ঠাকুর গাড়ি করিয়া নিমগড়, স্বামীর গলিতে, দেবেন্দ্রর বাড়িতে যাইতেছেন। সঙ্গে ছোট নরেন, মাস্টার, আরও দুই-একজন ভক্ত। পূর্ণর কথা কইতেছেন, পূর্ণর জন্য ব্যাকুল হইয়া আছেন।
শ্রী রামকৃষ্ণ: খুব আস্থা। তা না হলে ওর জন্য চাকরি জুটিয়ে দিতেন? ও তো এসব কথা জানে না।
শ্রীরামকৃষ্ণ মাস্টারের প্রতি “খুব আধার, তা না হলে ওর জন্য জপ করিয়ে নিলে — ও তো এসব কথা জানে না।”
মাস্টার ও ভক্তেরা অবাক হয়ে শুনিতেছেন যে ঠাকুর পূর্ণর জন্য বীজমন্ত্র জপ করিয়াছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ: “আজ তাকে আনলেই হত, আনলে না কেন?”
ছোট নরেনের হাসিতে কী আর! ঠাকুর-ভক্তেরা সকলে হেসে উঠিতেছেন। ঠাকুর আনন্দে তাহাকে দেখাইয়া মাস্টারকে বলিতেছেন:
“দেখো দেখো, ন্যাকা ন্যাকা হাসে, যেন কিছু জানে না — কিন্তু মনের ভিতর কিছু নাই। তিনটি মনে নাই: কামিনী, কাঞ্চন। মন থেকে একেবারে না গেলে ভগবান-লাভ হয় না।”
ঠাকুর দেবেন্দ্রর বাড়ি যাইতেছেন দক্ষিণেশ্বরে। দেবেন্দ্রকে একদিন বলিতে ছিলেন, “একদিন মনে করেছি তোমার বাড়িতে যাব।” দেবেন্দ্র বলিয়াছিলেন, “আমিও তাই বলবার জন্য আজ এসেছি। এই রবিবারে যেতে হবে।” ঠাকুর বলিলেন, “কিন্তু তোমার আয় কম, বেশি লোক বলো না, আর গাড়িভাড়া বড় বেশি।”
দেবেন্দ্র হাসিয়া বলিয়াছিলেন, “তাই কম হলেই বা! ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেত্।” অর্থাৎ, ধার করে ঘি খাবে, ঘি খাওয়া চাই।
ঠাকুর এই কথা শুনিয়া হাসিতে লাগলেন, হাসি আর থামেনা।
কেউ পরে বাড়িতে পৌঁছাইয়া বলিতেছেন, “দেবেন্দ্র, আমার জন্য খাবার কিছু করো না, অমনি সামান্য শরীর তত ভালো নয়।”
Leave a Reply