India Bangladesh Relation: সরাসরি যুদ্ধের ডাক বিএনপি নেতার! বাংলাদেশে আরও তীব্র ভারত-বিদ্বেষের বিষ

Bangladesh-Unrest-8

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের রাজনীতির আঙিনায় এখন ভারত বিরোধিতার প্রতিযোগিতা চলছে। কখনও মানচিত্র বদলের হুঁশিয়ারি, কখনও কলকাতা তো কখনও সেভেন সিস্টার্স দখলের ডাক। সীমান্ত ডিঙিয়ে আগরতলা অভিযানের ডাকও দিয়েছে এখন বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। এবার সরাসরি যুদ্ধের ডাক দিলেন বিএনপি নেতা হাফিজউদ্দিন আহমেদ। তাঁর কথায়, ‘প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিককে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হবে। প্রত্যেক ছাত্রকে রাইফেল চালানো শিখতে হবে।’ বৃহস্পতিবার ঢাকার এক সভায় এমনই মন্তব্য করতে দেখা যায় বিএনপি নেতাকে।

ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ!

নানা ঘটনায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বাংলাদেশ এখন উত্তাল। বাংলাদেশের এই অস্থিরতায় বারবার সেদেশের মৌলবাদীরা ভারতের দিকে আঙুল তুলছে। বাংলাদেশে ক্রমে ভারত বিরোধিতার সুর জোরালো হচ্ছে। যে দেশ স্বাধীন করার জন্য ভারতের অনেক যোদ্ধা রক্ত দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু ভারতীয়। ভারত না থাকলে একদা বাংলাদেশের জন্মই হতো না, সেই বাংলাদেশেই ভারত বিরোধিতার স্লোগান উঠছে। বঙ্গবন্ধুকে যারা অপমান করে, তারাই পাকিস্তানের মদতে ঢাকার বাতাসে ভারত বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলে মত কূটনৈতিক মহলের। 

কট্টরপন্থী নেতাদের হুঙ্কার

ভারতের জন্য হুমকির তো অন্ত নেই। বিগত কয়েকদিনে বাংলাদেশের একের পর এক কট্টরপন্থী নেতাদের হুঙ্কারে চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহলও। এবার বিএনপি নেতা হাফিজউদ্দিন আহমেদকে বলতে শোনা যায়, “প্রত্যেক ছাত্রকে বেসিক মিলিটারি ট্রেনিং আমরা দেব। আমাদের দিকে যাতে কেউ রক্তচক্ষু না দেখাতে পারে তাই এটা দরকার। আমরা যুদ্ধ করে তৈরি হয়েছি। চিরকাল জয়ী হবে বাংলাদেশের মানুষ।” এর আগে চার ঘণ্টায় কলকাতা দখলের ডাক দিতে দেখা গিয়েছিল সে দেশের প্রাক্তন সেনা কর্তাকে। 

ভারতীয়দের উৎখাতের ডাক

হিন্দুদের উপরে হামলা-অত্যাচারের পর পরিবর্তনের বাংলাদেশে ভারতীয়দের উৎখাত করার হুমকিও উঠেছে। ‘ভারতীয়দের লাথি মেরে তাড়ানোর’ হুমকি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বাংলাদেশি নেতাদের হুমকির ভিডিও। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয়দের লাথি মেরে তাড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন তারেক রহমান। ভারতের বিরুদ্ধে হিংসা, ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “রাঙামাটি থেকে সিলেট পর্যন্ত ৪৫ কিমি রাস্তা ভারত আমাদের দেয়নি। ৪০০ কিমি ঘুরে যেতে হয়। তাহলে কেন ভারতকে ১৫০০ কিমি বাঁচানোর জন্য ৪০০ কিমি ট্রানজিট দেওয়া হল?”

সীমা ছাড়াচ্ছে ভারত-বিদ্বেষ

তারেক রহমানের প্রশ্ন, “ফেণী, চট্টগ্রামে ইকোনমিক জোন দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমি প্রশ্ন করছি, আপনি কি বাংলাদেশের সন্তান? এরকম সাঙ্ঘাতিক কাজ করলেন কী করে। আমরা কি পারব ভারতে চিকেন নেকে ইকোনমিক জোন তৈরি করতে? এখান নেপাল-ভুটান যাওয়ার রাস্তাটুকু আমরা পাইনি। এভাবে হবে না। আমাদের ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেতে হবে। একটা একটা করে ভারতীয়কে লাথি মেরে ভারত সীমান্তে ঢুকিয়ে দিয়ে আসতে হবে।” তারেক আরও বিষোদগার করে বলেন, “ভারত নিজের সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম, মঙ্গলা বন্দর ব্যবহার করে। কিন্তু নেপাল-ভুটানের মতো ছোট দেশ যখন বন্দর ব্যবহার করতে চাইল, ভারত অনুমোদন দেয়নি। এবার সোজাসুজি হিসেব করার সময় এসেছে।”

বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা 

হিন্দুদের ওপর হামলার মধ্যেই ভারতের বিরোধিতায় ঢাকায় মিছিল হচ্ছে প্রতিদিন। ঢাকায় প্রাক্তন সেনাকর্মীদের মিছিলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগানও উঠেছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ঢাকার সঙ্গে বিরোধিতা করছে দিল্লি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস অনুরোধ জানিয়েছেন, ইইউ ভিসা সেন্টার যেন দিল্লি থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর করা হয়। তাঁর অনুরোধেই স্পষ্ট, ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোরই চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। বিগত কয়েকদিনে একের পর এক বিএনপি নেতাকে লাগাতার ভারত-বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। এমনকী ভারতীয় পণ্য বয়কটেরও ডাক দিতে দেখা গিয়েছে। এবার তাতে নবতম সংযোজন হাফিজউদ্দিন, তারেক রহমানদের মন্তব্য। 

আরও পড়ুন: নিশানায় হিন্দু পুলিশ অফিসাররাও, সংখ্যালঘু পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা!

সক্রিয় পাকিস্তান

বাংলাদেশের ভারত-বিরোধিতার মধ্যেই পাকিস্তান প্রীতিও প্রকাশ্যে এসেছে। পাকিস্তানের আরও কাছাকাছি এসেছে ইউনূস সরকার। পাক নাগরিকদের ভিসা পাওয়া আরও সহজ করেছে ঢাকা। নৈরাজ্যের বাংলাদেশে, ফায়দা তুলতে আসরে নেমেছ পাকিস্তান-চিনও। জামাত প্রধানের সঙ্গে চিনা রাষ্ট্রদূতের বৈঠক হয়েছে। খালেদা জিয়ার বাড়িতে পৌঁছেছেন পাক হাই কমিশনার। যে ভারতের দয়ায় মাত্র ৫৩ বছর আগে পাকিস্তান সেনা বাহিনীর হাত থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিল বাংলাদশ, সেই বাংলাদেশ এবার ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি শুরু করে দিল। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে মৌলবাদী সংগঠনগুলির রমরমা বাড়ছে। পাশাপাশি মাথা চাড়া দিয়েছে জামাতের মতো জঙ্গি সংগঠন। সেখান হিন্দু -সহ একাধিক সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ক্রমশই বাড়ছে। এই অবস্থায় মৌলবাদী, জামাত আর পাকিস্তানের হাতে কাঠের পুতুল হয়ে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share