তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গের জেলাজুড়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির চৌকাঠ পেরিয়ে উর্ধ্বমুখী! কিন্তু তার মধ্যেও কাজের জন্য বাইরে যেতে হচ্ছে, ঘামও হচ্ছে প্রচুর। শরীর ঠান্ডা আর সুস্থ রাখতে অনেকেই তাই সঙ্গী করছেন ওআরএসের (ORS) প্যাকেট। গুঁড়ো প্যাকেট নয়, একেবারে তৈরি প্যাকিং ওআরএস। জলে গোলার ঝামেলা নেই। এমনকী আপেল, আনারস কিংবা কমলালেবুর নানান রকমারি স্বাদের তৈরি জিনিস! গরমে তেষ্টা মেটানোর সঙ্গে দিচ্ছে আরাম। কিন্তু বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করছেন, সেখানে বিপদ লুকিয়ে আছে কি না, দেখে নিয়েছেন তো? আসুন, তার আগে শুরুতেই জেনে নিই, এই ওআরএস আসলে কী?
ওআরএস কী?
শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে ওআরএস (ORS) অত্যন্ত কার্যকর। অতিরিক্ত ঘাম হলে কিংবা কলেরার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দেহে ডিহাইড্রেশন রুখতে ওআরএস বিশেষ কাজ দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০০২ সালে ওআরএস অর্থাৎ, ওরাল রিহাইড্রেশন সল্টে কী কী উপাদান কত পরিমাণ থাকবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, অনেক কোম্পানিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে ওআরএস তৈরি করছে না। ফলে, সেসব ক্ষেত্রে উপকারের থেকে ক্ষতির ঝুঁকিই বাড়ছে। অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ওআরএস-এর নামে যা বিক্রি করছেন, তা কেবল প্যাকিং ঠান্ডা পানীয় ছাড়া কিছুই নয়। তাতে শরীরের জন্য লাভ তো নেই। বরং, শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলেই মনে করছে চিকিৎসক মহল।
সমস্যা কোথায়?
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু জায়গায় এমন কিছু সুস্বাদু পানীয় প্যাকিং করে বিক্রি করা হচ্ছে, যাকে বিক্রেতারা ওআরএস বলছেন। সাধারণ মানুষ অনেক সময়েই ওআরএস (ORS) কিনা, তা যাচাই করছেন না। ওই প্যাকেট পানীয় শিশুদের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। শিশুদের পেটের সমস্যা হলে কিংবা অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে গেলে ওই ধরনের প্যাকেট পানীয় বিপদ বাড়াচ্ছে। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওই সব পানীয়তে যে উপাদান থাকে, তাতে দেহে পটাসিয়াম, সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এমনকী ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই শিশুদের ওআরএস দেওয়ার আগে বাড়তি সতর্ক ও যাচাই জরুরি বলেই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
কীভাবে চিনবেন ওআরএস?
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফর্মুলা ওআরএস-র (ORS) প্যাকেটে ছাপা আছে কিনা, তা যাচাই করে নিতে হবে। যদি না থাকে, তাহলে ওষুধ দোকান কিংবা যে কোনও বিক্রেতার কথায় ওআরএস হিসাবে অন্য কোনও পানীয় কিনলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, দোকানের প্যাকেট ওআরএস-এর পরিবর্তে বাড়িতে নুন-চিনি মিশিয়ে জল খেলেও একরকম উপকার হবে। তবে, যাদের ডায়বেটিসের বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের যে কোনও পানীয় খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ, অতিরিক্ত পরিমাণ নুন, চিনি তাদের শরীরে অন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours