Ramakrishna 495: “যার জ্ঞান হয়েছে, তার নিন্দার ভয় কি? কামারের নেয়াই, কত হাতুড়ির ঘা পড়েছে, কিছুতেই কিছু হয় না”

ramakrishna kathamrita by mahendranath gupta 480th copy

৪৮ শ্রীরামকৃষ্ণ কাপ্তেন, নরেন্দ্র প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বরে

  প্রথম পরিচ্ছেদ

১৮৮৫, ১৩ই জুন
ঠাকুরের গলার অসুখের সূত্রপাত

অবতার বা নরলীলার গুহ্য অর্থ—দ্বিজ ও পূর্বসংস্কার 

শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—মনুষ্যলীলা কেন জান? এর ভিতর তাঁর কথা শুনতে পাওয়া যায়। এর ভিতর তাঁর বিলাস, এর ভিতর তিনি রসাস্বাদন করেন।

“আর সব ভক্তদের ভিতর তাঁরই একটু একটু প্রকাশ! যেমন জিনিস অনেক চুষতে চুষতে একটু রস, ফুল চুষতে চুষতে একটু মধু। (মাস্টারের প্রতি) তুমি এটা বুঝেছ?”

মাস্টার-আজ্ঞা হাঁ, বেশ বুঝেছি।

ঠাকুর (Ramakrishna) দ্বিজর সহিত কথা কহিতেছেন। দ্বিজর বয়স ১৫।১৬, বাপ দ্বিতীয় পক্ষে বিবাহ করিয়াছেন। দ্বিজ প্রায় মাস্টারের সঙ্গে আসেন। ঠাকুর তাঁহাকে স্নেহ করেন। দ্বিজ বলিতেছিলেন, বাবা তাঁকে দক্ষিণেশ্বরে আসিতে দেন না।

শ্রীরামকৃষ্ণ (দ্বিজর প্রতি) — তোর ভাইরাও? আমাকে কি অবজ্ঞা করে?

দ্বিজ চুপ করিয়া আছেন।

মাস্টার—সংসারের আর দু-চার ঠোক্কর খেলে যাদের একটু-আধটু যা অবজ্ঞা আছে, চলে যাবে।

শ্রীরামকৃষ্ণ—বিমাতা আছে, ঘা (blow) তো খাচ্ছে।

সকলে একটু চুপ করিয়া আছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—একে (দ্বিজকে) পূর্ণর সঙ্গে দেখা করিয়ে দিও না।

মাস্টার—যে আজ্ঞা। (দ্বিজর প্রতি)—পেনেটিতে যেও।

শ্রীরামকৃষ্ণ—হাঁ, তাই সব্বাইকে বলছি—একে পাঠিয়ে দিও; ওকে পাঠিয়ে দিও। (মাস্টারের প্রতি) তুমি যাবে না?

ঠাকুর পেনেটির মহোৎসবে যাইবেন। তাই ভক্তদের সেখানে যাবার কথা বলিতেছেন।

মাস্টার—আজ্ঞা, ইচ্ছা আছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ (Kathamrita)—বড় নৌকা হবে, টলটল করবে না। গিরিশ ঘোষ যাবে না?

হাঁ’ ‘না’ “Everlasting Yea— Everlasting Nay”

ঠাকুর দ্বিজকে একদৃষ্টে দেখিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—আচ্ছা এত ছোকরা আছে, এই বা আসে কেন? তুমি বল, অবশ্য আগেকার কিছু ছিল!

মাস্টার—আজ্ঞা হাঁ।

শ্রীরামকৃষ্ণ—সংস্কার। আগের জন্মে কর্ম করা আছে। সরল হয়ে শেষ জন্মে। শেষ জন্মে খ্যাপাটে ভাব থাকে।

“তবে কি জানো?—তাঁর ইচ্ছা। তঁর ‘হাঁ’তে জগতের সব হচ্চে; তঁর ‘না’তে হওয়া বন্ধ হচ্চে। মানুষের আশীর্বাদ করতে নাই কেন?

“মানুষের ইচ্ছায় কিছু হয় না, তাঁরই ইচ্ছাতে হয়—যায়!

“সেদিন কাপ্তেনের ওখানে গেলাম (Kathamrita)। রাস্তা দিয়ে ছোকরারা যাচ্ছে দেখলাম। তারা একরকমের। একটা ছোকরাকে দেখলাম, উনিশ-কুড়ি বছর বয়স, বাঁকা সিঁতে কাটা, শিস দিতে দিতে যাচ্ছে! কেউ যাচ্ছে বলতে বলতে, ‘নগেন্দ্র! ক্ষীরোদ!’

“কেউ দেখি ঘোর তমো;—বাঁশী বাজাচ্ছে,—তাতেই একটু অহংকার হয়েছে। (দ্বিজর প্রতি) যার জ্ঞান হয়েছে, তার নিন্দার ভয় কি? তার কূটস্থ বুদ্ধি — কামারের নেয়াই, তার উপর কত হাতুড়ির ঘা পড়েছে, কিছুতেই কিছু হয় না।

“আমি (অমুকের) বাপকে দেখলাম রাস্তা দিয়ে যাচ্চে।”

মাস্টার—লোকটি বেশ সরল।

শ্রীরামকৃষ্ণ—কিন্তু চোখ রাঙা।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share