তবে “ঈশ্বরের পথে যেতে যেও না”—এই কথা ছাড়া বাকি সব কথা শুনবি।
“দেখি তোর হাত দেখি,”—এই বলিয়া ঠাকুর তারকের হাত দেখিতেছেন।
হাত যেন খুব ভারি, মনোযোগ দিয়ে দেখিয়া একটু পরে বলিলেন,
“একটু আড় আছে… কিন্তু ওটুকু কেটে যাবে। একটু প্রার্থনা করিস, আর এখানে একবার আসিস—ওটুকু চলে যাবে।”
ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন:
“কলকাতার বহুবাজারে বাসা তুই করেছিস?”
তারক উত্তর দিল:
“আমি আগে করিনি, তারা করেছিল।”
শ্রীরামকৃষ্ণ সহাস্যে বলিলেন:
“তুই করেছিস—তাড়াতাড়ি, বাঘের ভয়ে!”
(ঠাকুর কামিনীকে কি বাঘ বলিতেছেন?)
তারক প্রণাম করিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন।
ঠাকুর তখন ছোট খাটে শুয়ে ছিলেন, যেন ভাবিতেছেন তারকের কথা। হঠাৎ মাস্টার-কে বলিলেন,
“এদের জন্য আমি এত ব্যাকুল হই কেন?”
মাস্টার চুপ করিয়া আছেন, যেন কী উত্তর দিবেন ভাবিতেছেন।
ঠাকুর আবার জিজ্ঞাসা করিলেন,
“বল না!”
এই সময় মোহিনী মোহনের পরিবার ঠাকুরের ঘরে আসিয়া প্রণাম করিলেন। ঠাকুর তাহাদের এক পাশে বসতে দিলেন।
ঠাকুর তখন তারকের সঙ্গীর কথা মাস্টার-কে বলিতেছেন:
“ওকেও কেন সঙ্গে আনলি?”
মাস্টার বলিলেন:
“রাস্তার সঙ্গী ছিল, অনেকটা পথ একসঙ্গে এসেছে, তাই সঙ্গে আনতে হয়েছে।”
এই কথার মধ্যে হঠাৎ ঠাকুর মোহিনীর পরিবারকে উদ্দেশ করে বলিলেন,
“অপঘাত মৃত্যু হলে পেত্নী হয়। সাবধান! মনকে বুঝাবি। এত কিছু দেখলি, শুনলি, শেষে কী—এই হলো?”
মোহিনী এবার বিদায় গ্রহণ করিলেন। ঠাকুরকে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করিলেন, পরিবারও প্রণাম করিল।
ঠাকুর ঘরের মধ্যে উত্তর দিকের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন।
পরিবারটি মাথায় কাপড় ঢেকে আস্তে আস্তে ঠাকুরকে কিছু বলিতেছেন।
Leave a Reply