Tag: PM Modi

PM Modi

  • PM Modi: বিশ্ব কূটনীতিতে নজিরবিহীন সাফল্য, বিদেশের পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি ভাষণ মোদির

    PM Modi: বিশ্ব কূটনীতিতে নজিরবিহীন সাফল্য, বিদেশের পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি ভাষণ মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাঁচ দেশ সফর সেরে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। বিশ্ব কূটনীতিতে ভারতের অবস্থানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন তিনি। বিদেশি পার্লামেন্টে ভাষণ ও আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রীয় সম্মান গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি সব ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মিলিত রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন। তাবড় বিশ্বনেতাদের মধ্যে নরেন্দ্র মোদি সবথেকে জনপ্রিয়। তা প্রমাণ হয়েছে বারবার। মূলত বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কারণেই মানুষের মধ্যে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে মোদির গ্রহণযোগ্যতা এত বেশি। ক্রিকেট থেকে বিনোদন, রাজনীতি থেকে অর্থনীতি সব ক্ষেত্রে জনপ্রিয় তিনি। সন্ত্রাস দমনে কঠোর, মানবতার পূজারী, যুদ্ধ রুখে শান্তির বার্তা তাঁর কণ্ঠে।

    ১৭টি বিদেশি পার্লামেন্টে ভাষণ

    সম্প্রতি পাঁচ-দেশ সফরের সময় ঘানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং নামিবিয়ার পার্লামেন্টে ভাষণ দেন মোদি। এই তিনটি ভাষণের সঙ্গে তাঁর মোট বিদেশি পার্লামেন্ট ভাষণের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭। এই সংখ্যাটি কংগ্রেসের সব প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী—জওহরলাল নেহরু (৩), ইন্দিরা গান্ধী (৪), রাজীব গান্ধী (২), পি ভি নরসিমা রাও (১) ও মনমোহন সিং (৭)—এর সম্মিলিত সংখ্যার সমান। অটলবিহারী বাজপেয়ী (২) ও মোরারজি দেশাই (১) ছাড়া অন্য কোনও অ-কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী এই ক্ষেত্রে পৌঁছতেই পারেননি। সেখানে মোদি বিভিন্ন দেশের আইনসভায় ভারতের জয়গান গেয়েছেন। লোকে শুনেছে মোদিকে।

    গণতন্ত্রের জয়গান

    নানা দেশের আইনসভায় দাঁড়িয়ে ভারতের বৈচিত্র, সংস্কৃতির কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi Sets Global Records)। বলেছেন, “ভারত গণতন্ত্রের পথপ্রদর্শক। কারণ ভারতের কাছে গণতন্ত্র নিছক কোনও ব্যবস্থা নয়, গণতন্ত্র ভারতের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে জড়িয়ে। ঋগ্বেদে সব দিক থেকে আসা শুভ চিন্তাকে গ্রহণের কথা বলা আছে। সব ভাবনার এই গ্রহণ করার এই ক্ষমতাই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।” তাঁর কথায়, প্রকৃত গণতন্ত্রে আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের অবকাশ থাকে। এতে মানুষের মধ্যে ঐক্য তৈরি হয়। মর্যাদা বোধ তৈরি হয়, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে ২০টি দল ক্ষমতায় রয়েছে। ২২টি সরকারি ভাষা রয়েছে। হাজার হাজার উপভাষা রয়েছে। এই কারণেই বাইরে থেকে আসা সকলকে দু’হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানায় ভারত। আর এই একই কারণে পৃথিবীর সর্বত্র মানিয়ে নিতে পারেন ভারতীয়রা।

    সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব

    সব দেশের সংসদে দাঁড়িয়েই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মোদি। বলেছেন শান্তির কথাও। মানবতার সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল সন্ত্রাস। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী নীতির কোনও জায়গা নেই। মানবতার স্বার্থে সন্ত্রাস রোধে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। শান্তির বার্তা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) বাগ্মিতায় মুগ্ধ হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাঁকে নানা সম্মানে ভূষিত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান অর্জনের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী মোদির নাম এখন শীর্ষে। যেখানে নেহরু, ইন্দিরা ও মনমোহন সিং পেয়েছেন মাত্র ২টি করে সম্মান।

    বিশ্ব নেতৃত্বের সংকটে ভারত একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি

    বিশ্ব রাজনীতির অস্থিরতার মাঝে ভারত একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। যখন চিন স্বৈরাচারী নীতিতে আবদ্ধ, রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন এবং যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত, তখন ভারতের নেতৃত্বে মোদি একটি ভিন্নতর বার্তা দিচ্ছেন—স্বচ্ছ কূটনীতি, দৃঢ় লক্ষ্য ও নৈতিক নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সাফল্য শুধু সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়; এটি ভারতের নতুন আত্মবিশ্বাস, বিশ্বের মঞ্চে বিশ্বাসযোগ্যতা ও নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতীক। ১৪০ কোটির আস্থা নিয়ে ভারত আজ বিশ্বের কূটনৈতিক মানচিত্রে এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা।

  • PM Modi in Namibia: হীরের মতো উজ্জ্বল সম্পর্ক! দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর, নামিবিয়ার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত মোদি

    PM Modi in Namibia: হীরের মতো উজ্জ্বল সম্পর্ক! দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর, নামিবিয়ার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিজেই নিজের রেকর্ড ভেঙে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ফের তাঁর মুকুটে নয়া পালক। এবার দক্ষিণ-পশ্চিম অফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত হলেন তিনি। পাঁচ দেশ সফরের অন্তিম পর্যায়ে বুধবার নামিবিয়ায় (Namibia) পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। এটি তাঁর প্রথম নামিবিয়া সফর। সেই দেশের সংসদের যৌথ অধিবেশনেও ভাষণ দেন মোদি (PM Modi in Namibia)। প্রায় আধ ঘণ্টার সেই ভাষণের পরে, সেখানকার সাংসদরা নিজেদের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদনও জানান।

    নামিবিয়ায় সর্বোচ্চ সম্মান

    নামিবিয়ায় (PM Modi in Namibia) সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার ব্রাজিলের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত করা হয় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। আর নামিবিয়ায় তিনি পেলেন সর্বোচ্চ সম্মান ‘অর্ডার অব দ্য মোস্ট অ্যানসিয়েন্ট ওয়েলউইতশিয়া মিরাবিলিস’ (Order of the Most Ancient Welwitschia Mirabilis)। বুধবার, মোদির হাতে এই সম্মান তুলে দেন নামিবিয়ার রাষ্ট্রপতি নেতুম্বো নন্দী-নদাইতওয়াহ (Netumbo Nandi-Ndaitwah)। ১৯৯০ সালে স্বাধীনতা পায় নামিবিয়া। ১৯৯৫ থেকে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। অসামান্য কাজ, পরিষেবা ও নেতৃত্বের জন্য সম্মান জানাতেই এই পুরস্কার দেওয়া হয়। নামিবিয়ার এক জনপ্রিয় মরুভূমির গাছ ওয়েলউইতশিয়া মিরাবিলিসের নামেই ওই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে। এই নিয়ে মোদির ঝুলিতে এল ২৭টি আন্তর্জাতিক সম্মান।

    নামিবিয়ান ড্রাম বাজান মোদি

    ভারতের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বুধবার আফ্রিকার দেশটিতে যান নমো (PM Modi in Namibia)। উইন্ডহোক-এর হোসিয়া কুটাকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও নৃত্যের মাধ্যমে মোদিকে স্বাগত জানান নামিবিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা মন্ত্রী সেলমা আশিপালা-মুসাভ্যি। এক হৃদয়স্পর্শী মুহূর্তে মোদি স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নামিবিয়ান ড্রাম বাজান, যা স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করে। ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে নামিবিয়ায় অভ্যর্থনা জানানো হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে।

    চারটি চুক্তিতে স্বাক্ষর

    এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং রাষ্ট্রপতি নেতুম্বো বৈঠকে বসেন। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, জ্বালানি এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার জন্য এই দুটি দেশ চারটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। চুক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে—স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহযোগিতা, নামিবিয়ায় একটি উদ্যোগ বিকাশ কেন্দ্র স্থাপন, দুর্যোগ সহনশীল পরিকাঠামোর জন্য গঠিত জোট (CDRI)-এর আওতায় একটি কাঠামো এবং গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স-এর অংশ হিসেবে একটি কাঠামো। কূটনৈতিক মহল মনে করছে ভারত-নামিবিয়া (India-Namibia Relation) সম্পর্কে নতুন গতি আনবে এই পদক্ষেপ।

    হীরের মতো উজ্জ্বল সম্পর্ক

    নামিবিয়া (India-Namibia Relation) বিশ্বের অন্যতম বড় হীরে উৎপাদক দেশ, আর ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরে পালিশ শিল্পের কেন্দ্র। তাই দুই দেশের সম্পর্ক হবে হীরের মতো উজ্জ্বল। নামিবিয়ার সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় এমনই অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। নামিবিয়ার সংসদে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন গণতন্ত্র এবং নামিবিয়া ও ভারতের মধ্যে একাধিক বিষয়ে মিল থাকার কথা। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব সময়ের দ্বারা পরীক্ষিত এবং মূল্যবোধ ও উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্নের দ্বারা সংযুক্ত। আগামী সময়েও, আমরা নিবিড় ভাবে কাজ করে যাব এবং উন্নয়নের পথে একসঙ্গে হাঁটব।

    সংসদে চিতা প্রসঙ্গ

    ভারতকে (India-Namibia Relation) উপহার হিসেবে চিতা দিয়েছিল নামিবিয়া। সেখানকার সংসদে দেওয়া ভাষণে সেই প্রসঙ্গও তুলে ধরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ওই চিতাকে ছাড়া হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে। সেই প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত এবং নামিবিয়ার মধ্যে সহযোগিতা, সংরক্ষণ এবং করুণার এক শক্তিশালী ইতিহাস রয়েছে। আপনারা আমাদের দেশে চিতা পুনঃপ্রবর্তনে সাহায্য করেছিলেন। আপনাদের উপহারের জন্য আমরা গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ।’ এখন ওই চিতাগুলি ভালো আছে এবং তাদের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

    মোদির সফরের গুরুত্ব

    বিগত এক দশকে নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Foreign Tour) একের পর এক দেশ সফর করেছেন। পেয়েছেন একাধিক দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের পর যখন ভারত সরকারের বিদেশনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছিল, তখন দুই ভিন্ন মহাদেশে গিয়ে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান প্রাপ্তি কূটনৈতিকভাবে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফর বিশেষ করে আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত করবে বলেই মনে করছে কৃটনৈতিক মহল।

  • India-Brazil Relation: “ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক হোক ফুটবলের মতো আবেগময়” লুলার সঙ্গে বৈঠকের পর বার্তা মোদির

    India-Brazil Relation: “ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক হোক ফুটবলের মতো আবেগময়” লুলার সঙ্গে বৈঠকের পর বার্তা মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত-ব্রাজিল বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন মোড়। ভারত ও ব্রাজিল (India-Brazil Relation) আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় দ্বিগুণ করে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি ছাড়াও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও পাশে থাকবে ভারতের ব্রাজিল। মঙ্গলবার, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গে বৈঠকের পরে এই কথাই জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Brazil)। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীর করতে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী মোদির অবদানের কথা মেনে নেন লুলা। তাই মোদিকে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘গ্র্যান্ড কলার অফ দ্য ন্যাশনাল অর্ডার অফ দ্য সাউদার্ন ক্রস’ প্রদান করা হয়।

    সন্ত্রাসের বিরোধিতায় পাশাপাশি

    পাকিস্তান এবং চিনের নাম না করেই ব্রাজিল থেকে দুই দেশকে বার্তা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Brazil)। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত এবং ব্রাজিল দুই দেশই সন্ত্রাসবাদ এবং যারা এই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে তাদের বিরোধিতা করছে।’ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পরে, সাংবাদিক সম্মেলেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা একই রকম। এই ক্ষেত্রে আমরা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিচ্ছি। এই ক্ষেত্রে দ্বিমুখী নীতির কোনও জায়গা নেই।’ এপ্রিল মাসে পহেলগাঁওে জঙ্গি হামলার পরে ভারতকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিল ব্রাজিল। এই জন্য এ দিন আবার সেই দেশের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান মোদি।

    বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি

    দুই দেশের (India-Brazil Relation) প্রতিনিধিদের মধ্যে এ দিন বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং ওষুধ, মহাকাশ, খাদ্য এবং জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, নতুন প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সুপার কম্পিউটার, ডিজিটাল সহযোগিতার মতন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, আগামী পাঁচ বছরে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন তাঁরা। এ দিন একাধিক চুক্তিতেও স্বাক্ষর করছে ভারত এবং ব্রাজিল। দুই দেশের মধ্যে শক্তি, কৃষি, ডিজিটাল রূপান্তর এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধসহ মোট ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

    ভারত-ব্রাজিল রঙিন সম্পর্ক

    ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক (India-Brazil Relation) নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মোদি বলেন, “আমরা চাই ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক হোক রঙিন কার্নিভালের মতো, ফুটবলের মতো আবেগময় এবং সাম্বার মতো হৃদয়স্পর্শী – ভিসা কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনের দরকার নেই!” তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে পর্যটক, শিক্ষার্থী, ক্রীড়াবিদ এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহজ যাতায়াত নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে উভয় নেতা সম্মত হন যে, সমস্ত বিরোধ আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। মোদি বলেন, “ভারত-ব্রাজিল অংশীদারিত্ব বিশ্ব স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।” প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্য প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার। সেটিকে ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। পাশাপাশি শক্তি খাতে সহযোগিতাও বাড়ছে। মোদি বলেন, “পরিবেশ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি দুই দেশেরই অগ্রাধিকার। আজকের এই চুক্তি আমাদের সবুজ লক্ষ্যে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে।” প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসঙ্গে মোদি জানান, “আমাদের প্রতিরক্ষা শিল্পের মধ্যে গভীর আস্থা ও বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। এই ক্ষেত্রেও যৌথভাবে কাজ অব্যাহত থাকবে।”

    আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ক

    দুই দেশ (India-Brazil Relation) এখন ব্রাজিলে ভারতের ইউপিআই (Unified Payments Interface) চালু করার জন্য একসঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান মোদি। তিনি বলেন, “ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও মহাকাশ গবেষণায় ভারতের অভিজ্ঞতা ব্রাজিলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আমরা প্রস্তুত।” মোদি জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সুপারকম্পিউটিং ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়ছে, যা দুই দেশের মানব-কেন্দ্রিক উদ্ভাবনের প্রতিফলন। কৃষি গবেষণা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং আয়ুর্বেদ ও প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রসারের ক্ষেত্রেও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আন্তর্জাতিক পরিসরে ভারত-ব্রাজিল সমন্বয় প্রসঙ্গে মোদি বলেন, “দুটি বড় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমাদের সহযোগিতা শুধু গ্লোবাল সাউথের জন্য নয়, গোটা মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার সময়ে আমাদের যৌথ দায়িত্ব এই অঞ্চলের উদ্বেগ ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা।” মোদি-লুলার এই বৈঠক ভারত-ব্রাজিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

    সম্মানিত মোদি

    এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ব্রাজিলের (PM Modi in Brazil) সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘গ্র্যান্ড কলার অব দ্য ন্যাশনাল অর্ডার অব দ্য সাউদার্ন ক্রস’ প্রদান করল সে দেশের সরকার। ভারত-ব্রাজিলের সহযোগিতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী মোদির উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এই সম্মান প্রদান করেন। ২০১৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে এটি মোদির ২৬তম আন্তর্জাতিক সম্মান।

     

     

     

     

     

     

  • PM Modi in Foreign Tour: রামমন্দিরের রেপ্লিকা, মধুবনী শিল্পকর্ম! মোদির উপহারে বরাবরই ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র ঝলক

    PM Modi in Foreign Tour: রামমন্দিরের রেপ্লিকা, মধুবনী শিল্পকর্ম! মোদির উপহারে বরাবরই ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র ঝলক

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পঞ্চদেশীয় সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Foreign Tour)। ঘানা, ত্রিনিদাদ-টোবাগো, আর্জেন্টিনা ঘুরে পৌছে গিয়েছেন ব্রাজিলে। যোগ দিয়েছেন ব্রিকস সম্মেলনে। দেখা হল। কথা হল। ব্রিকস বৈঠকে একসঙ্গে কথাবার্তা বললেন রাষ্ট্রনেতারা। কখনও বা নরেন্দ্র মোদি আলাদা ভাবে মুখোমুখি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে। গুরুগম্ভীর কথাবার্তা যেমন ছিল, তেমনই ছিল সৌজন্যের প্রীতি বিনিময়, কিছু ব্যক্তিগত আদানপ্রদানও। প্রীতির সঙ্গে উপহারও ছিল। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে যাননি মোদি। ভারতীয় রীতি মেনে বিভিন্ন দেশের নেতার হাতে তুলে দিয়েছেন বিশেষ উপহার। প্রতিটি উপহারই ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র ঝলক তুলে ধরেছে বিশ্বের দরবারে।

    ত্রিনিদাদা ও টোবাগোয় মোদির উপহার

    নয়াদিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিনিদাদা ও টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসরকে মোট দু’টি উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Foreign Tour)। প্রথমটি হল অযোধ্যার সরযূ নদীর জল। এই নদীর উল্লেখ রয়েছে পুরাণেও। সেই পবিত্র নদীর জল একটি কলসি ভরে তা ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন মোদি। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, ত্রিনিদাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছে বিহার-যোগ। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁর পরিবার একেবারে বিহারের বক্সার এলাকার মানুষ ছিলেন। এক কথায় ‘ভারত কি বেটি’ তিনি। কলস হিন্দু ধর্মে পবিত্রতা, কল্যাণ এবং আধ্যাত্মিক অনুগ্রহের প্রতীক। এই কলসি ছাড়াও শুদ্ধতা, ধর্ম, ও সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক হিসেবে তাঁর হাতে রামমন্দিরের একটি ছোট প্রতিরূপও তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

    আর্জেনটিনায় মোদির উপহার

    এই ত্রিনিদাদ সফর সেরে, মোদি যান মারাদোনার দেশ আর্জেন্টিনা। সেদেশের প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেইয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে (PM Modi in Foreign Tour)। বৈঠক শেষে সৌজন্য ও বন্ধুত্বের খাতিরে তাঁকে একটি উপহার দেন মোদি। আর্জেটিনার প্রেসিডেন্টকে রাজস্থানে তৈরি হওয়া সিংহের মূর্তি দিয়েছেন তিনি। একখণ্ড ফুকসাইট পাথরের উপর হাতে খোদাই করা রুপোর সিংহ, সাহস ও নেতৃত্বের প্রতীক। মোদির উপহারের তালিকা থেকে বাদ পড়েন না উপ-রাষ্ট্রপতিও। আর্জেন্টিনার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টোরিয়া ভিয়াররুয়েলকে এক টুকরো বিহারের ছোঁয়া দিয়ে আসেন তিনি। তাঁর হাতে তুলে দেন মধুবনী শিল্প দ্বারা তৈরি সূর্যের ছবি। সূর্যকে জীবনের শক্তি ও ইতিবাচকতার প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়। এটি ঘিরে থাকা ফুলেল মোটিফ মিথিলার মধুবনী শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন।

    ঘানায় মোদির উপহার

    পঞ্চ দেশীয় সফরে সবার প্রথম ঘানায় গিয়েছিলেন মোদি (PM Modi in Foreign Tour)। সেখানে ঘানার প্রেসিডেন্ট জন মাহামার জন্য কর্নাটকে তৈরি বিদরি শিল্পের একটি ফুলদানি নিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দস্তা-তামা দিয়ে এই ফুলদানিগুলি তৈরি হয় কর্নাটকের প্রান্তিক এলাকায়। যার মূল উপাদান বিদরি শিল্প। ভারতের এক টুকরো শিল্পের অংশকেই আপাতত ঘানার রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূচনা ঘটান তিনি। শুধু রাষ্ট্রপতিই নয়। তাঁর স্ত্রীর জন্য একটি রুপোর কাজ করা হাতব্যাগ নিয়ে গিয়েছিলেন মোদি। যা ওড়িশার কটকের তারাকাশি হস্তশিল্পের প্রতীক। গত ৫০০ বছর ধরে রুপো দিয়ে নানা রকম সামগ্রী তৈরি হয় কটকের একটি গ্রামে। মোদির দেওয়া উপহারে রয়ে গেল সেই চিহ্নটাও। এছাড়াও, ঘানার উপরাষ্ট্রপতির জন্য কাশ্মীর থেকে বিশেষ উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, কাশ্মীরি উল দিয়ে তৈরি বিখ্যাত পাশমিনা শাল দক্ষিণ আফ্রিকার ওই দেশের উপরাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসাবে দিয়ে এসেছেন মোদি। ঘানার সংসদের অধ্যক্ষকে বাংলায় তৈরি হওয়া শ্বেতপাথরের হাতি উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

