের কোনও প্রশ্নই নেই। তিনি বলেন, যদি সমীক্ষা করতেই হয়, তাহলে তা করতে হবে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে। জোর করে কিছুই করা যাবে না। ডেপুটি কনজারভেটর অফ ফরেস্ট জৌকুমার লংজাম জানান, সমীক্ষাটি করা হচ্ছে বন দফতর ও রাজস্ব দফতরের মধ্যে তৈরি হওয়া সংশয় দূর করতে।

    আরও পড়ুুন: রেড রোডে দলের সংখ্যালঘু সেলের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধলেন শুভেন্দু! কী বললেন?

    এর সঙ্গে উচ্ছেদের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে প্রক্রিয়া প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু ভুলচুক হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, সরকারি দফতরের কাজে কিছু ভুল হচ্ছে বলে মনে করলে আলোচনার রাস্তা সব সময় খোলা। এজন্য যে কেউ আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন। কিন্তু হিংসায় কোনও সুফল মিলবে না। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ২৭ তারিখে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল (Manipur) মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের। তার আগেই অনুষ্ঠানস্থল এলাকায় চালানো হয় ভাঙচুর। লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন। তার পরেই নৈশ কারফিউ এবং ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Balurghat Hospital: বন্ধ ডায়ালিসিস পরিষেবা, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা, হয়রানির একশেষ!

    Balurghat Hospital: বন্ধ ডায়ালিসিস পরিষেবা, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা, হয়রানির একশেষ!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে (Balurghat Hospital) বন্ধ হয়ে রয়েছে ডায়ালিসিস পরিষেবা। যার ফলে সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা। হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে টাকা খরচ করে করাতে হচ্ছে ডায়ালিসিস। আর এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী। হাসপাতালের এই অব্যবস্থা দেখে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। অবশ্য হাসপাতালের তরফে দ্রুত ওই ডায়ালিসিস যন্ত্রগুলি সারাই করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কোনও মেডিক্যাল কলেজ নেই। তাই জেলা হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। কিডনির সমস্যার কারণে এই হাসপাতালে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু হয়। কিন্তু সম্প্রতি সেই যন্ত্রগুলিও অকেজো হয়ে পড়েছে।

    কী বলছেন রোগীর আত্মীয়রা?

    জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের (Balurghat Hospital) তিনতলা ভবনে ডায়ালিসিস বিভাগ রয়েছে। সেখানে পাঁচটি বেড রয়েছে। পাঁচজনকে রেখে ডায়ালিসিস করা হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই পাঁচটি ডায়ালিসিস যন্ত্রের মধ্যে একসঙ্গে তিনটি অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এমনকী ডায়ালিসিসের রিভার্স অসমোসিস (আরও) প্ল্যান্ট বিকল হয়ে থাকায়, রোগীর দেহ থেকে দূষিত তরল বের করতেও সমস্যা হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে সবক’টি ডায়ালিসিস যন্ত্রই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। হিলি ব্লকের ত্রিমোহিনীর বাসিন্দা সিদ্দিক মণ্ডল বলেন, আমার স্ত্রীকে সপ্তাহে দু’দিন ডায়ালিসিস করাতে হয়। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতাল থেকে এই পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে আমরা মাঝেমধ্যেই এসে ঘুরে যাচ্ছি।

    তোপ বিজেপির, কী বলল তৃণমূল?

    বিজেপির বিধায়ক অশোক লাহিড়ী বলেন, এই হাসপাতালে (Balurghat Hospital) কোনও চিকিৎসা পরিষেবা নেই। ডায়ালিসিস পরিষেবা দীর্ঘদিন ধরেই বিকল হয়ে রয়েছে। রোগীরা এখান থেকে ফিরে যাচ্ছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, বালুরঘাটে ডায়ালিসিস পরিষেবা এমনিতে সচল রয়েছে। টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে সম্ভবত একটু সমস্যা হচ্ছে। বিধায়ক এই ধরনের কথা বলবেনই। তিনি এখানে থাকেন না, তাই না জেনেই সবটা বলে দেন। 

    কী আশ্বাস দিলেন সুপার?

    এবিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের (Balurghat Hospital) সুপার কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ বলেন, ডায়ালিসিস একটি বেসরকারি সংস্থার তরফে পরিচালনা করা হয়। প্রায়ই যন্ত্রগুলি বিকল হয়ে পড়ছে। বাধ্য হয়ে রোগীদের গঙ্গারামপুরে পাঠাতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের জেলার কোনও রোগী যাতে হয়রানির মুখে না পড়েন, সেদিকেও আমরা নজর রেখেছি। ওই সংস্থাকে আমরা এই সমস্যাগুলি দ্রুত মেটাতে চিঠি দিয়েছি। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও বিষয়টি জানিয়েছি। তবে কবে থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ। 

LinkedIn
Share