Karachi Blast: “শারি জান, তোমার জন্য আমি গর্বিত”, করাচির মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গিকে টুইটে ‘শ্রদ্ধা’ চিকিৎসক স্বামীর

baloch

মাধ্য়ম নিউজ ডেস্ক: স্ত্রী আত্মঘাতী জঙ্গি (suicide bomber)। করাচি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিস্ফোরণ (Karachi Blast) ঘটিয়ে তিন চিনা নাগরিককে হত্যা করেছে। স্ত্রীর সেই কাজকে শুধু সমর্থন করাই নয়, এই কাজে অত্যন্ত গর্বিত অনুভব করে টুইটে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন আত্মঘাতী মহিলা জঙ্গির স্বামী! যিনি কিনা পেশায় আবার দন্ত-চিকিৎসকও বটে! আর স্ত্রী? উচ্চশিক্ষিতা শুধু নয়, পেশায় শিক্ষিকা। একইসঙ্গে দুই সন্তানের মা। করাচি বিস্ফোরণের মূল কাণ্ডারীর এই প্রোফাইল প্রকাশ্যে আসার পর সকলেই চমকে উঠছেন। বলছেন, এ-ও কী সম্ভব!

মঙ্গলবার করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Karachi University) ভিতরে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের কাছে একটি ভ্যানগাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তিন চিনা-সহ কমপক্ষে চারজনের। তাঁদের মধ্যে দু’জন মহিলা। আহত হন আরও অনেকে। মৃতেরা হলেন – কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের অধিকরতা হুয়াং গুইপিং, ডিং মুপেঙ্গ, চেন সা এবং পাকিস্তানের চালক খালিদ।

হামলার দায় স্বীকার করে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (Balochistan Liberation Army)। গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়, বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে মাজিদ ব্রিগেড ইউনিট। আত্মঘাতী হামলা চালানোর জন্য মানববোমা হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছিল শারি বালোচ (Shaari Baloch) ওরফে ব্রামশকে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বোরখা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের মুখে দাঁড়িয়ে এক মহিলা। চিনা নাগরিকদের নিয়ে সাদা একটা ভ্যান বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে যাওয়ার মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটে।

[tw]


[/tw]

পাক সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, তিরিশ বছর বয়সী এই মহিলা উচ্চশিক্ষিত। দুই সন্তানের মা শারি বালুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় এম.এসসি ডিগ্রি অর্জন করার পর আলামা ইকবাল ওপেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.ফিল নিয়ে পড়াশোনা করে। ২০১৪ সালে বিএড করে শারি। ২০১৮-তে এমএড। বালুচিস্তানের কেচ জেলায় একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছিল এই মহিলা। বিয়ে হয়েছিল দন্ত চিকিৎসকের সঙ্গে। তাদের এক ছেলে এক মেয়ে। এক জনের বয়স আট, অন্য জনের পাঁচ।

ছাত্রাবস্থায় বালোচ স্টুডেন্টস’ অর্গানাইজেশন-এর সঙ্গে যুক্ত ছিল শারি। বছর দুয়েক আগে সংগঠনের আত্মঘাতী স্কোয়াড মজিদ ব্রিগেডে যোগ দেয় সে। সেখানে যোগদানের পর থেকেই পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখে। সূত্রের খবর, সে এই সংগঠনের মাজিদ ব্রিগেডের অংশ ছিল। এই ব্রিগেডের প্রধান উদ্দেশ্য হল, চিনা নাগরিকদের টার্গেট করা। 

কীভাবে একজন শিক্ষিকা শেষ পর্যন্ত জঙ্গি দলে নাম লেখাল তা বিস্ময়ের উদ্রেক করছে। জানা গিয়েছে, লিবারেশন আর্মিতে যোগদানের সময় হামলাকারী মহিলার প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার দুই সন্তান। সন্তান থাকার কারণে তাঁকে যোগদান করতে বারণ করা হয়, কিন্তু সেই সময় সে কোনও কথা শোনেনি। বরং লিবারেশন আর্মিতে যোগদান করার পর থেকেই সে নিজেকে করাচি হামলার জন্য প্রস্তুত করতে থাকে।

[tw]


[/tw]

শারিকে অন্য কোনও স্কোয়াড বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বিএলএ-র তরফে। কিন্তু সে তা প্রত্যাখ্যান করে। বরং আত্মঘাতী স্কোয়াডেই যে সে যোগ দিতে ইচ্ছুক, সে কথা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছিল। বিএলএ-র আত্মঘাতী স্কোয়াড মজিদ ব্রিগেডের নিয়ম অনুযায়ী শারিকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল।

ফলে গত দু’বছর ধরে মজিদ ব্রিগেডের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে কাজ করে শারি। এই সময়ের মধ্যে আত্মঘাতী হামলা চালানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিল। মাস ছয়েক আগে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে শারি জানায়, আত্মঘাতী হামলার জন্য সে পুরোপুরি প্রস্তুত। তার পরই তাকে সরাসরি আত্মঘাতী স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তবে সবচেয়ে অবাক করছে হাবিতান বাশির বালোচ (Habitan Bashir Baloch) নামে তার স্বামীর টুইট (Twitter)। স্ত্রীর জন্য গর্ব অনুভব করার পাশাপাশি পেশায় ডাক্তার ওই ব্যক্তি তার পোস্টে লিখেছে, ”শারি জান, তোমার নিঃস্বার্থ বলিদান আমাকে নির্বাক করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে গর্বে বুকটা ভরে যাচ্ছে। আমাদের দুই সন্তান মাহরোচ ও মীর হাসান বড় হয়ে যখন জানতে পারবে তার মা ছিল একজন ‘মহান’ মহিলা, তখন তারা গর্ব অনুভব করবে। তুমি আমাদের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থেকে যাবে।”

[tw]


[/tw]

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share