“গুরুগিরি বেশ্যাগিরির মতো। — ছাড় টাকা-কড়ি, লোকমান হওয়া, শরীরের সেবা, এই সবের জন্য আপনাকে বিক্রি করা। যে শরীর মন আমার দ্বারা ঈশ্বরের লাডু করা যায়, সেই শরীর মন আমাকেও সামান্য জিনিসের জন্য এঁটোপ করে রাখা ভাল নয়। এককালে বলেছিল, সাবির এখন যে সময়, এখন তার বেশ হয়েছে — একখানা ঘটভাড় নিয়েছে — ঘুঁটে বে গোবার বে, তক্তোপোষ, দুখানা বালিশ হয়েছে, বিছানা, মাদুর, তাকিয়া — কতলোক বসীতেছে, যাচ্ছে আসছে। অর্থাৎ সাবি এখন বেশ হয়েছে তাই সুখ ধরে না! আগে সে ভদ্রলোকের বাড়ির দাসী ছিল, এখন বেশ হয়েছে। সামান্য জিনিসের জন্য নিজের সর্বনাশ।”
শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনায় প্রলোভন — ব্রহ্মজ্ঞান ও অভেদবুদ্ধি।
শ্রীরামকৃষ্ণ ও মুসলমান ধর্ম
“সাধনার সময় ধ্যান করতে করতে আমি আরো কত কী দেখিতাম। বেলতলায় ধ্যান করিতি, পাপপুরুষ এসে কত্তকালের লোভ দেখাইতে লাগিল। লড়িতে গোরার রূপ ধরে এসেছিল। টাকা, মান, রমণ, সুখ নানা রকম শক্তি, এই সব দিতে চাইল। আমি মাকে ডাকিতে লাগিলাম। বড় গুজরাথ। মা দেখা দিলেন, তখন আমি বললাম, মা ওকে কেটে ফেলো। মা সেই রূপ — সেই ভুবনমোহন রূপ — মনে পড়ছে। কৃষ্ণমূর্তির রূপ! কিন্তু চাঁদনীতেও যেন জ্যোতিষ্মতী মূর্তি।”
ঠাকুর চাপ করিলেন। ঠাকুর আবার বলিতেছেন — “আরও কত কী বলতে দে না! — মুখ যেন কে আটকে দেয়!”
“সজনে তুলসী এক বংশ হত। ভেদ-বুদ্ধি দূর করিয়া দিলেন। বেলতলায় ধ্যান করিতি, দেখিল এক জন দেব মুসলমান (মোহাম্মদ) সান্নিধ্য করিয়া ভাত লইয়া সামনে এল। সান্নিধ্য হইতে শ্রেষ্ঠদের খাইয়া আমাকে দুটি দিল। মা দেখাইলেন, এক বৈ দু’ই নাই। সচিদানন্দই নানা রূপ ধরিয়া রহিয়াছেন। তিনিই জীবজগৎ সমস্তই হইয়াছেন। তিনিই অম্বর হইয়াছেন।”
Leave a Reply