Chandrayaan-3: অবতরণের পর কাজ করবে পেলোডগুলিই! ২ সপ্তাহ ধরে কী কী কাজ করবে রম্ভা-চ্যাস্টেরা?

চাঁদের পরিবেশ বুঝবে প্রজ্ঞান! ইসরোকে বার্তা পাঠাবে বিক্রম
vikram-lander
vikram-lander

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ক্ষনিকের অপেক্ষা! কিছুক্ষণ পরে চাঁদের মাটি ছুঁয়েই অরবিটারে বার্তা পাঠাবে ল্যান্ডার বিক্রম। তার পর কিছু অপেক্ষা। ল্যান্ডার-এর পেটের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। চাঁদে অবতরণের কিছুক্ষণ পরে, বিক্রম ল্যান্ডারটি খুলবে এবং রোভারের জন্য একটি র‌্যাম্প তৈরি করবে। অর্থাৎ সেই র‌্যাম্প ধরেই রোভারটি এদিক ওদিক ঘুরে বেরাবে। ছয় চাকার রোভারে ভারতের পতাকা এবং ইসরোর লোগো রয়েছে। অবতরণের প্রায় চার ঘণ্টা পর এটি ল্যান্ডারের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে নামতে শুরু করবে। অবতরণের সময় রোভারের গতিবেগ হবে প্রতি সেকেন্ডে ১ সেমি। রোভার তার নেভিগেশন ক্যামেরার মাধ্যমে আশেপাশের পরিবেশ অনুধাবন করতে থাকবে।

কীভাবে কাজ করবে সাতটি পে-লোড

সৌরশক্তি চালিত ল্যান্ডার এবং রোভারটি চাঁদের চারপাশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে দুই সপ্তাহ (পৃথিবীর হিসেবে) সময় পাবে। চন্দ্রযান-৩ এর সাতটি পেলোড রয়েছে - চারটি বিক্রম ল্যান্ডারে, দুটি প্রজ্ঞান রোভারে এবং একটি প্রপালশন মডিউলে। ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমানাথ জানিয়েছেন, “আমরা জানি চাঁদের কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। কিন্তু এটা ঠিক নয় কারণ এর থেকে গ্যাস বের হয়। বরং তারা আয়নিত হয় এবং পৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি থাকে। এটি দিন এবং রাতের সাথে পরিবর্তিত হয়।” 

বিক্রমের পে-লোড

বিক্রমের চারটি পে-লোড হল মুখ্য। রম্ভা, চ্যাস্টে, ইলসা এবং অ্যারে। চাঁদে অবতরণের পর পরই কাজ শুরু করবে ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকা এই চারটি পেলোড। এই পেলোডগুলির সাহায্যেই চাঁদে বাজিমাত করবে চন্দ্রযান। এই পেলোডগুলিই চাঁদের ‘অজানা রহস্য’ খুলে দেবে ইসরোর বিজ্ঞানীদের সামনে।

রম্ভা (RAMBHA)- রেডিও অ্যানাটমি অব মুন বাউন্ড হাইপারসেনসিটিভ আয়নোস্ফিয়ার এবং অ্যাটমোস্ফিয়ার বা রম্ভা চাঁদের বুকে সূর্য থেকে আসা প্লাজমা কণার ঘনত্ব, পরিমাণ এবং পরিবর্তনগুলি নিরীক্ষণ করবে।
চ্যাস্টে (ChaSTE)- চন্দ্রের সারফেস থার্মোফিজিকাল এক্সপেরিমেন্ট বা চ্যাস্টে মেপে দেখবে চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা। 
ইলসা (ILSA)- অবতরণস্থলের আশপাশের মাটির কম্পন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে ইলসা বা ইনস্ট্রুমেন্ট ফর লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি।
এলআরএ (LRA)- ‘লেজার রেট্রোরিফ্লেক্টর’ অ্যারে চাঁদের গতিশীলতা বোঝার চেষ্টা করবে। চাঁদের প্রাকৃতিক কার্যপ্রণালী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য নিরীক্ষণ করে তা পৃথিবীতে পাঠানোর দায়িত্ব থাকছে এই চার পেলোডের কাঁধে।

রোভারের পে-লোড

আলফা পার্টিকেল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (APXS)- রোভারের ‘আলফা পার্টিকল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার’ নামে যন্ত্রটি অবতরণস্থলের কাছে চন্দ্রপৃষ্ঠে কী কী উপাদান রয়েছে তা দেখবে। ওই যন্ত্রে কিউরিয়াম নামে তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে এক্স-রে ও আলফা পার্টিকল নির্গত হবে এবং তার মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলবে। চাঁদের পাথরের মধ্যে লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, টাইটেনিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে কি না, তার সন্ধানও করবে সে। 
লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ (LIBS)-রোভারের ‘লেসার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ’ যন্ত্রের কাজ হল অবতরণস্থলের আশপাশে চাঁদের মাটিতে কী উপাদান কত পরিমাণে রয়েছে তা খুঁজে বার করা, তবে প্রথম যন্ত্রের থেকে আলাদা পদ্ধতিতে। 

প্রপালশন মডিউলের পে-লোড

প্রপালশন মডিউলটি চন্দ্রের কক্ষপথ থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল অধ্যয়ন করবে। এই কাজে তাকে সাহায্য করবে তার একমাত্র পেলোড, বাসযোগ্য প্ল্যানেট আর্থের স্পেকট্রো-পোলারিমেট্রি (শেপ)। এটি কয়েক মাস (বা বছর) চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং মেঘের উপর স্পেকট্রোস্কোপি এবং পোলারাইজেশন অধ্যয়ন করবে, বায়োসিগনেচার সংগ্রহ করবে যা বাসযোগ্য এক্সোপ্ল্যানেট সনাক্ত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: ল্যান্ডারের ‘সফট ল্যান্ডিং’ নয়, বিজ্ঞানীদের চিন্তায় রেখেছে চাঁদের ধুলো! কেন?

চাঁদে বায়ুমণ্ডল নেই, চৌম্বকক্ষেত্রও নেই। তবে বিপুল জলের খোঁজ পেলে, (H2O)সেখান থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাইড্রজেন ও অক্সিজেনে ভেঙে নেওয়া সম্ভব। এই অক্সিজেন শ্বাসপ্রশ্বাসকে স্বাভাবিক রাখবে। আর হাইড্রজেন ব্যবহার করা যেতে পারে জ্বালানি হিসেবে। চাঁদের ওই মেরুতে আবার বরফ থাকার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। চাঁদের আধাঁর পিঠের ঠিক কোথায় বরফ জমে আছে তার খোঁজ চালাবে প্রজ্ঞান।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles