শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে
নবম পরিচ্ছেদ
১৮৮৪, ১৪ই সেপ্টেম্বর
নরেন্দ্রের ভক্তি—যদু মল্লিকের বাগানে ভক্তসঙ্গে শ্রীগৌরাঙ্গের ভাব
চৈতন্যলীলা ও অধরের কর্মের কথা যদু মল্লিকের সঙ্গে
ঠাকুর (Ramakrishna) যদু মল্লিকের বৈঠকখানায় আসিয়াছেন (Kathamrita)। সুসজ্জিত বৈঠকখানা। ঘর বারান্দায় দ্যালগিরি জ্বলিতেছে। শ্রীযুক্ত যদুলাল ছোট ছোট ছেলেদের লইয়া আনন্দে দু-একটি বন্ধুসঙ্গে বসিয়া আছেন। খানসামারা কেহ অপেক্ষা করিতেছে, কেহ হাতপাখা লইয়া পাখা করিতেছে। যদু হাসিতে হাসিতে বসিয়া বসিয়া ঠাকুরকে সম্ভাষণ করিলেন ও অনেকদিনের পরিচিতের ন্যায় ব্যবহার করিতে লাগিলেন।
যদু গৌরাঙ্গভক্ত। তিনি স্টার থিয়েটারে চৈতন্যলীলা দেখিয়া আসিয়াছেন। ঠাকুরের কাছে গল্প করিতেছেন। বলিলেন, চৈতন্যলীলা নূতন অভিনয় হইতেছে। বড় চমৎকার হইয়াছে।
ঠাকুর আনন্দের সহিত চৈতন্যলীলা-কথা শুনিতেছেন। মাঝে মাঝে যদুর একটি ছোট ছেলের হাত লইয়া খেলা করিতেছেন। মাস্টার ও মুখুজ্জে-ভ্রাতারা তাঁহার কাছে বসিয়া আছেন।
শ্রীযুক্ত অধর সেন কলিকাতা মিউনিসিপ্যালিটির ভাইস-চেয়ারম্যান-এর কর্মের জন্যে চেষ্টা করিয়াছিলেন। সে কর্মের মাহিনা হাজার টাকা। অধর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট—তিনশ টাকা মাইনে পান। অধরের বয়স ত্রিশ বৎসর।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna যদুর প্রতি)—কই অধরের কর্ম হল না?
যদু ও তাঁহার বন্ধুরা বলিলেন(Kathamrita), অধরের কর্মের বয়স যায় নাই।
কিয়ৎক্ষণ পরে যদু বলিতেছেন—“তুমি একটু তাঁর নাম করো।”
ঠাকুর গৌরাঙ্গের ভাব গানের ছলে বলিতেছেন (Kathamrita):
গান — আমার গৌর নাচে।
নাচে সংকীর্তনে, শ্রীবাস-অঙ্গনে, ভক্তগণসঙ্গে ॥
গান — আমার গৌর রতন।
গান — গৌর চাহে বৃন্দাবনপানে, আর ধারা বহে দুনয়নে।
(ভাব হবে বইকি রে) (ভাবনিধি শ্রীগৌরাঙ্গের)
(ভাবে হাসে কাঁদে নাচে গায়) (বন দেখে বৃন্দাবন ভাবে)
(সমুদ্র দেখে শ্রীযমুনা ভাবে) (গৌর আপনার পায় আপনি ধরে)
(যার অন্তঃ কৃষ্ণ বহিঃ গৌর)
গান — আমার অঙ্গ কেন গৌর (Ramakrishna), (ও গৌর হল রে!)
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”
Leave a Reply