Author: ishika-banerjee

  • Suvendu Adhikari: নজিরবিহীন! চ্যাংদোলা করে বার করা হল বিজেপি বিধায়কদের, ”ওরা মার্শাল নয়, তৃণমূলের গুন্ডা” বললেন শুভেন্দু

    Suvendu Adhikari: নজিরবিহীন! চ্যাংদোলা করে বার করা হল বিজেপি বিধায়কদের, ”ওরা মার্শাল নয়, তৃণমূলের গুন্ডা” বললেন শুভেন্দু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উত্তপ্ত বিধানসভা, শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) পর এবার বিধানসবার বিশেষ অধিবেশনে সাসপেন্ড বিজেপির শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh)। নজিরবিহীন ঘটনা বিধানসভায়। চলল শাসকের তুঘলকি শাসন। মার্শাল ডেকে বিধানসভা (West Bengal Assembly) থেকে বার করে দেওয়া হল শঙ্কর ঘোষকে। শঙ্কর ঘোষের পর সাসপেন্ড করা হয় অগ্নিমিত্রা পাল। তারপর মিহির গোস্বামী, অশোক দিন্দা, বঙ্কিম ঘোষকেও সাসপেন্ড করা হয়। মিহির গোস্বামীকে কার্যত চ্যাংদোলা করে বার করা হয়। প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি বিধায়করা।

    নেত্রীর নির্দেশেই হেনস্থা!

    বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন চলছিল। প্রশ্নত্তোর পর্ব এর আগে বয়কট করেছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার সময় সরব হয়ে ওঠেন বিজেপি বিধায়করা। দু পক্ষই একে অপর পক্ষকে চোর চোর স্লোগান দিতে শুরু করেন। সেই সময় বিরোধীদের উদ্দেশে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অনুরোধ করেন, বিধানসভার মর্যাদা রক্ষা করতে। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে আসনে ফিরে যেতে নির্দেশ দেন স্পিকার। ‘শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গোটা অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হল, এমন প্রশ্নই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তুলেছিলেন শঙ্কর ঘোষ। পরিস্থিত জটিল দেখে বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে অধ্যক্ষ বলেন, তারা যেন বিধানসভার বাইরে গিয়ে স্লোগান তোলেন। শুধু স্পিকার নন নিজের দলের বিধায়কদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বিজেপি বিধায়করা যখন বলবে তখন কাউকে বলতে দেবে না।” তাই হয়, গণতন্ত্র বিসর্জন দিয়ে দলনেত্রীর কথামতো চলতে থাকে বিধানসভা।

    বিরোধী দলনেতাকে সাসপেন্ড অযৌক্তিক

    এদিন, রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সাসপেনশন নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু’রকমের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় বিজেপি। শুভেন্দু এ প্রসঙ্গে বলেন, “স্পিকারের ভয়েস রেকর্ডিংও তো তাই বলেছে যে মঙ্গলবার পর্যন্ত সাসপেনশন। পরে টাইপ করে দিয়েছে। আসলে নেত্রীর নির্দেশ বিরোধী দলনেতাকে বাইরে রাখবেন। আমাদের বিধায়করা ভিতরে ঢুকবে, বুঝিয়ে দেবে, বিজেপিতে একজন শুভেন্দু নেই।” বিজেপির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার অধিবেশনের শেষ দিন শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট ওই দিনের জন্যই শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু পরে স্পিকার বাইরে এসে জানান, এই সেশন যতদিন চলবে, ততদিন পর্যন্তই শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়। বিজেপির বক্তব্য, স্পিকার কীভাবে বিধানসভার ভিতরে এক কথা বলতে পারেন, বাইরে আরেক কথা বলতে পারেন? এই গোটা বিষয়টিই পরিষ্কার নয়। । যদিও বিধানসভার তরফ থেকে স্পষ্ট করেই বলে দেওয়া হয়েছে এবার, কেবল ওই দিনের জন্য নয়, গোটা অধিবেশন পর্বের জন্যই শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

    গণতন্ত্রের হত্যা!

    বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিধানসভা (West Bengal Assembly) কক্ষে পৌঁছনোর আগে থেকেই বিজেপি বিধায়কদের স্লোগান দিতে শোনা যায়। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা নিয়ে সরব হন বিজেপি বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রী অধিবেশন কক্ষে পৌঁছনোর পরে বিরোধিতা আরও জোরাল হয় বিজেপির। শঙ্কর ঘোষকে কার্যত টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করার চেষ্টা হয়। পড়ে যান তিনি। বিধানসভা কক্ষে অশান্তি যখন তুঙ্গে, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্লোগান দিতে হলে বাইরে বেরিয়ে যান, বাইরে গিয়ে স্লোগান দিন। মার্শালকে অধ্যক্ষ নির্দেশ দেন, যাঁরা অশান্তি করছেন, তাঁদের বাইরে বের করে দিতে হবে। এর পরেই মার্শালের সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। প্রবল অশান্তি, ঠেলাঠেলিতে পড়ে যান শঙ্কর ঘোষ। অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মেঝেতে শুয়ে পড়েন শঙ্কর। শঙ্কর ঘোষের পড়ে যাওয়ার ভিডিয়ো শেয়ার করে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ‘আজ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় গণতন্ত্রকে হত্যা করলো মমতা ও তাঁর প্রশাসন।’ শঙ্কর ঘোষের মাথায় চোট লাগে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) । বিরোধী দলনেতা বলেন, ওরা মার্শাল নয়, তৃণমূলের গুন্ডা। জানা গিয়েছে, শঙ্করকে জে এন রায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

  • Semicon India 2025: ভারত পেল প্রথম দেশীয় সেমিকন্ডাক্টর চিপ, ‘ডিজিটাল হিরে’, বললেন মোদি

    Semicon India 2025: ভারত পেল প্রথম দেশীয় সেমিকন্ডাক্টর চিপ, ‘ডিজিটাল হিরে’, বললেন মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের এক মাইলফলক স্পর্শ করল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) উপস্থিতিতে দেশের প্রথম সম্পূর্ণ দেশিয় মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor) ‘বিক্রম ৩২০১’ (Vikram 3201) লঞ্চ করল ইসরো (ISRO)। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মাইক্রোচিপকে ‘ডিজিটাল হিরে’ আখ্যা দিলেন। তিনি বলেন, “যদি বিগত শতক তেলের দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে, তবে এই শতক গঠিত হবে মাইক্রোচিপ দ্বারা।”

    প্রধানমন্ত্রীকে চিপ উপহার

    মঙ্গলবার ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে দেশের প্রথম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ চিপ তুলে দেন। অশ্বিনী জানান, “ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশন চালুর পর থেকে গোটা বিশ্বের আস্থা ভারতের প্রতি বেড়েছে। বর্তমানে দেশে পাঁচটি সেমিকন্ডাক্টর ইউনিট নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।” তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দেশের প্রথম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ চিপ উপহারও দেন। মন্ত্রী আরও জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দুটি নতুন উৎপাদন ইউনিট চালু হতে চলেছে।