    মোদি-লুলা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Foreign Tour) সোমবার রাতে রিও ডি জেনেইরোতে ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণের পর ব্রাসিলিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। ১৯৬৮ সালের পর এটি প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসিলিয়া সফর। এই রাষ্ট্রীয় সফরে মোদি ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন, যেখানে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, শক্তি, মহাকাশ, প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার মতো পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলোতে ভারত-ব্রাজিল কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রসারের উপর জোর দেওয়া হবে। ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব ২০০৬ সাল থেকে ক্রমশ শক্তিশালী হয়েছে, এবং এই সফর এই সম্পর্ককে আরও গভীর করবে। মোদির ব্রাজিল সফর ভারতের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত-ব্রাজিল বাণিজ্য ২০২৩-২৪ সালে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে, এবং এই সফরে নতুন বাণিজ্য চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সফর শেষে মোদি ৯ জুলাই নামিবিয়া যাবেন।

  • India: ১৮তম ব্রিকস সম্মেলন হবে ভারতে, রাষ্ট্রসংঘে ভারতের অন্তর্ভুক্তিতে জোরালো সওয়াল

    India: ১৮তম ব্রিকস সম্মেলন হবে ভারতে, রাষ্ট্রসংঘে ভারতের অন্তর্ভুক্তিতে জোরালো সওয়াল

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অষ্টাদশতম ব্রিকস সম্মেলন হবে ভারতে (India)। ব্রাজিলে সপ্তদশতম ব্রিকস সম্মেলনেই (BRICS Summit) এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। রিও ডি জেনেইরোয় রবিবার ব্রিকস সম্মেলনের শেষে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়েছে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মজবুত শাসনের জন্য গ্লোবাল সাউথ সহযোগিতা জোরদার করা শীর্ষক এই বিবৃততে ২০২৮ সালে ৩৩তম রাষ্ট্রসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন আয়োজনের জন্য ভারতের আয়োজনের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। ভারতের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ব্রিকস নেতারা রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের পক্ষে ফের সওয়াল করেন। যৌথবিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালের বেইজিং এবং ২০২৩ সালের জোহানেসবার্গ-২ সম্মেলনের ঘোষণাপত্র স্মরণ করে চিন ও রাশিয়া, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে, রাষ্ট্রসংঘ-সহ নিরাপত্তা পরিষদে বৃহত্তর ভূমিকা রাখার জন্য ব্রাজিল ও ভারতের আকাঙ্ক্ষার প্রতি তাঁদের সমর্থন জোরালো করেছে।”

    ভারতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি (India)

    ভারতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নেতৃত্বকেও জোরালোভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ব্রিকস নেতারা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ব্রিকস স্টার্টআপ ফোরামের সূচনা এবং একটি ব্রিকস স্টার্টআপ নলেজ হাব প্রতিষ্ঠার প্রশংসা করেন। এই উদ্যোগগুলির লক্ষ্য হল সদস্য দেশগুলির মধ্যে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে সহযোগিতা আরও গভীর করা (India)। বিবৃতিতে ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি অধিবেশনের আয়োজনের জন্য ভারতের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাইড ইভেন্ট হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়। শুধু তাই নয় ব্রিকসজুড়ে এই ধরনের উদ্যোগ আরও উৎসাহিত করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

    কী বললেন প্রধানমন্ত্রী

    পরিবেশ, সিওপি ৩০ ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ে এক অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “ভারতের ব্রিকস সভাপতিত্বে আমরা ব্রিকসকে একটি নতুন রূপ দিতে কাজ করব।” তিনি বলেন, “ব্রিকসের অর্থ হবে বিল্ডিং রেসিলিয়েন্স অ্যান্ড ইননোভেশন ফর কো-অপারেশন অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটি। যেমন করে আমরা জি২০-এর সভাপতিত্বের সময় গ্লোবাল সাউথের বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম, তেমনি ব্রিকসের সভাপতিত্বেও আমরা এই ফোরামকে এগিয়ে নিয়ে যাব।” পরিবেশ (BRICS Summit) সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্রিকস ভারত সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে, বিশেষ করে বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্রিকস নেতারা বাঘ-সহ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং যৌথ প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়েছেন (India)।

  • PM Modi: ব্রাজিলে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী, পরিবেশিত নৃত্যের থিম ‘অপারেশন সিঁদুর’

    PM Modi: ব্রাজিলে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী, পরিবেশিত নৃত্যের থিম ‘অপারেশন সিঁদুর’

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে শেষমেশ ব্রাজিলে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। এর আগে তিনি সফর করেছেন তিন দেশ। ব্রাজিল (Brazil) হল চতুর্থ দেশ। ভারতে ফেরার পথে তিনি আসবেন নাবিমিয়া হয়ে। ব্রাজিলে পৌঁছে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ব্রাজিলের ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা রিও ডি জেনেইরোয় খুবই উজ্জ্বল ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। তাঁরা কীভাবে এখনও ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এবং ভারতের উন্নয়ন নিয়ে এতটাই আগ্রহী — তা সত্যিই বিস্ময়কর!”

    নৃত্যের থিম নেওয়া অপারেশন সিঁদুর থেকে (PM Modi)

    ব্রাজিলে পৌঁছানোর পর ভারতীয় সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক প্রাণবন্ত অভ্যর্থনা পান প্রধানমন্ত্রী। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল একটি সাংস্কৃতিক নৃত্য পরিবেশনা, যার থিম অপারেশন সিঁদুর থেকে নেওয়া। এদিন রিও ডি জেনেইরোর হলঘরটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় নৃত্য ও লোকসঙ্গীতের ছোঁয়ায়। প্রধানমন্ত্রী নিজেও প্রশংসা ও করতালির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানান। পরে তিনি নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে ছবিও তোলেন এবং তাঁদের উৎসাহিত করেন। এই নৃত্যশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন রেখাও। তিনি বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্য একটি আধা-ধ্রুপদী নৃত্যের পরিকল্পনা করেছিলাম। এটি অপারেশন সিঁদুরকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছিল এবং আমাদের সাহসী সৈন্যদের প্রতি আন্তরিকভাবে উৎসর্গ করা হয়েছিল।”

    কী বলছেন স্থানীয়রা?

    আর একজন অংশগ্রহণকারী স্নেহা বলেন, “আমি আমাদের পরিবেশনায় অপারেশন সিঁদুরের একটি চিত্রকর্ম অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। মহিলা শিল্পী হিসেবে আমরা এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাশাপাশি শক্তি এবং অনুপ্রেরণার প্রতিনিধিত্বকারী ব্যোমিকা সিং এবং সোফিয়া কুরেশিকে উৎসর্গ (PM Modi) করেছি।” উত্তেজনা কেবল শিল্পীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ব্রাজিলের বাসিন্দারাও প্রধানমন্ত্রীর আগমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফর দেখে আমি রোমাঞ্চিত। এটা ব্রাজিলের জন্য সত্যিই সম্মানের।” আর একজন বলেন, “এটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো মনে হচ্ছে। আমরা খুব ভাগ্যবান যে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা কতটা গর্বিত তা প্রকাশ করার কোন ভাষা নেই।”

    প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী রিও ডি জেনিরোয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। এই সম্মেলন হবে ৬-৭ জুলাই। এই সফরে তিনি ব্রাজিলের (Brazil) রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনি কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে পার্শ্ববৈঠকও করতে পারেন বলে খবর (PM Modi)।

  • PM Modi: ফের বঙ্গ সফরে প্রধানমন্ত্রী, ১৮ জুলাই জনসভা দুর্গাপুরে

    PM Modi: ফের বঙ্গ সফরে প্রধানমন্ত্রী, ১৮ জুলাই জনসভা দুর্গাপুরে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি মাসেই ফের বাংলায় আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। ১৮ জুলাই তিনি সভা করতে পারেন দক্ষিণবঙ্গের দুর্গাপুরে। ২১ জুলাই তৃণমূলের সমাবেশ হবে ধর্মতলায় (Samik Bhattacharya)। তার ঠিক তিন দিন আগেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে এ রাজ্যে সভা করিয়ে তৃণমূলকে মাত দিতে চাইছে মোদি-শাহের দল। বাংলার নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে পাশে নিয়েই ওই সভা করতে পারেন মোদি। বিহারে নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার আগেই দুর্গাপুরে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। বিহার যাওয়ার পথে দুর্গাপুর ছুঁয়ে যাওয়া নিয়ে দিল্লি থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে। তখনই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বাংলায় একটি সভা করতে চান প্রধানমন্ত্রী। সভা সেরে তিনি চলে যাবেন বিহারে। তার আগেই তিনি সভা করবেন দুর্গাপুরে।

    জনসভা হবে দুর্গাপুরে (PM Modi)

    দিল্লির কথা শুনে রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রীর জনসভা হবে ১৮ জুলাই, দুর্গাপুরে। এজন্য দু’টি মাঠ পছন্দ হয়েছে পদ্ম নেতৃত্বের। এর মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে একটি (PM Modi)। দমদম বিমানবন্দর থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত মেট্রো রেলের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে। এটি উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু নানা কারণে বার বার পিছিয়ে গিয়েছে সেটি। এই সমাবেশ থেকেই যাতে প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন, সেজন্য তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।

    পঞ্চবাণে বিদ্ধ করেছিলেন তৃণমূলকে

    এর আগে ২৯ মে রাজ্যে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে হিংসা, অরাজকতা, নারীর নিরাপত্তাহীনতা, বেকারত্ব, দুর্নীতি এবং গরিবের অধিকার হরণ – এই পঞ্চবাণে বিদ্ধ করেছিলেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে। সেদিন তিনি বলেছিলেন, “আজ বাংলা এক সঙ্গে একাধিক সঙ্কটে। প্রথম সঙ্কট সমাজে হিংসা ও অরাজকতা। দ্বিতীয় সঙ্কট মা-বোনেদের নিরাপত্তাহীনতা (PM Modi), তাঁদের বিরুদ্ধে ঘটে চলা জঘন্য অপরাধ। তৃতীয় সঙ্কট, তরুণ সমাজের মধ্যে বাড়তে থাকা বেকারত্ব ও হতাশা। চতুর্থ সঙ্কট দুর্নীতি। এখানে সিস্টেমের ওপর বিশ্বাস কমেছে। আর পঞ্চম সঙ্কট হল গরিবের হক ছিনিয়ে নেওয়ার শাসক দলের স্বার্থের রাজনীতি।” ১৮ জুলাই ফের রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের শাসক দলকে কোনও তিরে বিদ্ধ করেন, এখন তা-ই দেখার।

    শমীককে নিয়ে সভা!

    ৩ জুলাই রাজ্য বিজেপির নয়া সভাপতি হয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। বিজেপি সূত্রের খবর, তাঁকে পাশে নিয়েই দুর্গাপুরে জনসমাবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির এই সভার প্রস্তুতির জন্য ইতিমধ্যেই সাত সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের সমাবেশ। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তার আগেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে জনসভা করিয়ে তৃণমূলকে খানিকটা হলেও ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে চাইছে পদ্ম শিবির।

    জনসভার প্রস্তুতিপর্ব দেখলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা

    গেরুয়া শিবিরের খবর, ১৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি দেখতে শনিবার দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সতীশ ধন্ড, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিজেপির লক্ষ্ণণ ঘোড়ুই, বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তা, সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর-সহ পদ্ম শিবিরের অন্যান্য নেতৃত্ব। এদিন ওই স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন বিজেপির যুব নেতা পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়, জেলা মুখপাত্র সুমন্ত মণ্ডল, সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত-সহ অন্যরা। সেখান থেকে তাঁরা গিয়েছিলেন এএসপি স্টেডিয়ামেও (Samik Bhattacharya)।

    তৃণমূলকে উৎখাত করতে পদ্ম শিবিরে নয়া রথী

    ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্য থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করতে পদ্ম শিবির বেছে নিয়েছে বাগ্মী তথা লড়াকু নেতা শমীক ভট্টাচার্যকে (PM Modi)। কলকাতার সায়েন্স সিটির মঞ্চে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব নিয়েই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, “এবার আর দু’শো পার নয়, তৃণমূলের পরপার নিশ্চিত।” তিনি বলেন, “একদিন বাংলায় বিজেপি অপাঙক্তেয় ছিল। আমাদের ভোট এক শতাংশেরও নীচে ছিল। আর আজ বাংলার মানুষ তৃণমূলকে হঠিয়ে বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের জন্য তৈরি হচ্ছেন।” শমীক বলেছিলেন, “মমতার বিকল্প মুখ কোথায়? বাংলার মানুষ স্থির করে নিয়েছেন, ছাব্বিশের ভোটে তৃণমূলকে তাঁরা বিদায় দেবেন। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততার প্রতীক আর কাজে লাগছে না। দুর্নীতির সরকারকে হঠাতে মানুষ এখন বদ্ধপরিকর।”

    মাসখানেক আগে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে জনসভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ১৮ জুলাই জনসভা করবেন দক্ষিণবঙ্গে। সেই সভায় প্রধানমন্ত্রী প্রচারের কী সুর বেঁধে দেন, সেদিকেই তাকিয়ে বিজেপির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। সেই সুর ধরেই (Samik Bhattacharya) কোমর কষে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়বেন পদ্ম নেতারা (PM Modi)।

  • PM Modi: লিথিয়াম ট্রায়াঙ্গল-এর অন্যতম দেশ আর্জেন্টিনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন তাৎপর্যপূর্ণ এই সফর?

    PM Modi: লিথিয়াম ট্রায়াঙ্গল-এর অন্যতম দেশ আর্জেন্টিনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন তাৎপর্যপূর্ণ এই সফর?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দু’দিনের সফরে আর্জেন্টিনায় পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। ভারতীয় সময় শনিবার সকালে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয় এজেইজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Argentina)। ৫৭ বছর পরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী পা রাখলেন ওই দেশে। ২০১৮ সালে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতেও আর্জেন্টিনায় গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি।

    প্রধানমন্ত্রীর পোস্ট (PM Modi)

    জানা গিয়েছে, দু’দিনের এই সফরে মোদি আর্জেন্টিনার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতের যে সহযোগিতা চলছে, তা নিয়ে পর্যালোচনা করবেন। আলোচনা করবেন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির উপায় নিয়ে। এক্স হ্যান্ডেলে করা পোস্টে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “আর্জেন্টিনার সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করে দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য বুয়েনোস আইরেসে পৌঁছেছি। আমি রাষ্ট্রপতি জাভিয়ের মিলের সঙ্গে দেখা করতে এবং তাঁর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করতে আগ্রহী।” এই পর্বে প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি দেশ সফর করবেন। এটি তাঁর তৃতীয় গন্তব্য। এদিন হোটেলে পৌঁছানোর পর প্রবাসী ভারতীয়রা ‘মোদি মোদি’ স্লোগান দেন। চিৎকার করেন ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলেও। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে একটি নৃত্যও পরিবেশন করা হয় প্রবাসী ভারতীয়দের তরফে।

    বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য

    এক্স হ্যান্ডেলে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল লিখেছেন, “আমাদের দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্ব অর্জন করছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি সরকারি সফরে আর্জেন্টিনার প্রাণবন্ত শহর বুয়েনোস আইরেসে অবতরণ করেছেন। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। ৫৭ বছরের মধ্যে এটি কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আর্জেন্টিনা সফর, যা ভারত-আর্জেন্টিনা সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।” বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁর সফরকালে মোদি প্রতিরক্ষা, কৃষি, খনি, তেল ও গ্যাস নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ-সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে ভারত-আর্জেন্টিনা (Argentina) অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে রাষ্ট্রপতি মিলের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করবেন (PM Modi)। বিদেশমন্ত্রকের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক সফর ভারত ও আর্জেন্টিনার মধ্যে বহুমুখী কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করবে।”

    আর্জেন্টিনার খনিজ সম্পদ

    দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা লিথিয়াম, তামা এবং শেল গ্যাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। যা এই দেশটিকে ভারতের জন্য একটি সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি অংশীদার করে তুলছে। বিশেষ করে এমন একটা সময়ে যখন ভারত তার জ্বালানির উৎস বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছে। আর্জেন্টিনায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেল গ্যাসের মজুত রয়েছে। এর বেশিরভাগই এখনও অনুসন্ধান করা হয়নি। এই দেশে রয়েছে চতুর্থ বৃহত্তম শেল তেলের ভান্ডার। এছাড়াও দেশটিতে রয়েছে প্রচলিত তেল ও গ্যাসেরও বিপুল ভান্ডার।

    লিথিয়াম ট্রায়াঙ্গেলের একটি

    মনে রাখতে হবে, আর্জেন্টিনা লিথিয়াম ট্রায়াঙ্গেলের তিনটি দেশের একটি। বাকি দু’টি দেশ হল – বলিভিয়া ও চিলি। লিথিয়াম ট্রায়াঙ্গেল হল একটি অঞ্চল যা আন্দিজ পর্বতমালায় অবস্থিত এবং দক্ষিণ আমেরিকার এই তিনটি দেশের সীমান্তে বিস্তৃত। এই অঞ্চল লিথিয়াম সম্পদের জন্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। লিথিয়াম ভারতবর্ষের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ইলেকট্রিক যানবাহন ও গ্রিড স্টোরেজের রিচার্জেবল ব্যাটারিতে ব্যবহৃত হয়। ভারতের পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্যের জন্য এটি অত্যাবশ্যক (Argentina)। ভারত ইতিমধ্যেই আর্জেন্টিনার লিথিয়াম সংগ্রহের দিকে একটি পদক্ষেপ করেছে। খনিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড (ভারত সরকারের একটি যৌথ উদ্যোগ) আর্জেন্টিনার ক্যাটামার্কা প্রদেশে লিথিয়ামের ভান্ডারের খোঁজ চালানোর অধিকার পেয়েছে। আর্জেন্টিনা একটি বৃহৎ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্প, ‘আর্জেন্টিনা এলএনজি’, বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল এখনও পর্যন্ত অপ্রচলিত থাকা ভাকা মুইর্তা শেল গঠনের সম্ভাবনা অনুসন্ধান করা। এটি আর্জেন্টিনার নিউকেন অববাহিকায় অবস্থিত একটি বিশাল শেল গঠন, যা বিপুল পরিমাণ অপ্রথাগত তেল ও গ্যাসের জন্য পরিচিত (PM Modi)।

    এলএনজি রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্য

    জানা গিয়েছে, আর্জেন্টিনা ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৩০ মিলিয়ন টন পর্যন্ত এলএনজি রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে ধাপে ধাপে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে। দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে এলএনজি রফতানি বাড়ানোর কথাও ভাবছে এবং ভারতের উৎপাদন-পূর্ব খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আগ্রহ দেখিয়েছে (Argentina)। প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার সঙ্গে সঙ্গে ভারত ধীরে ধীরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির ওপর জ্বালানি সরবরাহ নির্ভরতা কমাতে চাইছে। বাজারের ওঠানামা এড়াতেও তার জ্বালানি সরবরাহকে বৈচিত্র্যময় করতে চাইছে। আর্জেন্টিনা-সহ পাঁচটি দেশে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর সেই দিকে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

    বিকল্প জ্বালানির খোঁজ

    গত কয়েক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যখন যুদ্ধভেরী বাজছে, সেই সময় ভারত উপলব্ধি করেছে যে জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো বিকল্প হল একাধিক বিকল্প থাকা। আমেরিকার হুমকি সত্ত্বেও, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষের পর সস্তায় রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানি করার ভারতের সিদ্ধান্ত, তার জ্বালানি সরবরাহকে বৈচিত্র্যময় করার ভারতের কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এটি দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই মোদি সরকার এমন দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনের (Argentina) জন্য কাজ করছে যারা ভারতের সম্ভাব্য জ্বালানি অংশীদার হতে পারে (PM Modi)।

  • PM Modi in Trinidad and Tobago: নারী শক্তির প্রশংসা, লারা-নারাইনের গল্প! ত্রিনিদাদ-টোবাগোর সংসদে অকপট মোদি

    PM Modi in Trinidad and Tobago: নারী শক্তির প্রশংসা, লারা-নারাইনের গল্প! ত্রিনিদাদ-টোবাগোর সংসদে অকপট মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ভক্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয়রাও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের সমর্থক। শুধু যখন শচিন বনাম লারা খেলা হতো তখন বিষয়টা আলাদা। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে এ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবারের এই ঐতিহাসিক ভাষণে মোদি কূটনৈতিক বন্ধুত্বের পাশাপাশি ক্রিকেটপ্রেমের উল্লেখ করে বলেন, “আমাকে বলতেই হবে, ভারতীয়রা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম উৎসাহী সমর্থক। আমরা তাদের জন্য মনপ্রাণ দিয়ে গলা ফাটাই — শুধু তখন নয়, যখন তারা ভারতের বিরুদ্ধে খেলছে।”

    ভারতীয় স্পন্দনের সঙ্গে ক্যারিবিয়ান ছন্দ

    ক্রিকেটের মাধ্যমে ভারত ও ক্যারিবিয়ান দেশের বন্ধুত্বের উষ্ণতা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর মজার মন্তব্যে অধিবেশনকক্ষে হাসি ও করতালির রোল পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর বক্তব্যে ভারত ও ত্রিনিদাদ-টোবাগোর ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক বন্ধনের উল্লেখ করেন। তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রবাসীদের প্রতি, যাঁরা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তিনি বলেন, “প্রায় ১৮০ বছর আগে দীর্ঘ ও কষ্টকর সমুদ্রযাত্রার পর ভারতীয়রা এই দেশে এসে পৌঁছেছিলেন। সেই ভারতীয় স্পন্দন আজ ক্যারিবিয়ান ছন্দের সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়েছে। রাজনীতি থেকে কবিতা, ক্রিকেট থেকে বাণিজ্য—সব ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান আজ গর্বের বিষয়।”

    ২৫ বছর আগের ঘটনা

    ক্রিকেটে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে সুগভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী মোদি সেখানে পৌঁছনোর পরে ক্রিকেটারদের কথাও উল্লেখ করেন। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ক্রিকেট খুব জনপ্রিয়। এখান থেকে অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার এসেছেন। যাঁদের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার ব্রায়ান লারাও রয়েছেন। তাঁকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি ঘটনাও শোনান। তিনি বলেন, “২৫ বছর আগে যখন আমি এখানে এসেছিলাম, তখন সবাই লারার পুল শট, তাঁর কাট শটের প্রশংসা করতে ক্লান্ত হতো না।” প্রধানমন্ত্রী এর পরে পুরান এবং নারাইনেরও প্রশংসা করেন, এই দুজনেই ভারতে হওয়া বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট লিগ, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (IPL) খেলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ সুনীল নারাইন এবং নিকোলাস পুরান আমাদের যুবকদের মধ্যে উৎসাহ জোগান, সেই থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে।”

    নেতৃত্বে নারী শক্তি

    ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর নেতৃত্বে নারী শক্তির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই দেশের জনগণ দু’জন অসাধারণ নারী নেত্রীকে তাদের সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত করেছেন — রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী। তাঁরা নিজেদের ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে গর্বের সঙ্গে পরিচয় দেন।” ত্রিনিদাদ ও টোবাগো সংসদে নারীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতিতেও খুশি হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই সংসদে এত নারী সদস্য দেখে আমি আনন্দিত। ভারতে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, সংস্কৃতির অন্তর্গত। আমাদের পবিত্র স্কন্দ পুরাণেও বলা হয়েছে — একটি কন্যা সন্তান দশটি পুত্র সন্তানের সমান আনন্দ বয়ে আনে। আমরা আধুনিক ভারতের নির্মাণে নারী শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করছি।” তিনি আরও বলেন, “অন্তরীক্ষ থেকে ক্রীড়া, স্টার্টআপ থেকে বিজ্ঞান, শিক্ষা থেকে উদ্যোগ, বিমান চলাচল থেকে সশস্ত্র বাহিনী — সর্বত্র নারীরা ভারতের ভবিষ্যৎ নির্মাণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।”

    গণতন্ত্রের জয়গান

    এদিন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “ভারতের কাছে গণতন্ত্র শুধু একটি রাজনৈতিক মডেল নয়, বরং একটি জীবনধারা। আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। এখানে উপস্থিত বহু সংসদ সদস্যের পূর্বপুরুষ বিহার থেকে এসেছিলেন, যা ছিল মহাজনপদের — প্রাচীন প্রজাতন্ত্রের — কেন্দ্র।” তিনি যোগ করেন, “আমাদের দুই দেশই ঔপনিবেশিক শাসনের ছায়া থেকে উঠে এসে সাহসের কালি ও গণতন্ত্রের কলমে নিজেদের গল্প নিজেরাই লিখেছে।”

    মোদিকে বিশেষ সম্মান

    উত্তর অতলান্তিক সাগরের ছোট্ট দু’টি দ্বীপ! আর তা নিয়েই ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, একটা রাষ্ট্র। সেখান থেকেই বিশেষ সম্মানেও ভূষিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ‘অর্ডার অফ দ্য রিপাবলিক অফ ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি হলেন দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রথম বিদেশি নেতা, যিনি এই মর্যাদা পেলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির ঝুলিতে এখন ২৫টি আন্তর্জাতিক সম্মাননা। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতি ক্রিস্টিন কাঙ্গালু প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেছেন। পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “আমি এই সম্মান ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে গ্রহণ করছি। এই পুরস্কার দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের বন্ধনের প্রতীক।” তিনি আরও বলেন, “এই সম্পর্কের মূলে রয়েছে আমাদের যৌথ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যা ১৮০ বছর আগে এই দেশে আগত ভারতীয়দের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে।” প্রধানমন্ত্রী মোদির এই ঐতিহাসিক সফরের মাধ্যমে ভারত ও ত্রিনিদাদ-টোবাগোর সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলেই আশাবাদী দুই দেশ।

  • PM Modi in Trinidad and Tobago: ভারতীয় শিকড়ের প্রশংসা, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিহারের মেয়ে’ বললেন মোদি

    PM Modi in Trinidad and Tobago: ভারতীয় শিকড়ের প্রশংসা, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিহারের মেয়ে’ বললেন মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আত্মিকভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত ভারত ও ত্রিনিদাদ। ক্যারিবিয়ান এই দ্বীপপুঞ্জে ৪০ শতাংশ মানুষই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসারকে বিহারের মেয়ে বলে সম্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Trinidad and Tobago)৷ তাঁর জন্য উপহার হিসেবে সরযু নদী এবং মহাকুম্ভের পবিত্র জলও নিয়ে এসেছেন বলে জানালেন মোদি৷ পাঁচটি দেশ সফরের দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার ত্রিনিদাদ ও টোবাগো পৌঁছছেন ভারতের মোদি। পিয়ারকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসর। তাঁকে ঘিরেই আয়োজন করা হয়েছিল এক জাঁকজমকপূর্ণ আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা ও গার্ড অফ অনার।

    বিহারের মেয়ে কমলা

    ত্রিনিদাদ ও টোবাগো সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi in Trinidad and Tobago) সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসরকে “বিহারের মেয়ে” বলে অভিহিত করেন। স্থানীয় ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, কমলা প্রসাদ-বিসেসরের পূর্বপুরুষরা বিহারের বক্সার জেলা থেকে এসেছিলেন এবং তিনিও সেই স্থান পরিদর্শন করেছেন। মোদি বলেন, “আমরা শুধু রক্ত বা পদবিতে নয়, আত্মিকভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত। ভারত তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তোমাদের সাদরে স্বাগত জানায়। কমলা জির পূর্বপুরুষরা বিহারের বক্সার থেকে এসেছিলেন। তিনি নিজেও সেখানে গিয়েছেন। মানুষ তাঁকে বিহারের মেয়ে বলে মনে করে।” তাই কমলার জন্য মোদি উপহার হিসেবে নিয়ে গিয়েছেন মহাকুম্ভের পবিত্র জল এবং রাম মন্দিরের একটি প্রতিরূপ। প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতে উপহার তুলে দিয়েছেন সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসারের হাতে। এদিন কমলা প্রসাদ বিসেসারের সঙ্গে বৈঠকও করেন মোদি। এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

    বিহার থেকে নতুন সম্ভাবনার সূচনা

    কমলা প্রসাদ-বিসেসরের রাজনৈতিক জীবন বহু ঐতিহাসিক প্রথমের সাক্ষী। ১৯৮৭ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন কমলা। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিরোধী দলনেত্রী হন তিনি। এছাড়া তিনি কমনওয়েলথ নেশনসের প্রথম মহিলা চেয়ারপার্সন। ভারত ও উপমহাদেশের বাইরের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী তিনি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “বিহারের ঐতিহ্য ভারতের গর্ব, সারা বিশ্বের গর্ব… বিহার বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃথিবীকে পথ দেখিয়ে এসেছে। ২১শ শতাব্দীতেও বিহার থেকে নতুন সম্ভাবনার সূচনা হবে।” উল্লেখ্য, ২০১২ সালে বিহারের বক্সারের ভেলপুরের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ৷

    গিরমিতিয়া সম্প্রদায়ের কথা

    ত্রিনিদাদে প্রবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে আলাদা করে গিরমিতিয়া সম্প্রদায়ের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ উনিশ ও বিশ শতাব্দীতে বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে বহু শ্রমিককে ব্রিটেন অধীনে থাকা কয়েকটি দেশে নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশরা ৷ সেই সূত্র ধরেই অন্য আরও কয়েকটি জায়গার মতো ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোয় ভারতীয়দের আসা ৷ এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে মোদি বলেন, “প্রবাসী ভারতীয় দিবসে আমি গিরমিতিয়া সম্প্রদায়কে সম্মান জানাতে উদ্যোগ নিয়েছি ৷ তাঁদের জন্য যা যা করা দরকার সেটা আমি করেছি ৷” তাঁর মতে, এ দেশে ভারতীয় আসা এবং তারপর নিজের যোগ্যতায় দেশের উন্নতিতে সামিল হওয়ার নেপথ্যে আছে লড়াকু মানসিকতা ৷

    ভারতীয় পোশাকে স্বাগত মোদি

    প্রধানমন্ত্রী মোদি ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে পৌঁছনোর পর সেখানকার প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসার ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পোশাকে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে সম্মান জানানোর জন্য ত্রিনিদাদ ও টোবাগো তাদের সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার ‘দ্য অর্ডার অফ দ্য রিপাবলিক অফ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো’ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় নরেন্দ্র মোদিকে। হোটেলে পৌঁছনোর পরে প্রবাসী ভারতীয়রা তাঁকে ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘মোদি, মোদি’ ধ্বনিতে স্বাগত জানান। এক অর্কেস্ট্রা পারফরম্যান্সের পর পরিবেশিত হয় ভজন। এই সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাষ্ট্রপতি ক্রিস্টিন কার্লা কাংগালুর সঙ্গেও বৈঠক করবেন। সে দেশের সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ারও কথা প্রধানমন্ত্রী মোদির।

    বেনারস, পাটনা, কলকাতা ও দিল্লির নামে রাস্তা ত্রিনিদাদে

    প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ২৫ বছর আগের ত্রিনিদাদ সফরের স্মৃতিও স্মরণ করেন এবং বলেন, সেই সময় থেকে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে। তিনি দুই দেশের সাংস্কৃতিক সংযোগের কথাও উল্লেখ করেন, জানিয়ে দেন ত্রিনিদাদে বেনারস, পাটনা, কলকাতা ও দিল্লির নামেও রাস্তার নামকরণ হয়েছে। মোদি বলেন, “এই দ্বীপে নবরাত্রি, মহাশিবরাত্রি ও জন্মাষ্টমী উৎসাহ, শ্রদ্ধা ও গর্বের সঙ্গে পালন করা হয়। চৌতাল ও বৈঠক গান এখানেও সমানভাবে জনপ্রিয়। আমি এখানে অনেক পরিচিত মুখ দেখতে পাচ্ছি।” বৃহস্পতিবার মোদির ত্রিনিদাদ আগমনে তাঁকে রাজকীয় অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। পিয়ারকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসর, সঙ্গে ছিলেন ৩৮ জন মন্ত্রী ও চারজন সংসদ সদস্য। তাঁকে গার্ড অফ অনারও প্রদান করা হয়।

    ত্রিনিদাদে ভারতের ছোঁয়া

    ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর প্রায় ৪০% মানুষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রায় ৫,৫৬,৮০০ জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে প্রায় ১,৮০০ জন এনআরআই, বাকিরা স্থানীয় নাগরিক যাদের পূর্বপুরুষরা ১৮৪৫ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে ভারতে থেকে সেখানে গিয়েছিলেন। যদিও ত্রিনিদাদ ও টোবাগো আয়তনে ভারতের জোধপুর থেকেও ছোট, তবুও দেশটির সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের খাবার, সংগীত, ভাষা ও ধর্মীয় উৎসবে এখনও স্পষ্টভাবে ভারতীয় ঐতিহ্যের ছাপ দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী মোদি এদিন ঘোষণা করেন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে বসবাসরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ষষ্ঠ প্রজন্মকেও এবার থেকে ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া (OCI) কার্ড প্রদান করা হবে।

    ত্রিনিদাদে হিন্দুত্বের বিকাশ

    এটি প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রথম ত্রিনিদাদ ও টোবাগো সফর এবং ১৯৯৯ সালের পর প্রথমবার কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সফরে এই দেশে এলেন। মোদির কথায়, “ভারত এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বন্ধুত্ব আগামী দিনে আরও ভাল জায়গায় পৌঁছক, এই কামনা করি।” ত্রিনিদাদের প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশে মোদি বলেন, “শ্রী রামের প্রতি আপনাদের বিশ্বাসের কথা জানি। ভগবান রামের পবিত্র শহর এত সুন্দর যে তার মহিমা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। আমি নিশ্চিত যে আপনারা সকলেই রামলালার অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে স্বাগত জানিয়েছেন। আপনারা অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের সময় পবিত্র জল এবং শিলা পাঠিয়েছিলেন, তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।” এরপরই মোদি বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন, এ বছরের শুরুর দিকে মহাকুম্ভ মেলা হয়েছিল ৷ আমার সৌভাগ্য আমি সেই জল আপনাদের জন্য নিয়ে আসতে পেরেছি ৷”

LinkedIn
Share