শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে
অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
শ্রীরামকৃষ্ণের ঈশ্বরাবেশ, তাঁহার মুখে ঈশ্বরের বাণী
শ্রীযুক্ত অধর সেনের দ্বিতীয় দর্শন—গৃহস্থের প্রতি উপদেশ
“বিষয়ী লোকদের রোখ নাই। হল হল; না হল না হল। জলের দরকার হয়েছে কূপ খুঁড়ছে। খুঁড়তে, খুঁড়তে যেমন পাথর বেরুল, অমনি সেখানটা ছেড়ে দিলে। আর-এক জায়গা খুঁড়তে বালি পেয়ে গেল; কেবল বালি বেরোয়। সেখানটাও ছেড়ে দিলে। যেখানে খুঁড়তে আরম্ভ করেছে, সেইখানেই খুঁড়বে তবে তো জল পাবে।
“জীব যেমন কর্ম করে, তেমনি ফল পায়। তাই গানে আছে:
দোষ কারু নয় গো মা।
আমি স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা।
“আমি আর আমার অজ্ঞান। বিচার করতে গেলে যাকে আমি আমি করছ, দেখবে তিনি আত্মা বই আর কেউ নয়। বিচার কর — তুমি শরীর না মাংস, না আর কিছু? তখন দেখবে, তুমি কিছুও নও। তোমার কোন উপাধি নাই। তখন আবার ‘আমি কিছু করি নাই, আমার দোষও নাই, গুণও নাই। পাপও নাই, পুণ্যও নাই।’
“এটা সোনা, এটা পেতল—এর নাম অজ্ঞান। সব সোনা—এর নাম জ্ঞান।”
ঈশ্বরদর্শনের লক্ষণ—শ্রীরামকৃষ্ণ কি অবতার?
“ঈশ্বরদর্শন হলে বিচার বন্ধ হয়ে যায়। ঈশ্বরলাভ করেছে, অথছ বিচার করছে, তাও আছে। কি কেউ ভক্তি নিয়ে তাঁর নামগুণগান করছে।
“ছেলে কাঁদে কতক্ষণ? যতক্ষণ না স্তন পান করতে পায়। তারপরই কান্না বন্ধ হয়ে যায়। কেবল আনন্দ। আনন্দে মার দুধ খায়। তবে একটি কথা আছে। খেতে খেতে মাঝে মাঝে খেলা করে, আবার হাসে।
“তিনিই সব হয়েছেন। তবে মানুষে তিনি বেশি প্রকাশ। যেখানে শুদ্ধসত্ত্ব বালকের স্বভাব — হাসে, কাঁদে, নাচে, গায় — সেখানে তিনি সাক্ষাৎ বর্তমান।”
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours