Waqf Amendment Bill: পাশ ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ১৪টি নিয়মের সংশোধনে সবুজ সঙ্কেত জেপিসি-র

waqf amendment bill cleared by jpc 14 proposals of nda members approved

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ওয়াকফ নিয়মের (Waqf Amendment Bill) সংশোধনে সবুজ সঙ্কেত দিল যৌথ সংসদীয় কমিটি। জেপিসি-তে পাশ হয়ে গেল ওয়াকফ সংশোধনী বিলের খসড়া। এই খসড়া বিলে কেন্দ্রের তরফে আনা ১৪টি সংশোধনীই গৃহীত হয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধীদের পেশ করা সবকটি সংশোধনী ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায়।

 

সংসদে কবে আসছে ওয়াকফ বিল

আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। আসন্ন অধিবেশনের প্রথম পর্বেই সংসদে এই বিলটি (Waqf Amendment Bill) আনতে পারে সরকার। গত বছরের ২৯ নভেম্বরই এই খসড়া বিল জমা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরে কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনের প্রথমার্ধের শেষদিন পর্যন্ত করা হয়। সূত্রের খবর, ওয়াকফ বিলে বিরোধীরা যে সংশোধন করতে বলেছিল, তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। জেপিসি-র এই খসড়া রিপোর্ট ২৮ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে ও ২৯ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে। ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়বে। এরপর নিয়মাফিক সংসদের দুই কক্ষে পেশ করা হবে বিল। পাশ হওয়ার পর, রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলেই বদলে যাবে ওয়াকফ আইন। নতুন নাম হবে ‘ইউনিফায়েড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট, এমপাওয়ারমেন্ট, এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্ট’।

 

ওয়াকফ সম্পত্তির চরিত্র বদল নয়

যে-সব সম্পত্তি ওয়াকফ না হওয়া সত্ত্বেও ওয়াকফের (Waqf Amendment Bill) মর্যাদা পেয়ে আসছিল, সেগুলির পুনরুদ্ধারের কথা বলা হয়েছিল সংসদে পেশ হওয়া বিলে। বিলের সেই ধারা পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে সংশোধনী আনেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি সংশোধনীতে বলেন, যেগুলি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার চরিত্র বদলের চেষ্টা না করে বরং বিল পাশের পরে ভবিষ্যতে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি-না তা ভালো করে খতিয়ে দেখা হোক। নিশিকান্তের আনা ওই সংশোধনীটি আজ পাশ হয়। এর ফলে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত বা ব্যবহার করা হচ্ছে এমন কোনও সম্পত্তির চরিত্র পরিবর্তন হওয়ার আশু কোনও বিপদ থাকছে না।

 

প্রক্রিয়া মেনেই বিল পাশ

বিজেপি সাংসদ তথা যুগ্ম সংসদীয় কমিটির প্রধান জগদম্বিকা পাল বলেন, “ওয়াকফ (Waqf Amendment Bill) আইনের ৪৪টি ধারা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। ৬ মাস ধরে আলোচনার পর চূড়ান্ত বৈঠকে ১৪টি সংশোধন গ্রহণ করা হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে। বিরোধীরাও সংশোধনের সুপারিশ করেছিল। প্রতিটি প্রস্তাব নিয়েই আলোচনা ও ভোটাভুটি হয়েছে। তাদের প্রস্তাবের পক্ষে ১০টি ভোট পড়েছে, বিরোধিতায় ১৬টি ভোট পড়েছে।” প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই এই কমিটির বৈঠক নিয়ে বিরোধী সাংসদদের সঙ্গে শাসক পক্ষের বিরোধ চরমে ওঠে।

 

ওয়াকফ সংশোধনী বিল কী

১৯৫৪ সালে প্রথম ওয়াকফ আইন পাশ হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইনে সংশোধনী (Waqf Amendment Bill) এনে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে সব ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই বার বার প্রশ্ন উঠেছে বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে। বর্তমানে ওয়াকফ আইনের ধারা ৪০ অনুযায়ী, যে কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণার অধিকার ছিল ওয়াকফ বোর্ডের হাতেই। ফলে ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে বার বার বহু গরিব মুসলিমের সম্পত্তি, অন্য ধর্মালম্বী ব্যক্তির সম্পত্তি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। সংশোধনের মূল লক্ষ্য হল একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করা। এ ছাড়াও প্রস্তাবিত অন্যান্য সংশোধনগুলির মধ্যে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের পাশাপাশি প্রতি রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ড গঠন, যেখানে মুসলিম মহিলা এবং অমুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

 

কী কী সংশোধনের প্রস্তাব ওয়াকফ বিলে?

নতুন আইনে ওয়াকফ কাউন্সিল যেকোনও জমিতে দাবি জানাতে পারবে না বলা হয়েছিল।
কমপক্ষে ৫ বছর ইসলাম ধর্ম পালনের পরই ওয়াকফে সম্পত্তি দান করা যাবে।
ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য ও অন্তত দুইজন মহিলা সদস্য যোগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে অমুসলিম একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তিনজন সাংসদ, দুইজন প্রাক্তন বিচারপতি, উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক সদস্য যোগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
মূলত সম্পত্তিতে মুসলিম মহিলা ও শিশুদের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যই ওয়াকফ আইনে সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share