Tag: Donald Trump

Donald Trump

  • S Jaishankar: ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ মার্কিন শুল্কের তীব্র বিরোধিতা শি জিনপিংয়ের

    S Jaishankar: ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ মার্কিন শুল্কের তীব্র বিরোধিতা শি জিনপিংয়ের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “বিশ্ব একটি সমষ্টি হিসেবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীল ও পূর্বানুমানযোগ্য পরিবেশ খুঁজছে। তবে একই সময়ে এটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা যেন ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছ হয় এবং সবার উপকারে লাগে।” ভার্চুয়াল ‘ব্রিকস’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে সোমবার কথাগুলি বলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar)। ভারত ও অন্য কয়েকটি দেশের পণ্যের ওপর চড়া হারে শুল্ক (US Tariffs) আরোপের কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঠিক সেই সময় জয়শঙ্করের এই কথাগুলি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।

    জয়শঙ্করের বক্তব্য (S Jaishankar)

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং অন্য রাষ্ট্রনেতারা। এই সম্মেলনেই জয়শঙ্কর বলেন, “ভারতের বিশ্বাস, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে খোলা, ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ এবং বৈষম্যহীন রেখে সংরক্ষণ করা উচিত হবে।” তিনি বলেন, “যখন একাধিক ব্যাঘাত ঘটে, তখন আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত এই ধরনের ঝুঁকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এর মানে হল আরও দৃঢ়, নির্ভরযোগ্য, অতিরিক্ত নিরাপত্তা-সহ এবং স্বল্প সরবরাহ শৃঙ্খলা তৈরি করা।”  প্রসঙ্গত, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ভার্চুয়াল ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন মার্কিন শুল্ক এবং বাণিজ্য নীতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য। কারণ এগুলিই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।জয়শঙ্কর বলেন, “গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক পন্থার মাধ্যমে বিশ্বকে একটি মজবুত বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নীত করতে হবে। ব্যাঘাত সৃষ্টি করা এবং লেনদেন জটিল করা কোনও সাহায্য করবে না। বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে অ-বাণিজ্যিক বিষয়গুলির সঙ্গে যোগ করলেও সুবিধা হবে না।”

    ভারতের বক্তব্য

    জয়শঙ্কর ব্রিকসের সদস্য দেশগুলিকে নিজেদের বাণিজ্য নীতি পুনঃপর্যালোচনা করে সদস্য দেশগুলির মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “ভারতের প্রসঙ্গে বলতে গেলে আমাদের সবচেয়ে বড় ঘাটতি রয়েছে কিছু ব্রিকস অংশীদারের সঙ্গে। আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছি। আমরা আশা করি, আজকের সভা থেকে এই উপলব্ধিটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে সামনে আসবে।” ভারতের বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য (US Tariffs) ভারতের সঙ্গে চিনের বাড়তে থাকা বাণিজ্য ঘাটতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি (S Jaishankar) বলেন, “ভারত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে এটি সংরক্ষণ ও বিকাশ করা উচিত। শুধু তাই নয়, আজকের বিশ্ব পরিস্থিতি প্রকৃত উদ্বেগের কারণ।” কোভিড অতিমারি, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহে অস্থিরতা এবং চরম জলবায়ু ঘটনা, এসবই গত কয়েক বছরে বিশ্বের প্রধান চ্যালেঞ্জের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন জয়শঙ্কর। বলেন, “এই চ্যালেঞ্জগুলির মুখে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা বিশ্বকে ব্যর্থ করতে দেখা যাচ্ছে। এতগুলি গুরুতর সমস্যা অবহেলিত থেকে যাওয়ায় বিশ্বব্যবস্থার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।”

    চিন-ভারত কাছাকাছি

    এদিকে, বৈরিতা ভুলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে চিন। ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ মার্কিন শুল্কের তীব্র বিরোধিতা করেছে বেজিং। সোমবার চিনের রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের ভারতের ওপর আরোপিত ৫০ শতাংশ অন্যায় শুল্কের তীব্র বিরোধিতা করে চিন। তাই ভারত ও চিনের উচিত এই চ্যালেঞ্জ এক সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা (US Tariffs)।” দুই পড়শি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “ভারত ও চিন উভয়ই সন্ত্রাসবাদের শিকার। এই (S Jaishankar) চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেজিং নয়াদিল্লি-সহ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।” জাপানের বিরুদ্ধে চিনের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার পর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার জন্য শুল্ককে এক ধরনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান অর্থনীতির দেশ ভারত ও চিনের এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত।”

    নীতি পরিবর্তন ভারতের

    ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন উচ্চ শুল্কহার চড়ানোর পর নীতি পরিবর্তন করেছে ভারত। প্রতিবেশী দেশ চিনের সঙ্গে পুরানো তিক্ততা ভুলে এখন সম্পর্কের উন্নতি করতে উদ্যোগী হয়েছে নয়াদিল্লি। চিন অ্যাপ-সহ তার অনেক পণ্যের জন্য খোলা হচ্ছে ভারতের দুয়ার। এর পাশাপাশি রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপরও দ্রুত কাজ করা হচ্ছে (US Tariffs)। এক কথায়, ভারতীয় পণ্যের ওপর চড়া মার্কিন শুল্কের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে, তা পূরণের জন্য এখন সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার (S Jaishankar)।

  • India US Relation: ভারতের জিডিপি ৭.৮% হারে বাড়ছে আর আমেরিকার ৩.৩%! ‘মৃত’ অর্থনীতি বলে বেকায়দায় ট্রাম্প

    India US Relation: ভারতের জিডিপি ৭.৮% হারে বাড়ছে আর আমেরিকার ৩.৩%! ‘মৃত’ অর্থনীতি বলে বেকায়দায় ট্রাম্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক অভিনব বিদ্রূপের চিত্র ফুটে উঠেছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির মঞ্চে। যেখানেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (India US Relation) ভারতের অর্থনীতিকে “মৃত” বলে অভিহিত করেছিলেন, সেখানেই সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন মাসে ভারত ৭.৮% হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এর বিপরীতে, ট্রাম্পের প্রশংসায় ভরপুর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি একই সময়ে মাত্র ৩.৩% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের অর্থনৈতিক (Indian Economy) এই সাফল্য মূলত ভর করেছে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা, পরিষেবা খাতের দৃঢ়তা এবং উৎপাদন খাতের পুনরুজ্জীবনের উপর। নতুন প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফল দেখিয়েছে ভারতের অর্থনীতি।

    বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি

    বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আইএমএফ ইতিমধ্যেই আগামী কয়েক বছরে ভারতের প্রবৃদ্ধিকে ৬.৩% থেকে ৬.৪% হারে থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে। এর ফলে স্পষ্ট হয়ে উঠছে কেন ভারতকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যেখানে ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসছে, সেখানে ভারত নিজের গতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত কঠোর শুল্কের মধ্যেও। ট্রাম্পের “মৃত অর্থনীতি” মন্তব্যে শুধু ভারতেই নয়, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশের মধ্যেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অস্ট্রেলিয়া ভারতকে “অসাধারণ সম্ভাবনার দেশ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের অর্থনীতি কোনওভাবেই ধ্বংসের মুখে নয় – বরং ২০৩৮ সালের মধ্যে ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুযায়ী (PPP) দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে, যেখানে জিডিপি হবে প্রায় ৩৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

    মোদি সরকারের কৌশলী নীতি

    ভারতে জিডিপি-র (Indian Economy) প্রবৃদ্ধি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে স্বস্তি দিয়েছে। সরকারের পরিকাঠামো খাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন-ভিত্তিক ব্যবস্থা ও আত্মনির্ভর ভারত তৈরির স্বপ্ন সফল হচ্ছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) অবশ্য মার্কিন সুরক্ষা নীতিকে ঝুঁকি হিসেবে দেখলেও, বলেছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা যথেষ্ট শক্তিশালী, যা বাইরের চাপ সামাল দিতে সক্ষম। বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে, ভারতীয় অর্থনীতিই আজ সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে। গত ২৭ অগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ করে শুল্ক নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুক্তি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে এই পদক্ষেপ করেছেন তিনি। পূর্ব ইউরোপের ওই সংঘাত শুরু হওয়া ইস্তক মস্কোর থেকে সস্তা দরে অপরিশোধিত খনিজ তেল আমদানি করে চলেছে নয়াদিল্লি। ট্রাম্প মনে করেন, এতে সংঘর্ষ চালিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ পেয়ে যাচ্ছে ক্রেমলিন। আর তাই রাশিয়াকে ‘ভাতে মারতে’ ভারতের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্কনীতির কড়া সমালোচনা করে ভারত জানিয়েছে, কোনওভাবেই মাথা নোয়াবে না দিল্লি। দেশের মানুষের স্বার্থে যা করা উচিত তাই করা হবে।

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত

    ট্রাম্পের এ-হেন শুল্কনীতির অবশ্য আমেরিকার ভিতরেই শুরু হয়ে গিয়েছে কড়া সমালোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক এডোয়ার্ড প্রাইস বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রেসিডেন্ট অর্থনীতির কিছুই বোঝেন না। ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের নামে বেপরোয়া এবং বিপজ্জনক পদক্ষেপ করছেন তিনি। অবিলম্বে নয়াদিল্লির পণ্যে ৫০ শতাংশ কর প্রত্যাহার করুক হোয়াইট হাউস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ২১ শতকের পৃথিবী কৌশলগত অংশীদারদের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সেখানে ভারতের মতো বন্ধুকে হারানো চরম মূর্খামি।’’

    ট্রাম্পের বোকামি

    গত ৩০ জুলাই নিজের সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে নয়াদিল্লি ও মস্কোকে নিশানা করে একটি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করছে, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। ওরা ‘মৃত অর্থনীতি’কে একসঙ্গে ধ্বংস করতে পারে। আমি সব কিছুর জন্য চিন্তা করি। আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, নয়াদিল্লির শুল্ক অনেক বেশি। একে বিশ্বের সর্বোচ্চ বলা যেতে পারে। রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে প্রায় কোনও ব্যবসা নেই বললেই চলে।’’ তাঁর এই পোস্টের পরেই শুরু হয় হইচই। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অগাস্টের একেবারে শেষে চলতি আর্থিক বছরের (২০২৫-’২৬) এপ্রিল থেকে জুনে জিডিপির হার প্রকাশ করে কেন্দ্র। মোদি সরকারের দেওয়া সেই তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে ৭.৮ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে সূচক। পরে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে ভারত।’’ বর্তমানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নয়াদিল্লির নাম। সমীক্ষক সংস্থা ‘ইওয়াই ইকোনমিক ওয়াচ’ আবার তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ১৩ বছরের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির (Indian Economy) দেশ হয়ে উঠবে ভারত। পাশাপাশি, তালিকায় এক নম্বর স্থানে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (India US Relation) গদি টলমল হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। সেখানে চিনের উঠে আসার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন তাঁরা।

     

     

     

     

  • PM Modi: “ওঁর অনুভূতিকে অনুভব করি”, ট্রাম্পের ‘‘বন্ধু’’ মন্তব্যের ছোট্ট প্রতিক্রিয়া মোদির

    PM Modi: “ওঁর অনুভূতিকে অনুভব করি”, ট্রাম্পের ‘‘বন্ধু’’ মন্তব্যের ছোট্ট প্রতিক্রিয়া মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় পণ্যের ওপর দু’দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। ট্রাম্পের এই চড়া শুল্কনীতির জেরে এক অক্ষে চলে আসে ভারত-রাশিয়া ও চিন। এতেই প্রমাদ গোনে ট্রাম্প প্রশাসন। ঘরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারপরেই তিনি বলেন, “আমি সব সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) বন্ধু। নরেন্দ্র মোদি আমার বিশেষ বন্ধু। সব সময় বিশেষই থাকবেন। আমি তাঁকে খুব পছন্দ করি।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “নরেন্দ্র মোদি আমার বিশেষ বন্ধু। সব সময় বিশেষ থাকবেন। আমি তাঁকে খুব পছন্দ করি। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি যা করছেন, সেটা ঠিক নয়। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে একটা বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।” ট্রাম্পের এহেন মন্তব্যের জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, তিনি ট্রাম্পের অনুভূতিকে অনুভব করেন।

    মোদির ট্যুইট বার্তা (PM Modi)

    প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য এল এমন একটা সময়ে, যখন ট্রাম্প বলেন, তিনি সর্বদা মোদির বন্ধু থাকবেন। অথচ এর ঠিক একদিন আগেই তিনি দাবি করেছিলেন, ‘আমেরিকা ভারতকে সব চেয়ে গভীর, অন্ধকার চিনের হাতে হারিয়ে ফেলেছে।’ প্রত্যুত্তরে ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুভূতি ও আমাদের সম্পর্কের ইতিবাচক মূল্যায়নের গভীর প্রশংসা করি এবং সম্পূর্ণভাবে অনুভব করি। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক এবং ভবিষ্যৎমুখী সামগ্রিক ও বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।” তবে প্রধানমন্ত্রী যখন বললেন যে তিনি ট্রাম্পের অনুভূতির “প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন”, তখন তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে তার বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করতে এড়িয়ে গিয়েছেন। যার অর্থ হল, এই সম্পর্কের উত্তাপ শিথিল করতে হলে পেছনের দিকে কিছু কাজ করতে হবে।

