মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। একদিকে আওয়ামি লিগের নেতা কর্মীরা যেমন আক্রান্ত হয়েছেন, ঠিক তেমনি নাগরিকদের দুর্বল অংশ সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়ে চলেছে। শাসকদলের নেতারা ফতোয়া জারি করেছে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারবে না। কেউ ভারতের পক্ষে কথা বলতে পারবে না। বাজারে বাজারে ভারতীয় পণ্য বর্জনের নির্দেশ দিচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। পদ্মা পাড়ে হিন্দুদের উপর হওয়া অত্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে কাশ্মীরি সংখ্যালঘুুরা। আসমুদ্র-হিমাচল হয়েছে প্রতিবাদে মুখর।
শ্রীনগরে প্রতিবাদ
বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে চলমান অত্যাচারের নিন্দা জানিয়ে শ্রীনগরে একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আয়োজন করে কাশ্মীরি সংখ্যালঘুরা। বিক্ষোভকারীরা আন্তর্জাতিক ও সরকারি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। সামাজিক কর্মী অনিতা চাঁদপুরী এই বিষয়ে ভারত সরকার, মানবাধিকার কমিশন এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের নীরবতার সমালোচনা করেছেন, উদ্বেগের সমাধান না হলে বৃহত্তর দেশব্যাপী মিছিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থার সঙ্গে একদা কাশ্মীরে বসবাসকারী হিন্দু-ব্রাহ্মণদের অবস্থর তুলনা করেছেন অনেকে। গত ৩৫ বছর ধরে কাশ্মীরে হিন্দুরা এরকম অত্যাচার দেখেছেন বলেও মত অনেকের।
ভারতের নানা প্রান্তে অসন্তোষ
শুধু কাশ্মীর নয়, বাংলাদেশে হিন্দু বিরোধী সহিংসতা নিয়ে ভারতের নানা প্রান্তে অসন্তোষ চোখে পড়েছে। নয়ডা, গাজিয়াবাদে বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। হিন্দু সংগঠনগুলি থানে জেলায় বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে৷ নভি মুম্বাইয়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিচ্ছে সাকাল হিন্দু সমাজ৷ হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে কলকাতা-সহ সারা বাংলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার প্রতিবাদে হিন্দু সংগঠনগুলি শিমলায় সমাবেশ করেছে। ভারতীয় সনাতন সোসাইটি জামশেদপুরে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে লখনউ, মোরাদাবাদেও।
জার্মানিতেও প্রতিবাদ
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু, মায় হিন্দুদের ওপর চলমান অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ ভারতের সীা ছাড়িয়ে বিদেশেও আছড়ে পড়ছে। জার্মানির হিন্দু সংগঠনও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে এই বিষয়টি তুলে ধরার কথা বলেছে তারা। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বহু হিন্দু মন্দির ও মূর্তি ভাঙচুর, বাড়ি ও দোকানে লুটপাট, এমনকি আগুন ধরিয়ে দেওয়ার খবর প্রতিদিন সামনে আসছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। এই অঞ্চলগুলি হল চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও, চাপাই নবাবগঞ্জের মতো প্রত্যন্ত ও মফস্বল অঞ্চলে। বাদ নেই ঢাকা ও ঢাকার শহরতলি এলাকাগুলিও। এই ধারাবাহিক অত্যাচারের জন্য মূলত অভিযোগ উঠেছে খালেদার নেতৃত্বাধীন বিএনপি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি) এবং জামাত-ই-ইসলামির বিরুদ্ধে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জামাত-ই-ইসলামির মৌলবাদী শক্তির হিংসা ও লালসার শিকার হয়েছেন এই আক্রান্তরা। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ৩০টি জেলাতে হিংসার ঘটনা বেশি ঘটছে।
আরও পড়ুনঃ চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবি জানিয়ে ইউনূসকে চিঠি দিল বাংলাদেশের রামকৃষ্ণ মঠ-মিশন
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
Leave a Reply