মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভূপতিনগরে এনআইএ-এর ওপর হামলার ঘটনায় সরব হলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালির পর ভূপতিনগর। ইডি-র পর এনআইএ। তিনমাসের মাথায় ফের রাজ্যে হামলার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এই নিয়েই রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনকে এক হাত নিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
কী বললেন সুকান্ত
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ঘটনায় কেন্দ্র এবং বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সুকান্তের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই ঘটনা ঘটেছে। সুকান্ত বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি ঘটেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে। স্থানীয় মানুষ নন, এঁরা চিহ্নিত তৃণমূল নেতা এবং কর্মী। যে ভাবে একের পর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর আক্রমণ হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গকে দেখে মাঝেমাঝে আমাদের মনে হচ্ছে আফগানিস্তানে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয়, কেন্দ্রীয় সরকার, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি এবং বিচারব্যবস্থার খুব তাড়াতাড়ি হস্তক্ষেপ করা উচিত। নচেৎ, পশ্চিমবঙ্গ আগামিদিনে ভারতের অঙ্গরাজ্য থাকবে, না কি থাকবে না, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। বার বার দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনেরও এই দল সম্পর্কে ভাবা উচিত।’’
Under @MamataOfficial 's misrule, WB remains lawless. Following an attack on ED officials, now NIA officers faced violence in Bhupatinagar while trying to arrest 2 TMC leaders. Local police involvement is suspected, highlighting criminal protection under @AITCofficial in Bengal. pic.twitter.com/WXJuHKu6Tr
— Dr. Sukanta Majumdar ( মোদীজির পরিবার ) (@DrSukantaBJP) April 6, 2024
কী বললেন শুভেন্দু
ভূপতিনগরে এনআইএ-এর ওপর হামলার ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে এই দাবি জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে শুভেন্দুর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ররোচনাতেই হামলা হয়েছে এনআইএ-র ওপর। শুভেন্দু লিখেছেন, ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে এনআইএ। পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। যেহেতু এখন আইন – শৃঙ্খলা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণাধীন, তাই তাদের কাছে অনুরোধ করব ভূপতিনগর থানার ওসি, কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ও পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুন। শুভেন্দুর দাবি, সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাগাতার প্ররোচনা দিয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি কোচবিহারের মাথাভাঙায় একটি রাজনৈতিক সভায় এনআইএ-কে নিয়ে কটূ মন্তব্য করেন।
The NIA Team, probing the Bhupatinagar Bomb Blast Case has come under attack at Bhupatinagar in the Bhagabanpur Assembly Constituency, of Purba Medinipur District.
— Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) April 6, 2024
The Law and Order structure of West Bengal has crumbled completely and since the control is right now with the… pic.twitter.com/7rObpoNPGK
রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারির দাবি
পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ-মামলার তদন্তে দুই তৃণমূল কর্মীকে আটক করে নিয়ে আসার সময় এনআইএ-র গাড়িতে হামলা চালানো হয়। ইট,পাথর বৃষ্টি, ভাঙা হয় পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়ির কাচ। মাথা ফাটে এনআইএ আধিকারিকের। এনআইএ-র দাবি, ভূপতিনগর বিস্ফোরণ-মামলার তদন্তে দুই সন্দেহভাজন বলাইচরণ মাইতি ও মনোব্রত জানাকে আটক করে নিয়ে আসার সময়, তাদের গাড়িতে হামলা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই চলে ইট, পাথরবৃষ্টি। বিজেপির তরফে রাজ্যসভার সাংসদ তথা মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারির দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন "বাংলায় যে আইনের শাসন নেই, তা এঘটনা থেকেই স্পষ্ট। আদালতের নির্দেশে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিএসএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এর পরেও কী শান্তির ভোট সম্ভব?"
আরও পড়ুন: সন্দেশখালির ছায়া ভূপতিনগরে, তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত এনআইএ-র আধিকারিকরা, ভাঙচুর করা হল গাড়ি
ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেছেন, রাজ্যে যাতে আইনের শাসন কায়েম করা না যায়, তার জন্য সন্দেশখালির ধাঁচে হামলা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আবার শিশির অধিকারী বলেছেন, “এই সব ঘটনা ভিতরে চলছিল। বাইরে প্রকাশ হল। সরকারের উস্কানি রয়েছে। এনআইএ তদন্ত করছে। সব প্রমাণ খতিয়ে দেখেছে। ওদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। যায়নি। তারপর যা পদক্ষেপ করার এনআইএ করেছে। আর সেটাকে বলপ্রয়োগ করে মানুষকে দেখাতে চাইছে কত শক্তিশালী।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours