One Nation One Election: ‘এক দেশ এক ভোটে’র পক্ষে জনমত গঠনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

one nation one election pm modi speaks on favour of it

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ (One Nation One Election) এর পক্ষে জনমত তৈরির আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। তাঁর মতে, দেশে অনবরত নির্বাচনের কারণে গোটা বছরই প্রচার চলতে থাকে এবং সরকার ও প্রশাসন নীতিপঙ্গুতায় ভোগে। যা সরাসরি প্রভাব ফেলে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যতের ওপর। তাই দিল্লির এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সব এনসিসি ক্যাডারের কাছে আবেদন করেন দেশজুড়ে এই নিয়ে আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

 

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

দিল্লিতে এনসিসি-র এক সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi) বলেন, “এক দেশ এক ভোটের (One Nation One Election) প্রস্তাব নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের যুবারা আরও বেশি করে এগিয়ে আসুন এই নিয়ে আলোচনায় শামিল হতে।” তাঁর বক্তব্য, “এক দেশ এক ভোট নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক চলছে। লোকসভা এবং রাজ্যের বিধানসভাগুলির ভোট একসঙ্গে হলে প্রশাসন অনেক বেশি লক্ষ্যমুখী হয়ে কাজ করতে পারবে এবং ব্যাঘাত কম হবে। স্বাধীনতার পরে দীর্ঘদিন ধরেই লোকসভা এবং বিধানসভাগুলির ভোট একসঙ্গে হয়েছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। তার জন্য দেশকে ভুগতে হচ্ছে।”

 

‘এক দেশ এক নির্বাচন’ সরকারের যুক্তি

ইতিমধ্যেই এক দেশ এক নির্বাচনের (One Nation One Election) প্রস্তাবে সায় দিয়েছে মোদির মন্ত্রিসভা। সরকারের যুক্তি, ঘন ঘন নির্বাচনের জেরে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গোটা দেশ এই প্রক্রিয়াকে সমর্থনও জানাচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বিষয়টি সমর্থন করার আহ্বানও জানান তিনি। সরকার পক্ষের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বিপুল অঙ্কের খরচ হয়, তা অনেকটাই কমে যাবে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ধারণাকে একটি “ঐতিহাসিক” সংস্কার বলে অভিহিত করেছে। দলের মতে, এই বিল এলে সাশ্রয়ী শাসন ব্যবস্থার আরও উন্নতি হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি ধারাবাহিকভাবে একযোগে নির্বাচনের পক্ষে কথা বলেছেন। এই বিলকে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

তিনটি বিলের মাধ্যমে বাস্তবায়ন

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর (One Nation One Election) বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্র। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যেখানে ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দেওয়া হয়েছে। “এক দেশ, এক নির্বাচন” পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার দুটি সাংবিধানিক সংশোধনী সহ তিনটি বিল প্রস্তাব করেছে। সেগুলি হল:

প্রথম সাংবিধানিক সংশোধনী বিল: লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলির জন্য যৌথ নির্বাচনের অনুমতি রয়েছে এই বিলে। লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলির জন্য ‘নিযুক্ত তারিখ’ এবং একই সঙ্গে মেয়াদ সমাপ্তির বিধান প্রবর্তনের জন্য ধারা ৮২এ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে।

দ্বিতীয় সংবিধান সংশোধনী বিল: অন্তত অর্ধেক রাজ্যের অ্যাসেম্বলির অনুমোদন প্রয়োজন৷ স্থানীয় সংস্থা নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলির সঙ্গে সহযোগিতা নিশ্চিত করে ভোটার তালিকার বিধানগুলি সংশোধন করতে হবে।

তৃতীয় বিল: কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির পাশাপাশি বিধানসভার সঙ্গে — পুদুচেরি, দিল্লি এবং জম্মু ও কাশ্মীর — লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলির সঙ্গে এই নির্বাচন করাতে হবে৷ গভর্নমেন্ট অফ ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি অ্যাক্ট (১৯৯১), দ্য গভর্নমেন্ট অফ ইউনিয়ন টেরিটরি অ্যাক্ট (১৯৬৩), এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন (২০১৯) সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে বিলে৷

সম্প্রতি প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন জাতির উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় উঠে এসেছে এই প্রসঙ্গ। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু মনে করিয়ে দিয়েছেন, সব ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে দেশ। ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “এই নীতি দেশের আর্থিক বোঝা কমাতে পারে। নীতিপঙ্গুতা রুখতে পারে।”

 

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share