ভক্ত—সাধুসঙ্গে কি উপকার হয়?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ঈশ্বরে আনুরাগ হয়। তাঁর উপর ভালবাসা হয়। ব্যাকুলতা না এলে কিছুই হয় না। সাধুসঙ্গ করতে করতে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়। যেমন বাড়িতে কারুর অসুখ হলে সর্বদাই মন ব্যাকুল হইয়ে থাকে, কিসে রোগী ভাল হয়। আবার কারুর যদি কর্ম যায়, সে ব্যক্তি যেমন অফিসে অফিসে ঘুরে ঘুরে বেড়ায়, ব্যাকুল হতে হয়, সেইরূপ। যদি কোন অফিসে বলে কর্ম খালি নেই, আবার তার পরদিন এসে জিজ্ঞেস করে, আজ কি কোন কর্ম খালি হয়েছে?
আর একটি উপায় আছে—ব্যাকুল হয়েছে প্রার্থনা। তিনি যে আপনার লোক, তাঁকে বলতে হয়, তুমি কেমন দেখা দাও—দেখা দিতেই হবে—তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ কেন? শিখরা বলেছিল, ঈশ্বর (Ramakrishna) দয়াময়, আমি তাঁদের বলেছিলাম, দয়াময় কেন বলব? তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে আমাদের মঙ্গল হয়, তা যদি করেন সে কি আর আশ্চর্য! মা-বাপ ছেলেকে পালন করবে, সে আবার দয়া কি? সে তো করতেই হবে, তাই তাঁকে জোর করে প্রার্থনা করতে হয়। তিনি যে আপনার বাপ! ছেলে যদি খাওয়া ত্যাগ করে, বাপ-মা তিন বৎসর আগেই হিস্যা ফেলে দেয়। আবার যখন ছেলে পয়সা চায়, আর চায়, আর পুনঃপুনঃ বলে, ‘মা তোর দুটি পায়ে পড়ি, আমাকে দুটি পয়সা দে, তখন মা ব্যাজার হয়ে তার ব্যাকুলতা দেখে পয়সা ফেলে দেয়।
সাধুসঙ্গ করলে আর একটি উপকার হয়। সদসৎ বিচার। সত—নিত্য পদার্থ অর্থাৎ ঈশ্বর। অসৎ অর্থাৎ অনিত্য। অসৎপথে মন গেলেই বিচার করতে হয়। হাতি পরের কলাগাছ খেতে শুঁড় বাড়ালে সেই সময় মাহুত ডাঙস মারে।
প্রতিবেশী—মহাশয়, পাপবুদ্ধি কেন হয়?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর জগতে সকলরকম আছে। সাধু লোকও তিনি করেছেন, দুষ্ট লোকও তিনি করেছেন, সদ্বুদ্ধি তিনিই দেন, অসদ্বুদ্ধিও তিনিই দেন।
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির..”
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “দুরন্ত ছেলে বাবার কাছে যখন বসে, যেমন জুজুটি, আবার চাঁদনিতে যখন খেলে, আর এক মূর্তি”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours