Tag: madhyom news

madhyom news

  • Ramakrishna 162: “বিষয়ীদের মধ্যে থাকা, বিষয়ীদের ঔরসে জন্ম, এমন ভক্তি—জ্ঞান হয় কেমন করে?”

    Ramakrishna 162: “বিষয়ীদের মধ্যে থাকা, বিষয়ীদের ঔরসে জন্ম, এমন ভক্তি—জ্ঞান হয় কেমন করে?”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, নিত্যসিদ্ধ ও কৌমার বৈরাগ্য

    যদি বল, বিষয়ীদের মধ্যে থাকা, বিষয়ীদের ঔরসে জন্ম, তবে এমন ভক্তি—এমন জ্ঞান হয় কেমন করে? তার মানে আছে। বিষ্ঠাকুড়ে যদি ছোলা পড়ে, তাহলে তাতে ছোলাগাছই হয়। সে ছোলাতে কত ভাল কাজ হয়। বিষ্ঠাকুড়ে পড়েছে বলে কি অন্য গাছ হবে?

    আহা, রাখালের স্বভাব আজকাল কেমন হয়েছে। তা হবে নাই বা কেন? ওল যদি ভাল হয়, তার মুখিটিও ভাল হয়। (সকলের হাস্য) যেমন বাপ, তার তেমনি ছেলে!

    মাস্টার (একান্ত গিরীন্দ্রের প্রতি)—সাকার-নিরাকারের কথাটি ইনি কেমন বুঝিয়ে দিলেন। বৈষ্ণবেরা বুঝি কেবল সাকার বলে?

    গিরীন্দ্র—তা হবে। ওরা একঘেয়ে।

    মাস্টার—নিত্য সাকার, আপনি বুঝেছেন? স্ফটিকের কথা? আমি ওটা ভাল বুঝতে পারছি না।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—হ্যাঁগা, তোমরা কি বলাবলি কচ্ছ?

    মাস্টার ও গিরীন্দ্র একটু হাসিয়া চুপ করিয়া রহিলেন।

    বৃন্দে ঝি (রামলালের প্রতি)—ও রামলাল, এ-লোকটিকে এখন খাবার দেও, আমার খাবার তার পরে দিও।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—বৃন্দেকে খাবার এখনও দেয় নাই?

    নবম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    পঞ্চবটীমূলে কীর্তনানন্দে

    অপরাহ্নে ভক্তেরা পঞ্চবটীমূলে কীর্তন করিতেছেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁহাদের সহিত যোগদান করিলেন। আজ ভক্তসঙ্গে মার নামকীর্তন করিতে করিতে আনন্দে ভাসিলেন:

    শ্যামাপদ-আকাশেতে মন ঘুড়িখান উড়তেছিল ৷
    কলুষের কুবাতাস পেয়ে গোপ্তা খেয়ে পড়ে গেল ॥
    মায়াকান্নি হল ভারী, আর আমি উঠাতে নারি ৷
    দারাসুত কলের দড়ি, ফাঁস লেগে সে ফেঁসে গেল ॥
    জ্ঞান-মুণ্ড গেছে ছিঁড়ে, উঠিয়ে দিলে অমনি পড়ে ৷
    মাথা নেই সে আর কি উড়ে, সঙ্গের ছজন জয়ী হল ॥
    ভক্তি ডোরে ছিল বাঁধা, খেলতে এসে লাগল ধাঁধা ৷
    নরেশচন্দ্রের হাসা-কাঁদা, না আসা এক ছিল ভাল ॥

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ“ওরে সাধু সাবধান! এক-আধবার যাবি। বেশি যাসনে—পড়ে যাবি! কামিনী-কাঞ্চনই মায়া”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 161: “মুখের দিকে তাকিয়ে দেখ…অন্তরে ঈশ্বরের নাম জপ করে কিনা, তাই ঠোঁট নড়ে”

    Ramakrishna 161: “মুখের দিকে তাকিয়ে দেখ…অন্তরে ঈশ্বরের নাম জপ করে কিনা, তাই ঠোঁট নড়ে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, নিত্যসিদ্ধ ও কৌমার বৈরাগ্য

    রাখালের বাপ বসিয়া আছেন (Kathamrita)। রাখাল আজকাল ঠাকুরের (Ramakrishna) কাছে রহিয়াছেন। রাখালের মাতাঠাকুরানীর পরলোকপ্রাপ্তির পর পিতা দ্বিতীয় সংসার করিয়াছেন। রাখাল এখানে আছেন, তাই পিতা মাঝে মাঝে আসেন। তিনি ওখানে থাকাতে বিশেষ আপত্তি করেন না। ইনি সম্পন্ন ও বিষয়ী লোক, মামলা মোকদ্দমা সর্বদা করিতে হয়। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে উকিল, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ইত্যাদি আসেন। রাখালের পিতা তাঁহাদের সঙ্গে আলাপ করিতে মাঝে মাঝে আসেন। তাঁহাদের নিকট বিষয়কর্ম সম্বন্ধে অনেক পরামর্শ পাইবেন।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) মাঝে মাঝে রাখালের বাপকে দেখিতেছেন। ঠাকুরের ইচ্ছা—রাখাল তাঁর কাছে দক্ষিণেশ্বরে থাকিয়া যান।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (রাখালের বাপ ও ভক্তদের প্রতি)—আহা, আজকাল রাখালের স্বভাবটি কেমন হয়েছে! ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখ—দেখতে পাবে, মাঝে মাঝে ঠোঁট নড়ছে। অন্তরে ঈশ্বরের নাম জপ করে কিনা, তাই ঠোঁট নড়ে।

    এ-সব ছোকরারা নিত্যসিদ্ধের থাক। ঈশ্বরের (Ramakrishna) জ্ঞান নিয়ে জন্মেছে। একটু বয়স হলেই বুঝতে পারে, সংসার গায়ে লাগলে আর রক্ষা নাই। বেদেতে হোমাপাখির কথা আছে, সে পাখি আকাশেই থাকে, মাটির উপর কখন আসে না। আকাশেই ডিম পাড়ে। ডিম পড়তে থাকে; কিন্তু এত উঁচুতে পাখি থাকে যে, পড়তে পড়তে ডিম ফুটে যায়। তখন পাখির ছানা বেরিয়ে পড়ে, সেও পড়তে থাকে। তখনও এত উঁচু যে পড়তে পড়তে ওর পাখা উঠে ও চোখ ফোটে। তখন সে দেখতে পায় যে, আমি মাটির উপর পড়ে যাব! মাটিতে পড়লেই মৃত্যু! মাটি দেখাও যা, অমনি মার দিকে চোঁচা দৌড়। একবারে উড়তে আরম্ভ করে দিল। যাতে মার কাছে পৌঁছতে পারে। এক লক্ষ্য মার কাছে যাওয়া।

    এ-সব ছোকরারা ঠিক সেইরকম। ছেলেবেলাই সংসার দেখে ভয় (Kathamrita)। এক চিন্তা—কিসে মার কাছে যাব, কিসে ঈশ্বরলাভ হয়।

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 160: “ঠাণ্ডার গুণে যেমন সাগরের জল বরফ হয়ে ভাসে…বরফের চাঁই সাগরের জলে ভাসে”

    Ramakrishna 160: “ঠাণ্ডার গুণে যেমন সাগরের জল বরফ হয়ে ভাসে…বরফের চাঁই সাগরের জলে ভাসে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    গোস্বামী সঙ্গে সর্বধর্ম-সমন্বয়প্রসঙ্গে

    সাকার না নিরাকার 

    (গোস্বামীর প্রতি)—তা ঈশ্বর শুধু সাকার বললে কি হবে। তিনি শ্রীকৃষ্ণের (Ramakrishna) ন্যায় মানুষের মতো দেহধারণ করে আসেন, এও সত্য, নানারূপ ধরে ভক্তকে দেখা দেন, এও সত্য। আবার তিনি নিরাকার, অখণ্ড সচ্চিদানন্দ, এও সত্য। বেদে তাঁকে সাকার নিরাকার দুই বলেছে, সগুণও বলেছে, নির্গুণও বলেছে (Kathamrita)।

    কিরকম জান? সচ্চিদানন্দ যেন অনন্ত সাগর। ঠাণ্ডার গুণে যেমন সাগরের জল বরফ হয়ে ভাসে, নানা রূপ ধরে বরফের চাঁই সাগরের জলে ভাসে; তেমনি ভক্তিহিম লেগে সচ্চিদানন্দ-সাগরে সাকারমূর্তি দর্শন হয়। ভক্তের জন্য সাকার। আবার জ্ঞানসূর্য উঠলে বরফ গলে আগেকার যেমন জল, তেমনি জল। অধঃ ঊর্ধ্ব পরিপূর্ণ। জলে জল। তাই শ্রীমদ্ভাগবতে সব স্তব করেছে—ঠাকুর, তুমিই সাকার তুমিই নিরাকার; আমাদের সামনে তুমি মানুষ হয়ে বেড়াচ্ছ, কিন্তু বেদে তোমাকেই বাক্য-মনের অতীত বলেছে।

    তবে বলতে (Kathamrita) পার, কোন কোন ভক্তের পক্ষে তিনি নিত্য সাকার। এমন জায়গা আছে, যেখানে বরফ গলে না, স্ফটইকের আকার ধারণ করে।

    কেদার—আজ্ঞে, শ্রীমদ্ভাগবতে ব্যাস তিনটি দোষের জন্য ভগবানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এক জায়গায় বলেছেন, হে ভগবন্‌ (Ramakrishna) তুমি বাক্য মনের অতীত, কিন্তু আমি কেবল তোমার লীলা—তোমার সাকাররূপ—বর্ণনা করেছি, অতএব অপরাধ মার্জনা করবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Ramakrishna)—হাঁ, ঈশ্বর সাকার আবার নিরাকার, আবার সাকার-নিরাকারেরও পার। তাঁর ইতি করা যায় না।

    আরও পড়ুনঃ “ভক্তেরা দাঁড়াইয়া খোল-করতাল লইয়া কীর্তন করিতেছেন, ঠাকুরের দৃষ্টি স্থির”

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

     

  • Durga Puja: মা দুর্গা এখানে জাগ্রত বলে পরিচিত! ১৯৩ বছরে পড়ল হরিরামপুর ঠাকুরবাড়ির দুর্গোৎসব

    Durga Puja: মা দুর্গা এখানে জাগ্রত বলে পরিচিত! ১৯৩ বছরে পড়ল হরিরামপুর ঠাকুরবাড়ির দুর্গোৎসব

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ থেকে ১৯৩ বছর আগের কথা। দেশে তখন ইংরেজ শাসন। ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে তৎকালীন দিনাজপুর জেলার বর্ধিষ্ণু জনপদ ছিল হরিরামপুর। এই গ্রামের আশপাশের তিরিশ থেকে চল্লিশটি গ্রামে কোনও দুর্গাপুজো (Durga Puja) তখন হত না। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে মেতে ওঠার আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকতে হত আট থেকে আশি সকলকেই। গ্রামের একমাত্র ব্রাহ্মণ পরিবার হিসেবে সকলেই এক ডাকে চিনত চক্রবর্তী বাড়িকে। সেসময় বাড়ির কর্তা ছিলেন মধুসূদন চক্রবর্তী। তিনি ভাবলেন, ‘‘মাতৃ-আরাধনা থেকে এত বিপুল সংখ্যক ভক্ত বঞ্চিত হবেন!’’ তাঁরই উদ্যোগে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে শুরু হল হরিরামপুর (Harirampur) ঠাকুর বাড়ির দুর্গাপুজো (Durga Puja)। আজও চলছে সমানভাবে-সমানতালে। মাঝে কখনও বন্ধ হয়নি এই পুজো। আর মাত্র ৭টি বছর, তারপরেই পুজোর বয়স ডাবল সেঞ্চুরি করবে।

    কী বলছেন পরিবারের সদস্য গৌতম চক্রবর্তী? 

    মধুসূদন চক্রবর্তীর প্রতিষ্ঠিত এই পুজোর দায়িত্ব সামলেছেন একে একে কার্তিক চক্রবর্তী, প্রাণেশ চক্রবর্তী, উত্তম চক্রবর্তীরা। এঁরা প্রত্যকেই এখন পরলোকগত। বর্তমানে পুজো (Durga Puja) দেখভাল করেন গৌতম চক্রবর্তী। তিনিই জানালেন পুজোর খুঁটিনাটি নানা বিষয়। জানা গেল, প্রথমদিকে আশেপাশের সমস্ত গ্রাম থেকেই মানুষরা সামিল হতেন এই পুজোয়। আশেপাশের গ্রামের মানুষজন হরিরামপুর ঠাকুর বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করেই মেতে উঠতেন উৎসবে। চলত একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া। পুজোকে কেন্দ্র করে নাচ-গানও হত। গৌতম বাবুর মতে, ‘‘ক্লাব হওয়ার পর থেকে বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে পাড়া প্রতিবেশীদের সামিল হওয়ার প্রবণতা সর্বত্রই কমেছে। আমাদের এখানেও একই ছবি। তবে এখনও পরিবারের সদস্যদের (Harirampur) বাইরেও অনেকেই অংশগ্রহণ করেন হরিরামপুর ঠাকুর বাড়ির পুজোয়। তাঁরা ভোগ অর্পণ, পুজোর আয়োজন থেকে বিসর্জন-এসকল কাজে নানাভাবে সাহায্য করেন।’’

    পুজোকে (Durga Puja) কেন্দ্র করে একসময় চণ্ডীমঙ্গলের গান বিপুল জনপ্রিয় ছিল

    এলাকায় জাগ্রত দেবী বলে পরিচিত হরিরামপুর ঠাকুর বাড়ির পুজোয় অনেকে মানতও করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সকলের ইচ্ছা পূরণ করেন। গৌতমবাবুর ভাষায়, ‘‘মানত পূরণ হওয়ার পরে অনেকেই দেবীকে সোনা-রূপা দান করেন। পরে এগুলি দিয়েই মায়ের অলঙ্কার তৈরি হয়।’’ গৌতমবাবুর আরও জানালেন, একসময় দুর্গাপুজো উপলক্ষে চণ্ডীমঙ্গলের গান হত এখানে। সেই গান বিপুল জনপ্রিয় ছিল। আশেপাশের প্রচুর গ্রামের মানুষ চণ্ডীমঙ্গলের গান শুনতে জড়ো হতেন ঠাকুরবাড়ির পুজো প্রাঙ্গণে। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত চলত এই গান। তবে নব্বইয়ের দশকের পর চণ্ডীমঙ্গলের গান বন্ধ হয়ে যায়। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত মাতৃ-আরাধনার পরে দশমীর রাতে ঠাকুরবাড়ির পুকুরেই দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সঙ্গে কালীপুজোর রীতিও দেখা যায় এখানে। দুর্গাপ্রতিমার পাশেই থাকে কালীমূর্তি। সবশেষে গৌতম বাবু বললেন, ‘‘পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে ১৯৩ বছর ধরে হয়ে আসছে এই পুজো। মাঝে কখনও বন্ধ হয়নি, আমরা যতদিন আছি পুজো চালিয়ে যাবে।’’

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 159: “বৈষ্ণবেরাও ঈশ্বরকে পাবে, শাক্তরাও পাবে, বেদান্তবাদীরাও পাবে, ব্রহ্মজ্ঞানীরাও পাবে”

    Ramakrishna 159: “বৈষ্ণবেরাও ঈশ্বরকে পাবে, শাক্তরাও পাবে, বেদান্তবাদীরাও পাবে, ব্রহ্মজ্ঞানীরাও পাবে”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    গোস্বামী সঙ্গে সর্বধর্ম-সমন্বয়প্রসঙ্গে

    তাই নাম কর, সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থনা কর, যাতে ঈশ্বরেতে (Ramakrishna) অনুরাগ হয়, আর যে-সব জিনিস দুদিনের জন্য, যেমন টাকা, মান, দেহের সুখ; তাদের উপর যাতে ভালবাসা কমে যায়, প্রার্থনা কর।

    বৈষ্ণবধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা—সর্বধর্ম-সমন্বয় 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গোস্বামীর প্রতি)—আন্তরিক হলে সব ধর্মের ভিতর দিয়াই ঈশ্বরকে পাওয়া যায়। বৈষ্ণবেরাও ঈশ্বরকে পাবে, শাক্তরাও পাবে, বেদান্তবাদীরাও পাবে, ব্রহ্মজ্ঞানীরাও পাবে; আবার মুসলমান, খ্রীষ্টান, এরাও পাবে। আন্তরিক হলে সবাই পাবে। কেউ কেউ ঝগড়া করে বসে। তারা বলে (Kathamrita), “আমাদের শ্রীকৃষ্ণকে না ভজলে কিছুই হবে না”; কি, “আমাদের মা-কালীকে না ভজলে কিছুই হবে না।”

    এ-সব বুদ্ধির নাম মাতুয়ার বুদ্ধি; অর্থাৎ আমার ধর্মই ঠিক, আর সকলের মিথ্যা। এ-বুদ্ধি খারাপ। ঈশ্বরের (Ramakrishna) কাছে নানা পথ দিয়ে পৌঁছানো যায়।

    আবার কেউ কেউ বলে, ঈশ্বর সাকার, তিনি নিরাকার নন। এই বলে আবার ঝগড়া। যে বৈষ্ণব, সে বেদান্তবাদীর সঙ্গে ঝগড়া করে।

    যদি ঈশ্বর সাক্ষাৎ দর্শন হয়, তাহলে ঠিক বলা যায়। যে দর্শন করেছে, সে ঠিক জানে ঈশ্বর সাকার, আবার নিরাকার। আরও তিনি কত কি আছেন তা বলা যায় না।

    কতকগুলো কানা একটা হাতির কাছে এসে পড়েছিল। একজন লোক বলে দিলে, এ-জানোয়ারটির নাম হাতি। তখন কানাদের জিজ্ঞাসা করা হল হাতিটা কিরকম? তারা হাতির গা স্পর্শ করতে লাগল। একজন বললে, ‘হাতি একটা থামের মতো!’ সে কানাটি কেবল হাতির পা স্পর্শ করেছিল। আর-একজন বললে, ‘হাতিটা একটা কুলোর মতো!’ সে কেবল একটা কানে হাত দিয়ে দেখেছিল। এইরকম যারা শুঁড়ে কি পেটে হাত দিয়ে দেখেছিল তারা নানা প্রকার বলতে লাগল। তেমনি ঈশ্বর (Ramakrishna) সম্বন্ধে যে যতটুকু দেখেছে সে মনে করেছে, ইশ্বর এমনি, আর কিছু নয়।

    একজন লোক বাহ্যে থেকে ফিরে এসে বললে (Kathamrita) গাছতলায় একটি সুন্দর লাল গিরগিটি দেখে এলুম। আর-একজন বললে, আমি তোমার আগে সেই গাছতলায় গিছলুম—লাল কেন হবে? সে সবুজ, আমি স্বচক্ষে দেখেছি। আর-একজন বললে, ও আমি বেশ জানি, তোমাদের আগে গিছলাম, সে গিরগিটি আমিও দেখেছি। সে লালও নয়, সবুজও নয়, স্বচক্ষে দেখেছি নীল। আর দুইজন ছিল তারা বললে, হলদে, পাঁশটে—নানা রঙ। শেষে সব ঝগড়া বেধে গেল। সকলে জানে, আমি যা দেখেছি, তাই ঠিক। তাদের ঝগড়া দেখে একজন লোক জিজ্ঞাসা করলে, ব্যাপার কি? যখন সব বিবরণ শুনলে, তখন বললে, আমি ওই গাছতলাতেই থাকি; আর ওই জানোয়ার কি আমি চিনি। তোমরা প্রত্যেকে যা বলছ, তা সব সত্য; ও গিরগিটি,— কখন সবুজ, কখন নীল, এইরূপ নানা রঙ হয়। আবার কখন দেখি, একেবারে কোন রঙ নাই। নির্গুণ।”

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ওরে সাধু সাবধান! এক-আধবার যাবি। বেশি যাসনে—পড়ে যাবি! কামিনী-কাঞ্চনই মায়া”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 158: “বিছে বা ডাকুর কামড় অমনি মন্ত্রে সারে না—ঘুঁটের ভাবরা দিতে হয়”

    Ramakrishna 158: “বিছে বা ডাকুর কামড় অমনি মন্ত্রে সারে না—ঘুঁটের ভাবরা দিতে হয়”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    গোস্বামী সঙ্গে সর্বধর্ম-সমন্বয়প্রসঙ্গে

    আহারের পর ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ছোট খাটটিতে বিশ্রাম করিতেছেন। ঘরে লোকের ভিড় বাড়িতেছে। বাহিরের বারান্দাগুলিও লোকে পরিপূর্ণ। ঘরের মধ্যে ভক্তেরা মেঝেতে বসিয়া আছেন ও ঠাকুরের দিকে একদৃষ্টে চাহিয়া আছেন। কেদার, সুরেশ, রাম, মনোমোহন, গিরীন্দ্র, রাখাল ভবনাথ, মাস্টার ইত্যাদি অনেকে ঘরে উপস্থিত। রাখালের বাপ আসিয়াছেন; তিনিও ওই ঘরে বসিয়া আছেন।

    একটি বৈষ্ণব গোস্বামীও এই ঘরে উপবিষ্ট। ঠাকুর তাহাকে সম্বোধন করিয়া কথা কহিতেছেন (Kathamrita)। গোস্বামীদের দেখিলেই ঠাকুর মস্তক অবনত করিয়া প্রণাম করিতেন—কখন কখন সম্মুখে সাষ্টাঙ্গ হইতেন।

    নাম-মাহাত্ম্য না অনুরাগ—অজামিল 

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আচ্ছা, তুমি কি বল? উপায় কি?

    গোস্বামী—আজ্ঞা, নামেতেই হবে। কলিতে নাম-মাহাত্ম্য।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—হাঁ, নামের খুব মাহাত্ম্য আছে বটে। তবে অনুরাগ না থাকলে কি হয়? ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হওয়া দরকার। শুধু নাম করে যাচ্ছি কিন্তু কামিনী-কাঞ্চনে মন রয়েছে, তাতে কি হয়?

    বিছে বা ডাকুর কামড় অমনি মন্ত্রে সারে না—ঘুঁটের ভাবরা দিতে হয়।

    গোস্বামী—তাহলে অজামিল? অজামিল মহাপাতকী, এমন পাপ নাই যা সে করে নাই। কিন্তু মরবার সময় ‘নারায়ণ’ বলে ছেলেকে ডাকাতে (Kathamrita) উদ্ধার হয়ে গেল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—হয়তো অজামিলের পূর্বজন্মে অনেক কর্ম করা ছিল। আর আছে যে, সে পরে তপস্যা করেছিল।

    এরকমও বলা যায় যে, তার তখন অন্তিমকাল। হাতিকে নাইয়ে দিলে কি হবে, আবার ধূলা-কাদা মেখে যে কে সেই! তবে হাতিশালায় ঢোকবার আগে যদি কেউ ঝুল ঝেড়ে দেয় ও স্নান করিয়ে দেয়, তাহলে গা পরিস্কার থাকে।

    নামেতে একবার শুদ্ধ হল, কিন্তু তারপরেই হয়তো নানা পাপে লিপ্ত হয়। মনে বল নাই; প্রতিজ্ঞা করে না যে, আর পাপ করব না। গঙ্গাস্নানে পাপ সব যায়। গেলে কি হবে? লোকে বলে থাকে, পাপগুলো গাছের উপর থাকে। গঙ্গা নেয়ে যখন মানুষটা ফেরে, তখন ওই পুরানো পাপগুলো গাছ থেকে ঝাঁপ দিয়ে ওর ঘাড়ের উপর পড়ে। (সকলের হাস্য) সেই পুরানো পাপগুলো আবার ঘাড়ে চড়েছে। স্নান করে দু-পা না আসতে আসতে আবার ঘাড়ে চড়েছে!

