Indian Women: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত চর্চায় যুক্ত হচ্ছে দেশের মেয়েরা, এক দশকে হার বৃদ্ধি ৪ শতাংশ

parliament_(53)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নারী শিক্ষায় উন্নতির জন্য লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র সরকার। ক্রমাগত চলছে প্রচার। বেটি-বাঁচাও, বেটি-পড়াও প্রকল্পে মিলেছে সাড়া। চলছে নারীর (Indian Women) ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির চেষ্টা। তারই ফল স্বরূপ ভারত বৈজ্ঞানিক এবং শিক্ষামূলক ক্ষেত্রে একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। যেখানে ‘স্টেম’— সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যাথমেটিক্স (STEM), অর্থাৎ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত চর্চার ক্ষেত্রে স্নাতক স্তরে মেয়েদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের বৈজ্ঞানিক সম্ভাবনা শক্তিশালী করতে এবং সারা বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক স্তরে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে ভারতকে এগিয়ে দিয়েছে মেয়েদের এই সাফল্য।

এক দশকে পালাবদল

ভারতে বিজ্ঞানও গণিত চর্চার ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ শুধু প্রতীকী নয়, এটি পরিমাপযোগ্যও। দশ বছর আগে, মেয়েদের এই বিভাগে অংশগ্রহণ ছিল ৩৮.৪ শতাংশ। গত বছরে, এই হার ৪২.৬ শতাংশে পৌঁছেছে। প্রফেসর এম জগদীশ কুমার জানান, ভারতে মেয়েদের এই অগ্রগতি দেশকে এই ক্ষেত্রে বৈশ্বিক নেতা হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দেয়। প্রফেসর এম জগদীশ কুমার বলেন, ‘‘এই শতাংশ বিশ্বব্যাপী কোন অঞ্চলের তুলনায় সর্বোচ্চ, যা দেশের নারী ক্ষমতায়নের এবং বৈজ্ঞানিক শক্তির সৃজনশীলতার প্রতীক।’’

প্রধানমন্ত্রী মোদির সক্রিয় পদক্ষেপ

শিক্ষাবিদদের মতে,  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নারী শিক্ষার (Indian Women) এবং বিজ্ঞানক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলেই এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে। সরকারে উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বেটি বাচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প, যা ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা রক্ষার জন্য সরকার সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে কন্যাসন্তানদের এগিয়ে দিয়েছে পরিবার। দেশে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর মনোভাব পরিবর্তিত হয়েছে। এছাড়াও কিশোরী শক্তি যোজনার মাধ্যমে কিশোরীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। মেয়েদের প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হয়েছে।

নারী শিক্ষায় কেন্দ্রের নানা স্কলারশিপ

উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের জন্য রয়েছে একগুচ্ছ স্কলারশিপও। নারী শিক্ষার উন্নতিতে স্কলারশিপে জোরে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। পরিবারের একমাত্র কন্যাসন্তানের জন্য রয়েছে একাধিক বৃত্তির ব্যবস্থা। সিবিএসই বোর্ডের ছাত্রীরা মাসে ৫০০ টাকা করে স্কলারশিপ পায়। তবে তার জন্য দশমের পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হয় তাদের। আবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গবেষণায় নিযুক্ত মহিলাদেরও বৃত্তি দিয়ে থাকে কেন্দ্র। 

ইন্সপায়ার-শি স্কলারশিপ: কেন্দ্রের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ইনোভেশন ইন সায়েন্স পারস্যুইট ফর ইন্সপায়ারড রিসার্চ’ (ইন্সপায়ার) স্কিম চালু করা হয়েছে। এটি কেন্দ্রের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রকের স্কলারশিপ ফর হায়ার এডুকেশন (শি)-স্কিমের অন্তর্ভুক্ত। যাঁরা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে বিজ্ঞানের যে কোনও বিষয় নিয়ে পাঠরত, শুধু মাত্র সেই মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্যই এই বৃত্তির ব্যবস্থা। 

এআইসিটিই প্রগতি স্কলারশিপ ফর গার্লস: যে মহিলারা অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) স্বীকৃত কোনও প্রতিষ্ঠানে কোনও বিষয়ে টেকনিক্যাল ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি কোর্সের প্রথম বর্ষে পাঠরত, তাঁদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য প্রগতি স্কলারশিপ ফর গার্লস চালু করা হয়েছে। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই বৃত্তির আবেদন প্রক্রিয়া চলে।

সিবিএসই মেরিট স্কলারশিপ স্কিম ফর সিঙ্গল গার্ল চাইল্ড: সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)-এর তরফেও পরিবারের একমাত্র কন্যাসন্তানের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে, যার নাম— সিবিএসই মেরিট স্কলারশিপ স্কিম ফর সিঙ্গল গার্ল চাইল্ড। যে পড়ুয়ারা সিবিএসই স্বীকৃত স্কুল থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে একই স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে, শুধু মাত্র তারাই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।প্রতি মাসে বৃত্তি বাবদ মিলবে ৫০০ টাকা।

ওয়েমেন সায়েন্টিস্ট স্কিম-বি (ডব্লিউওএস-বি): কেন্দ্রের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে মহিলা বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। মূলত, যে মহিলাদের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির কোনও বিষয়ে ডিগ্রি রয়েছে, বয়স ২৭ এবং ৫৭ বছরের মধ্যে এবং কর্মজীবন থেকে বিরতি নিয়ে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কোনও উদ্ভাবনী কাজে যুক্ত হতে চান, তাঁদের জন্যই এই স্কলারশিপ। এর জন্য পড়ুয়ারা online-wosa.gov.in/wosb -এ গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।  এছাড়াও প্রগতি স্কলারশিপ ফর গার্ল স্টুডেন্টস ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন, ইউজিসি পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ ফর উইমেন ক্যান্ডিডেটস-সহ অন্যান্য সরকারি স্কলারশিপের ব্যবস্থাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: সাত দিন বিনামূল্যে চিকিৎসা, ৮ ঘণ্টার বেশি ড্রাইভিং নয়, পথ দুর্ঘটনা রুখতে সক্রিয় কেন্দ্র

নারী ক্ষমতায়নে জোর সরকারের

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-গবেষণা ক্ষেত্রে নারীদের (Indian Women) উপস্থিতি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মহিলারা এখন মহাকাশ অণ্বেষণ, জৈবপ্রযুক্তি ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। ভারতের এই অর্জন বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মডেল হিসেবে কাজ করছে, যা নারী ক্ষমতায়ন এবং বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে সমতার ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে, ভারত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার স্তরে উন্নীত হয়েছে। সেখানে নারী শক্তির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share