মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের সিবিআইকে ভর্ৎসনা বিচারকের। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন বাগদার ‘রঞ্জন’ চন্দন মণ্ডল। বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছিল। শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারক। চন্দন মণ্ডল যদি নিয়োগ দুর্নীতিতে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত, তা হলে কেন তাঁকে গ্রেফতার করতে ৯ মাস সময় লাগল? সিবিআই আইনজীবীকে প্রশ্ন আলিপুরের দেওয়ানি এবং দায়রা আদালতের বিচারক রানা দামের।
সিবিআইের তরফে কী বলা হল?
এদিন চন্দনের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত অন্যতম দালাল চন্দন মণ্ডল চাকরি দেওয়ার নামে মোট ১৬ কোটি টাকা তুলেছিলেন। আদালতে আজ এমনই জানিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, “বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে চন্দনের ভূমিকা আছে। চন্দন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলে নিজের অ্যাকাউন্টে রাখতেন। সেখান থেকে টাকা তুলে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে দিতেন। চন্দন কার থেকে টাকা নিয়েছেন, কাকে দিয়েছেন, সেগুলো এখনও জানা দরকার। তাই চন্দনের হেফাজত গুরুত্বপূর্ণ।” গ্রেফতারির আগে চন্দন অন্যদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
আরও পড়ুন: চাকরি বিক্রি করে ১৬ কোটি টাকা! চন্দনকে জেরা করে নয়া তথ্য সিবিআই-এর হাতে
বিচারকের প্রশ্নের মুখে সিবিআই
সিবিআইয়ের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করলে বিচারক রাণা দাম প্রশ্ন করেন, “আপনারা চন্দন মণ্ডলকে হেফাজতে নিতে চান না, তাহলে জামিন দিলে কী সমস্যা? এখন কান্নাকাটি করছেন জামিন দেবেন না, তাহলে এতদিন ছেড়ে রেখেছিলেন কেন?” এর উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, এতদিন তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছিলেন তাঁরা। ফের বিচারকের প্রশ্ন, “৪ মাস ধরে চন্দনকে বাইরে রেখেছিলেন। বলেছেন, ও তদন্তে সহযোগিতা করেছে। তখন জানতেন না যে, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করবেন? বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। ৯ মাস সময় লাগল চন্দনকে দোষী প্রমাণ করতে?”
বিচারপতির আরও প্রশ্ন, “হঠাৎ করে এমন কী হল যে চন্দন দোষী হয়ে গেল? এখন বলছেন উনি সহযোগিতা করছেন না। তাহলে এত প্রমাণ পেলেন কীভাবে? আপনারা যা বলছেন সেটা আপনাদের কথায় প্রকাশ পাচ্ছে না।” সিবিআইয়ের দাবি, “চন্দন অনেক কিছু চাপা দিতে চাইছেন। সম্পূর্ণটা বলছেন না। মিডলম্যানের কাছ থেকে ৫-১৫ কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে।” ফের বিচারপতি বলেন, “চারটে নোটিস পাঠিয়েছেন। ওনাকে বাইরে থাকতে দিয়েছেন আপনারাই। হঠাৎ করে আপনাদের মনে হল একে জেলে পুড়তে হবে।”
এছাড়াও সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন বিচারকের, চন্দন এত গুরুত্বপূর্ণ হলে কেন তাঁর জন্য শুধু জেল হেফাজত চাওয়া হচ্ছে? কেন পুলিশ হেফাজত চাওয়া হচ্ছে না? এর পাশাপাশি, চন্দন যে সব ধরনের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন, তার উল্লেখও চার্জশিটে নেই বলে বিচারকের পর্যবেক্ষণ। ফলে এদিন চন্দন মণ্ডলের মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন বিচারক। এখন এটাই দেখার, চন্দন মণ্ডলের থেকে আর কোনও তথ্য সিবিআইয়ের হাতে উঠে আসে কিনা।
+ There are no comments
Add yours