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ওরে সাধু সাবধান! এক-আধবার যাবি। বেশি যাসনে—পড়ে যাবি! কামিনী-কাঞ্চনই মায়া”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 157: “ভক্তেরা দাঁড়াইয়া খোল-করতাল লইয়া কীর্তন করিতেছেন, ঠাকুরের দৃষ্টি স্থির”

    Ramakrishna 157: “ভক্তেরা দাঁড়াইয়া খোল-করতাল লইয়া কীর্তন করিতেছেন, ঠাকুরের দৃষ্টি স্থির”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ
    কীর্তনানন্দে ও সমাধিমন্দিরে

    ভক্তেরা এই আবতারতত্ত্ব অবাক্‌ হইয়া শুনিতেছেন। কেহ কেহ ভাবিতেছেন, কি আশ্চর্য! বেদোক্ত অখণ্ড সচ্চিদানন্দ—যাহাকে বেদে বাক্য-মনের অতীত বলিয়াছে—সেই পুরুষ আমাদের সামনে চোদ্দ পোয়া মানুষ হইয়া আসেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) যেকালে বলিতেছেন, সেকালে অবশ্য হইবে। যদি তাহা না হইত, তাহা হইলে “রাম রামন” করিয়া এই মহাপুরুষের কেন সমাধি হইবে? নিশ্চয় ইনি হৃৎপদ্মে রামরূপ দর্শন করিতেছিলেন।

    দেখিতে দেখিতে কোন্নগর হইতে ভক্তেরা খোল-করতাল লইয়া সংকীর্তন করিতে করিতে বাগানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। মনোমোহন, নবাই ও অন্যান্য অনেকে নামসংকীর্তন করিতে করিতে ঠাকুরের কাছে সেই উত্তর-পূর্ব বারান্দায় উপস্থিত। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রেমোন্মত্ত হইয়া তাঁহাদের সহিত সংকীর্তন (Kathamrita) করিতেছেন।

    নৃত্য করিতে করিতে মাঝে মাঝে সমাধি। তখন আবার সংকীর্তনের মধ্যে চিত্রার্পিতের ন্যায় দাঁড়াইয়া আছেন। সেই অবস্থায় ভক্তেরা তাঁহাকে পুষ্পমালা দিয়া সাজাইলেন। বড় বড় গোড়েমালা। ভক্তেরা দেখিতেছেন, যেন শ্রীগৌরাঙ্গ সম্মুখে দাঁড়াইয়া। গভীর ভাবসমাধিনিমগ্ন! প্রভুর কখন অন্তর্দশা—তখন জড়বৎ চিত্রার্পিতের ন্যায় বাহ্যশূন্য হইয়া পড়েন। কখন বা অর্ধবাহ্যদশা—তখন প্রেমাবিষ্ট হইয়া নৃত্য করিতে থাকেন। আবার কখন বা শ্রীগৌরাঙ্গের ন্যায় বাহ্যদশা—তখন ভক্তসঙ্গে সংকীর্তন করেন।

    ঠাকুর সমাধিস্থ, দাঁড়াইয়া। গলায় মালা। পাছে পড়িয়া যান ভাবিয়া একজন ভক্ত তাঁহাকে ধরিয়া আছেন; চর্তুদিকের ভক্তেরা দাঁড়াইয়া খোল-করতাল লইয়া কীর্তন করিতেছেন। ঠাকুরের দৃষ্টি স্থির (Kathamrita) । চন্দ্রবদন প্রেমানুরঞ্জিত। ঠাকুর পশ্চিমাস্য।

    এই আনন্দমূর্তি ভক্তেরা অনেকক্ষণ ধরিয়া দেখিতে লাগিলেন। সমাধি ভঙ্গ হইল। বেলা হইয়াছে। কিয়ৎক্ষণ পরে কীর্তনও থামিল। ভক্তেরা ঠাকুরকে আহার করাইবার জন্য ব্যস্ত হইলেন।

    ঠাকুর (Ramakrishna) কিয়ৎকাল বিশ্রাম করিয়া, নববস্ত্র পীতাম্বর পরিধান করিয়া ছোট খাটটিতে বসিলেন। পীতাম্বরধারী সেই আনন্দময় মহাপুরুষের জ্যোতির্ময় ভক্তচিত্তবিনোদন, অপরূপ রূপ ভক্তেরা দর্শন করিতেছিলেন। সেই দেবদুর্লভ, পবিত্র, মোহনমূর্তি দর্শন করিয়া নয়নের তৃপ্তি হইল না। ইচ্ছা, আরও দেখি, আরও দেখি; সেই রূপসাগরে মগ্ন হই।

    ঠাকুর আহারে বসিলেন। ভক্তেরাও আনন্দে প্রসাদ পাইলেন।

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ“ওরে সাধু সাবধান! এক-আধবার যাবি। বেশি যাসনে—পড়ে যাবি! কামিনী-কাঞ্চনই মায়া”

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 156: “রাম পূর্ণব্রহ্ম, পূর্ণ অবতার—একথা বারজন ঋষি কেবল জানত”

    Ramakrishna 156: “রাম পূর্ণব্রহ্ম, পূর্ণ অবতার—একথা বারজন ঋষি কেবল জানত”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    সাকার-নিরাকার—ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের রামনামে সমাধি

    ঋষিরা জ্ঞানী ছিলেন, তাই তাঁরা অখণ্ড সচ্চিদানন্দকে চাইতেন (Kathamrita)। আবার ভক্তেরা অবতারকে

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Kathamrita) দাঁড়াইয়া ভক্তদের কাছে এই কথা বলিতেছেন। বলিতে বলিতেই একেবারে বাহ্যরাজ্য ছাড়িয়া মন অন্তর্মুখ হইল! “হৃৎপদ্ম প্রস্ফুটিত হইল।—এই কথাটি উচ্চারণ করিতে না করিতে ঠাকুর একেবারে সমাধিস্থ।

    ঠাকুর সমাধিমন্দিরে। ভগবানদর্শন করিয়া শ্রীরামকৃষ্ণের হৃৎপদ্ম কি প্রস্ফুটিত হইল! সেই একভাবে দণ্ডায়মান। কিন্তু বাহ্যশূন্য। চিত্রার্পিতের ন্যায়। শ্রীমুখ উজ্জ্বল ও সহাস্য। ভক্তেরা কেহ দাঁড়াইয়া, কেহ বসিয়া; অবাক্‌; একদৃষ্টে এই অদ্ভুত প্রেম রাজ্যের ছবি। এই অদৃষ্টপূর্ব সমাধি-চিত্র সন্দর্শন করিতেছেন।

    অনেকক্ষণ পরে সমাধি ভঙ্গ হইল।

    ঠাকুর দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া ‘রাম’ এই নাম বারবার উচ্চারণ করিতেছেন। নামের বর্ণে বর্ণে যেন অমৃত ঝরিতেছে। ঠাকুর উপবিষ্ট হইলেন। ভক্তেরা চর্তুদিকে বসিয়া একদৃষ্টে দেখিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদিগের প্রতি)—অবতার যখন আসে, সাধারণ লোকে জানতে পারে না—গোপনে আসে। দুই-চারিজন অন্তরঙ্গ ভক্ত জানতে পারে। রাম পূর্ণব্রহ্ম, পূর্ণ অবতার—এ-কথা বারজন ঋষি কেবল জানত। অন্যান্য ঋষিরা বলেছিল, “হে রাম, আমরা তোমাকে দশরথের ব্যাটা বলে জানি।

    অখণ্ড সচ্চিদানন্দকে কি সকলে ধরতে পারে? কিন্তু নিত্যে উঠে যে বিলাসের জন্য লীলায় থাকে, তারই পাকা ভক্তি। বিলাতে কুইন (রানী)-কে দেখে এলে পর, তখন কুইন-এর কথা, কুইন-এর কার্য—এ সকল বর্ণনা করা চলতে পারে। কুইন-এর কথা তখন বলা ঠিক ঠিক হয়। ভরদ্বাজাদি ঋষি রামকে স্তব করেছিলেন, আর বলেছিলেন, ‘হে রাম (Ramakrishna), তুমিই সেই অখণ্ড সচ্চিদানন্দ। তুমি আমাদের কাছে মানুষরূপে অবতীর্ণ হয়েছ। বস্তুত তুমি তোমার মায়া আশ্রয় করেছ বলে, তোমাকে মানুষের মতো দেখাচ্ছে!’ ভরদ্বাজাদি ঋষি রামের পরম ভক্ত। তাঁদের ভক্তি পাকাভক্তি (Kathamrita)।”

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “ওরে সাধু সাবধান! এক-আধবার যাবি। বেশি যাসনে—পড়ে যাবি! কামিনী-কাঞ্চনই মায়া”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 155: “ভক্তি আস্বাদন করবার জন্য, তাঁকে দর্শন করলে মনের অন্ধকার দূরে যায়”

    Ramakrishna 155: “ভক্তি আস্বাদন করবার জন্য, তাঁকে দর্শন করলে মনের অন্ধকার দূরে যায়”

    শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৩, ১১ই মার্চ

    সাকার-নিরাকার—ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের রামনামে সমাধি

    এইবার ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ভক্তসঙ্গে ঘরের উত্তর-পূর্ব বারান্দায় আসিয়াছেন। ভক্তদের মধ্যে দক্ষিণেশ্বরবাসী একজন গৃহস্থও বসিয়া আছেন। তিনি গৃহে বেদান্ত-চর্চা করেন। ঠাকুরের সম্মুখে শ্রীযুক্ত কেদার চাটুজ্যের সঙ্গে তিনি শব্দব্রহ্ম সম্বন্ধে কথা কহিতেছেন।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও অবতারবাদ—ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও সর্বধর্ম-সমন্বয় 

    দক্ষিণেশ্বরবাসী—এই অনাহত শব্দ সর্বদা অন্তরে-বাহিরে হচ্ছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—শুধু শব্দ হলে তো হবে না, শব্দের প্রতিপাত্য একটি আছে। তোমার নামে কি শুধু আমার আনন্দ হয়? তোমায় না দেখলে ষোল আনা আনন্দ হয় না।

    দ: নিবাসী—ওই শব্দই ব্রহ্ম। ওই অনাহত শব্দ।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (কেদারের প্রতি)—ওঃ বুঝেছ? এঁর ঋষিদের মত। ঋষিরা রামচন্দ্রকে বললেন, হে রাম, আমরা জানি তুমি দশরথের ব্যাটা। ভরদ্বাজাদি ঋষিরা তোমায় অবতার জেনে পূজা করুন। আমরা অখণ্ড সচ্চিদানন্দকে চাই! রাম এই কথা শুনে হেসে চলে গেলেন।

