মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিবিসেনা (Shiv Sena) মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতকে (Sanjay Raut) চার দিনের ইডি হেফাজতে (ED Custody) পাঠাল আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা আট দিনের হেফাজত চাইলেও, সেই দাবিতে রাজী হয়নি বিশেষ আদালত। ইডি হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে শিবসেনা সাংসদকে বাড়ির খাবার এবং ওষুধ খাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। ৪ অগাস্ট অবধি এই সময়ে সঞ্জয় রাউতকে সমস্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের জন্যে ইডিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জমি দুর্নীতি (Land Scam) মামলায় গ্রেফতার শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। টানা ছ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সঞ্জয় রাউতকে গ্রেফতার করে ইডি (ED)। 'পাত্রা চওল' নামের একটি বস্তির পুনর্নির্মাণের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার পাশাপাশি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিও উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন: জমি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত
ইডি সূত্রে খবর, সঞ্জয় রাউতের মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। জানা গিয়েছে, ৩১ জুলাই সকাল ৭টা নাগাদ সিআইএসএফ জওয়ানদের নিয়ে পূর্ব মুম্বইয়ের বান্ডাপে সঞ্জয়ের বাড়িতে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হওয়ার পরেই তাঁকে আটক করে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে সন্ধ্যাবেলায় ইডির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশেষে টানা ছ ঘণ্টার জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।
কী এই পাত্রা চওল মামলা?
উত্তর মুম্বইয়ের গোরেগাঁও - এ অবস্থিত এই পাত্রা চওল (বস্তি)। গুরু আশিস কন্সট্রাকশন এই চওল পূননির্মাণের দায়িত্ব পায়। ৬৭২টি পরিবারকে নতুন বাড়ি দেওয়ার জন্যে ২০০৭ সালে মহারাষ্ট্র এরিয়া ডেভলপমেন্ট অথরিটির সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর হয়। এবং বাকি জায়গা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে বিক্রি করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাগজেই শেষ সেই চুক্তি। গত ১৪ বছর ধরে নতুন বাড়ি পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন ভাড়াটেরা। ইডির দাবি, গুরু আশিস কন্সট্রাকশন এবং সঞ্জয় রাউত ঘনিষ্ঠ প্রবীণ রাউতের এই যৌথ উদ্যোগে একটি ফ্ল্যাটও তৈরি হয়নি আজ অবধি। বরং জায়গাটি ৯০১.৭৯ কোটি টাকার বিনিময়ে ৯ জন পাইভেট ডেভলপারকে বেঁচে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুরু আশিস কন্সট্রাকশনও সেখানে একটি নতুন প্রজেক্ট শুরু করেছে। ফ্ল্যাট ক্রেতাদের থেকে ১৩৮ কোটি টাকা অগ্রিমও নেওয়া হয়েছে। সমস্যা তখন শুরু হয় যখন ভাড়াটেরা গুরু আশিস কন্সট্রাকশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল এই সংস্থা তাঁদের বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে না। যেখানে যতদিন ভাড়াটেরা নতুন ঘর পাচ্ছেন না ততদিন তাঁদের বাড়ির ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল ওই সংস্থার। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। ২০১৪-২০১৫ সাল অবধিই বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তারপর তা বন্ধ করে দেয় সংস্থা।
আরও পড়ুন: উদ্ধব ঘনিষ্ঠ শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের বাড়িতে ইডি-র হানা, কেন জানেন?
এরপরেই গুরু আশিস কন্সট্রাকশনকে উচ্ছেদের নোটিস দেয় মহারাষ্ট্র এরিয়া ডেভলপমেন্ট অথরিটি। কিন্তু যেই ৯ প্রাইভেট ডেভলপার জমি কিনেছিলেন তাঁরা বম্বে হাইকোর্টে নিয়ে যান মামলাটি। ২০২১ সালে মন্ত্রিসভা ফের চওলের পূননির্মাণের অনুমতি দেয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় সেই কাজ।
ইডির দাবি, এই পুরো বিষয়টিতে মোট ১,০৩৯.৭৯ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে ১০০ কোটি টাকা পেয়েছেন প্রবীণ রাউত। এই টাকাটি তাঁর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এর মধ্যে রয়েছেন সঞ্জয় রাউতের পরিবার। ইডির আরও দাবি, একটি অপরাধমূলক কাজের বিষয়ে ২০১০ সালে ৮৩ লক্ষ টাকা সরাসরি নিয়েছিলেন।
+ There are no comments
Add yours