Winter Health: বছরশেষের উদযাপনে স্বাস্থ্যঝুঁকি! সতর্ক না হলে বাড়বে সংক্রমণ

শীতের স্বাস্থ্য

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বছরশেষের উদযাপনে স্বাস্থ্যে কোন সঙ্কট দেখা দিতে পারে? কীভাবে সুস্থ থাকবেন? কোন ঘরোয়া উপাদানে ভরসা বিশেষজ্ঞ মহলের?

উত্তর থেকে দক্ষিণ, শীত জাঁকিয়ে পড়েছে। বছর শেষের এই মরশুমে থাকে নানান উদযাপন। বন্ধুদের সঙ্গে দিনভর পিকনিক, রাত জেগে আড্ডা! পরিবারের সঙ্গে একটু বিশেষ সময় কাটানো! অনেকেরই এমন নানান পরিকল্পনা থাকে। তবে, এই সবকিছুই উপভোগ করা যায়, যদি শরীর সুস্থ থাকে। বছর শেষে এই শীতের মরশুমে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, সতর্ক আর সচেতন না থাকলেই বিপদ বাড়বে। তবে শরীর সুস্থ রাখতে সচেতনতা আর সতর্কতার পাশপাশি কিছু ঘরোয়া উপাদানেই ভরসা রাখছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

কোন স্বাস্থ্য সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল?

বাড়তে পারে ফুসফুসের সংক্রমণ!

বছর শেষের এই সময়ে বাড়তে পারে ফুসফুসের সংক্রমণ। এমনটাই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই আবহাওয়ায় বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে বায়ুদূষণের মাত্রা আরও বাড়ে। তাছাড়া কলকাতা, হাওড়া সহ রাজ্যের একাধিক শহরে শীতের মরশুমে বায়ু দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়েছে। ইংরেজি বছর শেষের এই উদযাপনে অনেকেই বাজি পোড়ায়। এর ফলে পরিবেশ আরও বেশি দূষিত হয়। ফলে ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ভাইরাস ঘটিত রোগের দাপট বাড়ে!

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শীতের মরশুমে বাতাসে নানান ভাইরাস সক্রিয়তা বাড়ে। তাই ভাইরাস ঘটিত জ্বর-সর্দির ভোগান্তি হয়। আবার এই সময়ে নানান উৎসব উদযাপনের জন্য ভিড় হয়। তাই ভিড় থেকে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাছাড়া ফুসফুসের সংক্রমণের জেরে শ্বাসনালীর নানান রোগের দাপট বাড়ে। তাই অনেকেই কাশিতে নাজেহাল হন।

বাড়তে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি!

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেশে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জেরেই হৃদরোগের সমস্যা বাড়ছে। আবার শীতের মরশুমে শরীরের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপের সমস্যা তৈরি হয়। তাছাড়া, অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, নিয়মিত শারীরিক কসরত না করার মতো অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের জেরেই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। উৎসবের মরশুমে অনেকেই অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া করেন, পর্যাপ্ত ঘুমের ঘাটতি দেখা যায়। এগুলো শরীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা তৈরি করে আবার কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

পেটের অসুখ আর হজমের সমস্যা বাড়তে পারে!

বছর শেষের এই সময় পিকনিকের মরশুম। তাই দেদার খানাপিনা চলে। অনেকেই অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় প্রাণীজ প্রোটিন খান। এর ফলেই পেটের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। আবার অনেক সময়েই নানান উদযাপনে জল পরিশ্রুত কিনা সেদিকে নজরদারি থাকে না। তাই পেটের অসুখের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। তাছাড়া, এই সময়ে অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার খাওয়ার জেরে এবং রাত জাগলে হজমের সমস্যা বাড়তে পারে। বমি, পেট ব্যথার মতো নানান সমস্যায় ভোগান্তি দেখা যেতে পারে।

লিভারের ক্ষতি হতে পারে!

হজম সমস্যা লাগাতার হলে লিভারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। লিভারের কার্যক্ষমতা কমে। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, বছর শেষের নানান উৎসবে অনেকের উদযাপনের অংশ হয় মদ্যপান। আর এই অভ্যাস বিপজ্জনক। মদ্যপানের অভ্যাস লিভারের জন্য ক্ষতিকারক। তাই প্রত্যেক বছরেই শীতের পরে লিভারের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়।

কোন ঘরোয়া উপাদানে ভরসা রাখছেন বিশেষজ্ঞ মহল?

রান্নাঘরের চেনা উপাদানে কমবে সংক্রমণের ঝুঁকি!

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, শরীরে নানান ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে রান্নাঘরের চেনা উপাদান সাহায্য করবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, আদা, রসুন, হলুদ, এলাচ, দারুচিনির মতো পরিচিত মশলা নিয়মিত রান্নায় ব্যবহার করলে একদিকে শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে। বক্ষঃনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। সর্দি-কাশির ভোগান্তি কমাতেও সাহায্য করবে। এই মশলাগুলো শরীরকে ভাইরাস ঘটিত অসুখের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।

উৎসবের মেনু নির্বাচনেও থাকুক সচেতনতা!

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, উৎসব উদযাপনে দেদার খাওয়া চলে। কিন্তু সামান্য সচেতনতা থাকলে ভোগান্তি কমবে। খাবারের মেনু নির্বাচনের সময়েও স্বাস্থ্য সচেতনতার দিক বাদ দিলে চলবে না। বিশেষত রাতের দিকে খাবারের সময় পরিমাণের দিকে নজরদারি জরুরি। আবার কী খাওয়া হচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণ চর্বি জাতীয় মাংসের পদ এড়িয়ে চলা উচিত। আবার অনেক রকম তেলেভাজা জাতীয় খাবার খাওয়া চলবে না।‌ বরং পুষ্টিবিদদের একাংশের পরামর্শ, মেনুতে নানান রকমের স্যালাড রাখা যেতেই পারে। সব্জি, ফলের স্যালাড সহজে হজম হয়। আবার ফল রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। তার পাশপাশি তেলে ভাজার বদলে হরেক রকমের স্যুপ রাখা যেতে পারে। শীতের আমেজে গরম স্যুপ ভালো লাগবে।‌ আবার হজম সহজেই হবে। মাংসের পদ রান্না করলেও তেল মশলা নিয়ে সজাগ থাকা জরুরি। তাঁদের পরামর্শ, মাংসের পদ রান্নার সময় খেয়াল রাখা জরুরি, যাতে মাংসের সঙ্গে নানান সব্জি থাকে। প্রোটিনের সঙ্গে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন, ফাইবার, মিনারেল পৌঁছলে হজম শক্তি ভালো থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।

নিয়মিত শারীরিক কসরত জরুরি!

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত শারীরিক কসরত জরুরি। শীতের আবহাওয়ায় অনেকেই নিয়মিত শারীরিক কসরত করেন না। আর উপরে বাড়তি খাওয়া শরীর সুস্থ থাকার পথে বাড়তি বিপদ তৈরি করে‌। নিয়মিত শারীরিক কসরত করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। ফলে অতিরিক্ত ওজন এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share