    সেমিকন্ডাক্টর চিপ এখন ‘ডিজিটাল হিরে’

    ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’ (Semicon India 2025) সম্মেলনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “গত শতক গড়ে উঠেছিল তেলের উপর। আর বর্তমান যুগ দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট একটি চিপের উপর (Oil Was Black Gold, Chips Are Digital Diamonds)।” তিনি বলেন, তেলকে যেমন একসময় ‘কালো সোনা’ (Black Gold) বলা হত, তেমনই সেমিকন্ডাক্টর চিপ এখন ‘ডিজিটাল হিরে’ (Digital Diamond)। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, বিশ্ব আজ ভারতের উপর আস্থা রাখছে, বিশ্বাস রাখছে। ইতিমধ্যেই ২০২১ সালের পর থেকে ১০টি সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্পে প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। “ভারতই গড়ে তুলবে ভবিষ্যতের সেমিকন্ডাক্টর দুনিয়া,” জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫ সম্মেলন আগামী তিন দিন ধরে চলবে এবং দেশের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে গতি দিতে গবেষণা, প্রযুক্তি, বিনিয়োগ এবং নীতিনির্ধারণী দিক থেকে এক নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    ভারতে তৈরি ক্ষুদ্রতম চিপ বদলাবে দুনিয়া

    মোদি আরও জানান, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশনের পরবর্তী ধাপে কাজ শুরু করেছে। নতুন ‘ডিজাইন-লিঙ্কড ইনসেনটিভ (DLI)’ প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দেওয়ার প্রস্তুতিও চলছে। তাঁর কথায়, “দূরে নয় সেই দিন, যেদিন ভারতে তৈরি ক্ষুদ্রতম চিপ বদলে দেবে গোটা দুনিয়া।” শুধু চিপ উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ নয়, সেমিকন্ডাক্টরকে ঘিরে গোটা এক ইকোসিস্টেম তৈরি করছে ভারত। এমনটাই দাবি প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর মতে, এই উদ্যোগ ভারতের শিল্পকে করবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক এবং আত্মনির্ভরশীল। তিনি আরও বলেন, দেশের চাহিদা মেটাতে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত প্রয়োজনে উপযুক্ত খনিজ পদার্থের জোগান নিশ্চিত করতে ভারত ‘ক্রিটিক্যাল মিনারেলস মিশন’-এর উপর কাজ করছে।

    মাইক্রোচিপ ‘বিক্রম’ আদতে কী?

    ‘বিক্রম-৩২০১’ একটি ৩২-বিট মাইক্রোপ্রসেসর, যার নিজস্ব ইনস্ট্রাকশন সেট আর্কিটেকচার রয়েছে। এটি একসঙ্গে ৩২ বিট ডেটা প্রসেস করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের নির্দেশ পালন করতে সক্ষম। প্রসেসরটি বিশেষভাবে সমর্থন করে এডিএ প্রোগ্রামিং ভাষাকে—যা উপগ্রহ, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, লঞ্চ ভেহিকলসহ উচ্চ-নির্ভরযোগ্য সিস্টেমে বহুল ব্যবহৃত। কঠিন পরিবেশ মাথায় রেখেই এটি তৈরি হয়েছে। মাইনাস ৫৫ থেকে ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে এটি। এর ফলে মহাকাশ মিশনের খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।

    আত্মনির্ভরতার পথে এক ধাপ

    শুধু তাই নয়, এই অগ্রগতি বেসামরিক খাতেও দেশিয় চিপ তৈরির পথ প্রশস্ত করবে। স্থানীয়ভাবে উচ্চমানের চিপ পাওয়া গেলে বিদেশি ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইল জায়ান্টরা ভারতেই উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে উৎসাহিত হবে। ফলে এটিকে প্রযুক্তির দুনিয়ায় ভারতের এক বড় মাইলফলক হিসেবে দেখা যেতে পারে। সেই সঙ্গে এটি আত্মনির্ভরতার ক্ষেত্রেও এটি দেশকে এগিয়ে রাখবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভারতের সেমিকন্ডাক্টর বাজার ছিল প্রায় ৩৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবর্ষে তা বেড়ে ৪৫-৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাজার আরও দ্বিগুণ হয়ে ১০০-১১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (PMO) তরফে জানানো হয়েছে, ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’ (Semicon India 2025)  এই মহাসম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ২০,৭৫০ জন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৪৮টি দেশের ২,৫০০-র বেশি প্রতিনিধি। বক্তব্য রাখছেন ১৫০-রও বেশি বক্তা, তার মধ্যে ৫০ জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পনেতা। প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে প্রায় ৩৫০ প্রতিষ্ঠান।

     

  • PM Modi on GST Reforms: “উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ, কৃষক-মধ্যবিত্তরা”, নতুন জিএসটি-র ঘোষণাকে স্বাগত প্রধানমন্ত্রীর

    PM Modi on GST Reforms: “উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ, কৃষক-মধ্যবিত্তরা”, নতুন জিএসটি-র ঘোষণাকে স্বাগত প্রধানমন্ত্রীর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুজোর মরসুমে বড় উপহার মোদি সরকারের। ১০০টিরও বেশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমেছে। বুধবার জিএসটি (GST) কাউন্সিলের বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে বিরাট স্বস্তিতে দেশবাসী। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। তাঁর দাবি, এই পদক্ষেপে উপকৃত হবেন কৃষক, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, মধ্যবিত্ত, মহিলা এবং যুব সমাজ। তিনি (PM Modi on GST Reforms) এই সিদ্ধান্তকে ‘আগামী প্রজন্মের জিএসটি’ পরিবর্তন বলে উল্লেখ করেছেন। পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) কাঠামোয় কেন্দ্রীয় সরকার যে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিল, জিএসটি কাউন্সিল তা অনুমোদন করেছে। বুধবার কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকের পরেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নতুন জিএসটি হার ঘোষণা করেছেন। এ বার থেকে দু’টি হারে জিএসটি কার্যকর হবে— ৫ এবং ১৮ শতাংশ। ১২ এবং ২৮ শতাংশের যে জিএসটি স্তর ছিল, তা তুলে দেওয়া হল। কিছু পণ্যকে রাখা হয়েছে ৪০ শতাংশ হারের বিশেষ তালিকায়। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নবরাত্রির প্রথম দিন। আর সেই দিন থেকেই কার্যকর হচ্ছে জিএসটি-র নতুন স্ল্যাব।

    আগামী প্রজন্মের জিএসটি, দাবি প্রধানমন্ত্রীর

    কথা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। স্বাধীনতা দিবসেই লালকেল্লা থেকে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছিলেন জিএসটিতে সংস্কারের কথা। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দিপাবলীতে এই জিএসটি সংস্কার সাধারণ মানুষের জন্য বড় উপহার হতে চলেছে। সেই প্রতিশ্রুতি মতোই ঘোষণা। তুলে দেওয়া হল জিএসটির দুটি স্ল্যাব। ২৮ শতাংশ ও ১২ শতাংশের জিএসটি তুলে নেওয়া হল। ৩ সেপ্টেম্বরই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এই ঘোষণা করেন। বুধবার একে ‘নেক্সট-জেনারেশন রিফর্ম’ (Next Gen GST) বলে স্বাগত জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী এক্স-এ পোস্টে লেখেন, “স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে আমি বলেছিলাম যে আমাদের লক্ষ্য হল জিএসটিতে পরবর্তী প্রজন্ম পরিবর্তন আনা। কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিস্তীর্ণ জিএসটি হার বিভাজন ও প্রক্রিয়ায় সংস্কারের প্রস্তাবনা এনেছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ করবে এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।” তিনি আরও লেখেন, “জিএসটি কাউন্সিলের কেন্দ্র ও রাজ্যের মন্ত্রীরা সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবনায় রাজি হয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ, কৃষক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, মধ্যবিত্ত মানুষ, মহিলা ও যুব প্রজন্ম উপকৃত হবে। এই বিশাল পরিবর্তন নাগরিকদের জীবনযাত্রা উন্নত করবে এবং ব্যবসা করতে, বিশেষ করে ছোট ব্যবসায়ী ও বিক্রেতাদের আরও সুবিধা করে দেবে।” নতুন জিএসটি-কে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ অন্যান্যরা।

    অর্থমন্ত্রী নির্মলার ঘোষণা

    বুধবার ৫৬তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তিনি ঘোষণা করেন, “আমরা স্ল্যাব কমিয়ে এনেছি। এখন থেকে দু’টি স্ল্যাব থাকবে এবং আমরা ক্ষতিপূরণ সেসের সমস্যাগুলিরও সমাধান করছি।” অর্থমন্ত্রী বলেন, “সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই সংস্কার করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের উপর প্রতিটি করের কঠোর পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হার ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছে। এই সংস্কারের ফলে কৃষক এবং কৃষিক্ষেত্র, সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যক্ষেত্রও উপকৃত হবে। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।” অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, “যেসব পণ্যের উপর জিএসটি ৫% নামানো হয়েছে- চুলের তেল, টয়লেট সাবান, সাবানের বার, শ্যাম্পু, টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, সাইকেল, টেবিলওয়্যার, রান্নাঘরের জিনিসপত্র এবং অন্যান্য গৃহস্থালীর জিনিসপত্র।” তবে বিলাসবহুল কিছু পণ্যের জন্য থাকছে বিশেষ উচ্চ হার। যেমন দামি গাড়ি, তামাক ও সিগারেটের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ কর ধার্য করা হবে। এই নতুন হার কার্যকর হবে ২২ সেপ্টেম্বর, নবরাত্রির প্রথম দিন থেকে। অর্থমন্ত্রীর কথায়, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় প্রতিটি কর খতিয়ে দেখা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কর কমানো হয়েছে। এর ফলে কৃষক, শ্রমনির্ভর শিল্প ও স্বাস্থ্যখাত প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে।

    স্বাস্থ্যবিমার উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার

    বর্তমানে চিকিৎসার খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে বিমা না করিয়ে উপায় নেই। আর সেই বিমার সঙ্গে জিএসটি দিতে দিতে নাজেহাল হতে হত সাধারণ মানুষকে। অবশেষে স্বস্তি। জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমায় দিতে হবে না কোনও জিএসটি। বুধবার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুটি বিমার ক্ষেত্রে ১৮ শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হয়। অর্থাৎ কাউকে যদি ১০,০০০ টাকা প্রিমিয়াম দিতে হয়, তাহলে তার সঙ্গে আরও ১৮০০ টাকা দিতে হয় শুধু জিএসটি হিসেবে অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রিমিয়াম পড়ে ১১,৮০০ টাকা। এই পুরো বোঝাটাই এবার কমে যাবে। অর্থাৎ ১০,০০০ টাকা প্রিমিয়াম হলে ১০,০০০ টাকাই দিতে হবে। এছাড়া এবার থেকে লাইফ ইনসিওরেন্স বা জীবনবিমার মধ্যেই পড়বে ইউনিট লিংকড ইনসিওরেন্স ও এনডাওমেন্ট প্ল্যান। অর্থাৎ সব মিলিয়ে বিমা আরও বেশি করে সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে চলে আসছে।

    কোন কোন জিনিসের দাম কমল

    দুধ, ছানা, পনির, রুটি, পাউরুটির উপর পাঁচ শতাংশ জিএসটি ছিল। তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

    কনডেন্‌সড মিল্ক, মাখন, ঘি, তেল, চি়জ় এবং দুগ্ধজাত যাবতীয় পণ্যের উপর ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে জিএসটি করা হয়েছে পাঁচ শতাংশ। একই হার প্রযোজ্য বাদাম, খেজুর, আনারস, অ্যাভোকাডো, পেয়ারা, আম এবং অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রে।

    পশুচর্বি, সসেজ়, সংরক্ষিত বা রান্না করা মাংস, মাছ, চিনি, পাস্তা, নুডল্‌স, স্প্যাগেটি এবং বিভিন্ন সব্জির দাম কমছে। জিএসটি এ সব ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামছে।

    জ্যাম, জেলি, মাশরুম, নারকেলের জল, ইস্ট, সরষে, সয়াবিন, ভুজিয়া এবং পানীয় জলের ২০ লিটারের বোতলের উপর থেকে জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে কমে হল পাঁচ শতাংশ।

    মধু, মিছরি, চকোলেট, কর্নফ্লেক্‌স, কেক, পেস্ট্রি, স্যুপ, আইসক্রিম, জিলেটিনের উপর থেকে জিএসটি কমানো হয়েছে। এত দিন ১৮ শতাংশ জিএসটি ছিল এই সমস্ত পণ্যে। কমে হয়েছে পাঁচ শতাংশ।

    যাবতীয় জীবনবীমা এবং স্বাস্থ্য বীমার উপর থেকে জিএসটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

    দাম কমছে থার্মোমিটার, ক্লিনিক্যাল ডায়াপারের।

    বিড়ির দাম কমছে। বিড়ির পাতার উপর ১৮ শতাংশ থেকে জিএসটি কমে হচ্ছে পাঁচ শতাংশ। বিড়ির উপর ২৮ শতাংশ থেকে জিএসটি কমে হচ্ছে ১৮ শতাংশ।

    সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়ার উপর জিএসটি পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনা হচ্ছে।

    টিভি, এসি, ছোট গাড়ি, ৩৫০ সিসি-র নীচে বাইকের দাম কমছে। এখন থেকে এই পণ্যগুলিতে ১৮ শতাংশ জিএসটি নেওয়া হবে।

    কোন কোন জিনিসে দাম বাড়ল

    বিলাসবহুল গাড়ি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট জেট, রেসিং কারের উপর ৪০ শতাংশ জিএসটি আরোপ করা হয়েছে।

    পান মশলা, বাড়তি চিনি মিশ্রিত পানীয়, কার্বনযুক্ত পানীয়ের দাম বাড়ছে। ২৮ শতাংশ থেকে জিএসটি করা হচ্ছে ৪০ শতাংশ।

    সিগারেট, চুরুট এবং তামাকজাত যাবতীয় পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ হারে জিএসটি নেওয়া হবে।

    কয়লার দাম বাড়ছে। পাঁচ থেকে ১৮ শতাংশ হচ্ছে কয়লার উপর জিএসটি।

  • SIR in Bengal: রাজ্যে পুজোর আগে হচ্ছে না এসআইআর, কবে থেকে শুরু ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন?

    SIR in Bengal: রাজ্যে পুজোর আগে হচ্ছে না এসআইআর, কবে থেকে শুরু ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুজোর আগে রাজ্যে হচ্ছে না এসআইআর (SIR in Bengal)। ভাইফোঁটার পর পশ্চিমবঙ্গে শুরু হবে এসআইআর, এমনটাই খবর নির্বাচন কমিশন সূত্রে। বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (SIR) শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলায় কবে থেকে এসআইআর শুরু হবে তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি এসআইআরের বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এসআইআর করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে এখনও তারিখ ঘোষণা না করলেও এসআইআর করার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন।

    কেন পুজোর পরে এসআইআর

    নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এসআইআর নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশকে যথাযথভাবে কার্যকর করার জন্য ন্যূনতম দশ দিন সময় লাগে। কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই একপ্রকার ছুটি পড়ে যাচ্ছে পুজোর জন্য, ফলে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যবর্তী সময় থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কোনভাবেই এসআইআর করা সম্ভব নয়। রাজ্যে যেভাবে প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়ে রয়েছে তাতে বেশ কিছু জায়গার কাজ এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ করে উঠতে পারেনি রাজ্য সরকার। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরও তাই পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। অতএব ভাই ফোঁটার পর নির্বাচন কমিশন এসআইআর নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে বলে খবর।

    চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু

    নির্বাচন কমিশনের অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, আগামী নভেম্বর মাসে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করবে কমিশন। বিহারের এসআইআর (SIR in Bengal) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এখনও শুনানি চলছে। তাই এই দুইয়ের মাঝে কোনোভাবেই পশ্চিমবঙ্গে পূজোর আগে এসআইআর কে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তবে, প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে রাজ্যের ১০০০ বিএলওকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েব সাইটে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা আপলোড করে দেওয়া হয়েছে। যেখান থেকে ওই তালিকা নিজেরন নাম দেখে নিতে পারবেন ভোটাররা। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছেন যে তাঁরা এসআইআর করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

  • K Kavitha: সাসপেন্ড হয়েই পদত্যাগ! কবিতা-কাণ্ডে বেআইনি সম্পদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, দাবি তেলঙ্গানা বিজেপির

    K Kavitha: সাসপেন্ড হয়েই পদত্যাগ! কবিতা-কাণ্ডে বেআইনি সম্পদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, দাবি তেলঙ্গানা বিজেপির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য মেয়ে কে কবিতাকে (K Kavitha) সাসপেন্ড করেছেন বিআরএস সুপ্রিমো কে চন্দ্রশেখর রাও। মঙ্গলবার ভারত রাষ্ট্র সমিতির পক্ষ থেকে সোশাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হয়, “দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য এমএলসি কবিতাকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেসিআর। এই মুহূর্ত থেকে এই সাসপেনশন কার্যকর হবে।” এরপরই বুধবার, দলের প্রাথমিক সদস্যপদ এবং তেলঙ্গানা বিধান পরিষদের এমএলসি পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়ে দেন কে কবিতা। একইসঙ্গে তাঁর খুড়তুতো ভাই এবং প্রাক্তন মন্ত্রী টি হরিশ রাও এবং প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ জে সন্তোষ কুমারের সমালোচনা করেছেন কবিতা।

    বিআরএস-এ অন্তর্দ্বন্দ্ব

    কবিতা (K Kavitha) বুধবার হায়দ্রাবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা করেন এবং দলের ভিতরে তাঁর বিরুদ্ধে চলা ষড়যন্ত্রের জন্য হরিশ রাও এবং সন্তোষ কুমারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, “আমি এমএলসি পদ এবং দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করছি। আমি আমার পদত্যাগপত্র বিধানসভার স্পিকার এবং কেসিআর-এর কাছে পাঠাচ্ছি।” কবিতা আরও অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর ভাই এবং বিআরএস-এর কার্যকরী সভাপতি কেটি রামা রাও (কেটিআর) তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারের সময় তাঁকে সমর্থন করেননি। তিনি বলেন, “যখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছিল, তখন আমার ভাই রামা রাও আমাকে সমর্থন করেননি। আমার সাসপেনশন দলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য একটি ষড়যন্ত্রের অংশ।” তিনি তাঁর বাবা কেসিআর-কে তাঁর চারপাশে ঘটে চলা ঘটনাগুলি পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানান এবং বলেন, “হরিশ রাও এবং সন্তোষ আমাদের পরিবারের কল্যাণকামী নন।”

    বিজেপি’র দাবিই সত্য!

    তেলঙ্গানা বিজেপি সভাপতি এন রামচন্দ্র রাও মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন, বিআরএস (BRS) এমএলসি কে কবিতার সাম্প্রতিক মন্তব্য তাঁর নিজের দলের বিরুদ্ধেই ছিল এবং তা স্পষ্টভাবে কেসিআর (KCR) পরিবারে কেলেশ্বরম প্রকল্পের “অবৈধ সম্পদের ভাগবাটোয়ারা” নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বকে প্রকাশ করে। রাও আরও অভিযোগ করেন, কংগ্রেস সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সিবিআই তদন্তে বিলম্ব করে বিআরএসকে রক্ষা করছে। প্রায় ২০ মাস ধরে তদন্ত সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর না করে তারা প্রমাণ লোপাটের সুযোগ করে দিয়েছে।

    তিনটি ভাগে বিভক্ত বিআরএস

    রামচন্দ্র রাও বলেন, “বিজেপি প্রথম থেকেই কেলেশ্বরম দুর্নীতির তদন্ত দাবি করে এসেছে। কে কবিতার (K Kavitha) এই বিস্ফোরক মন্তব্যে বোঝাই যাচ্ছে, পরিবারেরই কেউ দুর্নীতিতে জড়িত। এটি আমাদের অভিযোগেরই প্রমাণ।” তিনি আরও বলেন, কবিতার বহিষ্কার বিআরএস-এর অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাতে বিজেপির কিছু বলার নেই। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা এ রেভন্ত রেড্ডিকে নিশানা করে রাও বলেন, “বিরোধীদলে থাকাকালীন রেভন্ত কেলেশ্বরম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। কিন্তু এখন ক্ষমতায় এসে গত ২০ মাসে একটিও পদক্ষেপ করেননি। কেলেশ্বরম প্রকল্পের জলের স্রোতের সঙ্গেই প্রমাণও বোধহয় ধুয়ে গিয়েছে।” বিজেপি সাংসদ লক্ষ্মণ বিআরএস-এর তুলনা করেছেন ধসে পড়া কেলেশ্বরম প্রকল্পের স্তম্ভের সঙ্গে। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “যেমন কেলেশ্বরম প্রকল্প ভেঙে পড়েছে, তেমনি বিআরএস দলও এখন তিনটি ভাগে ভেঙে গিয়েছে।”

  • Pakistan Floods: ‘বন্যার জল আল্লার আশীর্বাদ, বাড়িতে সংরক্ষণ করুন’! আজব তত্ত্ব পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

    Pakistan Floods: ‘বন্যার জল আল্লার আশীর্বাদ, বাড়িতে সংরক্ষণ করুন’! আজব তত্ত্ব পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জুন থেকে লাগাতার বৃষ্টি ও দফায়-দফায় বন্যার জেরে বিধ্বস্ত পাকিস্তান (Pakistan Floods)। বিশেষত জলের তলায় পাক-পাঞ্জাব প্রদেশ। রাস্তায় জল থইথই করছে। অন্তত এক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যা কবলিত হয়ে কার্যত ঘরছাড়া অন্তত ২০ লক্ষ নাগরিক। আবহাওয়া দফতরও পরিবেশ বদলের সঠিক পূর্বাভাস দিতে পারছে না। তবে, ভয়াবহ এই বন্যা পরিস্থিতিকে ‘আল্লার আর্শীর্বাদ’ বলে মন্তব্য করলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ (Khawaja Asif)। তাঁর মতে, বন্যার জল ধরে বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখা উচিত।

    বন্যার জল সংরক্ষণ, উপহাস পাকমন্ত্রীর

    স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আসিফের কাছে পাকিস্তানের বন্যা (Pakistan Floods) পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই বন্যার জলকে ‘আশীর্বাদ’ বলে বর্ণনা করেন আসিফ (Khawaja Asif)। তিনি বলেন, ‘‘আমি তো বলব দেশবাসীর উচিত এই বন্যাকে আল্লার মেহেরবানি হিসেবে ধরে নেওয়া। গোটা বিশ্ব যখন জলের জন্য হাহাকার করছে, তখন পাকিস্তানের এই বন্যা তো শুভ ব্যাপার। কোনও ভাবেই একে বিপর্যয় বলা যায় না। আল্লার কৃপা না-থাকলে এটা হয় না।’’ শুধু তা-ই নয়, বন্যার জল নিয়ে কী করা যায়, তারও সমাধানের খোঁজ দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘‘এই জলকে ধরে রাখা উচিত।’’ বন্যার কারণে বেহাল দশার প্রতিবাদে অনেকেই রাস্তায় নেমেছেন। প্রতিবাদ চলছে পাকিস্তানের দিকে দিকে। সেই সব প্রতিবাদীদের উদ্দেশে আসিফ বলেন, ‘‘যাঁরা রাস্তা আটকে বসে আছেন, তাঁদের উচিত জমা জল বাড়িতে নিয়ে যাওয়া এবং তার পরে সেটা কোনও জায়গায় মজুত করে রাখা।’’ পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে, বন্যার জল সংরক্ষণ করে সেটাকে পরে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা করা উচিত।

    কটাক্ষের মুখে পাক সরকার

    বন্যার (Pakistan Floods) দায় জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে মন্ত্রীর আরও দাবি, ‘ওরাই নদী তীরবর্তী জায়গা জবরদখল করে বসতি গড়েছে। নদী বাধ্য হচ্ছে গতিপথ বদলাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বন্যা তো হবেই!’ স্বাভাবিক ভাবেই মন্ত্রীর মন্তব্য ও আজব সাজেশনে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের তীব্র কটাক্ষের মুখে পাকিস্তান সরকার। পরিকাঠামোগত খামতির কথা স্বীকার করে নিয়েই অবশ্য পাক মন্ত্রী বলেন, ‘অতিরক্ত জল সঞ্চয় করার জন্য আমাদের বড় বাঁধের প্রয়োজন। কিন্তু সেটা এখনই করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই জনগণকে জল জমিয়ে রাখার কথা বলছি।’ যে হেতু সরকারের কাছে বন্যা রোখার কোনও প্রযুক্তি নেই, তাই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও অমূলক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

    বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান

    বন্যার (Pakistan Floods) জেরে শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যুর মাঝে পাক মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য সামনে আসায় জনগণের ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও তীব্র করছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে খোদ পাক সরকারের রিপোর্ট বলছে, গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। অজস্র গ্রাম চলে গিয়েছে জলের নিচে। হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দুর্যোগের জেরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়ায়। শুধুমাত্র এই প্রদেশে হড়পা বান ও অন্যান্য দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪০৬ জনের। টানা বর্ষণের জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাঞ্জাব প্রদেশের। শুধু তা-ই নয়, প্রভাব পড়েছে লাহোরেও।

  • India-Russia Relationship: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের মুনাফা ১২৬০ কোটি ডলার

    India-Russia Relationship: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের মুনাফা ১২৬০ কোটি ডলার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে যখন তেলের দাম চড়া, তখন ভারত এক কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়ে রুশ তেলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে রাশিয়া (India-Russia Relationship) থেকেই তেল আমদানি করে ভারত। অন্যদিকে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মস্কোও ভারতকে বড়সড় ছাড়ে তেল (Russian Oil) দিতে শুরু করে। এই সিদ্ধান্তে ভারতের জ্বালানি আমদানির খরচ ৩৯ মাসে কমেছে কমপক্ষে ১৭ বিলিয়ন ডলার। তথ্য-পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট গত সাড়ে তিন বছরে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করায় বিপুল আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে ভারতের। সরকারি সূত্রে খবর, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ৩৯ মাসে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি করে অন্তত ১২৬০ কোটি ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ১১ হাজার কোটি টাকা) মুনাফা করেছে ভারত।

    বিশ্ব-বাজারে ভারতের বড় ভূমিকা

    রাশিয়ার তেল (Russian Oil) কেনায় ভারতের উপর গোঁসা করেছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে তেল কেনার অভিযোগে ভারতের উপরে ৫০ শতাংশ ট্যারিফ চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পিটার নাভারোর দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধ আসলে ‘মোদির যুদ্ধ’। তাঁর অভিযোগ, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কিনে আসলে মস্কোকে সহায়তা করছে ভারত।’ পিটার নাভারোর অভিযোগ ভিত্তিহীন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, ভারতের তেল কেনার কারণেই বিশ্ববাজারে বড়সড় সঙ্কট এড়ানো গিয়েছে। যদি ভারত রাশিয়ার তেল না কিনত, তাহলে আজ অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ২০০ ডলার ছুঁয়ে যেত। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভারত শুধু সরাসরি সাশ্রয়ই করেনি, বরং বিশ্ববাজারে দাম নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যদি রুশ তেল না কিনত, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১০-২০ ডলার বেড়ে যেতে পারত, যা ৩৯ মাসে আমদানির খরচ বাড়িয়ে দিত ৫৮ থেকে ১১৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

    রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বেড়েছে

    ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। তার পরেই আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করেছিল। যদিও তাতে গুরুত্ব না দিয়ে গত সাড়ে তিন বছর ধরে নয়াদিল্লি-মস্কো বাণিজ্যিক লেনদেন চলেছে সমানতালে। গত অর্থবর্ষের (২০২৪-২৫) ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সার্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে পৌঁছেছে ৬৮০০ কোটি ডলার (প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা)। তার মধ্যে ভারত থেকে রাশিয়ায় (India-Russia Relationship) রফতানি করা হয়েছে ৪৯০ কোটি ডলারের (৪২ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। আর রাশিয়া থেকে ভারত আমদানি করেছে ৬৩০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। যার বড় অংশই সামরিক সরঞ্জাম এবং অশোধিত তেল। বস্তুত ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর অনেক আগে থেকেই রুশ অশোধিত তেলের ক্রেতা ভারত। তবে আগে রাশিয়া থেকে তারা কম তেল আমদানি করত। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পরে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। তেল আমদানিকারী দেশ হিসাবে সারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এই মোট আমদানির ৩৫ শতাংশই এখন আসে রাশিয়া থেকে।

    কতটা সাশ্রয় করল ভারত

    প্রকাশিত রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারত ১৬২২ কোটি ডলারের তেল আমদানি করেছিল। রাশিয়ার তেল না কিনে অন্য দেশ থেকে কিনলে এই খরচ আরও ৪৮৭ কোটি ডলার বেশি পড়ত। ২০২৩-২৪ অর্থবর্যে রাশিয়ার তেলের দাম কিছুটা বাড়লেও আমদানি বাড়ায় সাশ্রয় দাঁড়ায় ৫৪১ কোটি ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ছাড় নেমে আসে মাত্র ২.৮ শতাংশে। এতে সাশ্রয় হয় মাত্র ১৪৫ কোটি ডলার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষএ ছাড় কিছুটা বাড়ার ফলে প্রায় ৮৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হয়েছে। প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষপর্বে রুশ তেল আমদানি কিছুটা কমলেও অগস্ট থেকে তা বাড়তে শুরু করেছে আবার।

    রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ভারত

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া ভারতের মোট তেল আমদানির ২%-এরও কম সরবরাহ করত। এখন সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬%, যেখানে প্রতিদিন আমদানি হয় প্রায় ১.৭৮ মিলিয়ন ব্যারেল। এশিয়ায় চিনের পর ভারত এখন রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। মূলত মার্কিন ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ভারতকে ছাড়ে তেল দেয়, আর ভারত কৌশলগতভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সাশ্রয় করে।

    লাভ সাধারণ জনগণের

    ভারতের সরকারি (India-Russia Relationship) হিসাব ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, দেশের এই সাশ্রয় শুধুমাত্র বড় ব্যবসায়ীদের নয়, সাধারণ ভারতীয়দেরও উপকৃত করেছে— মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থেকেছে, রুপি স্থিতিশীল থেকেছে, এবং রিফাইনিং শিল্পে কর্মসংস্থান বজায় রয়েছে। একইসঙ্গে, ভারত এই রফতানিকৃত রিফাইন্ড তেল (বিশেষত রিলায়েন্স ও নয়ারা এনার্জির মাধ্যমে) বিক্রি করে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৭.৪৭ বিলিয়ন, এবং ২০২৪-২৫-এ ৬৩.৩৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেলের এই কৌশলগত চুক্তি ভারতের অর্থনীতিকে এক বড় ধাক্কা থেকে রক্ষা করেছে।

    দেশের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত

    ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার থেকে তেল (Russian Oil) কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের পরেও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ থেকে থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার। অদূর ভবিষ্যতে তার কোনও সম্ভাবনাও নেই বলে মনে করছেন কূটনীতি এবং বণিকমহলের অনেকেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, এই তেল আমদানির মাধ্যমে ১.৪ বিলিয়ন ভারতীয়ের জন্য “সাশ্রয়ী জ্বালানি” নিশ্চিত হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, মার্কিন সমালোচনা দ্বিচারিতায় ভরপুর। ইউরোপ এখনও রাশিয়া থেকে পণ্য কিনছে। তাই ভারতকে বাধা দেওয়ার মানেই হয় না। ভারত জানিয়ে দিয়েছে — ‘যেখানে ভালো দাম, সেখানেই আমরা যাব’ — কৌশলগতভাবে নয়, অর্থনৈতিকভাবে।

  • Suvendu Adhikari: “ক্ষমতার লোভে সেনাকেও অপমান করতে ছাড়ছেন না মমতা”, বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হয়ে বললেন শুভেন্দু

    Suvendu Adhikari: “ক্ষমতার লোভে সেনাকেও অপমান করতে ছাড়ছেন না মমতা”, বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হয়ে বললেন শুভেন্দু

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অভিযোগ, দেশের সেনাবাহিনীকে অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় ফের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়। বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন ভারতীয় সেনা সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্যে আপত্তি তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ব্রাত্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন তিনি। একে একে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্য বিজেপি বিধায়কেরা। অধিবেশনে হইহট্টগোল শুরু হয়। বার বার সতর্ক করার পরেও পরিস্থিতি না বদলানোয় শুভেন্দুকে এই অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই অধিবেশনকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বিজেপি বিধায়কেরা।

    সেনা-র বিরোধিতায় মমতা

    ধর্মতলায় (Dharmatala) তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ সরানো নিয়ে শাসক শিবিরের (TMC) নিশানায় পড়েছে সেনাবাহিনী (Indian Army)। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দাবি করেন, বিজেপির (BJP) কথাতেই এ কাজ করেছে সেনা। তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই শোরগোল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এই বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। বাংলাভাষীদের ভিনরাজ্যে হেনস্থার প্রতিবাদে ধর্মতলায় মঞ্চ গড়েছিল তৃণমূল (TMC)। কিন্তু সেনাবাহিনী এসে সেই মঞ্চ সরাতে বলে। তাঁদের যুক্তি ছিল, ওই জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে এভাবে মঞ্চ বাঁধা যাবে না। ঘটনার পরই ওই স্থানে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। শুধু তাই নয়, সেনাকে ব্যবহার করে বিজেপি এই কাজ করিয়েছে বলেও তোপ দাগেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গই ওঠে বিধানসভায়।

    সেনাকে অসম্মান ব্রাত্য বসুর

    এদিন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “গতকাল সেনাবাহিনী যেভাবে বাংলা ভাষার মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে, সেটা ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পাকিস্তান আর্মি যেভাবে খুন করেছিল, তার মতোই।” বিজেপিকে বাংলা বিরোধী বলে সরব হন আর এক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এরপরই উত্তাপ বাড়ে। সরব হন বিজেপি বিধায়করা। ‘ইন্ডিয়ান আর্মি জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন শুভেন্দু। বিজেপির ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যায়। এরপর শুভেন্দুকে এই অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করেন বিমান। অর্থাৎ, চলতি অধিবেশনে বাকি দিনগুলিতেও আলোচনায় যোগ দিতে পারবেন না বিরোধী দলনেতা। বাইরে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, “আমাকে আবারও সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেনার হয়ে বলার জন্য সাসপেন্ড হতে হয়েছে। আমি সেনার জন্য গর্ব অনুভব করি।”

