Smoking: বাঙালি কিশোরীদের মধ্যে বাড়ছে ধূমপানের প্রবণতা? সিগারেটের সুখটান কোন বিপদ বাড়াচ্ছে?

এরাজ্যে ১০.৮ শতাংশ মহিলা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে, শহরের তুলনায় গ্রামের মহিলাদের মধ্যে তামাকের নেশায় আসক্তির সংখ্যা বেশি
Smoking
Smoking

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

বয়ঃসন্ধির চৌকাঠ পেরিয়েই বাড়ছে সুখটানের (Smoking) হাতছানি! নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল পড়ুয়ারা। কলকাতা বা আশপাশের শহর এলাকা নয়। গোটা রাজ্যেই কমবয়সি মেয়েদের মধ্যে সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। আর তার জেরেই নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞ মহল। 

কী বলছে সর্বভারতীয় সমীক্ষা?

গত পাঁচ বছরে পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের ধূমপানের (Smoking) প্রবণতা বেড়েছে। এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিশেষত ১৮ বছরের কমবয়সি মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা আরও বাড়ছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এরাজ্যে ১০.৮ শতাংশ মহিলা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে। শহরের তুলনায় গ্রামের মহিলাদের মধ্যে তামাকের নেশায় আসক্তির সংখ্যা বেশি। গ্রামের ১২.২ শতাংশ মহিলা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে। ৮ শতাংশ শহুরে মহিলা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে অভ্যস্ত। ছেলেদের মধ্যে ধূমপান বা অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের প্রবণতা আগেও ছিল। তবে, গত কয়েক বছরে কিছুটা কমেছে। যদিও কমার পরেও এখনও সচেতনতা একেবারেই তলানিতে। তবে, কমবয়সি মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বেশি হওয়ায় তা বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে। কারণ, দেখা যাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও তামাক সেবনের প্রবণতা কমছে না। এমনকী গর্ভাবস্থায় তামাক সেবন করছেন অনেকেই। ওই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ধূমপানে অভ্যস্ত মোট মহিলার মধ্যে ৫ শতাংশ গর্ভাবস্থায় তামাক সেবন করেন। ফলে, নিজের শরীরের পাশপাশি সন্তানের স্বাস্থ্যেও মারাত্মক কুপ্রভাব পড়ছে! 

কম বয়স থেকে ধূমপান কোন কোন বিপদ বাড়াতে পারে? 

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের (Smoking) প্রবণতা বাড়ছে। আর তার জেরেই মহিলাদের মধ্যে মুখ ও গলার ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ছে। আগে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছেলেদের গলা ও মুখের ক্যানসার হত। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, মহিলারা যে তিনটি ক্যানসারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, তার মধ্যে একটি মুখ ও গলার ক্যানসার। হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ছে ধূমপানের জন্য। ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে ধূমপান। লাগাতার তামাক সেবনের জেরে ডিম্বানুর গুণগতমান কমছে। ফলে, গর্ভধারণে নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। 

ধূমপান ত্যাগ করলে কী কী লাভ হবে? 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ধূমপান ত্যাগ করার পরের দিন থেকেই স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ধূমপান (Smoking) না করলে প্রথম ১২ ঘণ্টার মধ্যেই রক্তে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ কমে। ফলে, দেহে রক্ত সঞ্চালন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়। ধূমপান ছাড়ার দু'সপ্তাহের মধ্যেই কমতে থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। যার জেরে কাশির সমস্যা কমে। ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকলে, ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগের এক বছরের মধ্যে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সুস্থ, দীর্ঘ জীবন কাটাতে তামাক সেবনের অভ্যাস কমানো জরুরি। কম বয়স থেকে তামাকজাত জিনিসে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়। অনেক সময়ই সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটানো কঠিন হয়ে যায়। তাই এ নিয়ে সরকারের তরফেও সক্রিয় ভূমিকা জরুরি। যাতে স্কুলপড়ুয়ারা কোনওভাবেই তামাকজাত দ্রব্য না পায়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles