Bengali Sweets: বাংলার সবজির মোরব্বাও কম সুস্বাদু নয়! এর উৎপত্তির ইতিহাসও চমকপ্রদ

Bengali_Sweets

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঙালির শেষ পাতে মিষ্টি না হলে বোধহয় চলে না! তাই তো রকমারি মিষ্টির (Bengali Sweets) বাহার আমাদের বাংলাতে। রসগোল্লা থেকে শুরু করে সন্দেশ, পান্তুয়া-কোনওটাই বাদ যায় না তালিকা থেকে। কিছু মিষ্টি আছে, যেগুলি স্বাদে ও আকারে অন্যান্য সাধারণ মিষ্টির থেকে অনেকটাই ভিন্ন। সেরকমই একটি মিষ্টি মোরব্বা। বীরভূমের সিউড়ি শহরের নাম মাথায় এলে মোরব্বা নামটা একবার উচ্চারণ করতেই হয়। সিউড়ির বিখ্যাত মিষ্টি হল মোরব্বা। বর্ধমানের যেমন মিহিদানা-সীতাভোগ, শক্তিগড়ের ল্যাংচা, কলকাতার রসগোল্লা, তেমনই বীরভূমের এই মোরব্বা। অনেকেই পছন্দ করেন এই মোরব্বা। কিন্তু এই মিষ্টির উৎপত্তি নিয়ে অনেক ইতিহাস আছে। আসলে এই মিষ্টি বাংলায় তৈরি না বিদেশে, তা নিয়েও আছে অনেক গল্প।

কী এই মোরব্বা?

‘মোরব্বা’ শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ ‘মুরাব্বা’ থেকে, যার অর্থ সংরক্ষিত ফল। মোরব্বা হল একটি মিষ্টি যা ভারতের অনেক জায়গাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু মোরব্বা (Bengali Sweets) বিখ্যাত আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সিউড়ি শহরে। দক্ষিণ ককেশাস, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের অনেক অঞ্চলে জনপ্রিয় মিষ্টি এটি। সাধারণত মিষ্টি ফল যেমন আপেল, খেজুর, এমনকী পটল, চালকুমড়া, পেঁপে, বেল প্রভৃতিকে গাঢ় মিষ্টির রসে ডুবিয়ে রেখে বিভিন্ন মশলা সহযোগে তৈরি করা হয় এই মোরব্বা, যা অনেকদিন পর্যন্ত মিষ্টির রসে সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে।

মোরব্বার (Bengali Sweets) উৎপত্তি হল কীভাবে?

আসলে এই মিষ্টির উৎপত্তি পর্তুগিজদের হাত ধরে। জানা যায়, প্রাচীন ভারতে ছানা খাওয়া অপবিত্র ছিল। তাই ছানা সহযোগে আগে ভারতে কোনওরকম মিষ্টি তৈরি হত না। কিন্তু পর্তুগিজরা ভারতে আসার পর ছানার ব্যাবহার শুরু করে। আর এই ছানা দিয়ে নানারকম মিষ্টিও তারা বানায়। এই সব মিষ্টির সঙ্গে তারা আরও এক ধরনের মিষ্টি তৈরি করে, যা মোরব্বা নামে পরিচিত। এই মিষ্টি তৈরিতে কোনও রকম ছানা লাগত না। বিভিন্ন ফলকে গাঢ় রসে ডুবিয়ে সেই ফলগুলিকে সংরক্ষণ করা হত, যা মিষ্টির আকার নিত। এই মোরব্বা প্রথম পর্তুগিজদের হাত ধরেই ভারতে প্রবেশ করে। আজ এই মোরব্বা গোটা বিশ্বে বিখ্যাত। লোক মুখে শোনা যায়, এই মোরব্বা প্রথম তৈরি হয় বীরভূমের রাজনগরে।    
আবার বিভিন্ন বই-এর লেখা থেকে জানা যায়, পর্তুগিজ বণিকদের হাত ধরেই প্রবেশ করে এই মোরব্বা। সিউড়ির স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে জানা যায়, ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বীরভূমের বিখ্যাত মিষ্টি ব্যবসায়ী হরিপ্রসাদ দে একবার দিল্লি ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একরকম মিষ্টির সন্ধান পান, যেটি পেঠা নামে পরিচিত ছিল। সেই মিষ্টিটি তিনি খেয়ে দেখেন ও তার স্বাদ খুবই পছন্দ হয়। সেখান থেকেই এই মিষ্টি তৈরির প্রণালী শিখে আসেন এবং নিজের শহরে ফিরে এসে এই ধরনের মিষ্টি (Bengali Sweets) বানানোর সিদ্ধান্ত নেন, যা মোরব্বা নামে পরিচিত। বিভিন্ন ফল দিয়ে তিনি এই মিষ্টি বানাতে শুরু করেন। তাঁর বংশধর নন্দদুলাল দে এই ইতিহাস সত্যি বলেই দাবি করেন। আস্তে আস্তে এই মিষ্টি গোটা ভারত জুড়ে বিখ্যাত হতে শুরু করে। এটি হয়ে ওঠে বীরভূমের সিউড়ির বিখ্যাত মিষ্টান্ন। অনেক বড় বড় মানুষ এই মোরব্বার সন্ধানে সিউড়িতে এসেছেন।
বর্তমানে ফল ছাড়া আরও বিভিন্ন সবজি দিয়েও এই মোরব্বা বানানো হয়। তার মধ্যে পটল, চালকুমড়া, শতমূলের মোরব্বা বিখ্যাত।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share