    সেনার যুক্তি

    সোমবার ওই মঞ্চ ভাঙার ক্ষেত্রে সেনার যুক্তি ছিল, অনুমোদনের সময়কাল পেরিয়ে গিয়েছে, তারপরও বাঁধা ছিল মঞ্চ। এরপর অনুমতি পেতে গেলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলতে হবে বলেও জানিয়েছিল সেনা। তবে মমতার বক্তব্য, আসলে এই কাজ সেনার নয়, বিজেপি সেনাকে কাজে লাগিয়ে মঞ্চ খুলিয়েছে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ভারতীয় সেনা তৃণমূলের মঞ্চ ভেঙেছে। এর বিরুদ্ধে বিধানসবার ভিতর সরব হয় বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্ধ হয়ে গেছেন, সে কারণে এখন ভারতীয় সেনাকেও অপমান করতে ছাড়ছেন না। এই ইস্যুতে তাঁর পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কটাক্ষ – একটুও লজ্জা অবশিষ্ট থাকলে এখন পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত।

    শুভেন্দুর দাবি

    মঙ্গলবার বিধানসভা থেকে সাসপেন্ডের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, “অধিবেশন চলাকালীন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দেশের সেনাবাহিনীকে অপমান করেন। বাংলাদেশের সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে ভারতীয় সেনার তুলনা টানেন। তারই প্রতিবাদে বিধানসভার ভিতরে ইন্ডিয়ান আর্মি জিন্দাবাদ স্লোগান তুলি। স্পিকারের কাছে অনুরোধ করি, যাতে ভারতীয় সেনাকে নিয়ে যা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন তা যেন বক্তব্যের অংশ থেকে বাদ দেওয়া হয়।” শুভেন্দুর দাবি, তাঁদের তরফে বিধানসভায় এই দাবি করা হলেও তাতে মান্যতা দেননি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কথা মোতাবেক নির্দেশ দেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, “তারপরই আমাকে সাসপেন্ড করা হয়। তবে এটা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমি গর্বিত। সেনাবাহিনীর অপমান আমি সহ্য করব না। তারা আমাদের দেশের গর্ব। সীমান্ত রক্ষা করে। তাদের অপমান করেছেন অরূপ বিশ্বাস। ব্রাত্য বসু বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভয়ে জওয়ানরা কাল পালিয়েছিলেন। এটা অপমান। ভারতীয় সেনা কারোর ভয়ে পালায় না। এটা দেশের অপমান। এটা বরদাস্ত করব না।”

  • Afghanistan Earthquake: আফগানিস্তানের বিপর্যয়ে পাশে ভারত, প্রতিবেশী হোক বা গ্লোবাল সাউথ, সবার বিপদে সর্বদা সহায়তায় দিল্লি

    Afghanistan Earthquake: আফগানিস্তানের বিপর্যয়ে পাশে ভারত, প্রতিবেশী হোক বা গ্লোবাল সাউথ, সবার বিপদে সর্বদা সহায়তায় দিল্লি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আফগানিস্তানের বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়াল ভারত। ভয়াবহ ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে যাওয়া আফগানিস্তানে ত্রাণ পাঠালো দিল্লি। তবে, এই প্রথম নয়। বিপদে পড়লে বিশ্বের যে কোনও দেশের পাশে ভারত সর্বদা থাকে। মানবিক সাহায্য নিয়ে ভারত প্রত্যেকবার এগিয়ে যায়। কোভিড অতিমারি হোক বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রতিবেশী দেশ থেকে গ্লোবাল সাউথের প্রতিটি দেশের সঙ্কটেই এগিয়ে এসেছে ভারত।

    আফগানিস্তানের পাশে ভারত

    বিধ্বস্ত দেশ। তাসের ঘরের মতো ধুলোয় মিশেছে ঘরবাড়ি। আফগানিস্তানের পূর্ব প্রদেশ যেন ধ্বংস্তূপ। দিকে দিকে পড়ে দেহ। এতটাই বিপর্যস্ত এলাকা, ত্রাণ পৌঁছনোও কঠিন হয়ে পড়েছে। আরও কত মৃতদেহ বের হবে কে জানে! সোমবারের হিসেবই বলছে ৮০০-র বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। আরও বহু দেহ চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। আহতের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। সারা বিশ্বের কাছে মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে তালেবান সরকার। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আফগানিস্তানে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং পূর্ণ মানবিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। আফগান সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভূমিকম্পের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভারত মঙ্গলবারই কাবুলে ১,০০০টি পরিবারকে তাঁবু পাঠিয়েছে। সেই সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে ১৫ টন খাদ্য সামগ্রী। সোমবার রাতে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে ত্রাণ পাঠানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, চালের বস্তা, তাঁবু এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বোঝাই ট্রাক কাবুলে পৌঁছে গিয়েছে।

    ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফগানিস্তান

    রবিবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী রাত পৌনে ১টা) প্রথম কেঁপে ওঠে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বে কুনার প্রদেশ। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৩। কম্পনের উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে আট কিলোমিটার গভীরে। এর পরেও বেশ কয়েক বার ভূকম্প পরবর্তী কম্পন (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে আফগানিস্তানে। তার মধ্যে অন্তত দু’টি কম্পনের মাত্রা ছিল ৫-এর বেশি। এই ভূমিকম্পের রেশ তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারত পর্যন্ত অনুভূত হয়েছে। কম্পনের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর এবং দিল্লির আশপাশের এলাকাতেও কম্পন অনুভূত হয়।

    কবে কোথায়, কোন কোন দেশের সাহায্যে ভারত

    গত পাঁচ বছরে ভারত বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে মেডিকেল কন্টিনজেন্ট ও র‍্যাপিড রেসপন্স টিম পাঠানো হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে “ভ্যাকসিন মৈত্রী” (Vaccine Maitri) উদ্যোগের অধীনে ভারত ৯৯টি দেশ এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের দুটি সংস্থার কাছে ৩০.১২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে। অতিমারির সময় এ সহায়তা উদ্যোগ বৈশ্বিক পর্যায়ে ভারতের দায়িত্বশীল ভূমিকাকে তুলে ধরেছে।

    ২০২১ সালের জুলাই মাসে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ‘র‍্যাপিড রেসপন্স সেল’ (Rapid Response Cell) গঠন করে, যা জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA), জাতীয় দুর্যোগ প্রতিকার বাহিনী (NDRF), সশস্ত্র বাহিনী, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করে। কোভিড-১৯-এর সময় শুরু হওয়া এই সেল এখন নানা ধরনের মানবিক ও দুর্যোগ সহায়তায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। কোয়াড (QUAD)-এর মতো প্ল্যাটফর্মেও ভারত দুর্যোগ মোকাবিলায় (Humanitarian Assistance and Disaster Relief) অংশ নিয়েছে।

    ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরে ভারত “অপারেশন দোস্ত” (Operation Dost) চালু করে, যার আওতায় উদ্ধারকর্মী ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো হয়। মায়ানমারে সাইক্লোন মোখার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ভারত “অপারেশন করুণা” (Operation Karuna) শুরু করে। একইভাবে হন্ডুরাসে ট্রপিক্যাল স্টর্ম ‘সারা’-র প্রভাবে বিপর্যস্ত জনগণের জন্য ভারত ২৬ টন মানবিক সহায়তা পাঠায়। এছাড়াও, ভ্যাকসিন মৈত্রী উদ্যোগের শুরুতেই ভারত তার প্রতিবেশী দেশ ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সেশেলস, মরিশাস ও বাংলাদেশে টিকা সরবরাহ শুরু করে।

     

     

  • US on Indian Brahmins: ভারতীয় ব্রাহ্মণদের অপমান, মোদির সমালোচনা! শুল্ক-যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টার

    US on Indian Brahmins: ভারতীয় ব্রাহ্মণদের অপমান, মোদির সমালোচনা! শুল্ক-যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতকে চাপে ফেলতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিল্লির সঙ্গে শুল্কযুদ্ধে এঁটে উঠতে না পেরে এবার বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। ভারতীয় ব্রাহ্মণদের গায়ে ‘অর্থলোভী’ তকমা সেঁটে দিলেন তিনি। নয়াদিল্লিকে ‘রাশিয়ান টাকা তৈরির লন্ড্রি’ বলেও খোঁচা দিয়েছেন নাভারো। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও অপমানজনক কথা বলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

    প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অপমান

    চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় মার্কিন গণমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ’কে সাক্ষাৎকার দেন নাভারো। সেখানে ফের এক বার ভারতের নামে বিষোদ্গার করেন তিনি। নাভারো বলেন, ‘‘মোদি একজন মহান নেতা। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে একই শয্যায় যাচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নেতার এটা করা উচিত নয়।’’ গত ৩১ অগাস্ট চিনের তিয়েনজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেটিভ অর্গানাইজেশন (SCO) বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানে জিনপিঙ ও পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরেছেন তিনি। পরে পুতিন ও ড্রাগন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খোশগল্প করতে দেখা যায় তাঁকে। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও ভাইরাল। এর পরেই এই তিন নেতাকে নিয়ে নাভারোর বেনজির আক্রমণের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, বলে মত কূটনীতিকদের। ভারত-চিন-রাশিয়াকে একসঙ্গে দেখে কিছুটা চাপে আমেরিকা, অভিমত আন্তর্জাতিক মহলের।

    বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতির কারণে ভারত-আমেরিকার মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কে চরম টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে৷ ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা৷ ট্রাম্পের অভিযোগ, রাশিয়ার থেকে তেল কেনার কারণে এই অচলাবস্থার সূত্রপাত৷ এই আবহে ভারতকে নিশানা করে আরও এক বিচিত্র দাবি করেছেন মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো৷ তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে ভারতের ব্রাহ্মণ শ্রেণির মানুষেরা মুনাফা লুটছেন ৷রাশিয়া-ভারত-চিন সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ভারতবাসীর কাছে আমার একটাই আবেদন, দয়া করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করুন৷ সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে আপনাদের দেশে বাণিজ্যিক মুনাফা লুটছেন ব্রাহ্মণরা৷ এই বিষয়টিকে বন্ধ করতে হবে৷’’ “ব্রাহ্মণ” শব্দটি ভারতের প্রেক্ষিতে একটি বিশেষ জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় বহন করে। আমেরিকায় “বস্টন ব্রাহ্মিণ” বলতে ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বোঝালেও, ভারতীয় প্রসঙ্গে এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। নাভারোর এই মন্তব্য জাতিবিদ্বেষমূলক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন বিশ্লেষক ও রাজনীতিক যেমন সঞ্জীব সান্যাল ও প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই মন্তব্যকে “অপমানজনক” এবং “ঔপনিবেশিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে নিন্দা করেছেন।

    ভারত শুল্কের মহারাজা

    মার্কিন দাবি মেনে রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ না করায় বিব্রত নাভারো বলেন, ‘‘ক্রেমলিনের জন্য নয়াদিল্লি এখন একটা টাকা তৈরির ওয়াশিং মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। এর ফল ভুগছে ইউক্রেন। পূর্ব ইউরোপের দেশটাতে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘নয়াদিল্লি তো শুল্কের মহারাজা। বিদেশি পণ্যে ওরা দুনিয়ার সর্বোচ্চ শুল্ক নিয়ে থাকে। নয়াদিল্লি তাদের ঘরোয়া বাজার আমাদের সামনে খুলবে না। আমাদের পণ্য ওদের বাজারে বিক্রি করতে দেবে না।’’ নাভারোর অভিযোগ, উল্টো দিকে দিব্যি ঘরের মাটিতে তৈরি পণ্য এ দেশের বাজারে সরবরাহ করে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হচ্ছে ওয়াশিংটনের। তবে, ভারত আগেই জানিয়ে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি তথা দেশবাসীর মঙ্গলে যা সঠিক, তাই পদক্ষেপ করা হবে৷ এক্ষেত্রে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিংবা যুদ্ধাস্ত্র কেনায় দেশের আর্থিক উন্নতি ঘটলে সেই অবস্থানেই থাকবে নয়াদিল্লি ৷ সম্প্রতি, নয়াদিল্লির এই অবস্থানের জন্যই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছিলেন মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা ৷

    দিশেহারা আমেরিকা

    এই পরিস্থিতিতে মার্কিন শুল্কের চাপে রুশ ‘উরাল ক্রুড’ কেনা বন্ধ না রেখে উল্টে তার আমদানি বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। অন্য দিকে ভারতের সঙ্গে তেল-বাণিজ্যকে আরও মসৃণ করতে দামের ক্ষেত্রে বড় ছাড় দিচ্ছে মস্কো। ইউরোপীয় দেশগুলিতে অবশ্য ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছে। উল্টে মোদি সরকারের নীতির ভূয়সী প্রশংসা করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইটালির মতো দেশ।

    অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইউক্রেন

    যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে নয়াদিল্লির থেকেই সর্বাধিক ডিজেল আমদানি করছে কিভ। শুধু তা-ই নয়, মস্কোর থেকে সস্তা দরে মোদি সরকারের খনিজ তেল আমদানি নিয়ে তাদের কোনও সমস্যা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের ওই দেশ। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘‘ভারত স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। ফলে তারা কোথা থেকে ‘তরল সোনা’ আমদানি করবে সেটা অন্য কেউ বলে দিতে পারে না। এ ব্যাপারে কারও আপত্তি থাকা উচিত নয়।’’

    শুল্ক প্রসঙ্গে ট্রাম্পের ধাক্কা

    শুল্ক ইস্যুতে অবশ্য আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত ২৯ অগাস্ট একটি মামলার রায় দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডেরাল সার্কিটের আপিল কোর্ট। সেখানে বলা হয়, ট্রাম্প যে ভাবে বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক চাপিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিকে ওলটপালট করতে চাইছেন, তা বেআইনি। যদিও তাঁর শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের উপরে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি ওই আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রেসিডেন্টের। সেখানে তাঁর সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলা হলে, শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে আমেরিকাকে।

LinkedIn
Share