    ইতিবাচক বাক্য বিনিময়

    দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে ইতিবাচক (PM Modi) এই বাক্য বিনিময় এই ধারণাকে জোরালো করে যে, ট্রাম্প ও তাঁর আধিকারিকদের ভারতবিরোধী উত্তেজক মন্তব্যের ঝড় সত্ত্বেও দুই দেশের সম্পর্ক মেরামত করার দরজা এখনও খোলা রয়েছে। ট্রাম্প ও তাঁর আধিকারিকরা একাধিকবার ভারত বিরোধী মন্তব্য (Donald Trump) করলেও, ভারত সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি, করেনি কোনও পদক্ষেপও। ট্রাম্পের সমালোচনাও করেনি। যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে মস্কো থেকে অপরিশোধিত তেল কেনায় ভারতের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভারতের কৃষি ও দুগ্ধ খাত আমেরিকার জন্য খোলার বিষয়ে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় আটকে গিয়েছে দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি, যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে সম্পর্কের শীতলতা। শুক্রবারও ট্রাম্প ভারতকে নিশানা করে জানান, যখন তিনি চিনে অনুষ্ঠিত এসসিও (SCO) শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতির বিষয়টি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তিয়ানজিনে হাসিমুখে একে অন্যের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ছবি প্রদর্শন করার পর আরও বিব্রত বোধ করেন ট্রাম্প।

    ট্রাম্পের বক্তব্য

    এর পরেই মোদি, পুতিন ও শি জিনপিংকে এক (PM Modi) সঙ্গে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে এমন একটি ছবি পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে হারিয়েছি সবচেয়ে গাঢ়, অন্ধকার চিনের কাছে। তারা যেন এক সঙ্গে দীর্ঘ ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ কাটায়!’ এরই কয়েক ঘণ্টা পরে ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করেন। তিনি জানান, সম্পর্কটি এখনও ‘বিশেষ’ এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে শক্তিশালী বন্ধন বজায় রেখেছেন। ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, “আমি সর্বদা (প্রধানমন্ত্রী) মোদির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। তিনি একজন মহান প্রধানমন্ত্রী। আমি সর্বদা বন্ধু থাকব। তবে আমি ঠিক এই বিশেষ মুহূর্তে তিনি যা করছেন তা পছন্দ করি না। কিন্তু ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। চিন্তার কিছু নেই। মাঝে মাঝে আমাদের মতবিরোধ হয় (PM Modi)।”

    ট্রাম্পের ভোল বদল

    সম্প্রতি ট্রাম্প ও তাঁর সহকারীরা ভারতের ব্যাপারে আরও সংযত ভাষা ব্যবহার করেছেন। অথচ গোটা সপ্তাহটা ধরে ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। ভারতকে “ক্রেমলিনের লন্ড্রোম্যাট”ও বলা হয়েছিল, রাশিয়া ইউক্রেন সংঘর্ষকে বলা হয়েছিল “মোদি যুদ্ধ”। গত সপ্তাহেই ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা ও ভারতের সম্পর্ক খুব ভালো। যদিও তিনি এই সম্পর্ককে “একতরফা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাণিজ্য অসমতার কারণে। আমেরিকার ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টও (Donald Trump) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের শক্তি এবং স্থায়ীত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় দিনের শেষে, দু’টি মহান দেশ এটি সমাধান করবে (PM Modi)।”

  • India US Relation: ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা মার্কিন মুলুকে, কী বললেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট?

    India US Relation: ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা মার্কিন মুলুকে, কী বললেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ট্রাম্প জমানায় মার্কিন বিদেশনীতির কড়া সমালোচনা করলেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব। রাজধানী হেলসিঙ্কিতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘ইউরোপ এবং আমেরিকাকে গ্লোবাল সাউথ এবং ভারতের প্রতি সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে আমরা হেরে যাব।’’ পরাজয় কোন দিক থেকে আসবে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি আলেকজান্ডার। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, স্টাবের এই মন্তব্যের সময় তাঁর পাশে ছিলেন লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গীতানাস নৌসেদা। ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণের (India US Relation) সমালোচনা করেছেন ডেমোক্র্যাট নেতা রো খান্না। প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) জেক সুলিভানও ট্রাম্পের ভারতের উপর আরোপিত শুল্কনীতি এবং একতরফা ভূ-রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

    ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ স্টাবের আশঙ্কা

    চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চিনের তিয়ানজিনে চলা ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’ বা এসসিওর বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (India US Relation)। সেখানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাদা করে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, মোদিকে নিজের গাড়িতে করে হোটেলে নিয়ে যান পুতিন। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই নয়াদিল্লি ও ক্রেমলিনের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে কাটাছেঁড়ায় বসে একাধিক পশ্চিমি দেশ। গত ২৭ অগাস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ করে শুল্ক ধার্য করেছে ট্রাম্পের আমেরিকা। শুধু তা-ই নয়, নয়াদিল্লি অবিলম্বে রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত খনিজ তেল ‘উরাল ক্রুড’ কেনা বন্ধ না করলে নিষেধাজ্ঞার অঙ্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। যদিও এই হুমকির কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ মোদি সরকার। কেন্দ্রের সাফ যুক্তি, জাতীয় স্বার্থে মস্কোর থেকে সস্তা দরে ‘তরল সোনা’ আমদানি করা হচ্ছে, যা কোনও অবস্থাতেই বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। ভারতীয় পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের অঙ্ক বৃদ্ধি করতেই বিকল্প বাজারের সন্ধানে কোমর বেঁধে লেগে পড়ে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে সাত বছর পর প্রধানমন্ত্রী মোদির চিন সফরের দিকে তাকিয়েছিল গোটা বিশ্ব। সেখানে শি এবং পুতিনের সঙ্গে তাঁকে খোশগল্প করতে দেখে প্রমাদ গুনেছে ফিনল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মতো রুশ সীমান্ত লাগোয়া পূর্ব ইউরোপের একাধিক দেশ। মস্কোর দিকে নয়াদিল্লির এ ভাবে ঝুঁকে পড়ার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করছে তারা। ফিনল্যান্ড প্রেসিডেন্ট স্টাবের কথায়, ‘‘চিনের বৈঠকে কী হয়েছে সেটা আমরা সবাই দেখেছি। পশ্চিম ইউরোপ কিন্তু যথেষ্ট ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভারতের মতো উদীয়মান শক্তির সঙ্গে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে সমূহ বিপদ। আমাদের পুরনো ব্যবস্থার কথা মাথায় রাখতে হবে।’’

    স্টাবস-ট্রাম্প ঘনিষ্ঠতা

    স্টাবস নেহাতই কোনও দেশের প্রেসিডেন্ট নন, তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা আছে। একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়, সারা বিশ্বে যে কয়েকজন পশ্চিমী রাষ্ট্রনেতার (বিরল তালিকা) কথায় পাত্তা দেন ট্রাম্প, তাঁদের মধ্যে আছেন ফিনল্যান্ড প্রেসিডেন্ট। এমনকী ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউক্রেনের যে আলোচনা চলছে, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিনল্যান্ড। শুধু তাই নয়, গত মার্চে ফ্লোরিডায় মার-এ-লাগো রিসর্টে ট্রাম্পের সঙ্গে সাত ঘণ্টা গলফ খেলেছিলেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট।

    নোবেল না পাওয়াতেই ভারতকে শাস্তি

    ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসম্যান রো খান্না এক্স-এ এক পোস্টে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন না করায়, ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০% শুল্ক বসিয়েছেন, যা চিনের উপর আরোপিত শুল্কের থেকেও কঠোর।” তিনি অভিযোগ করেন, “ট্রাম্প নিজের স্বার্থে তিন দশকের মার্কিন-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ধ্বংস করছেন। এটা শুধু ভারতের রফতানি খাতকে নয়, মার্কিন নির্মাতা ও আমেরিকার অর্থনীতিকেও বিপর্যস্ত করছে।”

    পাকিস্তানে পারিবারিক ব্যবসার স্বার্থে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন

    আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানও ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে বলেন, “ট্রাম্প নিজের পরিবারের ব্যবসা রক্ষা করতে পাকিস্তানের সঙ্গে আঁতাত করেছেন এবং ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক নষ্ট করেছেন।” তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বহু দশক ধরে দ্বিদলীয় সমর্থনে ভারতের সঙ্গে একটি গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই সম্পর্ক প্রযুক্তি, প্রতিভা, অর্থনীতি ও চিন মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প সব কিছু এক লহমায় নষ্ট করে দিয়েছেন।” সুলিভান আরও অভিযোগ করেন, ট্রাম্প ও তাঁর পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইনান্সিয়াল ইঙ্ক (World Liberty Financial Inc বা WLFI) পাকিস্তানের ক্রিপ্টো কাউন্সিলের (PCC) সঙ্গে একাধিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। আমেরিকান অর্থনীতিবিদ রিচার্ড উলফ, জেফরি স্যাকস ও প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালিও ট্রাম্পের ভারতের উপর শুল্কনীতি ও একতরফা আচরণকে “কৌশলগত ভুল”, “আত্মঘাতী পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন।

  • Recession in US: মন্দার মুখে মার্কিন অর্থনীতি, এগোচ্ছে ভারত! ট্রাম্পের শুল্কনীতিই দায়ী, দাবি মুডিজ-এর

    Recession in US: মন্দার মুখে মার্কিন অর্থনীতি, এগোচ্ছে ভারত! ট্রাম্পের শুল্কনীতিই দায়ী, দাবি মুডিজ-এর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহামন্দার মুখে দাঁড়িয়ে আমেরিকা। ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু আদতে দেখা গেল আমেরিকার আর্থিক অবস্থাই শোচনীয়। কোনও রাখঢাক না করে মার্কিন আর্থিক রেটিং (US Rating Agency) সংস্থাই জানিয়ে দিল আমেরিকার বর্তমান (US Economy) পরিস্থিতি। বিশ্বের নাম করা আর্থিক রেটিং সংস্থা মুডিজ (Moodys Warning) জানিয়েছে, মন্দার মুখে মার্কিন অর্থনীতি, ট্রাম্পের (Donald Trump) সিদ্ধান্তেই বদলে এই প্রতিকূল অবস্থা তৈরি হয়েছে।

    ক্ষতি করছে ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি

    চলতি বছরের ৩০ জুলাই ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু, মাত্র দু’মাসের মাথাতেই নিজের ঘর সামলাতে যে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রায়শই আমেরিকানদের আশ্বস্ত করেন যে- তাঁর নেতৃত্বে মার্কিন অর্থনীতি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। কিন্তু মুডিজ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডি তাঁর দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাম্পকে বাস্তবের মুখ দেখিয়েছেন। মুডিজ-এর দাবি, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রমাগত এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ‘আমেরিকান ফার্স্ট’ স্লোগান দেওয়া ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলি এখন প্রতিকূল প্রভাব ফেলছে মার্কিন অর্থনীতিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপের তার নীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি আমেরিকাকে মন্দার কবলে ফেলেছে।

    মন্দার মুখে আমেরিকা

    মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থি নিয়ে মার্ক জান্ডি বলেছেন, ট্রাম্প মার্কিন জিডিপি বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির উপর নিয়ন্ত্রণকে তার অর্থনৈতিক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলেছ। তাঁর মতে, আমেরিকা বর্তমানে চাকরি থেকে শুরু করে উপভোক্তা মূল্য সূচক সবেতেই নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। নিউজউইককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুডিজ প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেছেন- মার্কিন অর্থনীতির অবনতির অবস্থা সম্পর্কে কয়েক মাস আগে যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, তা এখন সত্যি হচ্ছে। তিনি অনুমান করছেন- ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ মার্কিন অর্থনীতি তীব্র মন্দার কবলে পড়বে। তিনি মনে করেন না যে- মার্কিন অর্থনীতি এই মুহূর্তে মন্দার মধ্যে রয়েছে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে- এটি মন্দার দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।

    মার্ক জান্ডি কে

    মার্ক জান্ডি সেই অর্থনীতিবিদ, যিনি ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। গত কয়েক মাস ধরে, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান নীতি নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন তুলে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে তালুর মতো চেনেন জান্ডি। তাঁর মতে, ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলি আমেরিকান অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। জান্ডির দাবি, মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) নিরিখে আমেরিকার প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রদেশের সূচক রয়েছে ঋণাত্মক। এতে মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দার ঝুঁকি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি। সম্প্রতি এই নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন মার্ক। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের এক তৃতীয়াংশ প্রদেশের জিডিপি হয় মন্দায়, নয়তো সেই রকম পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অন্য এক তৃতীয়াংশ কিছুটা স্থিতিশীল। বাকি এক তৃতীয়াংশের সূচক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক কথায় অর্থনীতি যথেষ্ট অস্থির। আমার মূল্যায়ন অনুযায়ী, আমেরিকায় মন্দা আসার মতো সহায়ক পরিস্থিতি রয়েছে।’’

    মার্কিন অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন

    কোনও দেশ আর্থিক মন্দার কবলে পড়েছে, এটা বোঝার একটা সুনির্দিষ্ট উপায় রয়েছে। একটি অর্থবর্ষে পর পর দু’টি ত্রৈমাসিকে যদি জিডিপির সূচক ঋণাত্মক থাকে, তা হলে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটিকে মন্দা গ্রাস করেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। চলতি আর্থিক বছরের (২০২৫-’২৬) প্রথম তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে শূন্যের নীচে নেমে যায় যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির সূচক। জুলাই-অগস্টে পরিস্থিতি সে ভাবে বদলায়নি। সেপ্টেম্বরে অবস্থার বিরাট পরিবর্তন না হলে মার্কিন অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।

    এগোচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি

    আমেরিকার অর্থনীতি যেখানে বেসামাল সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অগাস্টের একেবারে শেষে চলতি আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৫-’২৬) এপ্রিল থেকে জুনে জিডিপির হার প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। কেন্দ্রের দেওয়া সেই তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে ৭.৮ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে সূচক। পরে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘‘দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে ভারত।’’ বর্তমানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নয়াদিল্লির নাম। সমীক্ষক সংস্থা ‘ইওয়াই ইকোনমিক ওয়াচ’ আবার তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ১৩ বছরের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে ভারত। পাশাপাশি, তালিকায় এক নম্বর স্থানে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গদি টলমল হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

  • Putin: “ভারত বা চিনের সঙ্গে এভাবে কথা বলা যায় না”, ট্রাম্পকে সতর্ক করলেন পুতিন

    Putin: “ভারত বা চিনের সঙ্গে এভাবে কথা বলা যায় না”, ট্রাম্পকে সতর্ক করলেন পুতিন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ভারত বা চিনের সঙ্গে এভাবে কথা বলা যায় না।” ওয়াশিংটনকে ঠিক এই ভাষায়ই সতর্ক করে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Putin)। শুধু তাই নয়, শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার (Trumps Tariff Pressure) মাধ্যমে ভারত ও চিনকে জোর করে চাপে ফেলার চেষ্টা  না করার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিন্ডেন্টকে।

    বৃহত্তম শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা! (Putin)

    চিনে আয়োজিত এসসিও শীর্ষ সম্মেলন ও একটি সামরিক কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের পর সাংবাদিক বৈঠকে অংশ নিয়ে পুতিন বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক চাপকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এশিয়ার দু’টি বৃহত্তম শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।” ভারত ও চিনকে অংশীদার আখ্যা দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি ছিল এই দেশগুলির নেতৃত্বকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা।” তিনি বলেন, “আপনারা ভারতের মতো দেশ পেয়েছেন যেখানে দেড় বিলিয়ন মানুষ, চিন, যাদের শক্তিশালী অর্থনীতি আছে, তবে তাদেরও নিজেদের ঘরোয়া রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও আইন রয়েছে। যখন কেউ আপনাকে বলে যে তারা আপনাকে শাস্তি দেবে, তখন ভাবতে হবে — এত বড় দেশের নেতৃত্ব কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে?”

    কী বললেন পুতিন?

    পুতিন (Putin) বলেন, “ইতিহাস এই দুই দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। তাদের ইতিহাসেও কঠিন সময় ছিল, যেমন ঔপনিবেশিক শাসন, দীর্ঘ সময় ধরে সার্বভৌমত্বের ওপর চাপ। যদি তাদের মধ্যে কেউ দুর্বলতা দেখায়, তবে তার রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবে। তাই এই বিষয়গুলি তার আচরণকে প্রভাবিত করে।” এর পরেই রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “ওয়াশিংটনের কথাবার্তা এখনও পুরোনো মানসিকতার প্রতিধ্বনি। ঔপনিবেশিকতার যুগ এখন শেষ। তাদের বুঝতে হবে, অংশীদারদের সঙ্গে কথোপকথনে এই ধরনের শব্দ তারা ব্যবহার করতে পারে না।” তিনি বলেন, “অবশেষে সব কিছু মিটে যাবে। প্রতিটি বিষয় তার নিজের জায়গায় বসবে এবং আমরা আবারও স্বাভাবিক রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা দেখতে পাব (Trumps Tariff Pressure)।”

    প্রসঙ্গত, পুতিনের (Putin) এই মন্তব্য করেছেন এমন একটা সময়ে যখন ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে মার্কিন জরিমানার মুখে পড়ছে। আর চিন ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে।

     

  • India-Russia Relationship: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের মুনাফা ১২৬০ কোটি ডলার

    India-Russia Relationship: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের মুনাফা ১২৬০ কোটি ডলার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে যখন তেলের দাম চড়া, তখন ভারত এক কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়ে রুশ তেলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে রাশিয়া (India-Russia Relationship) থেকেই তেল আমদানি করে ভারত। অন্যদিকে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মস্কোও ভারতকে বড়সড় ছাড়ে তেল (Russian Oil) দিতে শুরু করে। এই সিদ্ধান্তে ভারতের জ্বালানি আমদানির খরচ ৩৯ মাসে কমেছে কমপক্ষে ১৭ বিলিয়ন ডলার। তথ্য-পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট গত সাড়ে তিন বছরে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করায় বিপুল আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে ভারতের। সরকারি সূত্রে খবর, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ৩৯ মাসে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি করে অন্তত ১২৬০ কোটি ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ১১ হাজার কোটি টাকা) মুনাফা করেছে ভারত।

    বিশ্ব-বাজারে ভারতের বড় ভূমিকা

    রাশিয়ার তেল (Russian Oil) কেনায় ভারতের উপর গোঁসা করেছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে তেল কেনার অভিযোগে ভারতের উপরে ৫০ শতাংশ ট্যারিফ চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পিটার নাভারোর দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধ আসলে ‘মোদির যুদ্ধ’। তাঁর অভিযোগ, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কিনে আসলে মস্কোকে সহায়তা করছে ভারত।’ পিটার নাভারোর অভিযোগ ভিত্তিহীন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, ভারতের তেল কেনার কারণেই বিশ্ববাজারে বড়সড় সঙ্কট এড়ানো গিয়েছে। যদি ভারত রাশিয়ার তেল না কিনত, তাহলে আজ অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ২০০ ডলার ছুঁয়ে যেত। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভারত শুধু সরাসরি সাশ্রয়ই করেনি, বরং বিশ্ববাজারে দাম নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যদি রুশ তেল না কিনত, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১০-২০ ডলার বেড়ে যেতে পারত, যা ৩৯ মাসে আমদানির খরচ বাড়িয়ে দিত ৫৮ থেকে ১১৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

    রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বেড়েছে

    ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। তার পরেই আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করেছিল। যদিও তাতে গুরুত্ব না দিয়ে গত সাড়ে তিন বছর ধরে নয়াদিল্লি-মস্কো বাণিজ্যিক লেনদেন চলেছে সমানতালে। গত অর্থবর্ষের (২০২৪-২৫) ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সার্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে পৌঁছেছে ৬৮০০ কোটি ডলার (প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা)। তার মধ্যে ভারত থেকে রাশিয়ায় (India-Russia Relationship) রফতানি করা হয়েছে ৪৯০ কোটি ডলারের (৪২ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। আর রাশিয়া থেকে ভারত আমদানি করেছে ৬৩০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। যার বড় অংশই সামরিক সরঞ্জাম এবং অশোধিত তেল। বস্তুত ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর অনেক আগে থেকেই রুশ অশোধিত তেলের ক্রেতা ভারত। তবে আগে রাশিয়া থেকে তারা কম তেল আমদানি করত। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পরে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। তেল আমদানিকারী দেশ হিসাবে সারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এই মোট আমদানির ৩৫ শতাংশই এখন আসে রাশিয়া থেকে।

    কতটা সাশ্রয় করল ভারত

    প্রকাশিত রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারত ১৬২২ কোটি ডলারের তেল আমদানি করেছিল। রাশিয়ার তেল না কিনে অন্য দেশ থেকে কিনলে এই খরচ আরও ৪৮৭ কোটি ডলার বেশি পড়ত। ২০২৩-২৪ অর্থবর্যে রাশিয়ার তেলের দাম কিছুটা বাড়লেও আমদানি বাড়ায় সাশ্রয় দাঁড়ায় ৫৪১ কোটি ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ছাড় নেমে আসে মাত্র ২.৮ শতাংশে। এতে সাশ্রয় হয় মাত্র ১৪৫ কোটি ডলার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষএ ছাড় কিছুটা বাড়ার ফলে প্রায় ৮৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হয়েছে। প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষপর্বে রুশ তেল আমদানি কিছুটা কমলেও অগস্ট থেকে তা বাড়তে শুরু করেছে আবার।

    রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ভারত

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া ভারতের মোট তেল আমদানির ২%-এরও কম সরবরাহ করত। এখন সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬%, যেখানে প্রতিদিন আমদানি হয় প্রায় ১.৭৮ মিলিয়ন ব্যারেল। এশিয়ায় চিনের পর ভারত এখন রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। মূলত মার্কিন ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ভারতকে ছাড়ে তেল দেয়, আর ভারত কৌশলগতভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সাশ্রয় করে।

    লাভ সাধারণ জনগণের

    ভারতের সরকারি (India-Russia Relationship) হিসাব ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, দেশের এই সাশ্রয় শুধুমাত্র বড় ব্যবসায়ীদের নয়, সাধারণ ভারতীয়দেরও উপকৃত করেছে— মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থেকেছে, রুপি স্থিতিশীল থেকেছে, এবং রিফাইনিং শিল্পে কর্মসংস্থান বজায় রয়েছে। একইসঙ্গে, ভারত এই রফতানিকৃত রিফাইন্ড তেল (বিশেষত রিলায়েন্স ও নয়ারা এনার্জির মাধ্যমে) বিক্রি করে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৭.৪৭ বিলিয়ন, এবং ২০২৪-২৫-এ ৬৩.৩৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেলের এই কৌশলগত চুক্তি ভারতের অর্থনীতিকে এক বড় ধাক্কা থেকে রক্ষা করেছে।

    দেশের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত

    ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার থেকে তেল (Russian Oil) কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের পরেও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ থেকে থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার। অদূর ভবিষ্যতে তার কোনও সম্ভাবনাও নেই বলে মনে করছেন কূটনীতি এবং বণিকমহলের অনেকেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, এই তেল আমদানির মাধ্যমে ১.৪ বিলিয়ন ভারতীয়ের জন্য “সাশ্রয়ী জ্বালানি” নিশ্চিত হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, মার্কিন সমালোচনা দ্বিচারিতায় ভরপুর। ইউরোপ এখনও রাশিয়া থেকে পণ্য কিনছে। তাই ভারতকে বাধা দেওয়ার মানেই হয় না। ভারত জানিয়ে দিয়েছে — ‘যেখানে ভালো দাম, সেখানেই আমরা যাব’ — কৌশলগতভাবে নয়, অর্থনৈতিকভাবে।

  • US on Indian Brahmins: ভারতীয় ব্রাহ্মণদের অপমান, মোদির সমালোচনা! শুল্ক-যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টার

    US on Indian Brahmins: ভারতীয় ব্রাহ্মণদের অপমান, মোদির সমালোচনা! শুল্ক-যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতকে চাপে ফেলতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিল্লির সঙ্গে শুল্কযুদ্ধে এঁটে উঠতে না পেরে এবার বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। ভারতীয় ব্রাহ্মণদের গায়ে ‘অর্থলোভী’ তকমা সেঁটে দিলেন তিনি। নয়াদিল্লিকে ‘রাশিয়ান টাকা তৈরির লন্ড্রি’ বলেও খোঁচা দিয়েছেন নাভারো। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও অপমানজনক কথা বলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

    প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অপমান

    চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় মার্কিন গণমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ’কে সাক্ষাৎকার দেন নাভারো। সেখানে ফের এক বার ভারতের নামে বিষোদ্গার করেন তিনি। নাভারো বলেন, ‘‘মোদি একজন মহান নেতা। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে একই শয্যায় যাচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নেতার এটা করা উচিত নয়।’’ গত ৩১ অগাস্ট চিনের তিয়েনজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেটিভ অর্গানাইজেশন (SCO) বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানে জিনপিঙ ও পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরেছেন তিনি। পরে পুতিন ও ড্রাগন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খোশগল্প করতে দেখা যায় তাঁকে। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও ভাইরাল। এর পরেই এই তিন নেতাকে নিয়ে নাভারোর বেনজির আক্রমণের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, বলে মত কূটনীতিকদের। ভারত-চিন-রাশিয়াকে একসঙ্গে দেখে কিছুটা চাপে আমেরিকা, অভিমত আন্তর্জাতিক মহলের।

    বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতির কারণে ভারত-আমেরিকার মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কে চরম টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে৷ ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা৷ ট্রাম্পের অভিযোগ, রাশিয়ার থেকে তেল কেনার কারণে এই অচলাবস্থার সূত্রপাত৷ এই আবহে ভারতকে নিশানা করে আরও এক বিচিত্র দাবি করেছেন মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো৷ তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে ভারতের ব্রাহ্মণ শ্রেণির মানুষেরা মুনাফা লুটছেন ৷রাশিয়া-ভারত-চিন সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ভারতবাসীর কাছে আমার একটাই আবেদন, দয়া করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করুন৷ সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে আপনাদের দেশে বাণিজ্যিক মুনাফা লুটছেন ব্রাহ্মণরা৷ এই বিষয়টিকে বন্ধ করতে হবে৷’’ “ব্রাহ্মণ” শব্দটি ভারতের প্রেক্ষিতে একটি বিশেষ জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় বহন করে। আমেরিকায় “বস্টন ব্রাহ্মিণ” বলতে ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বোঝালেও, ভারতীয় প্রসঙ্গে এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। নাভারোর এই মন্তব্য জাতিবিদ্বেষমূলক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন বিশ্লেষক ও রাজনীতিক যেমন সঞ্জীব সান্যাল ও প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই মন্তব্যকে “অপমানজনক” এবং “ঔপনিবেশিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে নিন্দা করেছেন।

    ভারত শুল্কের মহারাজা

    মার্কিন দাবি মেনে রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ না করায় বিব্রত নাভারো বলেন, ‘‘ক্রেমলিনের জন্য নয়াদিল্লি এখন একটা টাকা তৈরির ওয়াশিং মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। এর ফল ভুগছে ইউক্রেন। পূর্ব ইউরোপের দেশটাতে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘নয়াদিল্লি তো শুল্কের মহারাজা। বিদেশি পণ্যে ওরা দুনিয়ার সর্বোচ্চ শুল্ক নিয়ে থাকে। নয়াদিল্লি তাদের ঘরোয়া বাজার আমাদের সামনে খুলবে না। আমাদের পণ্য ওদের বাজারে বিক্রি করতে দেবে না।’’ নাভারোর অভিযোগ, উল্টো দিকে দিব্যি ঘরের মাটিতে তৈরি পণ্য এ দেশের বাজারে সরবরাহ করে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হচ্ছে ওয়াশিংটনের। তবে, ভারত আগেই জানিয়ে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি তথা দেশবাসীর মঙ্গলে যা সঠিক, তাই পদক্ষেপ করা হবে৷ এক্ষেত্রে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিংবা যুদ্ধাস্ত্র কেনায় দেশের আর্থিক উন্নতি ঘটলে সেই অবস্থানেই থাকবে নয়াদিল্লি ৷ সম্প্রতি, নয়াদিল্লির এই অবস্থানের জন্যই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছিলেন মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা ৷

    দিশেহারা আমেরিকা

    এই পরিস্থিতিতে মার্কিন শুল্কের চাপে রুশ ‘উরাল ক্রুড’ কেনা বন্ধ না রেখে উল্টে তার আমদানি বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। অন্য দিকে ভারতের সঙ্গে তেল-বাণিজ্যকে আরও মসৃণ করতে দামের ক্ষেত্রে বড় ছাড় দিচ্ছে মস্কো। ইউরোপীয় দেশগুলিতে অবশ্য ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছে। উল্টে মোদি সরকারের নীতির ভূয়সী প্রশংসা করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইটালির মতো দেশ।

    অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইউক্রেন

    যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে নয়াদিল্লির থেকেই সর্বাধিক ডিজেল আমদানি করছে কিভ। শুধু তা-ই নয়, মস্কোর থেকে সস্তা দরে মোদি সরকারের খনিজ তেল আমদানি নিয়ে তাদের কোনও সমস্যা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের ওই দেশ। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘‘ভারত স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। ফলে তারা কোথা থেকে ‘তরল সোনা’ আমদানি করবে সেটা অন্য কেউ বলে দিতে পারে না। এ ব্যাপারে কারও আপত্তি থাকা উচিত নয়।’’

    শুল্ক প্রসঙ্গে ট্রাম্পের ধাক্কা

    শুল্ক ইস্যুতে অবশ্য আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত ২৯ অগাস্ট একটি মামলার রায় দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডেরাল সার্কিটের আপিল কোর্ট। সেখানে বলা হয়, ট্রাম্প যে ভাবে বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক চাপিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিকে ওলটপালট করতে চাইছেন, তা বেআইনি। যদিও তাঁর শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের উপরে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি ওই আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রেসিডেন্টের। সেখানে তাঁর সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলা হলে, শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে আমেরিকাকে।

  • Trumps Tariffs: মার্কিন শুল্ক-গুঁতো, হারানো সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন ভারত-চিন!

    Trumps Tariffs: মার্কিন শুল্ক-গুঁতো, হারানো সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন ভারত-চিন!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বুধবার থেকেই ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কহার (Trumps Tariffs) প্রযোজ্য হয়েছে আমেরিকার। এমতাবস্থায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চিন (India China) পৌঁছেছেন এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার এই চড়া শুল্ক হার ভারতের রফতানি খাত এবং উচ্চভিলাষী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। চিনের ওপরও চড়া শুল্ক চাপিয়েছেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এটি এমন একটি সময়ে করেছেন, যখন চিনের ধীরগতির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। প্রত্যাশিতভাবেই মোদি-জিনপিং সম্পর্কে নয়া মোড় দেখা দিতে পারে। সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারত-চিন সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। ট্রাম্পের শুল্ক-গুঁতোর ধাক্কায় দুই দেশই এবার আরও কাছাকাছি আসতে চলেছে বলে ধারণা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের।

     ভারত ও চিন অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ (Trumps Tariffs) 

    সাম্প্রতিক এক সম্পাদকীয়তে চ্যাথাম হাউসের চিয়েটিগজ বাজপাই ও ইউ জিয়ে লিখেছেন, “ভারত কখনওই চিনের বিরুদ্ধে সেই প্রতিরক্ষার প্রাচীর হতে যাচ্ছিল না, যেটি পশ্চিমী বিশ্ব (বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ভেবেছিল। তাই মোদির (India China) চিন সফর একটি সম্ভাব্য মোড় ঘোরার ইঙ্গিত দিচ্ছে।” ভারত ও চিন অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ। চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং ভারত চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তবে ভারতের প্রবৃদ্ধি যদি ৬ শতাংশের ওপরে থাকে, এবং দেশটির ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থনীতি ও ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার স্টক মার্কেটে পৌঁছয়, তাহলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৮ সালের মধ্যেই ভারত পরিণত হবে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে।