    কেদার—ঋষিরা রামকে অবতার জানেন নাই। ঋষিরা বোকা ছিলেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (গম্ভীরভাবে)—আপনি এমন কথা বলো না। যার যেমন রুচি। আবার যার যা পেটে সয়। একটা মাছ এনে মা ছেলেদের নানারকম করে খাওয়ান। কারুকে পোলাও করে দেন; কিন্তু সকলের পেটে পোলাও সয় না। তাই তাদের মাছের ঝোল করে দেন। যার যা পেটে সয়। আবার কেউ মাছ ভাজা, মাছের অম্বল ভালবাসে। (সকলের হাস্য) যার যেমন রুচি।

    চান—ভক্তি আস্বাদন করবার জন্য। তাঁকে দর্শন করলে মনের অন্ধকার দূরে যায়। পুরাণে আছে, রামচন্দ্র (Ramakrishna) যখন সভাতে এলেন, তখন সভায় শত সূর্য যেন উদয় হল। তবে সভাসদ্‌ লোকেরা পুড়ে গেল না কেন? তার উত্তর—তাঁর জ্যোতিঃ জড় জ্যোতিঃ নয়। সভাস্থ সকলের হৃৎপদ্ম প্রস্ফুটিত হল। সূর্য উঠলে পদ্ম প্রস্ফুটিত হয়।

    আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”

    আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ“ওরে সাধু সাবধান! এক-আধবার যাবি। বেশি যাসনে—পড়ে যাবি! কামিনী-কাঞ্চনই মায়া”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Chhattisgarh: বড় সাফল্য নিরাপত্তা বাহিনীর, ছত্তিশগড়ে গুলির লড়াইয়ে খতম ৩০ মাওবাদী

    Chhattisgarh: বড় সাফল্য নিরাপত্তা বাহিনীর, ছত্তিশগড়ে গুলির লড়াইয়ে খতম ৩০ মাওবাদী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাওবাদী দমন (Maoists) অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেল নিরাপত্তা বাহিনী। ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) নারায়ণপুর-দান্তেওয়াড়া সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে খতম হয়েছে ৩০ মাওবাদী। এরপরে ওই এলাকা থেকে একে-৪৭ সহ একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রশাসন। ছত্তিশগড় পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক এনিয়ে বলেন, ‘‘ঠিক কত পরিমাণে অস্ত্র ও গোলা, বারুদ উদ্ধার করা হয়েছে, সেটা এখনই বিস্তারিতভাবে বলা সম্ভব নয়। শনিবার নিহত মাওবাদীদের পরিচয় জানার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’’

    গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই অঞ্চলে অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী

    জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই অঞ্চলে অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। সেই মতো ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) বৃহস্পতিবার মাওবাদী অভিযান শুরু করে। গোভেল, নিন্দুর থুলথুলি প্রভৃতি গ্রামে (Chhattisgarh) অভিযান চালানো হয়। এই সময়ে জঙ্গলে শুরু হয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের গুলির লড়াই। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী নিকাশ করতে সম্ভব হয় ৩০ মাওবাদীকে। তবে আরও বেশ কয়েকজন মাওবাদী (Maoists) গভীর জঙ্গলে চলে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাদের খোঁজে প্রশাসনও অভিযান জারি রেখেছে।

    এই জঙ্গল (Chhattisgarh) পরিচিত অবুঝমাড়ের জঙ্গল নামে

    প্রসঙ্গত, এই জঙ্গল (Chhattisgarh) পরিচিত অবুঝমাড়ের জঙ্গল নামে। ছত্তিশগড় এবং মহারাষ্ট্রের মধ্যে বিস্তৃত এই জঙ্গল। এই এলাকাকে অনেকেই ‘অপরিচিত পাহাড়’ বলে অবিহিত করেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই এখানকার প্রায় ৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা কেউ কখনও জরিপ করেনি। ঠিক এই কারণেই এই ঘন জঙ্গল মাওবাদীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বহু মাওবাদী নেতা এই জঙ্গলে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

    কী বলছেন মুখ্যমন্ত্রী?

    সাম্প্রতিককালে মাওবাদী দমন অভিযানে এটা অনেক বড় সাফল্য বলে জানিয়েছে ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) পুলিশ। নিরাপত্তা বাহিনীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ছত্তীসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘‘জওয়ানদের এই সাফল্য প্রশংসনীয়। তাঁদের অদম্য সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাই। ছত্তিশগড় থেকে নকশালবাদ শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য। নকশালবাদ শেষ করেই আমাদের লড়াই থামবে। এর জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার।’’ প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৪ অগাস্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বড় চ্যালেঞ্জ হল মাওবাদীরা। ২০২৬ সালের মার্চের পর এদেশে মাওবাদী থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেই এমন সাফল্য এল মাওবাদী দমনে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share