ISRO: বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে মহাকাশে দুই উপগ্রহকে জুড়ল ভারত, ইসরোকে অভিনন্দন মোদির

space-station_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশ গবেষণায় ইসরোর (ISRO) মুকুটে জুড়ল নয়া পালক। মহাকাশে দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে সংযুক্ত (ডকিং) করে ইতিহাস রচনা করল দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। রাশিয়া, আমেরিকা এবং চিনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে এই সাফল্য অর্জন করল ভারত। চতুর্থবারের প্রয়াসে এমন সাফল্য পেল ভারত। বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, সকাল ১০টা নাগাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের এমন সাফল্যের ঘোষণা করে ইসরো। এরপরেই এক্স মাধ্যমে ইসরোকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সমাজমাধ্যমে কী লিখল ইসরো (ISRO)?

সমাজমাধ্যমে লেখা হয়, ‘‘দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে সংযুক্ত করার কাজ সফল। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ১৫ থেকে তিন মিটার দূরত্বে এনে শুরু হয় প্রক্রিয়া। নির্ভুল পদ্ধতিতে সংযুক্ত করার কাজ সফল হয়। সবকিছু মসৃণভাবেই মিটেছে। সবকিছু স্থিতিশীল।’’

শুভেচ্ছা জানালেন মোদি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ইসরোর এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত এবং তিনি এক্স মাধ্যমে পোস্ট করেছেন এবিষয়ে। নিজের এক্স মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘‘ইসরোর সমস্ত বিজ্ঞানীদের জানাই অভিনন্দন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সাফল্য। দেশের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলস্টোন।’’

শুভেচ্ছা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

ইসরোর এই সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং-ও। নিজের এক্স মাধ্যমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লেখেন, ‘‘ডকিং সম্পূর্ণ হল। ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণার অনেক দিক খুলে গেল।’’

কেন এই ডকিং পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ?

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর কৃত্রিম উপগ্রহ সংযুক্তিকরণ অভিযানের সূচনা ঘটে। এই অভিযানে দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহকে মহাকাশে পাঠায় ইসরো (ISRO)। একটি হল, ‘SDX01 (Chaser)’ এবং অপরটি হল ‘SDX02 (Target)’. ইসরো সূত্রে তখনই জানা যায়, প্রতিটি কৃত্রিম উপগ্রহের ওজন ২২০ কেজি করে। পিএসএলভি-সি৬০ রকেটে চাপিয়ে সেগুলিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রসঙ্গত, এই অভিযানের মাধ্যমে অনেক কিছুরই দরজা খুলে গেল মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ইসরোর পরবর্তী চন্দ্রযান অভিযান বা গগনযান অভিযান অথবা ভারতের নিজস্ব স্পেস স্টেশন নির্মাণের সময় এই পদ্ধতি কাজে আসবে। এই ডকিং প্রক্রিয়া ছিল তারই ট্রায়াল। চন্দ্রযান ৪ অভিযানে চাঁদের মাটি পৃথিবীতে নিয়ে আসা, চাঁদের মাটিতে মানুষ নামানো, মহাকাশচারীদের জন্য রসদ সরবরাহের ক্ষেত্রে এই অভিযান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দেশীয় প্রযুক্তিকেই কাজে লাগানো হয়

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দুটি কৃত্রিম উপগ্রহকে মহাকাশে সংযুক্তিকরণ করার কাজ মোটেও সহজ নয়। জানা গিয়েছে, এই অভিযানকে সফল করতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতীয় ডকিং সিস্টেমকেই ব্যবহার করে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO)। গত ১২ ডিসেম্বর ৩ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কাছাকাছি হয় দুই উপগ্রহ, এরপরে পিছু হটে তারা। খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও, দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গত ৭ এবং ৯ জানুয়ারি ইসরোর তরফ থেকে দু’বার ডকিংয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সম্ভব হয়নি ডকিং। আজ ১৬ জানুয়ারি সেই কাজেই মিলল সাফল্য।

মহাকাশ গবেষণায় প্রথম সারিতেই ভারত

মহাকাশ বিজয়ের লক্ষ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় হয়ে রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ভারতও মহাকাশ গবেষণায় (ISRO) একেবারে প্রথম সারিতেই চলে এসেছে। জোর কদমে চলছে মহাকাশ গবেষণা। সৃষ্টিতত্ত্বের বিশ্লেষণ, মহাজাগতিক সম্পদকে পৃথিবীর কাজে লাগানোর প্রয়াস চলছেই। বিপদে পড়লে দুই মহাকাশযান যাতে সংযুক্ত হতে পারে, প্রয়োজনীয় রসদ যাতে আদান প্রদান করতে পারে, সেক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল এই ডকিং বা সংযুক্ত প্রক্রিয়া।

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এন সুরেন্দ্রণ কী বললেন সংবাদমাধ্যমকে?

ডকিং প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন ডিরেক্টর এন সুরেন্দ্রণ। মহাকাশে দুই উপগ্রহের সংযুক্তিকরণ সফল হতে, তাঁর বিবৃতিও সামনে আসে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, আজকের এই সাফল্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে মহাকাশে স্পেস স্টেশন গড়তে এবং চন্দ্রযান ৪ মিশনের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হতে চলেছে এই ডকিং পদ্ধতি।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share