    সম্পর্ক অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং

    বেজিং-ভিত্তিক উসায়া অ্যাডভাইসরির প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ এক্সিকিউটিভ কিয়ান লিউ বলেন, “তামাম বিশ্ব এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের ওপর মনোযোগ দিয়েছে। তবে এখন সময় এসেছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, চিন ও ভারত, কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে তার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার (Trumps Tariffs)।” যদিও এ সম্পর্ক অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কারণ দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ও দীর্ঘস্থায়ী সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। ২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এটি গত চার দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। এর জেরে বাতিল করা হয় দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট, ভিসা ও চিনা বিনিয়োগ স্থগিত থাকে। ফলে পরিকাঠামো প্রকল্পের গতি ধীর হয়ে যায়, এবং ভারত ২০০–রও বেশি চিনা অ্যাপ, যার মধ্যে টিকটকও ছিল, নিষিদ্ধ করে (India China)।

    ভারত–চিন সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান

    আইআইএসএসের দক্ষিণ ও মধ্য এশীয় প্রতিরক্ষা, কৌশল ও কূটনীতি বিষয়ক প্রবীণ গবেষক অঁতোয়ান লেভেস্ক বলেন, “দুই দেশের আলোচনা প্রয়োজন, যাতে অন্য শক্তিগুলির প্রত্যাশা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কারণ এশিয়ার বৃহত্তর স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে ভারত–চিন সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (Trumps Tariffs)।” সীমান্তের পাশাপাশি দুই দেশের বিরোধ রয়েছে আরও কয়েকটি বিষয়ে। এর মধ্যে রয়েছে তিব্বত, দালাই লামা, এবং যৌথ নদীর ওপর চিনের পরিকল্পিত বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। তবে ট্রাম্পের শুল্ক-সংঘাতের জেরে আপাতত দুই দেশই এসব বিরোধ এক পাশে সরিয়ে রেখে নতুন করে সব শুরু করতে চাইছে বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু হবে, ভিসা সংক্রান্ত কিছু ছাড় দেওয়া হতে পারে এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক চুক্তিও আসতে পারে।

    অবস্থান বদলেছে ভারত

    বর্তমান প্রেক্ষিতে অবস্থান বদলেছে ভারত। গবেষণা সংস্থা এশিয়া ডিকোডেডের  প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান অর্থনীতিবিদ প্রিয়াঙ্কা কিশোর বলেন, “মনে রাখবেন, একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত এক জোট চিনকে চাপে রাখতে।” কিন্তু বর্তমানে আমেরিকার অবস্থান নিয়ে ভারত সম্পূর্ণ বিভ্রান্ত। কিশোরের মতে, তাই এটি একটি বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ এবং মাল্টিপোলার বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গিকে আরও শক্তিশালী করে, যেটি ভারত ও চিন উভয় দেশই বিশ্বাস করে (Trumps Tariffs)।

    এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী

    চিনে আয়োজিত দু’দিনের এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর সদস্য দেশগুলির মধ্যে রয়েছে চিন, ভারত, ইরান, পাকিস্তান এবং রাশিয়া। আগে ভারত এই সংস্থার গুরুত্বকে খাটো করে দেখেছে। কারণ, বছরের পর বছর ধরে এটি উল্লেখযোগ্য কোনও ফল প্রসব করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্কের অবনতিই ভারতকে এসসিওর গুরুত্ব নতুন করে আবিষ্কার করতে বাধ্য করেছে। এদিকে, ট্রাম্পের শুল্ক সংঘাতের মধ্যে চিন বৈশ্বিক দক্ষিণের সংহতির প্রতীকী (India China) দিকটিকেও মূল্য দেবে। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের স্বার্থেই ক্রমেই কাছাকাছি আসছে নরেন্দ্র মোদির ভারত ও শি জিনপিংয়ের চিন (Trumps Tariffs)।

  • Vladimir Putin: ভারতে আসছেন পুতিন, শুল্ক-সংঘাতের আবহে আরও কাছাকাছি আসছে ভারত-রাশিয়া!

    Vladimir Putin: ভারতে আসছেন পুতিন, শুল্ক-সংঘাতের আবহে আরও কাছাকাছি আসছে ভারত-রাশিয়া!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ট্রাম্পের চড়া শুল্কহারের জেরে আরও কাছাকাছি আসছে ভারত (India) ও রাশিয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে সাড়া দিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। শুক্রবার সরকারিভাবে এ কথা ঘোষণা করে দিল মস্কো। ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির ক্ষেত্রে পুতিনের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

    শুল্ক আরোপ আমেরিকার (Vladimir Putin)

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে মস্কোকে কাঠগড়ায় তুলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছিল। তাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে চলেছে ভারত। তার জেরে দু’দফায় ভারতীয় পণ্যের ওপর সব মিলিয়ে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে আমেরিকা। সঙ্গে চাপিয়ে দেয় মোটা অঙ্কের জরিমানাও। এই আবহে ৩১ অগাস্ট দু’দিনের চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লক্ষ্য, এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়া। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টও। সোমবার তাঁদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা। তার ঠিক আগেই পুতিনের নয়াদিল্লি সফরের বার্তা দিল ক্রেমলিন।

    মোদির ডাকে সাড়া

    প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সময়ও দু’জনের মধ্যে হয়েছিল পার্শ্ববৈঠক। সেই সময়ই তিনি ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্টকে। চলতি বছরের মার্চ মার্চ মাসে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছিলেন, মোদির আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন পুতিন। যদিও সেই সময় পুতিনের ভারত সফরের সম্ভাব্য দিনক্ষণ সম্পর্কে কিছু জানাননি লাভরভ। চলতি মাসে মস্কোয় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সেই সময় (Vladimir Putin) তিনিই জানিয়েছিলেন, চলতি বছরই ভারতে আসতে পারেন পুতিন। শুক্রবার সেটাই নিশ্চিত করল রাশিয়া।

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম ভারতে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গত সপ্তাহেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিরও ভারতে (India) আসার খবর মিলেছিল। নয়াদিল্লিতে ইউক্রেনের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে শীঘ্রই ভারতে আসবেন জেলেনস্কি। তিনি চান, বন্ধু দেশ রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করুক ভারত। তবে জেলেনস্কি ঠিক কবে নয়াদিল্লিতে আসবেন, তা এখনও জানানো হয়নি ইউক্রেনের তরফে (Vladimir Putin)।

LinkedIn
Share