মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রবল তুষারপাতে সিকিমে আটকে পড়েছিলেন প্রায় চারশো পর্যটক। ভারতীয় সেনার (Indian Army) 'অপারেশন হিমরাহত'-এর দৌলতে নিরাপদে প্রত্যেকেই ফিরলেন গ্যাংটকে। পূর্ব সিকিমের চিন সীমান্তে পাহারারত ভারতীয় সেনা (Indian Army) খবর পায় পর্যটকরা আটকে পড়েছেন তুষারপাতের কারণে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে 'অপারেশন হিমরাহত' গঠন করে পর্যটকদের উদ্ধারের কাজে কয়েকশো সেনাকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
সিকিমের কোথায় আটকে ছিলেন পর্যটকরা
সেনা জওয়ানদের টানা ২৪ ঘণ্টার অক্লান্ত চেষ্টার ফলে রবিবার বিকেলে গ্যাংটকে নিরাপদে ফিরেছেন পর্যটকেরা। তাঁদের মধ্যে ১৭৮ জন পুরুষ, ১৪২ জন মহিলা এবং ৫০টি শিশু রয়েছে। সিকিম রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে শনিবার বিকেলে পূর্ব সিকিমের নাথু লা, ছাঙ্গু, জুলুক সমেত বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল তুষারপাত হয়। তার জেরে আটকে পড়েন পর্যটকেরা। শনিবার দিনভর ঘুরে এঁদের কেউ তখন নাথু লা, কেউ বাবা মন্দির, কেউ আবার ছাঙ্গু থেকে গ্যাংটক ফেরার তোড়জোড় করছিলেন। কিন্তু তুষারপাত শুরু হয়ে যাওয়ায় গাড়ির চালকেরা রাজি হননি। কারণ তুষারপাতের সময়ে পাহাড়ি রাস্তায় যানবাহন চালানো কার্যত অসম্ভব। চাকার তলায় বরফ ঢুকে গেলে গাড়ি পিছলে খাদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সেনা ছাউনিতে পর্যটকদের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করে জওয়ানরা
গাড়ির চালকরা রাজি না হওয়ায় পর্যটকদের পক্ষে গ্যাংটকে ফেরা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এ দিকে, প্রবল ঠান্ডার মধ্যে রাত্রিবাসের অনিশ্চয়তা সংকট আরও বাড়ায়। রাতে তাপমাত্রা আরও নীচে নামতে পারে ভেবে সকলেই তখন উদ্বেগের প্রহর গুণছেন। সিকিম রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই খবর পৌঁছয় ভারতীয় সেনার (Indian Army) কাছে। সঙ্গে সঙ্গে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাঁরা। শুরু হয় উদ্ধার কার্য। আটকে পড়া গাড়ি থেকে নামিয়ে আনা হয় পর্যটকদের। এর পর সেনা ছাউনিতে আশ্রয় দেওয়া হয় তাঁদের। প্রত্যেকের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়। রাতের খাবারও দেওয়া হয় উদ্ধার হওয়া প্রত্যেক পর্যটককে। এর পর মেলে রাত পার করার মতো নিশ্চিত আশ্রয়। তুষারপাতের মধ্যে তা তখন রীতিমতো জীবনদায়ী। পর্যটকদের উদ্ধার করার পরই সেনাদের ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাকেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন জওয়ানরা। রবিবার ভোরের মধ্যেই ছাঙ্গু থেকে গ্যাংটকে ফেরার রাস্তা পরিষ্কার করে দেন সেনাদের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার কর্মীরা। অবশেষে সকলেই নিরাপদে ফিরে আসেন গ্যাংটকে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours