শ্রীরামকৃষ্ণ: “সুরেশ তুমি তো! কে ইনি?”
সুরেশ (হাসিতে হাসিতে): “আজ্ঞে, হ্যাঁ, আমার বরদা।”
(সকলের হাস্য।)
গিরিশ (ঠাকুরের প্রতি): “আচ্ছা মহাশয়, আমি ছেলেবেলায় কিছু লেখাপড়া করিনি, তবু লোকে বলে বিদ্বান।”
শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি): “মহিমা চক্রবর্তী অনেক শাস্ত্র-অস্ত্র দেখেছে, শুনেছে। খুব আধার।” “কেমন গা?”
মাস্টার: “আজ্ঞে, হ্যাঁ।”
গিরিশ: “কি বিদ্যা! ও অনেক দেখেছে—ওতে আর ভুলি না।”
শ্রীরামকৃষ্ণ (হাসিতে হাসিতে) – এখানকার ভাব কী জানো? বই, শাস্ত্র—এইসব কেবল ঈশ্বরের কাছে পৌঁছাবার পথ বলে দেয়। পথ ও উপায় জেনে নেওয়ার পর আর বই-শাস্ত্রের কী দরকার? তখন নিজে কাজ করতে হয়।
একজন একখানা চিঠি পেয়েছিল। কুটুমবাড়িতে তত্ত্ব করতে হবে—কী কী জিনিস নিতে হবে, চিঠিতে সব লেখা ছিল। কিন্তু জিনিস কিনতে যাবার সময় চিঠিখানা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
কর্তাটি তখন খুব ব্যস্ত হয়ে চিঠির খোঁজ শুরু করলেন। অনেকক্ষণ ধরে, অনেকজন মিলে খুঁজে শেষে চিঠিখানা পাওয়া গেল। তখন তিনি খুব আনন্দে, অতি যত্নে চিঠিখানা হাতে নিয়ে পড়তে লাগলেন—দেখতে লাগলেন কী লেখা রয়েছে। লেখা ছিল: ‘পাঁচ সের সন্দেশ পাঠাবে, একখানা কাপড় পাঠাবে’—আরও কত কী!
তখন আর চিঠির দরকার রইল না। চিঠি ফেলে দিয়ে তিনি সন্দেশ, কাপড় আর অন্যান্য জিনিস কিনতে বেরিয়ে পড়লেন।
চিঠির দরকার কতক্ষণ? যতক্ষণ সন্দেশ, কাপড় ইত্যাদির খবর জানা না যায়। খবর জেনে গেলে নিজে কর্মে প্রবৃত্ত হতে হয়।
ঠিক এইরকমই—শাস্ত্রও কেবল ঈশ্বরকে পাবার উপায়ের কথা বলে। কিন্তু খবর সব জেনে গেলে নিজে সাধনা শুরু করতে হয়। তবেই তো বস্তু (ঈশ্বর) লাভ হয়।
Leave a Reply