৫০ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতা নগরে ভক্তমন্দিরে
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
১৮৮৫, ২৮শে জুলাই
গণুর মার বাড়িতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ
ঠাকুর (Ramakrishna) বলিতেছেন, “এর উপরেই বস না। আই আমি লিচ্ছি।” এই বলিয়া আসন গুটাইয়া লইলেন। ছোকরারা গান গাহিতেছে:
কেশব কুরু করুণাদীনে কুঞ্জকাননচারী
মাধব মনোমোহন মোহন মুরলীধারী।
(হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, মন আমার) ॥
ব্রজকিশোর, কালীয়হর কাতরভয়ভঞ্জন,
নয়ন-বাঁকা, বাঁকা-শিখিপাখা, রাধিকা-হৃদিরঞ্জন;
গোবর্ধনধারণ, বনকুসুমভূষণ, দামোদর কংসদর্পহারী।
শ্যাম রাসরসবিহারী।
(হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল, মন আমার) ॥
গান—এস মা জীবন উমা—ইত্যাদি।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Kathamrita)—আহা কি গান!—কেমন বেহালা!—কেমন বাজনা!
একটি ছোকরা ফ্লুট বাজাইতেছিলেন। তাঁহার দিকে ও অপর আর আকটি ছোকরার দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করিয়া বলিতেছেন। “ইনি ওঁর যেন জোড়।”
এইবার কেবল কনসার্ট বাজনা হইতে লাগিল। বাজনার পর ঠাকুর আনন্দিত হইয়া বলিতেছেন, “বা! কি চমৎকার!”
একটি ছোকরাকে নির্দেশ করিয়া বলিতেছেন, “এঁর সব (সবরকম বাজনা) জানা আছে।”
মাস্টারকে বলিতেছেন,—এঁরা সব বেশ লোক।”
ছোকরাদের (Ramakrishna) গান-বাজনার পর তাহারা ভক্তদের বলিতেছে—“আপনারা কিছু গান!” ব্রাহ্মণী দাঁড়াইয়া আছেন। তিনি দ্বারের কাছ থেকে বলিলেন, গান এরা কেউ জানে না, এক মহিমবাবু বুঝি জানেন, তা ওঁর সামনে উনি গাইবেন না।
একজন ছোকরা — কেন? আমি বাবা সুমুখে গাইতে পারি।
ছোট নরেন (উচ্চহাস্য করিয়া) — অতদূর উনি এগোননি!
সকলে হাসিতেছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে ব্রাহ্মণী আসিয়া বলিতেছেন,—“আপনি ভিতরে আসুন।” শ্রীরামকৃষ্ণ বলিতেছেন (Kathamrita), “কেন গো!”
ব্রাহ্মণী—সেখানে জলখাবার দেওয়া হয়েছে; যাবেন?
শ্রীরামকৃষ্ণ—এইখানেই এনে দাও না।
ব্রাহ্মণী—গণুর মা বলেছে, ঘরটায় একবার পায়ের ধুলা দিন, তাহলে ঘর কাশী হয়ে থাকবে, — ঘরে মরে গেলে আর কোন গোল থাকবে না।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna), ব্রাহ্মণী ও বাড়ির ছেলেদের সঙ্গে অন্তঃপুরে গমন করিলেন। ভক্তেরা চাঁদের আলোতে বেড়াইতে লাগিলেন। মাস্টার ও বিনোদ বাড়ির দক্ষিণদিকে সদর রাস্তার উপর গল্প করিতে করিতে পাদচারণ করিতেছেন!

Leave a Reply